তারকার ভিড় সত্বেও জমলো না পঙ্কজ ত্রিপাঠী, সারা আলী খানের ‘মার্ডার মুবারক’

sudiproy877
4 Min Read

অধিক সন্ন্যাসীতে গাজন নষ্ট

যারা জিজ্ঞেস করেন হ্যাজ পড়ার সময় নেই অত চট করে বলুন তো এককথায় আপনার কেমন লেগেছে নতুন সিনেমাটি তাদের জন্য এই প্রবাদটি আর যারা কষ্ট করে পড়ে টড়ে থাকেন তাদের জন্য ভাব সম্প্রসারণে আসি।
১৫ ঐ মার্চ নেটফ্লিক্সে মুক্তি পেয়েছে লেখিকা অনুজা চৌহানের উপন্যাস Club You to Death থেকে অনুপ্রাণিত সিনেমা মার্ডার মুবারক। তবে মুবারক বলে বাধাই(Badhai) দিতে পারলাম না সিনেমাটি দেখে। প্রেম কাহিনী বোঝাতে চেয়েছে না ঘেঁটে ঘন্ট পাকাতে চেয়েছে সেটা দেখার যদি বিশেষ কৌতূহল হয় তবে ২ ঘণ্টা ২০ মিনিটের কমেডি(!) থ্রিলার(?!) টি দেখে মুবারক বাত-চিত করতে পারেন।

Murder Mubarak Review

প্রথমেই বলে দিয়েছি কুশীলবদের ছড়াছড়ি, কাহিনী আবর্তিত হয় দিল্লির এক প্রসিদ্ধ ক্লাব, রয়েল দিল্লি ক্লাবের সদস্যদের কেন্দ্র করে। ক্লাবের এক জিম ইন্সট্রাক্টরের খুন কে কেন্দ্র করে ক্লাবের বিভিন্ন সদস্যদের উপর সন্দেহ তৈরি হয় দিল্লি পুলিশের এসিপি ভবানী সিংয়ের মনে। তার স্যাটেলাইট বা জুনিয়র হিসাবে এস আই পদম কখনো বসকে চাট কর্নারে নিয়ে যায় আবার কখনও সন্দেহভাজনদের জিজ্ঞাসাবাদ করে। এ হেন ভবানী সিংয়ের সবসময়ই gut feeling বা পেটে বিড়বিড় করতে থাকে আর দশ দিনের মধ্যেই সে কেস সলভ করে ফেলে। অবশ্য ফেলুদার কায়দায় সকাল ১১ টায় মিটিং ডেকে রহস্য সমাধান টা “নেশা নেশা আগুন আগুন” হয়েছে আমার মতে। ক্লাবের বেশ অনেকেই নেশা ভাং করে বেড়ায় আর জলভাতের মত পরকীয়া করে বেড়ায়। অবশ্য এই দুই উপাদান না থাকলে তো high class society এর মান ইজ্জত কিছুই রক্ষা করা যায় না! তাই প্রেম নামক বস্তু বা অনুভূতি ঠিক চোখে পড়লো না, রহস্যও না। কেউ একজন স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে সাহায্য করছে আর পুলিশ ব্যক্তিটি কারণ জানার চেষ্টা করছে না, এত বড় ক্লাব অথচ সেখানে কোন সিকিউরিটি নেই, ক্যামেরার ফুটেজ কেউ এমনিই বিনা বাধায় ডিলিট করে দিচ্ছে আবার কেউ ক্লাবের লনে লাশ পুঁতে দিচ্ছে অথচ সেই জিনিস ক্যামেরায় ধরা পড়ছে না বড়ই অবাস্তব লেগেছে। শেষ পর্যন্ত পুলিশ তদন্তের নিষ্পত্তি করলো না খুনি নিজেই সত্যি বললো “প্রেম প্রতিষ্ঠা” করার জন্য সেটা জানতে হলো দিলওয়ালে দিল্লির “ইশক মহব্বত অউর প্যায়ার” মানে মার্ডার মুবারক দেখতে হবে।

Murder Mubarak Cast

Loading...

IMDb Rating – 6.7/10

অভিনয় প্রসঙ্গে কিঞ্চিৎ আলোচনা, সিনেমায় আমার দুজনের অভিনয় ভালো লেগেছে তাঁদের চরিত্র অনুযায়ী, এক, টিস্কা চোপড়া, দুই, ডিম্পল কাপাডিয়া, দুই বর্ষীয়ান শিল্পীর কমিক টাইমিং ভালো লেগেছে। এছাড়া আরও যাঁরা যাঁরা আছেন তাঁদের অভিনয় এই সিনেমায় তথৈবচ, মানে কেন আছেন আমি বুঝিনি। পঙ্কজ ত্রিপাঠী কোনদিনই মনোজ বাজপেয়ী নন,সে যতই দু’জন বিহারের লোক হোন, পঙ্কজ, মনোজ বাজপেয়ীকে অনুসরণ করার চেষ্টা করেন (triggered হতেই পারেন কেউ কিন্তু আমার এটাই মনে হয়) কিন্তু সবার দ্বারা ফ্যামিলি ম্যানের শ্রীকান্ত হয়ে ওঠা সম্ভবপর হয় না, তাঁর থেকে কমিক সেন্স আর টাইমিং অন্তত এই সিনেমায় আমি কিছুই পাইনি। বরং প্রতিটি চরিত্রের নাম যখন দেখানো হয় তখন তাদের নামের পাশে বিশেষণ গুলো মজাদার।

আরো পড়ুন, Shaitaan Movie Review: কেমন হলো অজয়, মাধবনের ‘শয়তান’ ?

সারা আলী খান ভালোই অতি অভিনয় করেছেন কিছু কিছু দৃশ্যে, পরিচালক হয়ত ভেবেছিলেন চিৎকার করে সংলাপ আউরে দিলেই সেই অভিনয় ভাল হয়ে যায় আর বিজয় ভার্মা কি জন্য এই সিনেমাটি করতে রাজি হলেন সেটা আমার কাছে রহস্য।

রয়েল দিল্লি ক্লাবে চাকর বাকরদের প্রবেশ নিষেধ, এর মধ্যেই কেউ “তু হে মেরি ফ্যান্টাসি” বলে সেই সেবকদের কেই গ্রহণ করতে চেয়েছে, কেউ বা তাদেরকে দিয়ে কাজ হাসিল করেছে আবার কারও বা হাটে হাঁড়ি ভেঙেছে মানে ছোটলোক বড়লোক সব মিলেমিশে একাকার কিন্তু ঐ যে বললাম খালি মশলাই যোগ হয়েছে, রান্না হয়নি একদমই, ফলে যে খাবার পরিবেশন করেছেন পরিচালক সেটাকে গ্রহণ করতে পারা একটু কঠিন ব্যাপার।

Kleptomania আর খুন করা এই দুইয়ের মধ্যে কোন সম্পর্ক আছে?

আরো পড়ুন, Yodha Movie Review: দর্শক আর বক্স অফিসে কেমন সাড়া ফেললো সিদ্ধার্থের ‘যোদ্ধা‘?

Share This Article