বড়দের গল্প (সুরক্ষা কবজ) Bangla Boroder Golpo

Samaresh Halder
20 Min Read

!! সুরক্ষা কবজ!!

কঠোরভাবে প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য!

__“ মানি কতবার এককথা বলবো?আমি ওর সাথে আর থাকতে পারছি না!আমার কানের কাছে ঘ্যানঘ্যানানিটা বন্ধ করো প্লিজ! জাস্ট অসহ্য লাগছে, উফঃ একটু একা থাকতে দাও না? আমার ফ্লাটে এসে মাথাটা খারাপ না’ করলেই নয়? অফিসের অনেক কাজ বাকি আছে।

বড়দের গল্প


মানি- তোদের ভালোর জন্যই বলছি, বিয়ের মাত্র ছয় মাস তোরা সংসার করেছিস, এর মধ্যেই সব শেষ করে দিবি? এই ছয় মাসে তোরা সংসার নয় কেবল মারপিট করে কাটিয়েছিস, কিছু ভুল বলছি কি? আসলে কি বলতো তোরা হলো গিয়ে উচ্চশিক্ষিত যাকে বলে হাই এডুকেটেড, তাই তোদের অহংকার তোদের জেদটা, অনেকটাই বেশি! দুজনেই তো একই রকম তোরা রে? তবে তোর জেদটা যে অসম্ভব রকমের বেশি সেটা বুঝতে আমার আর বাকি নেই। থাক তুই তোর একাকীত্ব নিয়ে, আমিও আসবো না তোদের মাঝখানে! কষ্ট হয় রে তুই বুঝবি না, আমার দিদির একমাত্র মেয়ে তুই! ছোট্টবেলা থেকেই তোকে আমিই মানুষ করেছি, এখন নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে ভুলে গেছিস তাই না রে? ঠিক আছে আমি আর আসবো না তোর ফ্ল্যাটে তুই তোর মতন থাক, আসলে কি বলতো আমরা সেই ষাটের দশকের মানুষ তো, সংসারটাকে কিভাবে আগলাতে হয় আমরা জানি! তোরা এই প্রজন্মের ওইসবের তোয়াক্কা করিস না এটার জন্যই তো দুঃখ হয়! মেয়েরাই পারে সংসারটাকে বেঁধে রাখতে, তোরা সেই সব বুঝবি না! বড়-বড় কিতাব পড়েছিস কম্পিউটার নিয়ে বাড়িতেই অফিস করছিস! মাস গেলে লক্ষ-লক্ষ টাকা তোদের একাউন্টে জমা পড়ছে কেনো শুনবি কারোর কথা? থাক মা তুই ভাল থাক এটাই আমি চাই! চললাম রে দিশা, চেষ্টা করব আর তোর ফ্ল্যাটে না আসতে।

আরো পড়ুন, বড়দের গল্প | নিষিদ্ধ ঘর সংসার (পর্ব ২) | Boroder Golpo

__“ শাড়ির আঁচলে দুচোখ মুছতে মুছতে ফ্ল্যাটের দরজাটা খুলে বেরিয়ে আসে, দিশার একমাত্র মাসিমনি, দিশাকে খুব ছোট থেকে মানুষ করেছে সাবিত্রীদেবী! দিশার জন্মের পর থেকেই দিদি বৈশাখী অসুস্থ হয়ে গেছিল দীর্ঘদিন! জামাইবাবু অরুনাভ, বৈশাখীকে বাপের বাড়ি ছেড়ে দিয়ে গেছিল। ছোট্ট দিশাকে মায়ের থেকে বেশি আদর যত্ন দিয়ে মানুষ করে তুলেছিল, দিশার যখন পাঁচ বছর বয়স সাবিত্রীর বিয়ে হয়, তখন দিদি অনেকটাই সুস্থ! জামাইবাবু এসে নিয়ে গেছিল স্ত্রী-কন্যাকে নিজের কাছে। সময় পেলেই সাবিত্রী ছুটে যেত ছোট্ট দিশার মায়া মমতার টানে! বড় হয়ে উঠেছিল দিশা, পড়াশোনা থেকে স্কুল টিউশনির দায়িত্ব নিয়েছিল সাবিত্রী। জামাইবাবু সময় দিতে পারতেন না’ পরিবারের জন্য, এমনই ছিল তার চাকরি! দিদিও অতটা বুঝতো না, একা হাতে দিশার ভবিষ্যৎ গড়ে তুলেছিল সাবিত্রী! মায়ের থেকে মাসিকেই বেশি ভালবাসত দিশাও। দুজনের নাড়ির টান না থাকলেও সাবিত্রী সব সময় মনে করতো দিশা, তারই মেয়ে! পরবর্তী সময়ে সাবিত্রীৱ একটি ছেলে হয়, ছেলের সব দায়িত্ব নিজেই দেখাশোনা করত! কিন্তু তবুও দিশা যেন তার একটা আলাদা অস্তিত্ব! আজ নিজের ছেলের থেকেও অনেকটাই বেশি। দিশার কাছে থেকে একপ্রকার অপমানিত হয়ে ফিরতে হয়েছিল সাবিত্রীকে, এর আগেও দিশা রেগে গেলে মাসিকে আজেবাজে কথা বলতে ছাড়তো না। সবকিছু ভুলে তবু আঁকড়ে ধরত, সাবিত্রী। সাবিত্রীদেবী বুঝতেই পারেননি দিশার বৈবাহিক জীবনের তিক্ত ঘটনাগুলোৱ কারণ, মাত্র ছয় মাসেই মেয়েটার সংসার ভেঙে যেতে বসেছে দেখে, মনটা ছটফট করে ওঠে! তাই বারবার ছুটে আসে অপমানিত হওয়া সত্ত্বেও।

__“ দিশা সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার, ৫-৬ বছর আগে ব্যাঙ্গালোরের সার্ভিস পেয়েছিল, একটা বড় মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে! নিজের যোগ্যতায় বছর শেষের আগেই বিদেশে পাড়ি দেয়। সেখানে কয়েক বছর থাকার পরে দেশে ফিরে আসে! তার মধ্যেই আলাপ হয় সন্দীপেৱ সাথে, ইন্টারনেটের যুগে ভার্চুয়ালি প্রেম রং নেয় করোনাৱ অতি মারিতে। সন্দীপ ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার, ছোট্ট সংসার তাদের, মা-বাবা আর ছেলে! দক্ষিণ কলকাতার আভিজাত অঞ্চলে একটি ফ্লাটে থাকে সন্দীপরা, কর্মক্ষেত্র এখন কলকাতাতেই। করোনার অতিমারির থেকেই ওয়ার্কঅ্যাট হোমে ব্যস্ত থাকতো দিশা, নিজের কলকাতার ফ্ল্যাটে। দিশাদের আদি বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনার ছোট্ট একটি মফস্বল শহরে, ইদানিং দিশা তার নিজের ফ্ল্যাটেই বসবাস করে, তবে কলকাতাৱ ফ্ল্যাট বেশ কয়েক বছর আগে নিয়েছিল! কোরোনার অতি মারির পরে এখান থেকেই ওয়ার্ক অ্যাট হোম করতে শুরু করেছিল।

আরো পড়ুন, বড়দের রোমান্টিক গল্প

__“ দুজনের আলাপ হয় ইন্টারনেটের মাধ্যমে, কিছুদিনের মধ্যেই দুজনেই ঠিক করে আগামী জীবনে, জীবনসাথী হয়ে ওঠবে একে অপরের! দুজনেই নিজেদের পরিবারকে তাদের পছন্দের কথা জানায়। কয়েক মাসেই রীতিমতো অনুষ্ঠান করে দুজনের বিয়ে হয়ে যায়।

Bangla Boroder Golpo

Loading...

সন্দীপ আগাগোড়াই রুক্ষ স্বভাবের, মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতা সন্দীপের মধ্যে নেই বললেই চলে! বিয়ের কয়েক মাস আগেই দিশা জানিয়েছিল- সাংসারিক জীবনে যৌনতাকে প্রধান্য দিতে আমিও আগ্রহী, কিন্তু আমার একটা শর্ত তোমাকে মানতে হবে!

” ভার্চুয়ালি চ্যাটে’র মাধ্যমে কথাগুলো হয়, তখনই সন্দ্বীপের প্রশ্ন ছিল- কি কথা আমাকে মানতে হবে?
দিশার উত্তর গেছিল- বিনা সুরক্ষাকবজে এক পাও এগোবে না, লাইফে যৌনতার ইন্টারেস্ট আমারও আছে যথেষ্ট পরিমাণে! কিন্তু এটাও চাই না’ এত তাড়াতাড়ি ক্যারিয়ার টাকে শেষ করতে, তাই বিনা সুরক্ষাকবচে ওই সাবজেক্টে ভুলেও হাঁটতে চেষ্টাও করো না।

” দিশার এই কথায় মনে-মনে হেসেছিলো সন্দীপ, যৌনতায় সুরক্ষাকবজ? এ কেমন কথা? তাও আবার বিয়ের আগেই সাবধান করে দেওয়াটা, তখনই ঠিক নিতে পারেনি! তাই ওই সাবজেক্ট এড়িয়ে গিয়েছিল তখন।

দিশার ক্যারিয়ারেৱ ভবিষ্যৎ ছিল অত্যন্ত উজ্জ্বল, আর সে ক্যারিয়ারের সর্বোচ্চ শিখরে পৌঁছতে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছিল! দিশা কখনোই চাইত না অল্পদিনেই সাংসারিক ঝঞ্ঝাটে নিজেকে আবদ্ধ করে করতে! বিয়ের কিছুদিন পরেই যদি বাচ্চা আসে, ক্যারিয়ার যেখানে আছে সেখানেই থেমে যাবে। তার জন্যই আগেভাগে সন্দীপকে সতর্ক করে দিয়েছিল, দিশা নিজেও চাইত উদ্যম যৌনতা! রীতিমত পছন্দ করত এই বিষয়টা, বয়সটাও কম হয়নি প্রায় ৩০ ছুঁই-ছুঁই! অনেকদিন ধরেই বাড়ি থেকে চাপ আসছিল বিয়ের জন্য, কয়েকটা বছর সবাইকে চাপিয়ে রেখেছিল ক্যারিয়ারের দোহাই দিয়ে! অবশেষে তাদের ইচ্ছাটাকে প্রাধান্য দিয়ে সাংসারিক জীবনে আসার সম্মতি জানিয়েছিল।

__“ বিয়ের আগেই দুজনের মধ্যেই আন্ডারস্ট্যান্ডিং করে নিয়েছিল একসাথে থাকার ব্যাপারটা, দিশা পরিষ্কার জানিয়ে ছিল শশুর বাড়িতে গিয়ে নতুন বৌমা সাজতে পারবে’না! যদিও সে বাড়িতে বসেই অফিসের কাজ করে, শ্বশুর বাড়ি গিয়ে বৌমা সাজলে নিজের চাকরি জীবনে অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে! এই ভেবেই কথাগুলো বলেছিল। সন্দীপও রাজি হয়েছিল দিশার প্রস্তাবে। তার নিজেরও বাড়িতে থাকার নিশ্চয়তা ছিল না, চাকরির জন্য প্রায়ই আউটস্টেশন যেতে হতো। দুজনেই আধুনিক এবং ওপেন মাইন্ডের, তাই দিশার কথায় বাধা দেয়নি সন্দীপ।

বড়দের রোমান্টিক গল্প

__“ দুজনের মধ্যে প্রথম গন্ডগোলটা বাঁধে বিয়ের পরের দিনই! বৌভাতের দিন অনেক রাত হয়ে যাওয়াতে ফুলশয্যার রাতে তেমনভাবে ঘনিষ্ট হওয়ার সুযোগ আসেনি। কিন্তু পরের দিনই ঘনিষ্ঠ হওয়ার আগে সময় নিয়ে দুজনেই প্রচন্ড উত্তেজিত হয়েছিল, উত্তেজনার শিখরে পৌঁছেও দিশা বারবার লক্ষ্য করছিল সুরক্ষাকবচের দিকটায় নিশ্চিন্ত হয়েছিল সব ঠিকঠাক আছে দেখে, মনে-মনে সন্তুষ্ট হয়েছিল সব দেখেশুনে, সন্দীপ যে তার কথা মেনে নিয়েছে এটাই যথেষ্ট! প্রায় ঘন্টাখানেক দুজনের মধ্যে এক কালবৈশাখী ঝড় চলে গেছিল, সেই রাতে। প্রথম মিলনে দুজনেই সন্তুষ্ট ছিল, কিন্তু দিশার সন্তুষ্টি ক্ষণিকের জন্য। কালবৈশাখী ঝড় থামার পরেই অনুভব করে বিনা সুরক্ষাকবচেই, যৌনতার শেষ অধ্যায় শেষ করেছে সন্দীপ। ঠিক তখনই, মাথাটা বিগরে গেছিল দিশার অত্যন্ত ক্ষুদ্ধ হয়ে বলে- এটা কি হলো? সবকিছুই তো ঠিকঠাক ছিল আমি দেখে নিয়েছিলাম, তাহলে সুরক্ষাকবচ মুক্ত হল কখন?

আরো পড়ুন, ভালোবাসার রোমান্টিক গল্প

” পরিতৃপ্তির নিদ্রায় যেতে-যেতে সন্দীপ বলে- বলতে পারবোনা ডার্লিং, আসলে কি বলতো সবকিছুতেই আজকাল ভেজাল! তোমার সুরক্ষাকবজের কোম্পানিগুলোও ভেজালে মেতেছে বলেই, মুচকি হেসে পাশ ফিরে শুয়ে শুয়েছিল। তিতি বিরক্ত হয়ে উঠেছিল দিশা কিছুতেই মেনে নিতে পারছিল না সন্দ্বীপের কথা, সে নিজে সুরক্ষাকবচ আনিয়ে ছিল বিদেশ থেকে রীতিমতো অনেক অর্থ ব্যয় করে! খানিকক্ষণ দ্বন্দ্বে পড়ে গেছিল কোম্পানির ভেজাল? না সন্দীপের কারচুপি? সেদিনের মতো চুপ করে ছিল, সকাল হতেই পার্শ্ববর্তী কেমিস্ট্রির দোকানে গিয়ে “অবাঞ্চিত বাহাত্তরের ” সাহারা নিতে হয়েছিল সুরক্ষাৱ জন্য, সেবারের মতো।( Unwanted-72 Tablet)

__“ সন্দীপ, দিশার বিরক্তির কারণটা বুঝে গেছিল! কয়েকদিন দিশার কথা মেনে গোলপোস্টে গোলগুলি নিশ্চিন্তে দিয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু যার রক্তের স্বাদে মন ভরে সেকি আর সুরক্ষাকবচে মন দেয়! দিন দশেক পরেই আবার সেই একই অবস্থা, বিনা সুরক্ষাকবজে মিলন, পরে জানতে পেরে রীতিমতো বিদ্রোহ করে ওঠে দিশা। এবারেও সেই আগের কথাৱ পুনরাবৃত্তি করে বসে, সন্দীপ। ঠিক তখনই ফোঁস করে ওঠে দিশা- থাক মিথ্যা ভূজুং দিয়ে ব্যাখ্যা করতে হবে না! প্রথমবারের পরেই আমি বিস্তারিত জানিয়ে কমপ্লেন করেছিলাম কোম্পানিতে, দিন দুয়েক পরেই তারা নিজেদের কোম্পানির সার্টিফিকেট পাঠিয়েছে আমার কাছে! আরে এটাও বলেছে প্রমাণ করে দিতে পারলে কয়েক লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেবে! তুমি আবার মিথ্যা বলছো আমার কাছে?

” আবার হেসে দিশাকে জড়িয়ে ধরে বলে- আরে ডার্লিং আবরণের ভিতরে মিষ্টি খেলে কি সেই মিষ্টিৱ স্বাদ পাওয়া যায়? কথাটা শেষ হতে না’ হতেই ছিটকে গেছিল দিশা! কালনাগিনীর মত ফোঁস করে উঠেছিল- বিয়ের আগেই সতর্ক করেছিলাম তারপরেও তোমার বিনা আবরণে মিষ্টি খাওয়ার শখ আমি বের করছি, এই মুহূর্তেই আমি আমার ফ্লাটে চললাম! তোমার সাথে একটা মুহূর্ত থাকতে পারবো না, তুমি নিজেরটাই ভাবো তাইতো? আমার দিকটা একবারও ভেবে দেখার প্রয়োজনটুকু মনে করলে না? তুমি থাকো তোমার মত, আমি আমার ক্যারিয়ারের জন্য সবকিছু ত্যাগ করতে পারি।

” অনেক সাধ্য সাধনার পরেও সেদিন সন্দীপ আটকাতে পারেনি দিশাকে! ভোরের আগেই বাড়ি ছেড়ে, নিজের ফ্ল্যাটে গিয়ে উঠেছিল। রাগে জ্বলে যাচ্ছিল তার সম্পূর্ণ অস্তিত্ব, মানুষটা এতটা সার্থপর কি করে হতে পারলো? নিজের জীবনসাথীর সামান্য প্রার্থনা টুকুও রাখতে পারলো না? সে আবার সারাজীবনে কি সাথ নিভাবে? নিজের বিবাহিত স্ত্রীর মনটাই মানুষটা বুঝলো না, এর থেকে বড় অভিমান আর কি থাকতে পারে? তার কাছ স্ত্রী কেবল যৌন কামনার সামগ্রী? যেমন ইচ্ছা তেমন ব্যবহার করবে? মান অভিমান, মন বুঝে উঠার কর্তব্য টুকুও যার কাছে থেকে পাওয়া যায় না’ তার সাথে কি করে পুরো জীবনটা কাটাতে পারে? এতটা স্বার্থপর কেউ হতে পারে? প্রশ্ন ছিল দিশার কাছে।

__“ কিন্ত সন্দীপ ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন ধাতুতে গড়া, চাপা রঙের লাবণ্যময়ী, মেদহিন ফিগারে ছিল অফুরন্ত যৌনতা, দিশার নগ্ন শরীরে ছিল পাগল করা নেশা! সঙ্গমে সন্দিপ পাগল হয়ে উঠতো, রিতিমত জিম করা শরীর! বিদেশী স্টাইলেও সম্পূর্ণ স্বচ্ছন্দ এমন রমণীর স্বাদই আলাদা, সন্দিপের ভাবনায়। একটাই বায়না মেয়েটার সুরক্ষাকবচের, তবে সন্দীপের ওটাই অস্বস্তি ঠিক মতন পরিতৃপ্তি হওয়া যায় না, বিয়ে করা বউয়ের সব কথা মেনে নেওয়া তার পক্ষে অসাধ্য। সুরক্ষাকবচ মাই ফুট, বৌয়ের এত ঘ্যাম অসহ্য,যেমন ইচ্ছা তেমন করেই যা ইচ্ছা তাই করবো! তাতে ওর কি আছে? কিন্তু মেয়েটা বড্ড জেদি! তার থেকেও প্রচুর অর্থ রোজগার করে, পজিসনের দিক দিয়েও দিশার ধারেকাছেও নেই সে! যতই হোক বৌ ‘তো’ অধিকার আছে! ওর কথা মত আমাকে চলতে হবে নাকি?

প্রত্যেকবার দিশা ক্ষমা করে দিয়েছে, সবকিছু ভুলে! সাদরে টেনে নিয়েছে আলিঙ্গনে। বারবার ছলচাতুরির আশ্রয় নিয়েছে সন্দীপ, কয়েক বার দিশার কাছে অনুনয়ের পরে প্রতিজ্ঞা করতেও ভুলেনি। দিশা প্রত্যেকবার এটাই ভেবেছে, যাক মানুষটা তার মন বুঝেছে? কিন্তু না সন্দীপ যেমন ছিল তেমনই আছে, কয়েকদিনের ধৈর্য, তারপরেই নিজের ইচ্ছায় ব্যক্ত করেছে প্রতি মুহূর্তে! প্রত্যেকবার ক্ষোভ প্রকাশ করে নিজের ফ্ল্যাট থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে অপমান করে! তবুও বারবার ফিরে এসেছে নিশির ডাকে, কেবলমাত্র দিশার শরীরের আকাঙ্ক্ষায়! দিশার মন বোঝেনি, দিশার চাওয়া-পাওয়া গুলোও বোঝেনি! অবশেষে বিরক্তিৱ শেষ অধ্যায়ে এসে আলাদা হয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় দিশা, প্রতিবার সুরক্ষার জন্য “অবাঞ্চিত বাহাত্তরের” সাহারা নেওয়া তার পক্ষে অসহ্য হয়ে ওঠে।

আরো পড়ুন, শরীরী প্রেমের গল্প

পাশে বসে অত্যন্ত ধৈর্যের সাথে সন্দীপকে বুঝিয়েছে দিশা- তুমি কি এটাও বোঝো না ক্যারিয়ার গড়ার সময় কখনো নিজের চেহারা, সৌন্দর্য, ফিগারেৱ’ দিকেও তাকাতে নেই। ক্যারিয়ার ভালো হলে চেহারাৱ সাথে সবকিছুই অটোমেটিক্যালি ভালো হয়ে যাবে। তখন তোমার ইচ্ছামত চলতে আমি খুশি-খুশি রাজি হব। কিন্তুু ভালো ক্যারিয়ার না হলে অনেক কিছুই নষ্ট হয়ে যাবে। যেমন ভালো চেহারা সুন্দর ফিগার, সুস্থ মানসিকতা তার সাথে তোমার মতন ফ্রী মাইন্ডের সেক্সেৱ ইচ্ছা সবসময় নাও থাকতে পারে, কিন্তুু ভালো ক্যারিয়ারের দাম সবসময় ও সর্বকালে বিদ্যমান। আসলে কি বলতো মন ভালো থাকলে সব কিছুই ভালো লাগবে! আর মন ভালো থাকার জন্য ভবিষ্যতে ঘুরে দাঁড়াতে হবে, সারাটা জীবন যদি অভাব থাকে! সেই অভাব সাথে করে মন খুলে বাঁচা যায় না! এটাতো বোঝো? কিছু স্বপ্ন দেখা অনেক সহজ কিন্তু বাস্তবায়ন করা অনেক কঠিন! আমার স্বপ্নগুলোকে বাস্তবায়ন করতে সাহায্য কর, তোমার কাছে এইটুকুই প্রার্থনা?

 __“  দিশার মত স্বাধীনচেতা, অফুরন্ত রোজগেরে মেয়ে কেন মেনে নেবে কারোৱ জেদ, কারোর অবজ্ঞা! তিক্ত হয়ে ওঠে দিশাৱ অন্তরাত্মা, ঠিক তখনই ডিভোর্স কেস ফাইল করে! ডিভোর্স কেস ফাইল করার সাথে-সাথে, কানাডার অফিসে এপ্লাই করে। অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে কিছুদিনেই তার অনুরোধ মেনে নেয় উচ্চতর কর্তৃপক্ষ! আৱ ঠিক তখনই তার মানি( মাসি)  প্রায় প্রত্যেক দিন সম্পর্কটাকে বাঁচাতে দৌড়ে আসে দিশার ফ্লাটে।

__“ সন্দীপ কয়েকবার প্রতিরোধ করেছিল- তুমিও ‘তো’ নিজের সুরক্ষায় সুরক্ষিত থাকতে পারো, আমাকেই কেনো ওই পথে হাঁটতে বলছো?
“ সন্দীপের অনভিজ্ঞতার কপালে হাত দিয়ে ক্ষণিক হতাশায় বসে, বলে-তুমি কি বলতো?এইটুকু বোঝা ‘না’ কেনো মেয়েরা সুরক্ষিত থাকতে যে উপায় গুলো আছে, সেই সব প্রোডাক্ট কিংবা মেডিসিন দীর্ঘদিন ব্যবহার করলে নানারকমের জটিলতা আরম্ভ হবে কিছুদিনেই! তাই পরে যদি কোনোদিনও বেবি নিতে হয়, প্রবলেম হবে মারাত্মক। কিন্তু ছেলেদের বেলায়, সে সব সমস্যা নেই তাই এত করে বোঝাচ্ছি।

“সব বুঝেও যে অবুঝ হয় তার কপালে আর কেউ থাক না থাক, দিশা থাকতে পারেনি! বেশ কয়েকবার অনুরোধ করেছে হাতে পায়ে ধরতেও বাকি রাখেনি দিশা! বলেছে-সন্দীপ আমাকে কেবলমাত্র ৫টা বছর দাও? তোমার মনের মত হয়েই থেকে যাবো!এই ৫টা বছরে আমি ক্যারিয়ারের সর্বোচ্চ শিখর ছুঁয়ে ফেলবো আমি কিন্তু নিশ্চিন্ত! প্লিজ সন্দীপ মেনে নাও না’, না হলে……

কথার মাঝেই থামিয়ে দিয়ে বলেছে- কেনো ৫বছরে যদি তোমার লক্ষ পূর্ণ না হয় তখন? সন্দীপের কথায় হাল ছেড়ে দেওয়ার মত অবস্থায় বলেছে দিশা- লক্ষ পূর্ণ না হলেও তোমার কথাই থাকবে।

__“ কিন্তু সব চেষ্টা বৃথা ,অবশেষে একপ্রকার বাধ্য হয়েই দিশাকে ডিভোর্স ফাইল করতে হয়।এর জন্য বাড়িতে প্রত্যেকেই আশ্চর্য হয়ে উঠেছিল! সকলের মনে একটাই প্রশ্ন কারণ কি? দুজনেরই কেউ বলতে পারেনি! তাদের বাড়ির সদস্যদের কাছে সত্যিকারের কারণ কি? ধোঁয়াশাই থেকে গেছিল, ডিভোর্সের ব্যাপারটাৱ কারণ। সব থেকে বেশি ব্যতিব্যস্ত হয়ে উঠেছিল সাবিত্রীদেবী। যথেষ্টই কারণ ছিল সাবিত্রী দেবীর কাছে নিজের হাতে গড়ে তুলেছিল মেয়েটাকে, যতই বড় হয়েছে মেয়েটার পৃথিবীটা যেন আলাদা হয়ে গেছিল! মেয়েটাকে আজকাল আর বোঝাই যায় না, কিভাবে কে জানে? এমনই ভাবনা ছিল সাবিত্রী দেবীর।

__“কেস ফাইলের মাস খানেকের মধ্যেই ডাক পড়েছিল কোর্টে,মহিলা জর্জ এর সামনে হেয়ারিং হলে জর্জ সাহেবাৱ ইচ্ছায় গোপন কক্ষে দুজনের সাথে আলোচনায় বসেন! গোপনকক্ষে জর্জ সাহেবা দুজনকেই প্রশ্ন করে- এই ফাইল দেখে যেটুকু জানতে পেরেছি আপনাদের ম্যারেজ কেবলমাত্র ছয় মাসের, কেস ফাইলে দুজনেই সই করেছেন স্বেচ্ছায় আলাদা হওয়ার জন্য! আপনারা দুজনেই শিক্ষিত বড় মাপের চাকরিও করেন, তবু আপনাদের কাছে এর কারণ জানতে ইচ্ছা করে? এই গোপনকক্ষে নির্দ্বিধায় বলতে পারেন সকল সমস্যা?

” দুজনেই খানিকক্ষণ, একে অপরের দিকে তাকিয়ে মাথা নিচু করে বসে থাকে! অবশেষে দিশা জানায় সমস্যার কথা বিস্তারিতভাবে।
সবকিছু শুনে জর্জ সাহেবা মৃদু হেসে বলেন- আপনারা দুজনেই হাই এডুকেটেড, সমস্যা আপনাদের কিছুই নেই কেবলমাত্র অ্যাডজাস্টমেন্টের সমস্যার জন্য ডিভোর্সের পথে হাঁটছেন? সন্দীপ বাবু আপনাকে একটু ভেবেচিন্তে দেখতে হবে আপনার স্ত্রীর সমস্যাগুলো, এমন কিছুই নয় এই সমস্যা! আপনি কি চান না একটা সুস্থ সংসার গড়ে উঠুক আপনাদের মাঝখানে? আপনার স্ত্রী কেবলমাত্র পাঁচটি বছরের জন্য আপনার কাছে অনুরোধ করেছে! দিয়ে দিন না, এই পাঁচটা বছর দেখতে-দেখতে চলে যাবে। স্বার্থপর মনোভাবনা থেকে একটু সরে দাঁড়ান দেখবেন সংসারটা কতটা সুন্দর হয়! আপনিও নিজের জেদে থাকবেন, আপনার স্ত্রীও নিজের জেদে থাকবে! তাহলেই তো সমস্যা দাঁড়াবে, তাই না? আমি বলছি না আপনার সুখের পথে কাটা হতে, কেবলমাত্র পাঁচটা বছর পরে বাকি জীবনটা তো আপনারাই উপভোগ করবেন নিজেদের ইচ্ছামত! ভেবেচিন্তে দেখুন আমার কথাগুলো, একমাস পরে আবার তারিখ দিলাম সেদিন কিন্তু আমি দু’জনকেই হাসি খুশি দেখতে পাই।

__“ পরের একটা মাসেৱ আগেই অনেকটাই সংযত হয়েছিল সন্দীপ, নিজের ভুল বুঝতে পেরেছিল! চাপা রঙের যৌন আবেদনময়ী, এমন জীবনসঙ্গিনী সে দ্বিতীয়বার পাবেনা, ব্রহ্মাণ্ড তন্ন-তন্ন করে খুঁজেও, এটাই ছিল চরম সত্য। দিশা ও একটু-একটু করে বুঝিয়ে ছিল ভালবেসে, বলেছিল- দেখো বিচ্ছেদ হতে সময় লাগে না’ তোমার আমার বিচ্ছেদ হয়ে যাবে কোনরকম ঝঞ্ঝাট ছাড়াই! হয়তো আমরা পরবর্তীকালে দুজনেই জীবনে আরেকজন সঙ্গী জুটিয়ে নিতে পারব! কিন্তু দুটি বাড়ির গুরুজনেরা যারা আমাদের জন্য চিন্তা করে, তারা আমাদের এই বিচ্ছেদ সহজে মেনে নেবেন না’ দুঃখী হয়ে উঠবে তারা। আমাদের সমস্যাগুলো আমরাই মিটিয়ে নি, এটাই কি’ ঠিক নয়? সন্দীপের ইচ্ছায় পূর্ণ মর্যাদা রেখেছিল দিশা, বিছানায় একটা পুরুষের সমস্ত চাহিদা, নিজেই পূর্ণ করে নতুন পথের পথিক বানিয়েছিল ভালোবেসে।

দুজনে ঠিক করেছিল বছরখানেকের জন্য কানাডার অফিসে দিশা চলে যাবে, নিজেও ততদিনে গুছিয়ে নেবে সন্দীপ! এই কয়েকটা বছরে। তবে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল দিশা- আমার যতই কষ্ট হোক বছরে কয়েকটা দিন তোমার সাথেই থাকবো! বছর সারার আদর কুড়িয়ে নেব কয়েকটা দিনেই। হেসে জড়িয়ে ধরেছিল সন্দীপ- ইউ আর মাই সুইট ওয়াইফ, চলো এক্ষুনি ওয়ান টাইম গেম হয়ে যাক। আপত্তি করেনি দিশা, এখন যে সন্দীপকে সে নতুন ভাবে পেয়েছে তাকে বুঝেছে তার সমস্যাগুলো বুঝেছে! আজ একজন প্রকৃত পুরুষ হয়ে উঠেছে তার স্বামী, তার সমস্যাগুলো হৃদয়ঙ্গম করেছে। মুহূর্তেও অপেক্ষা করেনি সন্দীপ, দু হাতে তুলে নিয়ে গিয়েছিল বেডরুমে।

__“ একমাস পরে কোর্টের হেয়ারিং ছিল। পৌঁছে গেছিল সেই গোপন কক্ষে, সামনে ছিল সেদিনের জর্জ সাহেবা! সামনে বসতেই মৃদু হেসে জিজ্ঞেস করেছিলেন- কি ডিসিশন নিয়েছেন আপনারা?

” হেসে উঠে দুজনেই বলেছিল একসাথে- অনেক ভেবে দেখলাম আপনার কথাই ঠিক, ছোট-ছোট সমস্যাগুলো নিজেরাই মিটিয়ে নেওয়া উচিত।

” জর্জ সাহেবা হেসে উঠে বলেছিলেন- কংগ্রাচুলেশন সন্দীপ এন্ড দিশা, হ্যাপি লাইফ বোথ অফ ইউ। কোর্ট থেকে বেরিয়ে আসতেই দুটো পরিবারের সকল সদস্যদের সামনে পেয়েছিল দুজনে, সকলের চোখে মুখে ছিল উদ্বেগ এক অজানা আশঙ্কায় ভুগছিলেন এতদিন! দিশা আর সন্দীপকে হাসিমুখে, হাতে হাত রেখে কোর্টের বাইরে আসতেই! বুঝতে অসুবিধা হয় নি সকলের! সাবিত্রী দেবী চোখ মুছে দৌড়ে এসে জড়িয়ে ধরেছিলেন দুজনকে, কেবল এইটুকুই বলতে পেরেছিলেন- তোরা দুজনেই খুব দুষ্টু, খুব জ্বালিয়েছিস আমায়।

অট্টহাস্য ভেঙে পড়েছিল দুজনেই সাবিত্রীদেবীকে জড়িয়ে ধরেছিল বেশ খানিকক্ষণ! ততক্ষণে সকলের, মিষ্টি মুখ করিয়েছিলেন দুই বেয়াই বেয়ান! সবকিছু ভুলে একে অপরকে মিষ্টি খাওয়াতে ব্যস্ত, দুজনের পরিবার।

সমাপ্ত।

Share This Article