সমকামী প্রেম – Lesbian Love Story Bengali

sudiproy877
7 Min Read

সমকামী প্রেম

দিল্লীর একটা মেয়ের সাথে ইদানিং ফেসবুকে কথা  হয়।
ইদানিং বলতে প্রায় ৬ মাস যাবত কথা চলছে। কথা বলতে বলতে বিষয়টা প্রায় প্রেমের পর্যায়ে চলে গেছে।
কিন্তু কথাবার্তায় সামান্য অসুবিধে হচ্ছে দুজনেরই। অবশ্য এই সমস্যাটা শুরু করেছি আমি।
মেয়ে একদিন আমাকে জিজ্ঞেস করেছিল, ‘তুমকো হিন্দি আতা হায়’?
আমি একটু ভাব নিয়ে বলেছিলাম,
‘হ্যা হ্যা বহুত জাদা আতা হায়’
কিন্তু আদোতে আমি হিন্দি ভাষার হাটু ভাঙা ‘দ’ এর খবরও জানি না।
ইংরেজিতে কথা বলা যেতো কিন্তু,
আয়াত ইংরেজী বোঝেনা। বুঝলেও ঠিকমত বলতে পারেনা। আমিও হিন্দি বুঝি কিন্তু বোঝাতে পারি না।
মেয়েদের সবসময় স্যাক্রিফাইজ করতে হয়। এজন্য ভাষাটা নাহয় আমিই স্যাক্রিফাইজ করেছি।
.
সন্ধ্যা বেলা আয়াত মেসেজ করেছে,
– “তুম কন বানেগা কারোরপাতি দেখতেহো” ?
আমি বললাম,
‘হ্যা মাঝে মাঝে দেখতাহি। কিন্তু কিউ?
‘ আজ রাত ‘ন’ বাজে দেখোগে? ‘
‘ হা তুম বলতাহে তো বিলকুল দেখবো”
কিন্তু কিউ?
‘কিউকি, আজকি এপিসোড মে জো অডিয়েন্স পোল হ্যয়, উছমে মে ভি হু।
.
“তুম সত্যি বলতাহে?
‘ হা বাবা সাচ ”
– হামি তুমকো কি করে চিনবো হ্যায়?
.
“ওকে বাতাতিহু।
মে ব্যঠুংগি সেকেন্ড ‘র’ মে।
আমিতাভ জ্বি কি ঠিক ছামনে ‘
হট সিট কি পিছে ‘ নীলা ড্রেস মে” সাথমে মেরে ফ্রেন্ড রাহেগা”
– ফেন্ড কেয়া রঙের ড্রেস গায়ে দিবে?
‘গায়ে দিবে মাতলাব?
.
– মাতলব কি ফিনবে? না দাড়াও আগে মাথা চুলকাই।
– কেয়া বাক রাহিহো! কুচ সামাঝ নেহি আতি।
.
– তোমহার সাথমে যে আওবে, সে কেয়া রঙের ড্রেস পেহনেংগে?
(ঊফফ মাই সার ইজ ব্যথা হইয়া গেছে।)
.
– ওহ আচ্ছা মেরে ফ্রেন্ড কনছা কালার পেহ্নেংগি ইয়ে পুছরাহিহো?
– হ হ হ।
– ও লাল পেহনেংগি ওর মে নীলা।
.
– ন’টার পর টিভির সামনে চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছি। এখনো
কে.বি.সি শুরু হয়নি। ১০ মিনিট পর শুরু হবে।
ছোফায়, মা, বাবা, ভাই, বোন, সবাই বসে আছে। কেউ জানেনা আমি আজ কেন টিভির সামনে বসে আছি।
মা জিজ্ঞেস করল,
বাবা টিভির অতো কাছে বসে আছিস কেন?
চোখ নষ্ট হয়ে যাবে তো বাবা। একটু দূরে বসে দেখ।
আমি কারো কথায় জবাব দিলাম না। বোন এসে বলল,
– দাদা রিমোট দে নাটক শুরু হবে এখন।
আমি বোনকে ধমক দিয়ে বললাম,
– তুই চুপ করতাহে হারামখোর লাকরি। নইলে থাপ্পড় মেরে তোর দাত ফেলে দুংগা।
– বাবা সপ সপ করে দৌড়ে এসে আমার কপালে হাত দিলো।
– কি হইছে বাবা তোর? জ্বর টর আইছে নাকি?
.
‘বাবা মুঝে বিরক্ত মাত করো’। মুঝে কুচ নেহি হোগা।
বাবা ভ্রু কুচকে বলল,
-কিসের হোগা বাবা? এই খোকার মা? এদিকে আসোনা। দেখোতো ছেলেটা কিসের হোগার কথা বলছে?
– ছি বাবা। কেয়া বলতাহে তুম?
.
এবাবা তুই হিন্দিতে কথা বলা শুরু করলি কেনো বাবা?
মাথা ঝাকিয়ে বললাম
‘জরুরাত আছে’

বাবা অবাক হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে রইল।
– বাবার কৌতুহল কমাতে তার কানে কানে বললাম, মেরা এক বন্ধুকে টিভিতে দেখাবে আজ।
– এই চ্যানেলে দেখাবে?
– হ্যা।
– তা সেই বন্ধু কি মেল না ফিমেল।
– ফিমেল। বলেই মুচকি একটা হাসি দিলাম।
.
ওদিকে মায়ের মুখের হাফ ভাব ৫ সেকেন্ড পরপর পরিবর্তন হচ্ছে। মা কিছুই বুঝতে পারছেনা কি হচ্ছে এখানে।
মা অনেক কৌতুহল নিয়ে বাবাকে জিজ্ঞেস করল,
কি চলছে এখানে, আমাকে একটু বলবে প্লিজ।
বাবা আমাকে অবাক করে দিয়ে বলল,
– কি আবার চলছে। ফগ চলছে!!
.
বাবার কথা শুনে ছোট বোন খিল খিল করে হাসতে লাগলো।
তৃষাকে আবার ধমক দিয়ে বললান,
– এই লেডকি, হাস- মাত।
.
মা বিরক্ত হয়ে ঘরে চলে যেতে লাগলো।
বাবা তখন মা’কে ডাক দিয়ে বলল,
– কোথায় যাও তোমার বউ’মাকে দেখে যাও।
বাবার কথা শুনে সবাই যেনো লাফ দিয়ে উঠল। ঘরের ভেতর থেকে ছোট ভাই, বৌদি, বৌদি বলতে বলতে বেড়িয়ে আসলো।
.
ছোট বোন বলল,
-এই চ্যানেলে তো এখন কে.বি.সি হবে। মেয়েটা কি হট সিটে খেলবে আজকে?
– আরে না না। অডিয়েন্স পোল।
– তুই কিভাবে চিনবি।
– নীল রঙের ড্রেস পড়ে আসবে।
– নীল রঙের ড্রেস তো আরো অনেকেই পড়ে আসবে কিভাবে চিনবি?
– সাথ মে ওর বন্ধুও থাকবে লাল রঙের ড্রেস পড়ে।
– ও কোন পাশে বসবে সেটা বলেছে।
– হ্যা, অমিতাভ বাচ্চানের সামনে, আর হট সিটের পিছনে। সেকেন্ড র।
.
সাড়ে নটা বাজতে আর মাত্র ১ মিনিট বাকি। সবাই চুপ হয়ে গেছে। একটা এড হচ্ছে ক্যাটবেরি ডেইরি মিল্কের।
এই এড আগে জীবনেও এত মনোযোগ দিয়ে দেখিনি।
সবার মনোযোগ টিভির প্রতি।
মনে হচ্ছে ইন্ডিয়া বনাম অস্ট্রেলিয়ার আই সি সি ওয়ার্ল্ড কাপ ফাইনাল ম্যাচ হচ্ছে। লাস্ট অভার চলছে, জিততে হলে ৩ বলে ৫ রান দরকার ।
.
কেবিসির থিম মিউজিক বাজতে লাগল। মিউজিকের সাথে সাথে আমারো মনের মধ্যে ধুম ধাম ঘন্টা বাজতে লাগল।
অমিতাভ বাচ্চন এসেই তার কমন ডায়লগ বাজি শেষ করল। কয়েকটা বাণীও ছাড়লো। ফাস্টেস্ট ফিঙ্গার শেষ হল। কন্টেসটেন্ট হট সিটে বসে পড়ল।
এক পর্যায়ে অমিতাভ বাচ্চন জরিদারের কথা জিজ্ঞেস করল,
আমার হার্টবিট বেড়ে গেল।
জরিদারের পেছনে দুজন ভদ্রলোক বসে আছে। একজনের গায়ে নীল শার্ট।
আরেকজন গায়ে লাল। একজন আরেক জনের হাতের মধ্যে হাত দিয়ে বসে আছে। ছোট বোন বলছে দাদা এরা তো ছেলে মানুষ। তুই না বলেছিলি একটা মেয়ের কথা। পেছন থেকে ছোট ভাই হো হো করে হাসতে হাসতে বলল,
– তৃষা, এরা মোটেও ছেলে মানুষ না।
– তাহলে এরা কে?
– এরা হলো “গে ”
– সেটা আবার কে? ( মা জিজ্ঞেস করল)
– আরে সমকামী সে। ( বাবা বলল)
– তাহলে বউ মা’টা কে?
.
আমি হাউ মাউ করে হিন্দি ভাষায় কান্না শুরু করলাম।
– মেরে সাথ কেন অ্যাছা হলো রে, ও মা।
– ম্যা উছকো কিতনা চাহতা থা,
ইয়ে ও কাভি সোচ না সাকা…
.

…………….

আরও পড়ুন,

সম্পর্ক

Share This Article
Leave a comment

Adblock Detected!

Our website is made possible by displaying online advertisements to our visitors. Please consider supporting us by whitelisting our website.