Bengali Short Stories For Adults (ছোট গল্প বড়দের জন্য) |Choto Golpo Bangla

Samaresh Halder
6 Min Read

মৃত্যু রহস্য (পর্ব-২)

খুব কাছের দুইজন বন্ধুকে হারিয়ে আমিনুল অনেকটাই ভেঙে পড়েছে। ভয়ও পেয়েছে। কি করবে সে বুঝতে পারছেনা। খারাপ সময়ে আপন মানুষগুলোকে কাছে আশা করে সবাই। কিন্তু এখানে নিজের বউ,যাকে ভালোবেসে বিয়ে করেছে। সেই মানুষটাই তাঁকে প্রতিনিয়ত ভয় দেখিয়ে যাচ্ছে,শাস্তি দেওয়ার জন্য জঘন্য কাজ করতেও দ্বিধাবোধ করছেনা। অথচ আমিনুল জানেইনা,কি কারণে নুসরাত এরকম করছে।

ছোট গল্প বড়দের জন্য

আগের পর্ব পড়ুন

কোনো উপায়ন্তর না দেখে আমিনুল তাঁর ডিটেকটিভ বন্ধু পলাশকে ব্যাপারটা জানায়। যদিও পলাশ টাকার বিনিময়ে কাজ করে। তাঁর খুব ভালো পরিচিতি আছে। অনেক জটিল জটিল সমস্যার সমাধান করে নিজের বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিয়েছে। সে কারণেই যে কোনো রহস্যময় মামলা গুলোতে তার নাক গলানো যেনো ফরজ হয়ে গিয়েছে।

আমিনুল ওইদিনই ঢাকায় চলে আসে এবং পলাশের সাথে দেখা করে।

“শোন, প্রথম থেকে সবকিছু বিস্তারিত বল। কোনো কিছুই যেনো বাদ না পড়ে। খুব ছোট বিষয়ও যেনো বাদ না পড়ে। অনেক সময় দেখা যায় আমরা যেটা তুচ্ছ মনে করে,কোনো গুরুত্ব দেইনা। পরে দেখা যায় সেই বিষয়টাতেই সব রহস্য লুকায়িত থাকে।” পলাশ বলল।

আমিনুল একটু সময় নিয়ে সব কিছু বিস্তারিত বলল। নুসরাতের অদ্ভূত ব্যবহারের কথাও বলল।

সব শুনে পলাশ কিছুটা চিন্তায় মগ্ন হয়ে গেলেন। ভাবতে লাগলেন তারপর বললেন তানিয়ার ব্যাপারটাতে তুই কোনো কিছু চেপে গিয়েছিস। সব সত্য বলিস নি।

“না,কোনো কিছুই লুকাইনি। তানিয়া তাঁর নিয়তি মেনে নিয়েছিল। সে তানভীর কে খুশি মনেই বিয়ে করেছিল। তারপরেও কেনো এমন হলো জানিনা। “আমিনুলের সহজ সরল উত্তর।

আধুনিক ছোট গল্প

Loading...

সব কিছু শুনে যা মনে হলো। তুই সহ ছয়জন ছিলি তোরা। তারমেধ্য তানভীর অনেক আগেই মারা গিয়েছে। আর দুজনকে রিসেন্টলি খুন করা হয়েছে। আরও তিনজন বাকি আছে তুইসহ। যদিও তুই এর সাথে সরাসরি জড়িত না। তবে আমার মনে হয় তোকে কিছু করবেনা এখনি। তোর আরও দুইজন বন্ধু আছে তাদেরকে সর্তক থাকতে হবে। কারণ নেক্সট টার্গেট তারাই।

আর আমার মনে হয় নুসরাত পরিস্থিতির স্বীকার। হতে পারে তাঁকে কেউ ব্ল্যাকমেইল করছে। তবে এসবের পেছনে যে আছে,সে ভালেবাসার কারণেই এসব করছে। ভালোবাসা ছাড়া একরকম কখনোই কেউ কারো জন্য করতে পারেনা।

আরো পড়ুন,

শরীরী প্রেমের গল্প – শারীরিক প্রেমের গল্প

প্রতিশোধের শারীরিক সম্পর্ক রোমান্টিক গল্প

হতে পারে তানিয়াকে কেউ খুব ভালোবাসতো। তাঁর ভালোবাসাটা ছিলো এক তরফা কিন্তু ভালোবাসাটা মিথ্যা ছিলো না। তানিয়াকে যারা সবার সামনে এনে অপমান করেছে। তাদের সবার ওপরেই প্রতিশোধ নিচ্ছে।

আবার ধারণা ভুলও হতে পারে। এটা জাস্ট অনুমান এর বেশি কিছুনা।
আর অনুমানকে কেন্দ্র করেই আমাদের এগোতে হবে। যেহুত আমাদের হাতে কোনো ক্লু নেই। শুধু লাশগুলোর বুকে স্পষ্ট করে লেখা ছিলো তানিয়া। যতো রহস্য তানিয়া নামটার মধ্যেই।

Choto Golpo Bangla Story

হতে পারে তানিয়া বাসর ঘরে তানভীর কে খুব নির্মম ভাবে খুন করেছে। আর এখন সময় বুঝে বাকি সবাইকে শাস্তি দিচ্ছে। যারা তাঁর সাথে অন্যায় করেছিলো,সবার সামনে তাকে খারাপ বানিয়েছিল।

হতে পারে নুসরাত তানিয়ার কোন আপনজন। নুসরাত কারো সাহায্য নিয়ে এসব করছে।

এসবই জাস্ট অনুমান।
সত্য হতেও পারে আবার নাও হতে পারে। তবে আমাদের এগোতে হবে এসব নিয়ে।

সর্বপ্রথম তানিয়ার সম্পর্কে আমাকে জানতে হবে।

তানিয়া কাউকে ভালোবাসতো কিনা?
কিংবা তানিয়াকে কেউ ভালোবাসতো?

তানিয়া কাউকে ভালোবাসতো কিনা জানিনা। তবে তাঁর জন্য অনেকেই পাগল ছিল। তবে যতদূর মনে পড়ে একটা ছেলে তার জন্য একটু বেশিই পাগল ছিল।

হ্যাঁ,হ্যাঁ। সেই ছেলেটার সম্পর্কেেই বল।

শারীরিক প্রেমের গল্প

ছেলেটার নাম ফাহাদ। ভার্সিটির পাশেই তাঁর বাসা ছিলো। প্রতিদিনই তানিয়াকে দেখতে আমাদের ক্যাম্পাসে আসতো। তানিয়াকে কয়েকবার ভালোবাসার কথাও বলেছিল। কিন্তু তানিয়া সোজা না করে দিয়েছিল। তবুও সে তানিয়ার পেছনে লেগে থাকতো। তানিয়াকে কেউ বিরক্ত করলে তাঁকে মারধর পর্যন্ত করতো।

তানিয়া আর ফাহাদ সম্পর্কে আমাকে আরও গভীরে জানতে হবে।

তানিয়ার কোনো বয়ফ্রেন্ড ছিলো কিনা?

মনে হয়না,আমিনুল বলল।

পলাশ,আমিনুলকে নিয়ে বেরিয়ে পড়লো। সর্বপ্রথম গেলো তানিয়ার বাসায়।
সেখানে গিয়ে তারা কাউকে পেলোনা।
একজন বৃদ্ধ লোকের কাছ থেকে জানতে পারলো। যেদিন তানিয়ার সম্পর্কে তাঁর বাবা মা জানতে পারে যে,তাদের মেয়ে অন্য একটা ছেলের সাথে একটা রুমের ভিতর এক ঘন্টা ছিলো। সেটা জানাজানি হয়ে গিয়েছে।
সেদিনই তারা মানসম্মানের ভয়ে মৃত্যুকে বরণ করে নেয়।
আর বিয়ের পরের দিন তানিয়াকেও খুঁজে পাওয়া যায়নি।

একটি ছোট গল্প

তারপর সেখান থেকে তারা ফাহাদের বাসা যায়। ফাহাদের বাবা মাকে পেলেও ফাহাদকে পেলোনা।

যখন তারা ফাহাদ সম্পর্কে জানতে চাইলো।

তখন তারা বলল, ফাহাদ একটা মেয়েকে খুব ভালোবাসতো। তাঁর জন্য নিজের জীবন পর্যন্ত দিতে প্রস্তুত ছিল। কিন্তু মেয়েটা তাঁকে ভালোবাসতো না।
একদিন মেয়েটা একটা ছেলের সাথে একটা রুমে ভিতর ধরা পড়ে। তারা এক ঘন্টার মতো রুমের ভিতর ছিলো। সেইদিন ফাহাদ খুব কেঁদেছিল। যেই ছেলেটার চোখ দিয়ে কখনো একফোঁটা পানি বের হতো না সেই ছেলেটাই সেদিন অঝরে কেঁদে ছিল। আর বলেছিল তানিয়া অনেক ভালো একটা মেয়ে। সে কখনোই এরকম একটা কাজ করতে পারেনা। তাঁকে ফাসানো হয়েছে,সে পরিস্থিতির স্বীকার হয়েছে।

সেদিন রাতে ফাহাদ বাড়ি থেকে চলে যায়। আজ পর্যন্ত ফিরে আসেনি। যাওয়ার আগে বলে গিয়েছে তাকে যেনো আমরা না খুঁজি।

পলাশ আর আমিনুল ফাহাদের বাসা থেকে যখন বের হবে। ঠিক তখনই আমিনুলের ফোনে নুসরাতের ফোন আসে।

হ্যাল, তোমার বন্ধু রাশেদের লাশ পাওয়া গিয়েছে একটা নর্দমায়। দুঃখের বিষয় হলো তাঁকে কেউ চিনতে পারছেনা। তুমি গিয়ে দেখো চিনতে পারো কিনা। হাজার হলেও তোমার ভার্সিটি জীবনের বন্ধু। এটা বলেই নুসরাত ফোন রেখে দেয়।

পলাশকে সব বলল, আমিনুল।

পলাশ আবার চিন্তায় পড়ে গেলেন।
সে ভেবেছিলো এটা সিরিয়াল কিলার। কারণ প্রথম খুন দুইটা পাঁচদিন পরপর হয়েছিল। কিন্তু আজকেরটা তিনদিন পর।

তারমানে সুযোগ বুঝে কাজ করে যাচ্ছে খুনি। সে কোনো সিরিয়াল কিলার না। প্রথম দুইটা খুন হয়তো এমনিতেই মিলে গিয়েছিল।

পলাশ আমিনুলকে নিয়ে রাশেদ এর লাশের কাছে যাওয়ার জন্য রওনা দিলো।

চলবে….

©লিখেছেন – আমিনৃুর রহমান

আরো পড়ুন,

ব্রেকআপ ও যৌনতা : ব্রেকআপ হওয়ার গল্প

বাসর রাতের গল্প রোমান্টিক

Share This Article