ছেলে-বৌমা যথেষ্ট আদর যত্নে রাখলেও বুকের বাঁদিকটায় অভ্যন্তরে, মাঝে মধ্যেই চিনচিন করে ওঠে অমিয়বাবুর । দীর্ঘ বাহান্ন বছরের বিবাহিত জীবনে অনায়াসেই যে মানুষটা,তাঁর চোখমুখের হাবভাব দেখেই বলে দিতে পারতো তাঁর মনের কথা, তাঁর মানসিক অবস্থার কথা.. সেই মানুষটা আর নেই।
মারণব্যাধিটা যেন কিছুতেই আর হার মানলোনা উপসংহারে। আজকের দিনেই গতবছর চিরতরে হারিয়ে গিয়েছিলেন অমিয়বাবুর স্ত্রী,মণিমালা ।
রোমান্টিক ভালোবাসার ছোট গল্প
আজকের দিনে মানুষটা ইহলোকে থাকলে কতই না খুশি হতো। ভাবতে-ভাবতে চোখের পাতা ভারী হয়ে আসে প্রবীণ মানুষটির ।
অপারেশন থিয়েটার থেকে নার্সকে দ্রুত পদক্ষেপে এগিয়ে আসতে দেখেই,অমিয়বাবু এবং তার একমাত্র পুত্র,তন্ময় উঠে পড়লো চেয়ার ছেড়ে।
নার্স বললেন, “স্যার একবার ডাকলেন, তাড়াতাড়ি যান!”
ঢোঁক গিলে অমিয়বাবু জানতে চাইলেন: “আমার বৌমা কেমন আছে?”
উত্তর এলো:
” উনিই ঠিক আছেন.. ডোন্ট ওয়ারি।”
রোমান্টিক ভালোবাসার ছোট গল্প কাহিনী
সদ্যোজাতর কাপড় সরিয়ে অনাবৃত করে, ডাক্তার’বাবু বললেন:
“কি !! খুশি তো? মিষ্টি খাওয়াবেন কিন্তু।”
প্রাণবন্ত হাসিতে সম্মতি জানালো তন্ময়।
শিশুটির দিকে স্বপ্নমাখা চোখে,একদৃষ্টে কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইলেন অমিয়বাবু। তাঁর দৃষ্টি আঠার মত আটকে গেলো কন্যা শিশুটির উরুর উপর,জড়ুলটার দিকে। মণিমালার দেহের হুবহু একই অংশে এমনই একটা জড়ুল ছিলো। আবেগোচ্ছ্বাসে গাল ভেজালেন
অমিয়বাবু। স্মৃতির অতলে তিনি ডুবে গেলেন এক লহমায়।
সেদিন অমিয়’বাবুকে বিষাদগ্রস্থ দেখে, মৃত্যুশয্যায় তাঁর স্ত্রী মণিমালা বলেছিলেন:
“অমন করে মুখভার করে থাকলে আমিযে মরেও শান্তি পাবোনা গো! কথা দিলাম, তাড়াতাড়ি ফিরবো। “
ফুটফুটে শিশুটির কান্নার শব্দে বর্তমানে ফিরে এলেন প্রবীণ মানুষটি।
একটা বিধিবৎ নোট এগিয়ে দিয়ে ডাক্তারবাবু বললেন:
“লিখে ফেলুন চটপট,কি দেখলেন ।”
কম্পমান হাতে অমিয়বাবু লিখেছিলেন,
‘আমার মণি’
গল্প : “মেড ফর ইচ আদার”
আরো পড়ুন, Bangla Premer Golpo 2024 (অন্য বসন্ত)