Jamai Sasthi 2024
জামাই ষষ্ঠীর গল্প
বউ ফোনে বলল, ” আসছো তো জামাইষষ্ঠীতে?”
আমি বললাম, ” এই পরিস্থিতিতে আর কি করে যাবো?”
গত দু বছর ষষ্ঠী হয়নি। আগের বছর অফিসের কাজে আটকে গেলাম, যেতে পারিনি , তার
আগের বছর শ্বশুর মারা গেলেন ।
আগের বছর শ্বশুর মারা গেলেন ।
এসব ব্যাপারে শ্বশুর বাড়ির কর্তব্যবোধ প্রবল। যেতে না পারলেও আমার পাওনাটা ঠিক
পেয়ে যাই। প্রতি বছর ষষ্ঠীতে জামা প্যান্ট পাই, এখন আর ছোটবেলার মত জামা ছোটও
হয় না, ছেঁড়েও না। এই এতো জমে গেছে। তাই আগের বছর শাশুড়িমাকে বলেছিলাম জুতো
দিতে। কিন্তু জুতো দিতে নেই । তাই বউ বুদ্ধি করে মায়ের কাছ থেকে ক্যাশ তিনহাজার
টাকা নিয়ে রেখেছিল, পরে আমাকে জুতো কিনে দেবে বলে। ষষ্ঠীর পরে বউকে টাকাটা
চাইতে বললে, “ওটা জুতোর জন্য আমার কাছে রাখা আছে, এখন যেটা পরছো, ওটা ছিঁড়লে
কিনে দোব।” শ্বশুরমশাই এর দেয়া মোকাসিনো কোম্পানির জুতো আজ সাত বছর ধরে পরছি,
ছেঁড়েই না। আমার হকের জামাইষষ্ঠীর পাওনা টাকাটা বউ হজম করে দিল। এবার না গেলে
এটাও যাবে।
পেয়ে যাই। প্রতি বছর ষষ্ঠীতে জামা প্যান্ট পাই, এখন আর ছোটবেলার মত জামা ছোটও
হয় না, ছেঁড়েও না। এই এতো জমে গেছে। তাই আগের বছর শাশুড়িমাকে বলেছিলাম জুতো
দিতে। কিন্তু জুতো দিতে নেই । তাই বউ বুদ্ধি করে মায়ের কাছ থেকে ক্যাশ তিনহাজার
টাকা নিয়ে রেখেছিল, পরে আমাকে জুতো কিনে দেবে বলে। ষষ্ঠীর পরে বউকে টাকাটা
চাইতে বললে, “ওটা জুতোর জন্য আমার কাছে রাখা আছে, এখন যেটা পরছো, ওটা ছিঁড়লে
কিনে দোব।” শ্বশুরমশাই এর দেয়া মোকাসিনো কোম্পানির জুতো আজ সাত বছর ধরে পরছি,
ছেঁড়েই না। আমার হকের জামাইষষ্ঠীর পাওনা টাকাটা বউ হজম করে দিল। এবার না গেলে
এটাও যাবে।
জামাই ষষ্ঠী
বউ বলল, “এবারে না এলে আর হয়ত কোনোদিন জামাইষষ্ঠীতে আসা হবে না।”
বুকের ভিতরটা ছ্যাঁত্ করে উঠল, বললাম, “কেন? আর কোনোদিন আসা হবে না কেন?”
“এমনিতেই সুগার, প্রেসার, হাই কোলস্টরল তার উপর কোরোনা। বাঁচবে কি মরবে তার কোন
ঠিক আছে?”
ঠিক আছে?”
হায়, পোড়া কপাল আমার ! এই আমার ভালোবাসার প্রতিদান ! বিনিপয়সায় এত গুণধর স্বামী
পেল অথচ এতটুকু কৃতজ্ঞতা বোধ নেই ! বাড়ি, গাড়ি, জায়গা, জমি সব তার নামে, এমনকি
চাকরিটাও তার কাছে বন্ধক রেখেছি। মাস গেলে পাঁচ হাজার আমার হাতে দেয় । সে কিনা
আমার …….. !
পেল অথচ এতটুকু কৃতজ্ঞতা বোধ নেই ! বাড়ি, গাড়ি, জায়গা, জমি সব তার নামে, এমনকি
চাকরিটাও তার কাছে বন্ধক রেখেছি। মাস গেলে পাঁচ হাজার আমার হাতে দেয় । সে কিনা
আমার …….. !
আসলে জন্মকাল থেকেই পশ্চাদ্দেশে লাথ খেতে খেতে জায়গাটা এমন অসাড় হয়ে গেছে যে
এসব ছোটখাটো আঘাতগুলো অনুভব করতে পারলেও বুঝতে পারি না। হ্যা হ্যা করে একটু
দাঁত কেলিয়ে বললাম “তা অবশ্য ঠিকই বলেছ, দেখি ।”
এসব ছোটখাটো আঘাতগুলো অনুভব করতে পারলেও বুঝতে পারি না। হ্যা হ্যা করে একটু
দাঁত কেলিয়ে বললাম “তা অবশ্য ঠিকই বলেছ, দেখি ।”
দুদিন ছুটি নিয়ে পরের দিন একটা মালগাড়ির পাইলটকে বলে কয়ে ইঞ্জিনে চড়ে বসলাম।
সন্ধ্যাবেলা শ্বশুরবাড়ি পৌঁছে দেখি শাশুড়ির শরীর খুব খারাপ । বউকে জিজ্ঞাস
করলাম “কি হয়েছে?”
করলাম “কি হয়েছে?”
বউ বলল, “কেন বলিনি তোমায়? মায়ের শরীর খারাপ , বাঁচবে কি মরবে ঠিক নেই ।”
আমি একটু মিনমিন করে বললাম, ” ওটা মাকে বলেছিলে? আমি ভাবলাম আমাকে বলেছ।”
এমনিতেই বউএর কণ্ঠে মিষ্ঠতা একটু কম, তার উপর মায়ের শরীর খারাপ, মেজাজটা বেশ
উচ্চমার্গেই ছিল,” মরণ, যত বয়স বাড়ছে মতিভ্রম হচ্ছে তোমার । ভাবলে কি করে? ছি
ছি ছি , কানে শোনাও পাপ। কি শুনতে কি শুনেছো , কানে সবসময় কি গুঁজে রাখো ?
তোমার মরণ চিন্তা করব আমি? আমাকে না মেরে এত সহজে মরবে তুমি? তুমি যে যমেরও
অরুচি ! বুড়ো ভাম কোথাকার !”
উচ্চমার্গেই ছিল,” মরণ, যত বয়স বাড়ছে মতিভ্রম হচ্ছে তোমার । ভাবলে কি করে? ছি
ছি ছি , কানে শোনাও পাপ। কি শুনতে কি শুনেছো , কানে সবসময় কি গুঁজে রাখো ?
তোমার মরণ চিন্তা করব আমি? আমাকে না মেরে এত সহজে মরবে তুমি? তুমি যে যমেরও
অরুচি ! বুড়ো ভাম কোথাকার !”
হ্যা হ্যা করে একটু দাঁত কেলিয়ে বললাম ” তা অবশ্য ঠিকই বলেছ।”
জামাই ষষ্ঠীর গল্প
পরেরদিন শাশুড়ি কষ্ট করে বিছানায় বসে আশীর্বাদ করলেন, খাওয়া দাওয়াটাও বেশ
জম্পেশ হল। টাকাটার জন্য মনটা উসখুস করছিল, বউ সেটা বুঝতে পেরে বলল, ” আগের বছর
তো জুতো নিলে, এবারে কি নেবে?”
জম্পেশ হল। টাকাটার জন্য মনটা উসখুস করছিল, বউ সেটা বুঝতে পেরে বলল, ” আগের বছর
তো জুতো নিলে, এবারে কি নেবে?”
বললাম,” বছর চারেক আগের তোমার ফেলে দেয়া, স্ক্রিন ভাঙা মোবাইলটা আর চলে না,
আগের বারের আর এবারের টাকাটা মিলিয়ে যদি একটা নতুন মোবাইল কিনে দাও।”
আগের বারের আর এবারের টাকাটা মিলিয়ে যদি একটা নতুন মোবাইল কিনে দাও।”
ছেলের সংগে আলোচনা করে বউ নতুন মোবাইল অন লাইনে অর্ডার দিয়ে দিল। নতুন মোবাইল
পাবো এই আশায় মনটা কদিন বেশ উৎফুল্ল ছিল। দুতিনদিনের মধ্যে একসংগে দু দুটো
মোবাইল এল, এক একটার দাম সতেরো হাজার ন’শো নিরানব্বই টাকা !
পাবো এই আশায় মনটা কদিন বেশ উৎফুল্ল ছিল। দুতিনদিনের মধ্যে একসংগে দু দুটো
মোবাইল এল, এক একটার দাম সতেরো হাজার ন’শো নিরানব্বই টাকা !
একটা ছেলে নিল, আর একটা বউ। আমি বললাম, “আমার?”
বউ তার মাস ছয়েকের পুরনো মোবাইলটা দিয়ে বলল, ” আমার মোবাইলটা প্রায় নতুন, কদিন
আগে বিড়াল তাড়াতে গিয়ে, হাতের সামনে আর কিছু না পেয়ে মোবাইলটা ছুঁড়ে মারলুম,
স্ক্রিনটা শুধু দু এক জায়গায় স্ক্র্যাচ হয়ে গেছে আর ক্যামেরাটা ভেঙে গেছে ।
এটাই এখন চালাও। পরের তিন বছর যদি জামাইষষ্ঠী হয়, তাহলে হাজার দশেক জমবে, সেটা
দিয়ে একটা নতুন মোবাইল কিনে দোব। এমনিতেই তুমি কোন জিনিসের যত্ন জানো না, তার
উপর ভুলনচন্ডী লোক। এত দামি মোবাইল কোথায় কখন ভুলে ফেলে আসবে।”
আগে বিড়াল তাড়াতে গিয়ে, হাতের সামনে আর কিছু না পেয়ে মোবাইলটা ছুঁড়ে মারলুম,
স্ক্রিনটা শুধু দু এক জায়গায় স্ক্র্যাচ হয়ে গেছে আর ক্যামেরাটা ভেঙে গেছে ।
এটাই এখন চালাও। পরের তিন বছর যদি জামাইষষ্ঠী হয়, তাহলে হাজার দশেক জমবে, সেটা
দিয়ে একটা নতুন মোবাইল কিনে দোব। এমনিতেই তুমি কোন জিনিসের যত্ন জানো না, তার
উপর ভুলনচন্ডী লোক। এত দামি মোবাইল কোথায় কখন ভুলে ফেলে আসবে।”
হ্যা হ্যা করে একটু দাঁত কেলিয়ে বললাম ” তা অবশ্য ঠিকই বলেছ।”