Dawshom Awbotaar Review, Cast – প্রবীর পোদ্দার জুটি কেমন হলো ? Watch Online

sudiproy877
9 Min Read

Dawshom Awbotaar Review, Cast

কষ্ট হচ্ছে। বড্ডো কষ্ট হচ্ছে, বড্ডো…বড্ডো কষ্ট! আর শালা পারছি না। আর পারছি না আমি। মাক্কালি। শালা বোকাচোদা…এভাবে গাঁড় মেরে চলে গেল ‘ও’! এত বড় গান্ডু শালা আমি!

– কথা বলেন না এ ভাষাতে? অন্তরঙ্গ মুহূর্তে? বা বেহেড মাতাল অবস্থায় স্বগতোক্তি করার সময়? বলেন না ; হ্যাঁ? বলেন তো? সুতরাং এটাও নিশ্চয়ই জানেনও যে, খিস্তি বা ‘ কলিং নেমস’ , এসব মোটেই আমোদ-আহ্লাদের বিষয় নয়। বরং এটাই হলো রক্ত মাংসের। অতএব, সিনেমার ভাষাও এরকম হবে না কেন? বাস্তবনানুগ?
বিদেশে, “ফাক ইউ, ইউ অ্যাসহোল” , সিনেমার পর্দায় ততটাই ডাল-ভাত বিষয়, যতটা অনস্ক্রিন বা অফস্ক্রিন চুম্বন। ওখানে। ওই বিদেশে।

Dawshom Awbotaar Cast

Loading...
  • Prasenjit Chatterjee
  • Rajesh Sharma
  • Jaya Ahsan
  • Anirban Bhattacharya
  • Jisshu Sengupta
  • Subhashree Ganguly
  • এদেশে,বাংলা সিনেমায় এ বিষয়টিকে বিরিয়ানির মতো মহার্ঘ্য হিসাবে পরিবেশন করতে সাহস দেখিয়েছেন যাঁরা, তাঁদের মধ্যে অন্যতম একজন নির্দেশক হলেন সৃজিত। এবং সৃজিতের ‘বাইশে শ্রাবণ’ চলচ্চিত্র। যদিও সেই বাইশে শ্রাবণে গন্ডগোল ছিল বিস্তর। ওই যে, ভাত ডাল না, খিস্তি পরিবেশিত হয়েছিল বিরিয়ানির মতো। খিস্তি ফর দা সেক অফ খিস্তি। অর্থাৎ সিনেমা পর্দায় নায়ক বলছেন – “বাল” কিংবা ” বোকাচোদা” এটা ছিল সোয়াগ এর মতো কতকটা। ওরে শাল্লা, কি খিস্তি দিল বে,–মার্কা।

এবং সম্ভবত সেই থেকেই বাইশে শ্রাবণ ফ্রাঞ্চাইজির কিছু ফ্যান বেস জুটে গিয়েছিল। যারা পর্দায় নায়কের মুখে খিস্তি শুনেই খুশি।

সেই ঘেরাটোপ থেকে বেরিয়ে কিন্তু আসতে পেরেছেন সৃজিত। এ ছবিতে, এই দশম অবতারে খিস্তি মোটেই খিস্তি নয়। বরং এক্সপ্রেশন অফ ইমোশন।

কিন্তু ফ্যানবেস আটকে থেকে গেছে সেই ” খিস্তি মানেই কি দিলো আট আনা কিলো” অবস্থায়।
বস্তুত আমি যে প্রেক্ষাগৃহে ফিলিমটি দেখতে গিয়েছিলাম সেদিন, তার সিংহভাগ দর্শকই ছিল সুবেশ-সুবেশা তরুণ তরুণীরা। সিটে বসার পর মুহূর্ত থেকেই হাত উঁচু করে সেলফি তুলে যাচ্ছিলেন যাঁরা বর/বউ, প্রেমিক/প্রেমিকাকে বাগিয়ে ধরে। আর হাফ-টাইমে খাবারের অর্ডার দিচ্ছিলেন এত দীর্ঘ যে ফিলিম দেখতে এসেছেন না খেতে, বুঝিনি।
আদতে এঁরা এসেছিলেন ফেসবুকে ” Sosthi sorted” স্টেটাস দিতে। এসেছিলেন পর্দায় খিস্তি শুনতে। শেয়ালের মতো সহর্ষে উল্লাস করছিলেন নায়ক কষ্ট পেতে পেতে স্রেফ ‘ বাঁড়া’ শব্দটি উচ্চারণ করলেই। চিৎকার করে বলছিলেন, প্রবীর স্যার তোর গাঁড় মারবে রে পোদ্দার, মাগীবাজি করিস না।

দশম অবতার সিনেমা Full Movie


দেবদাস দেখতে গিয়েছিলাম মেট্রোতে।
বুঝিয়ে বলা উচিত বাক্যটা। শাহরুখ অভিনীত দেবদাস দেখতে গিয়েছিলাম মেট্রো নামক প্রেক্ষাগৃহে। নাইট শো। পর্দায় নায়কের আবির্ভাবে পয়সা ছোঁড়া হতো যে যুগে, সেই যুগের শেষের দিকের ঘটনা এটা। থিকথিকে ভিড় চারিদিকে। ঘামের টকটক গন্ধ বাতাসে বাতাসে।
পয়সা ফয়সা ছোড়া হয়ে গেছে। স্বাভাবিক হিসাবেই। এবার সবকিছু স্তিমিত হওয়ারই কথা। কিন্তু হিসাবে গোল বাঁধল। ঘটনাটা ঘটলো, আরও ঘন্টা খানিক পরে। দেবদাস রূপী শাহরুখ যখন মদের বোতল তুলে নিলেন হাত মুঠো করে। ওই তখনই উল্লাস উথলে উঠলো চরমে।
টপাটপ পকেট, লুঙ্গি, থলি থেকে বেরিয়ে এলো মদের বোতল। দর্শকদের। সঙ্গে সিক সিক সিটি – ” শাল্লা গুরু পি রাহা হ্যায়, হাম ভি পিয়েঙ্গে।”
হতভম্ব আমার চারিপাশে তখন উঠলো মদের ফোয়ারা। দলে দলে লোক স্ক্রিনের সামনে মদ ছিটিয়ে নাচতে থাকলেন উদ্দাম।

এবং হারিয়ে গেল দেবদাসের কষ্ট।
স্পষ্ট হয়ে থাকলো… স্রেফ মদ্যপান।

হ্যাঁ, দেবদাস ভালো ছবি নয়। কিন্তু দেবদাস মাতালদের মুখপাত্রও নয়।

দশম অবতার মুভি রিভিউ


একই রকম কষ্ট পেলাম পরিপূর্ণ প্রেক্ষাগৃহে দশম অবতার দেখতে গিয়ে।

উদাহরণ–
প্রেমিকা বারণ করেছিল কচর মচর করে পান চিবোতে। বলেছিল, বরং চুইংগাম খাও। কিন্তু এই বিশ্রী নেশাটা ছাড়ো, প্লিজ।
এবং অনুগত প্রেমিক , প্রথম-প্রেমের অ্যাড্রেনালিন রাশে মজে গিয়ে ছেড়েও দিয়েছিল পান খাওয়া বিলকুল। কিন্তু শেষমেশ চূড়ান্ত কষ্টের মুহূর্তে যখন সেই দগ্ধ-প্রেমিকই মুখে গুঁজে নিচ্ছে সেই ছেড়ে আসা পানপাতার খিলি ফির-সে, তখন দর্শক আসন থেকে চিৎকার উঠছে– বাংলা মদ খাওয়ার পর পান কে খায় বাঁড়া।

উদাহরণ নম্বর দুই–
সহকর্মীর প্রেমিকা সুইসাইড করেছে। যে সহকর্মীর সাথে এতদিন কর্মস্থলের জন্য উপযুক্ত যাবতীয় গাম্ভীর্য বজায় রেখে এসেছে তার আরেক উর্দ্ধতন কর্তা। এবং সেই কর্তাই সুইসাইডের কথা জানতে পেরে বলে উঠছে নিয়মের খোলস ছেড়ে–” তুই ভালো আছিস তো? হ্যাঁ? ভালো আছিস!! বাল ভালো আছিস! ফিরে আয়। মদ খাবো” তখন দর্শক মহলে হুল্লোড় উঠছে–

মাল খাব মাল খাব মাল খাব।

IMG 20231026 143042 1698310882465

Dawshom Awbotaar Full Movie Story

রাইনার মারিয়া রিলকে।
ভদ্রলোকের নাম নাম প্রথম শুনি সুনীল গাঙ্গুলীর লেখায়। কবি। জার্মান। যে কবির কবিতা ছিল সুনীলের প্রাণাধিক প্রিয়। সেই রিলকে।
পড়তে তো হবেই অতএব। এদিক ওদিক খুঁজে আর গুগলিয়ে পড়ে ফেললাম নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর অনুবাদ। চমকে গেলাম বুঁদ হলাম।

কিন্তু সৃজিত পৃথক।

সৃজিত বেটাচ্ছেলে কোথেকে খুঁজে এনেছে নিবারণ চক্রবর্তীর অনুবাদ। রিলকের। সে অনুবাদ এত অসম্ভব রকমের তীব্র, এত দুরন্ত রকমের শাণিত এবং এত চমৎকার সে কবিতার পাঠ তথা প্রয়োগ যে স্রেফ এটির জন্যই দশম অবতারের সমস্ত খামতি ভুলে যাওয়া যায়। (আমার ঘোরতর সন্দেহ, অনুবাদটিও সৃজিতের নিজের লেখা।)

বাংলা সিনেমা জগতের অবস্থা শোচনীয়। শোচনীয় বাংলা ছবির দর্শকদের মননও। তারা শাহরুখের জওয়ানেও ফ্রেঞ্চ রিভলিউশনের প্রতীক খুঁজে পায় ( মাক্কালি এ নিয়ে পোস্ট আছে একজনের), কিন্তু বাঙলা সিনেমা ভালো হয়েছে বলতে জাত মারা যায় তাদের বিচ্ছিরি।

সেই তাদের জন্যই কিন্তু কখনো কখনো, আই রিপিট সর্বদা নয়, কখনো কখনো, সৃজিত শিক্ষক স্বরূপ।

বাঙালি জাতিকে ঘাড় ধরে পরিচয় করিয়ে দিলেন আন্তর্জাতিক লেখনীর সাথে। বস্তুত, রিলকের কবিতাই এ সিনেমার উপজীব্য।


Dawshom Awbotaar Download Free

না। দশম অবতার থ্রিলার নয়। দশম অবতার ” ওরে শালা, সিনেমার নায়কও মদ খায়। খিস্তি মারে” নয়।

দশম অবতার একটি চলচ্চিত্র।
যে চলচ্চিত্রে মারাত্মক অভিনয় করেছেন প্রতিটি কুশীলব।
প্লটে টুকটাক খামতি ছিল। প্লট প্রেডিক্টেবলও কিছু কিছু ক্ষেত্রে। কিন্তু সেসব চাপা পড়ে গেছে দুর্দান্ত অভিনয় আর চমৎকার সংলাপের কারনে। যে সংলাপ লিখেছেন সৃজিতই। যে অভিনয়কে অভিনেতাদের কাছ থেকে আদায় করেছেন সৃজিতই খোদ।

এককথায় যদি দশম অবতারের বিষয়ে বলতে হয় তবে একটুকরো সংলাপ তুলে ধরা যেতে পারে। নিঝুম রাতে পাশাপাশি হেঁটে যাচ্ছে প্রেমিক-প্রেমিকা। আশপাশের বাড়িতে তখন ঘুম। টুকটাক টেলিভিশন সেটের শব্দ। আর ঠিক সেই মুহূর্তে পুরুষটি বলে উঠল– ” কি অদ্ভুত একটা সময় যাচ্ছে না? প্রেম, মৃত্যু…দুশ্চিন্তা, ভালোবাসা, পুলিশ,পার্ক!”
উত্তরে মেয়েটি মাথা নিচু করে আউড়ে গেল কিছু লাইন
” নিজেকে পোড়াও আগুনের মতো রেগে,
বড় ছায়া দাও আমিও খানিক চলি,
মুগ্ধতা থাক ত্রাসের আঙুল ধরে,
সুন্দর যাক ভয়ঙ্করের গলি…”

দশম অবতারের গল্প ঠিক এটাই।

আর হ্যাঁ, এ ছবিতে একটি স্বপ্নদৃশ্য রয়েছে। যে স্বপ্ন-দৃশ্যের নির্মাণ একজন জাত-পরিচালকের পরিচায়ক।


থ্যাংক ইউ সৃজিত। আমাদের anatomy পড়াতেন যিনি, সেই ম্যাডামের সুযোগ্য পুত্র আপনি। একটু ব্যক্তিগত দুর্বলতা তো তাই ছিলোই আপনার উপর। সেই দুর্বলতা আরো বেড়েছিল ক্রমাগত আপনার সুশিক্ষিত, রুচিশীল, witty , রাজনীতি-সচেতন পরিচালক রূপটিকে দেখতে দেখতে। তাই শেষ কয়েক বছরে আপনার ছবির নির্মাণ দেখে কষ্ট হতো। অনেক বকওয়াস ফিলিম বানিয়েছেন আপনি। বড় তাড়াহুড়ো করে ফেলছেন। অসম্ভব খিদে হয়ত আপনার। কিংবা অন্য কিছু। জানি না। তবে ঘেঁটে ফেলেছিলেন সবটা। কিন্তু এবার আবার ফিরে এলেন নিজের পথে। অতি বড় নিন্দুকও বুক বাজিয়ে বলতে পারবে না দশম অবতার এক্কেবারে জঘন্য ছবি।

থ্যাংক ইউ।

হ্যাঁ আমি এও জানি, আর আপনিও বোধকরি জানেন যে, এ লেখা পড়ে হাসবে বেশিরভাগই। তাতে কী?

আপনি ফিল্ম বানিয়ে যান। আপনি সুশিক্ষিত। আপনিই তাই পারবেন পরিপূর্ণ প্রেক্ষাগৃহে হাসতে হাসতে মরে যাচ্ছে যখন দর্শককুল, তখন এক দুজনকে ভালো লাগায় কাঁদিয়ে ফেলতে।

সেটাই বা মন্দ কী?

পুঃ– অনুপম রায়, ” আমাকে ঘুড়ি ভেবে ওড়াস না, নরম আঙুল কেটে যাবে, উপড়ে নেব নিজেকে” থেকে
” আমি বাউন্ডুলে ঘুড়ি, যে আমাকে বাসবে ভালো তার আকাশেই উড়ি” এই যে আপনার জার্নি…থ্যাংক ইউ স্যার। আমি শ্রোতা হিসাবে মুগ্ধ।

Also read,

Bagha Jatin Movie Review

Durga Puja Best Movie Release 2023

Share This Article