Sohorer Upokotha Movie Review – শহরের উপকথা
Sohorer Upokotha Review
করছি যেটা আমি বাস্তবে করবো ভাবতেও পারিনা । তবে সত্যি সত্যিই বাস্তবে
তেমন কোন পরিস্থিতির সম্মুখীনও হলে কি আমার ভেতর থেকে এমন কোন আমি বেরিয়ে আসতে
পারে যাকে আমি নিজেই চিনি না !
আভাস আমরা আগে থেকে পাই না, হঠাৎ করেই একদিন আমদের সামনে খুলে যায়
ওয়ান্ডারল্যান্ড ! যেখানে বিবেক পেরিয়ে ঢুকতে হবে, কেউ কিচ্ছুটি টের পাবে না ।
তখন ভেতর থেকে বেরিয়ে আসতে দানবিক আমি যাকে আমি বা আমার বন্ধু বান্ধব কেউ চেনে
না । ঋত্বিকের এই ভয় আমাদের যে কারো জীবনে যে কোন মুহূর্তে নেমে আসতে পারে
!
শহরের উপকথা মুভি রিভিউ
ঋত্বিক কাঙ্গাল, ভালবাসার জন্য । সে যাদের ভালবাসে তাদের আগলে রাখার জন্য
নিজেকে উজার করে দেয় । এভাবেই যে প্রতিনিয়ত ঠকেছে, কাছের মানু্ষদের থেকে,
জীবনের থেকে ! এবার প্রশ্ন হল আমরা যদি জীবনে ব্যর্থ হই, সব দিক
থেকে, আমাদের যদি জীবনে কোন লক্ষ্য না থাকে, আমরা যদি দেশ ও দশের জন্য না
ভাবি তবে আমাদের এই জীবনের কি কোন মূল্য থাকে ? যদি না থাকে তবে আমাদের
এই জীবন নিয়ে কি করা যায়? জীবন শেষ করে দেওয়া যায় ? সিনেমার
ট্রেইলারে আমরা দেখতে পারি যখন মৃগাঙ্ক( অনিন্দ্য ব্যানার্জি) ঋত্বিককে (জয়
সেনগুপ্ত) কে প্রশ্ন করে –
এরপর ওদের মধ্যে যা কথোপকথন হয় বাংলা সিনেমায় এমন ইন্টেন্স,থ্রিলিং কথপোকথন
সম্প্রতি খুব কমই দেখেছি ! যেমন সংলাপ, তেমন ক্যামেরা মুভমেন্ট, তেমন আবহ
সংগীত, তেমন লাইটিং, কালার গ্রেডিং ! আর অভিনয় , আহা !
অনিন্দ্য ব্যানার্জি দারুণ তবে জয় সেনগুপ্ত আবারো (“বিলু রাক্ষস” এর পর )
দেখালেন একটা সিনেমাকে তিনি একাই টেনে নিয়ে যেতে পারেন । এনাকে আশাকরি
“ক্রিমিনালি আন্ডাররেটেড” বলা যায় । এমন মাপের অভিনেতা অথচ বাংলা সিনেমায় তেমন
দেখাই যায় না !
Sohorer Upokotha Movie Cast & Crew
- Rahul Banerjee
- Anindya Banerjee
- Subhasish Mukherjee
- Joy Sengupta
- Lama Halder
- Basabdatta Chatterjee
- Bidipta Chakraborty
- Director – Baappa
লিখেছেন বাংলাদেশের জাতীয় পুরষ্কারপ্রাপ্ত চিত্রনাট্যকার আশরাফ
জীবন্ত করে তোলা, তাদের সাথে দর্শকদের একাত্ম করে দেওয়া, সহজ কথা নয় !
প্রথম পরিচালনা হিসেবে বেশ প্রশংসনীয় কাজ করেছেন বাপ্পা । প্রত্যেকটা
কথোপকথন শুনে মন্ব হচ্ছিল যেন থিয়েটারে নয় ঘরে বসে তাদের শুনছি দেখছি,
অতিনাটকীয়তা নেই !
অনুভূতি সঞ্চার করছিল হয়ত তিনি নাট্যকারের চরিত্রেই অভিনয় করেছেন বলে !
তবে শুভাশিস ব্যানার্জির সংলাপও বেশ ভাবিয়েছে । একটা জায়গায় তিনি দর্শকদের
উদ্দেশ্য করে বেশ কিছু কথা বলেছেন, যেটা শুনে কয়েক মুহূর্ত স্তব্ধ হয়ে বসেছিলাম
!
। হার্বার্ট, মহালয়া, শহরের উপকথার মত আরো এমন সিনেমায় ওনাকে দেখার জন্য
মুখিয়ে থাকব । রাহুল ব্যানার্জি বেশ ইম্প্রেস করেছেন, যেমন “পিউপা” তে করেছিলেন
! বাসবদত্তা চ্যাটার্জির অভিনয় ভীষণ সহজাত, যেন উনি অভিনয়ই করছেন না । “আসা
যাওয়ার মাঝে” সিনেমা দেখেই বুঝেছিলাম বাংলা ইন্ডাস্ট্রি আগামীতে ভাল কিছু পেতে
চলেছে । লামা হালদার ও দুর্দান্ত, কল্পনাই করা যায় না এই লোকটাই
“বিসর্জন” এ ছিল ! বিদিপ্তা চক্রবর্তী আমার ভীষণ পছন্দের অভিনেত্রী, উনি যতটুকু
সময়ে স্ক্রিনে থাকেন চোখ সরানো যায় না ! “নগরকীর্তন” এ কাঁদিয়েছিলেন,
“শহরের উপকথা” য় মন ভিজিয়ে দিলেন ।
চক্রবর্তীর (জয় সেনগুপ্ত) ঘরের আলো আধারী, তার চরিত্রের শেডকে দারুণ ভাবে
কম্পলিমেন্ট করেছে । অনির্বান মাইতির এডিটিং ভীষণ স্মুথ, সিনেমার
পেসিং এক মুহূর্তের জন্যও শ্লথ হয়নি !
গেল রাহুল ব্যানার্জি কার সাথে কথা বলত , তারপরে আবার একটা দৃশ্যে সেটা স্পুন
ফিড না করালে আরো ভাল লাগত । দর্শকরা আশাকরি এতটুকু বুঝতে পারতেন ।
নিজেদের সম্পর্কে এবং আমাদের পরিপার্শ্বিকের সম্পর্কে ভাবতে বাধ্য করবে, আমাদের
হয়ত নিজেদের এবং পরস্পরের প্রতি আরো যত্নশীল হতে শেখাবে । তাই সকলকে অনুরোধ
সিনেমাটা দেখুন, ভাবুন, কারণ এমন সিনেমা দুদিন পর পর আসেনা !