জামাই ষষ্ঠী 2024 – Jamai Sasthi Story / Article – জামাই ষষ্ঠীর গল্প

sudiproy877
13 Min Read

জামাই ষষ্ঠী 2024

সকাল থেকেই সরমার মেজাজটা থমথমে হয়ে আছে। মেয়ের বিয়ের পর এই প্রথম জামাইষষ্ঠী। কত সাধ ছিল মেয়ে-জামাই এনে ঘটা করে পালন করবেন আজ! আশেপাশের লোকজনকে দেখিয়ে দেবেন জামাই আদর কাকে বলে! দেখতে শুনতে মন্দ নয়, উঁচু পোস্টে চাকরি করে, মিষ্টভাষী, শান্তস্বভাবের জামাইটিকে নিয়ে প্রচণ্ড গর্ব ছিল তাঁর। কিন্তু সেই জামাই যে আস্ত একটা বখাটে সেটাই জানতে বাকি ছিল শুধু। কতো করে বললেন – “বাবা প্রথমবার ষষ্ঠী করতে আসবে একটা গাড়ি বুক করে পাঠিয়ে দিচ্ছি!”। কর্তাকে দিয়েও বলা করালেন। কিন্তু ঠ্যাটা জামাইয়ের সেই এক কথা – “তিন চারটেতো স্টেশন! ও আমরা ট্রেনেই চলে যাব!”
কাল রাতে মেয়ে জামাই যখন রিকশা থেকে নামলো, আওয়াজ পেয়ে ছুটে গিয়েছিলেন সরমা! কিন্তু তারপরই জোর হোঁচট! জামাইয়ের দুহাতই পুরো ন্যাড়া পোছা! এমনকি মেয়ের হাতেও ছোট্ট একটা ব্যাগ কেবল! সামনের বাড়ির মাধুও এবার প্রথম জামাই ষষ্ঠী করতে এসেছে। বাবা! সকালে দুজনে যখন ওদের বাড়ির সামনে এসে দাঁড়ালো, আশপাশের লোকজন পর্যন্ত ভিড় করে দাঁড়িয়ে গিয়েছিল! তিনিও কৌতূহল রাখতে না পেরে মুখ বাড়িয়েছিলেন বারান্দা থেকে। মাধুর বর এক হাতে ইয়া বড়ো একটা ইলিশ মাছ আর অন্য হাতে মিষ্টির হাঁড়ি নিয়ে মুচকি হেসে ভিড় ঠেলে এগিয়ে গিয়েছিল। নিখুঁত করে পরা ধুতি আর পাঞ্জাবীতে একেবারে রাজপুত্রের মত দেখাচ্ছিলো মাধুর বরকে! বিকেলে মাধুর মা জামাইয়ের আনা মিষ্টি দিতে এসেছিল। তার সাথে শুনিয়ে গেছিলো ষষ্ঠীতে জামাইয়ের দেওয়া দু দুখানা ঢাকাই জামদানী আমদানির গল্প! সরমা স্পষ্ট দেখেছিলেন গর্বে মাধুর মায়ের বুকের ছাতি যেন দশগুণ বেড়ে গেছে! আর নিজের জামাইকে দেখো! গলার কাছটা কেমন তেতো লেগেছিল সরমার! মৃদু তিরস্কারের সুরে শুধু মেয়েকে বলে উঠেছিলেন – “আজ একটা শাড়িতো পরে আসতে পারতিস!”
মেয়ে ঠোঁট উল্টে বলেছিল – “পাগল! এই গরমে ওসব কে পরে?” সরমা জবাব না দিয়ে রান্নাঘরে ঢুকে গিয়েছিলেন চা করতে। রাতে খাবার পর ছোট্ট একটা প্যাকেট নিয়ে মেয়ে এসেছিল সরমার ঘরে – “মা এটা তোমার
জামাই কিনেছে তোমার জন্য।“ জামদানীর আশা অনেক আগেই ছেড়েছেন সরমা! তবুও প্যাকেটটা দেখে কৌতূহল হয়েছিল ভীষণ। কি জানি গয়না টয়না নয়তো – “কি রে এটা?”
“অক্সিমিটার।”  প্রচণ্ড অবাক সরমা – “এটা দিয়ে কি হবে?” “অক্সিজেনের লেভেল মাপবে!”   সরমার মেজাজের লেভেল কে মাপে তারই ঠিক নেই – “এসব ছাইপাঁশ না কিনে জামাইকেতো বলতে পারতিস একটা শাড়ি আনতে!”

Jamai Sasthi Story

সবজান্তা মেয়ে অমনি বলে কিনা – “তোমার এক গাদা নতুন শাড়ি আলমারিতে ভরা! এটা বরং
তবু কাজে লাগবে!” এ আবার কেমন ধারা কথা! আলমারির শাড়ি আর জামাইয়ের দেওয়া শাড়ি এক হল? খানিকক্ষণ গুম হয়ে থেকে বলেই ফেলেছিলেন সরমা – “হ্যাঁরে জামাইয়ের দেখছি মাথাটা খারাপ! তাই বলে তোরও কি কোনো আক্কেলজ্ঞান নেই! প্রথমবার ষষ্ঠী! শাশুড়িকে একটা শাড়ি দিতে হয় না?”
মেয়েও সঙ্গে সঙ্গে হা হা করে উঠেছিল – “জামাই ষষ্ঠী তোমার আর তোমার জামাইয়ের ব্যাপার! এর মধ্যে আমার আক্কেল টেনে আনবে না। আমি কে! কালতো শুধু জামাইয়ের দিন! আমিতো ফাউ এসেছি!” “ওমা শোনো মেয়ের কথা! তুই আছিস তবেই না জামাই!” মুখ বাঁকালো মেয়ে – “তাহলে সকালে উঠে ফোটাটা আমাকে দিও! আমি যা যা ভালবাসি শুধু সেগুলি বাজার হবে! সব চেয়ে ভালো ভালো খাবারগুলো আমার পাতে দেবে!” “বাজে বকিসনা! কত খাস যেন! কালকে তোর জন্যও গলদা চিংড়ি আনাবো! আর জামাই মানুষ! একটু আদর আপ্যায়ন করতেই হয় যাতে আমার মেয়েটাও শ্বশুরবাড়িতে আদরে থাকে বুঝলি!” মেয়ে কি বুঝেছিল রামই জানে কিন্তু সরমা সকাল থেকে কোনোকিছুই ভালো বুঝছিলেন না! সাত সকালেই পাঁচ পাতার একটা ফর্দ ধরিয়ে দিয়েছিলেন তিনি কর্তা পরিতোষ বাবুর হাতে। রেয়াজি খাসী এক কেজি, ভেটকি ফিলে, গলদা, ইলিশ ডিমওয়ালা, নারকেল, দুধ, কাজু, কিশমিশ, দই, রসগোল্লা, রাবড়ি, সাতরকম ফল, পান – পড়তে পড়তে আরেকটু হলেই পরিতোষ বাবুর প্যান্টটা কোমর গলে মাটিতে নেমে যাচ্ছিলো! কোনোরকমে বেল্ট দিয়ে তাড়াতাড়ি কোমরের সাথে কষে বাঁধলেন! ভাগ্যিস বাথরুমটা সারানোর জন্য আগের দিন ব্যাঙ্ক থেকে এক গোছ টাকা তুলে এনেছিলেন! নইলে এ যা ফর্দ গিন্নি ধরিয়েছে দু একটা অঙ্গ প্রত্যঙ্গ বাজারে বন্দক রেখে আসতে হত আজ! কোনটা দিয়ে শুরু করবেন ভাবতে ভাবতেই কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম জমে উঠলো তাঁর। রুমাল বের করে মুছতে যাবেন, জামাই এসে ছোঁ মেরে কেড়ে নিল ফর্দটা।  “দেখি লিস্টটা! বাপরে একি ফর্দ না চিত্রগুপ্তের খাতা! আপনি থাকুন আমি যাচ্ছি!” – দাঁতে ব্রাশ ঘষতে ঘষতেই ফতোয়া জারি হল।
এই অযাচিত ডেঁপোমিতে মনে মনে প্রচণ্ড বিরক্ত হলেন সরমা কিন্তু জোর করে মুখে
হাসি টেনে আনলেন – “না না তুমি ওসব পারবে না! তোমার বাবা গুছিয়ে সব নিয়ে আসবে
খন! তুমি বরং মুখ ধুয়ে এসে চা খাও দিকি!”
“যা ফর্দ দেখছি গুছিয়ে না, বলুন পুরো বাজারটা উজিয়ে আনতে হবে! এই গরমে ওনাকে আর
যেতে হবে না। যা কেনার আমিই কিনে আনছি। আর হ্যাঁ আজকের রান্নাটাও আমি করব
কিন্তু!”
মুখে আস্ত ইঁদুর ঢুকে গেলেও এতটা হাঁ হতেননা সরমা – “বাবা এসব কি বলছ তুমি?
জামাই মানুষ রান্না করবে মানে?”
“সেকি! এসব সুশিক্ষা আপনার মেয়েকে দেননি? আমাকে দিয়ে পরশুও ডাল আর ডিমের ঝোল
রাঁধালো রান্নার লোক আসেনি বলে!”
ব্যাপার সুবিধের নয় বুঝে পেছন দরজা দিয়ে সুড়ুত করে কেটে পড়লেন পরিতোষ
বাবু!
সেই থেকে সরমার মেজাজ টংয়ে উঠে আছে! ছি ছি! নতুন জামাই! কোনটা বুঝে হাফ প্যান্ট পরে ভাঙা সাইকেলটা নিয়ে ড্যাং ড্যাং করে বাজারে চলে গেল! ফর্দটা পর্যন্ত ফেলে
রেখে গেছে এত বেয়াক্কেলে! জামাই অবশ্য আধা ঘণ্টার মধ্যেই ফিরে এসেছে। কিন্তু বাজার দেখে সরমার হার্টফেল হবার জোগাড়। অল্প একটু খাসির মাংস আর কটা চিংড়ি মাছ রয়েছে থলেতে। ইলিশ, ভেটকি, মিষ্টি, দুধ, কাজু, কিশমিশ কিচ্ছু নেই! খাসি খেলে নাকি কোলেস্টেরল বাড়ে তাই অল্প করে এনেছে! ইলিশের নাকি সোনার সমান দাম! অত ফল খাবে কে! বাড়িতে সবার সুগার! মিষ্টি কেনা মানে পয়সা দিয়ে বিষ কেনা! সরমার হাত পা ছড়িয়ে কাঁদতে ইচ্ছে করছে। শ্বশুরইতো যাচ্ছিলো বাজারে! কে বলেছিল তাকে বাহাদুরি মারতে! আরেকজনও
তেমনি – “তুমি যাবে? আচ্ছা যাও!” যত রাগ গিয়ে পড়ল তাঁর পরিতোষ বাবুর ওপর। উনিই যত নষ্টের গোড়া! আজ বুড়োকে সুদ্ধু আলু সেদ্ধ ভাত দেবেন তিনি!
ভাগ্যিস ঘরে আম আর কলা ছিল! নারকেল, খেজুর আর একটা হরিতকী দিয়ে কোনোরকমে পাঁচটা ফল বানিয়ে পুজো সারলেন তিনি। প্রণাম করার সময় মাটিতে মাথা ঠেকিয়ে একমনে মা ষষ্ঠীকে ডাকতে লাগলেন – “হে মা ষষ্ঠী! জামাইটাকে একটু সুবুদ্ধি দাও মা!
এক্কেবারে মাথা খারাপ! ঠিক করে দাও মা! মা মাগো!”
ওদিক থেকে জামাই তাড়া দিতে লাগল – “ভগবানের কাছে অত চাইতে নেই। তাড়াতাড়ি করুন আমাকে আবার রাঁধতে যেতে হবে!” সরমা কটমট করে তাকালেন শুধু। তারপর চন্দনের ফোঁটা দিয়ে দিলেন জামাইয়ের কপালে,
হাতে মঙ্গল সুতো বেঁধে দিলেন। কিন্তু যেই না পাখা দিয়ে হাওয়া করতে গেছেন আবার
ফুট কাটল জামাই – “পাখা দিয়ে হাওয়া না করে ফ্যানটা চালিয়ে দিন না! খুব গরম
লাগছে!”
সরমার খুব ইচ্ছে করছিল পাখার ডাণ্ডাটা দিয়েই জামাইয়ের পিঠে একটা বসিয়ে দিতে!
কিন্তু একে নতুন জামাই তায় পরের বাড়ির ছেলে!
সরমা চুপচাপ নিজের ঘরে বসে আছেন। জামাই অর্ডার করেছে যতক্ষণ সে রান্না করবে কেউ
যেন না ঢোকে! রান্নার সময় তার কোনোরকম ডিস্টার্বেন্স পছন্দ না। মনে মনে সত্যিই
দমে গেছেন তিনি। জামাইয়ের যে এমন মাথা খারাপ মেয়ে ঘুণাক্ষরেও জানায়নি তাঁকে! আর
মেয়েই বা কম কি! সকাল থেকে এখনও বিছানা ছেড়েই উঠতে পারে নি! পেত্নীর মত বাসি
জামাকাপড়েই মোবাইল টিপে যাচ্ছে সকাল থেকে! আশেপাশের বাড়ির মেয়েগুলি কি সুন্দর
সেজেগুঁজে তাদের বরদের নিয়ে বেড়াতে বেরিয়েছে! বড় করে একটা নিঃশ্বাস ফেললেন
তিনি। সবই কপাল! নইলে শিব গড়তে গিয়ে বাঁদর হবে কেন! তার জামাইও তো কোনো অংশে কম
ছিল না কারো থেকে! প্রথমবার জামাই ষষ্ঠী কত কি ভেবে রেখেছিলেন
তিনি!
“রিম্পির মা বাড়ি আছো নাকি?”
পাল গিন্নির গলা পেয়ে বাইরে বেরিয়ে এলেন সরমা। বড় মেয়ে আর জামাই নিয়ে দাঁড়িয়ে
আছেন পাল গিন্নি। প্রতিবারই আসেন তিনি, মেয়ে জামাইকে নিয়ে। জামাইটি ভীষণ
গম্ভীর। দেখলেই সমীহ করতে ইচ্ছে করে। পাল গিন্নিই একা একা বকর বকর করে যান আর
নিজের জামাইয়ের প্রশস্তি গেয়ে যান। কিছু যদি ভুলে যান, জামাইটি তখন ধরিয়ে দেয়
শুধু – “প্রমোশন হয়েছে ঠিকই তবে ডাবল প্রমোশন” “আসলে আমাদের সুইজারল্যান্ড
যাওয়াটা ক্যান্সেল হয়ে গেল ওর শরীর খারাপ হোল বলে তাই  কাশ্মীরই গেলাম!”
“ছুটি নিতেই পারতাম কিন্তু কাল একটা প্রেজেন্টেশন আছে আর বস কিছুতেই চায় না আমি
ছাড়া অন্য কেউ দিক সেটা!”
সরমা শুনতে শুনতে বিরক্ত হয়ে যেতেন আর ভাবতেন – “রোসো আমার জামাই আসুক তারপর
আমি শোনাবো গল্প!”
আরেকটা দীর্ঘশ্বাস ফেললেন সরমা। মানুষ ভাবে এক হয় আরেক।
“রিম্পির বরের সাথে দেখা করাতে নিয়ে এলাম ওদের। কই জামাই কই?”
“ভালো করেছেন দিদি! আসুন না ভেতরে আসুন” – বলেই সরমার খেয়াল হল ভেতরের
অবস্থাটা! কিন্তু তীর বেরিয়ে গেছে ততোক্ষণে।
রান্নাঘরে ঢুকেই হতভম্ব হয়ে দাঁড়িয়ে গেলেন সরমা। গ্যাসের দুটো ওভেনই দাউ দাউ
করে জ্বলছে। খালি খালি! বটিটা খোলা অবস্থায় পড়ে আছে মাঝখানে! রেয়াজি খাসি থেকে
সমস্ত চর্বিটুকু ছাড়িয়ে নিয়ে নোংরা ফেলার প্লাস্টিকটার ওপর রাখা! অন্তত গোটা
পনের বাটি পরপর বসানো। কোনোটায় হলুদ, কোনোটায় নুন, কোনোটায় গরম মশলা। নুনের
কৌটোর ঢাকনা হলুদের কৌটোর ওপর বসানো। সকালে বেঁধে দেওয়া হাতের সুতোটা দিয়ে
তেলের পাউচ প্যাকেটটার মুখটা আটকানো। আর তাঁর হীরের টুকরো জামাইটি ছোট্ট একটা
হাফ প্যান্ট পরে খালি গায়ে দুই পা দুদিকে ছড়িয়ে মেঝেতে বসে একমনে পেঁয়াজ ছুলছে
আর গোপালের ভোগ রাঁধার কড়াইয়ে রাখছে! কপালের চন্দনের ফোঁটাটা নাক অবধি গড়িয়ে
এসেছে। পেঁয়াজের ঝাঁজে দুচোখ বেয়ে জলের ধারা গাল অবধি গড়িয়ে এসেছে! সরমার ঘাড়ের
ওপর দিয়ে পাল গিন্নী সেই দৃশ্য দেখে শিউরে উঠলেন। নতুন জামাইয়ের সাজ দেখে তাঁর
মেয়েও ফিক করে হেসে দিল আর পাল গিন্নীর জামাই আরো গম্ভীর হয়ে রইল। সরমা লজ্জায়
ঘেন্নায় পারলে মাটির সাথে মিশে যান!
জামাই এতজনকে দেখে একটু অপ্রস্তুত। তাড়াতাড়ি মাটিতে পড়ে থাকা গেঞ্জিটা তুলে
গায়ে গলিয়ে নিল, তারপর শাশুড়ির দিকে তাকিয়ে কৈফিয়তের সুরে বলল – “দুটো কড়াইতেই
হ্যান্ডেল নেই! ধরতে অসুবিধে হয় বলে আপনার ঠাকুর ঘরে যে কড়াইটা ছিল ওটা নিয়ে
এসেছি রাঁধবো বলে!”
সরমা ভির্মি খাবেন খাবেন করছেন।
পাল গিন্নীই প্রথম মুখ খুললেন – “সেকি! জামাই মানুষ রান্নার ঠাকুরের মত রান্না
করবে!”
তারপর যেন দেয়ালকেই শুনিয়ে শুনিয়ে বললেন – “কি দিনকাল যে পড়েছে! আমাদের টুয়ার
বরের বাবা এসব মেয়েলি ব্যাপার স্যাপার নেই!”
সরমার জামাই মিষ্টি করে হাসলো একটু, তারপর নিরীহ মুখে জিজ্ঞেস করল – “ওহো
টুয়াকেই ম্যালেরিয়া হয়েছিল বলে দুমাস আপনাদের এখানে রেখে গেছিলো না? রিম্পি
বলছিল আপনি নাকি ভীষণ রেগে গিয়েছিলেন তখন! তা জামাই মানুষ পেটুক ঠাকুরের মত
খাবে, ধড়াচুড়ো পরে পটের বিবিঠাকুর সেজে থাকবে! খামকা হাত পুরিয়ে রাঁধতে যাবেই
বা কেন!”
পাল গিন্নী আর এক মুহূর্ত দাঁড়াননি। শুধু তাঁকে না, তাঁর জামাইকেও এভাবে অপমান!
যাবার আগে একবার শুধু বিড়বিড় করেছিলেন – “বাঁদর একটা!”
জামাই অবশ্য গ্রাহ্যিই করে নি। এখন সে সবাইকে খাবার পরিবেশন করতে বসেছে। আজ
নাকি শাশুড়িকে আগে খেতে হবে। হ্যাঁ সরমাকেও সুড়সুড় করে এসে বসতে হয়েছে টেবিলে!
সুগার কোলেস্টেরল আছে বলে এক কুচি মাংস দেওয়া হয়েছে তাঁকে, সাথে দেড় কাপ ভাত আর
এক বাটি দীঘির মত স্বচ্ছ টলটলে মাংসের ঝোল। আপাতত মনের দুঃখে সরমা তাতেই সাঁতার
কাটছেন!
Share This Article
Leave a comment

Adblock Detected!

Our website is made possible by displaying online advertisements to our visitors. Please consider supporting us by whitelisting our website.