সত্যি ভূতের গল্প
সত্যি ভুত কিনা জানি না।
তবে ঘটনাটা সত্যি…প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা।
তখন সদ্য সদ্যই বাবা জামশেদপুর থেকে পুরুলিয়া এসেছেন।
কর্মসূত্রে বাবার ট্যুর লেগেই থাকে। মাঝে মাঝেই দু/তিন দিনের জন্য।
বড়দাদা সেই সময় সৈনিকস্কুলের হস্টেলে।
আমি তখন ৭ বছরের, মেজদাদা ১০ আর ভাই ৪।
মা আমাদের বাকি তিন ভাইবোনকে নিয়ে একাই থাকতেন।মা খুব সাহসী ছিলেন।
প্রথম বাড়িটা বদলে একটু বড় অন্য একটা বাড়ি ভাড়া নেওয়া হলো। বাড়িটা কেমন
ছিল বলি…
ছিল বলি…
টানা তিনটে ঘর, তার পরেই রান্নাঘর, তারপরে বাথরুম। পুরোটাই লম্বা টানা।
রাতে বাইরেটা কেমন গা ছমছম অন্ধকার থাকতো।
বাথরুম যাবার সময় মা বারান্দা আর
বাথরুমের লাইট জ্বেলে দিতেন।
ঘরগুলোর সামনে লাগোয়া টানা বারান্দা।
মাঝখানে উঠোন।
রান্নাঘরের সামনে একটু ব্যবধানে কুয়ো। মোটা লোহার রডের মধ্যে ঘর্ঘরি লাগানো।
দড়ি বালতি সবসময় বাঁধাই থাকতো দেখতাম।এবং বালতিটা জলে সবসময় ভরে রাখা পছন্দ
করতেন মা।
দড়ি বালতি সবসময় বাঁধাই থাকতো দেখতাম।এবং বালতিটা জলে সবসময় ভরে রাখা পছন্দ
করতেন মা।
আমাদের উঠোনের ঠিক অপরদিকে বাড়িওয়ালা জ্যেঠিমারা থাকতেন। পিছনদিক আর একটা পাশ
ফাঁকা জমি ছিল খানিকটা ,আর একটাদিকে সরু গলি। যেটা শেষ হলে কাজের মানুষদের একটা
বসতি ছিল।
ফাঁকা জমি ছিল খানিকটা ,আর একটাদিকে সরু গলি। যেটা শেষ হলে কাজের মানুষদের একটা
বসতি ছিল।
মায়ের সাথে বাড়িওয়ালা জ্যেঠিমার বেশ সখ্যতা ছিল।
প্রথমবার ঘটনাটা ঘটার সময় বাবা ছিলেন।
হঠাৎ মাঝরাত্তিরে অনেক পাথর ধপাধপ পড়ার মত আওয়াজ।
যেন অনেক পাথর অনেকে একসাথে ছুড়ছে।
বাবা দরজা ফাঁক করে দেখলেন ।উঠোনটা থাকতো আবছা অন্ধকার। বাবা কিছুই বুঝতে
পারলেন না। অত রাত্তিরে মা লাইট জ্বালাতে আর বাইরে যেতে মানা করলেন বাবাকে।
পারলেন না। অত রাত্তিরে মা লাইট জ্বালাতে আর বাইরে যেতে মানা করলেন বাবাকে।
আরো পড়ুন,
পরদিন বাবা বললেন জ্যেঠুকে। তিনি মানলেন না।
বললেন কই পাথর ?
সত্যিই একটাও ছিল না। জ্যেঠু বললেন দুষ্টু ছেলেরা হয়তো ছুড়েছে।
যাই হোক বাবার অনুপস্থিতিতে অমূল্যমামার উপস্থিতি শুরু হলো। মায়ের এক
দূরসম্পর্কের ভাই। বাবার অনুরোধে রাতে থাকতেন এবং সকালে বাজারহাট বা মা যা
বলতেন , করে দিতেন সব।
দূরসম্পর্কের ভাই। বাবার অনুরোধে রাতে থাকতেন এবং সকালে বাজারহাট বা মা যা
বলতেন , করে দিতেন সব।
এরকমই একবার বাবা ট্যুরে ,
মায়ের বড়মামা এলেন হঠাৎ কলকাতা থেকে দুদিনের জন্য।আমরা ভীষণ খুশি। খুব ভালো
লাগতো,ভালোও বাসতাম খুব ওনাকে।
লাগতো,ভালোও বাসতাম খুব ওনাকে।
সত্যি ভূতের গল্প মনোজ মিত্র
সন্ধ্যে হয়ে গেছে অনেকক্ষণ। লাইট জ্বেলে সবাই মিলে গল্প করছি বারান্দায় বসে ,
সাথে মুখরোচক খাওয়া চলছে।
সাথে মুখরোচক খাওয়া চলছে।
কথা প্রসঙ্গে মা বললেন দাদুকে ওই পাথর পড়ার ঘটনা।
যদিও তারপর আর পড়ে নি একবারও। যাই হোক শুনে দাদু তো হো হো করে হেসে তুড়ি মেরে
উড়িয়ে দিলেন।
উড়িয়ে দিলেন।
এবং তখনি , হ্যাঁ হঠাৎ তখনি ওই আধো অন্ধকারে ধুপধাপ কতগুলি পাথর এসে পড়লো
উঠোনের মাঝখানে।গোল গোল মসৃণ নুড়ি পাথরের মত ।
উঠোনের মাঝখানে।গোল গোল মসৃণ নুড়ি পাথরের মত ।
দাদু হতবাক। আমরা ভয়ে জড়োসড়ো ।মাও ভয় পেলেন। দাদু দরজা খুলে গলিটা দেখলেন।
কেউ নেই কোথাও। শান্ত স্তব্ধ চারপাশ।
কেউ নেই কোথাও। শান্ত স্তব্ধ চারপাশ।
দাদু বললেন কি জানি ভালো বুঝলাম না।
আর এখানে থাকার দরকার নেই।
বাড়ি বদল করে নাও।যত শীঘ্র সম্ভব।
পরদিন দাদু চলে গেলেন। মা খুব চিন্তায়।
অমূল্যমামা শুতে এলো।রাত ভালোই কাটলো।
দুপুরদিকে বাবা এসে পৌছলেন।
সব শুনে বললেন এবার নিশ্চয় নতুন বাড়ি ঠিক করবেন।
কিন্তু জ্যেঠুরা শুনে আমাদের কিছুতেই যেতে দেবেন না।
বাবাকে অনুরোধ করে বললেন থাকুন।
শান্তিস্বস্ত্যয়ন করাবেন।
সব ঠিক হয়ে যাবে।
সত্যি খুব বড় করে হোম যজ্ঞ পূজো হলো।
সম্পূর্ণ বাড়িতে , বাইরে শান্তিজল ছড়িয়ে দেওয়া হলো।
কদিন পর বাবা ট্যুরে চলে গেলেন। বললেন এবার একটু দেরি হতেও পারে ফিরতে।
যথারীতি অমূল্যমামা আসলো।
দুদিন পর সকালে অমূল্য মামা বাজার করে দিয়ে বললেন তিনি দুটো রাত আসতে পারবেন
না।
না।
বাইরে যাবেন। তবে মা একটু নিশ্চিন্ত , পূজোপাশা হয়েছে , আর কি বা হবে। ঠিক আছে
বলে দিলেন।
বলে দিলেন।
কিন্তু হঠাৎ করে দুপুর থেকে মেজদাদার ধুম জ্বর শুরু হলো। প্রচন্ড জ্বর। মা
ডাক্তারের কাছেও নিয়ে গেলেন।
ডাক্তারের কাছেও নিয়ে গেলেন।
ওষুধ খেয়েও জ্বর নামছে না। জলপটি দিয়ে চলেছেন মা।
রাত হয়ে গেল।
ভালো ভূতের গল্প
জ্যেঠিমা এলেন, বললেন তেমন কিছু বাড়াবাড়ি হলে যেন ওনাদের মা ডাকেন।
মা দাদাকে জলপটি দিচ্ছেন আর জ্বর মাপছেন মাঝে মাঝেই।অনেক রাত। কখন ঘুমিয়ে
গেলাম।
গেলাম।
হঠাৎ মা ডেকে তুললেন আমায়। বললেন দেখ তোর মেজদা নেই , দরজা হা করে খোলা। জলপটি
দিতে দিতে চোখটা মায়ের লেগে গেছিল একটু।
দিতে দিতে চোখটা মায়ের লেগে গেছিল একটু।
ভয়ে তো আমাদের অবস্থা খারাপ। মা বারান্দার বাতি জ্বেলে আমাকে নিয়ে বাইরে গেলেন।
কেউ কোথাও নেই। মা ডুকরে কেঁদে উঠলেন । তাই দেখে আমিও। হঠাৎ আমারই চোখে পড়তে
মাকে দেখালাম কুয়োর দিকে আঙুল তুলে।
মাকে দেখালাম কুয়োর দিকে আঙুল তুলে।
মেজদা দুহাতে কুয়োর ঘর্ঘরির লোহার রডটা ধরে কুয়োর মধ্যে ঝুলছে। মা দৌড়ে গিয়ে
মেজদাকে জড়িয়ে ধরে ডাকছে, আমিও ডাকছি কিন্তু সে চোখই খুলছে না।
মেজদাকে জড়িয়ে ধরে ডাকছে, আমিও ডাকছি কিন্তু সে চোখই খুলছে না।
তখন মা মেজদাকে দুহাতে জড়িয়ে টানতে চেষ্টা করলেন কিন্তু কিছুতেই পারছেন না মা।
এত শক্ত করে রড ধরে রেখেছে মেজদা। মায়ের মনে হচ্ছিল কেউ যেন নিচের দিকে টানছে
মেজদা কে।
এত শক্ত করে রড ধরে রেখেছে মেজদা। মায়ের মনে হচ্ছিল কেউ যেন নিচের দিকে টানছে
মেজদা কে।
মা তো আর ছাড়ছেন না মেজদাকে যদি কুয়োর ভেতর পড়ে যায়। আজও ভাবলে শরীর হিম হয়ে
যায়।
যায়।
ওই ঠান্ডা কুয়াসার রাত। মা ঘেমে অস্থির।
কি ভাবে যে মা টেনে আনলেন মাও জানেন না।
Bhuter Golpo Story
বের করে আনতেই হঠাৎ করে সেই পাথর পড়া শুরু হলো।
মা বললেন ভেতরে চল দৌড়ে, মা মেজদাকে নিয়ে
টানতে টানতে আসছে , আমরা ভিতরে ঢুকতে যাব ঠিক তখনই একটা পাথর একদম মায়ের সামনে।
ঘরে ঢুকেই মা ঠাস করে দরজা বন্ধ করে ওখানেই বসে হাঁপাতে আর কাঁদতে লাগলেন।
ঘরে ঢুকেই মা ঠাস করে দরজা বন্ধ করে ওখানেই বসে হাঁপাতে আর কাঁদতে লাগলেন।
আর ঠিক তখনই দড়াম করে একটা বিশাল জোরে আওয়াজ।আমরা চমকে উঠেছি আওয়াজে , মনে হল
জল ভরা বালতি যেন দরজায় ছুড়ে মারলো কেউ। দরজা কেঁপে উঠলো।মনে হলো ভেঙে যাবে
বোধহয় দরজাটা।
জল ভরা বালতি যেন দরজায় ছুড়ে মারলো কেউ। দরজা কেঁপে উঠলো।মনে হলো ভেঙে যাবে
বোধহয় দরজাটা।
তারপরই সব চুপচাপ নিস্তব্ধ।
মা সারারাত জেগে বসে রইলেন।
সকালে একটু দেরিতে দরজা খুলে দেখা গেল কুয়োর জল তোলা বালতিটা দড়ি সমেত একেবারে
চিড়ে চ্যাপ্টা হয়ে পড়ে আছে দরজার সামনে বারান্দায় ।যেন কেউ রাগে পিষে
রেখেছে।। আর গোল মসৃণ একটা পাথর পড়ে আছে।উঠোনে কোনো পাথর নেই।
চিড়ে চ্যাপ্টা হয়ে পড়ে আছে দরজার সামনে বারান্দায় ।যেন কেউ রাগে পিষে
রেখেছে।। আর গোল মসৃণ একটা পাথর পড়ে আছে।উঠোনে কোনো পাথর নেই।
মেজদা যে সেদিন কেন কি করে বাইরে গেছিল তা আর মনে করতে পারেনি কোনোদিন।
তবে সেদিনই আমরা সেই বাড়ি ছেড়ে চলে গেছিলাম।
আত্মীয়বাড়িতে দু/একদিন ছিলাম। রাতেই বাবা এসে গেলেন। জ্যেঠিমার কাছে সব শুনে
চলে এলেন আমাদের কাছে।
চলে এলেন আমাদের কাছে।
আমরা নতুন বাড়িতে গিয়ে উঠলাম….