শারীরিক প্রেমের গল্প
শুরুটা বেশ ভালোই ছিল। যেমন আর পাঁচটা সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তানরা বড় হয় আমিও ঠিক সেভাবেই বড় হলাম। উত্তর কলকাতার বেশ নামী বস্ত্র ব্যবসায়ীর একমাত্র উত্তরাধিকারী, নাম ইন্দ্রজিৎ দত্ত । মায়ের আদর আস্কারা আর নানান গোপন প্রশ্রয়ে কেটেছে ছেলেবেলা। পাড়ার মাঠে ফুটবল, সাইকেল ছুটিয়ে বাজার যাওয়া, বাংলা বন্ধে গলির মধ্যে ক্রিকেট খেলা কি বর্ষা সন্ধ্যায় কোন এক বন্ধুর বাড়িতে ক্যারাম পেটানো বা লুকিয়ে দু চারটে দশ টাকা বাজি রেখে তাশের আসর জমানো, সব রকম অভিজ্ঞতাই অল্প বিস্তর হয়েছে জীবনে।
Sharirik Premer Golpo
মধ্যম মানের ছাত্র ছিলাম। উচ্চ মাধ্যমিকের খুব সাধারন রেসাল্ট নিয়ে ভর্তি হয়েছিলাম উত্তর কলকাতারই এক কলেজে। বরাবরই ছেলেদের স্কুলে পড়েছি। এ যাবৎ কোন সুন্দরীর সঙ্গ লাভের দূর্লভ সুযোগ জীবনে ঘটেনি। যদিও পাশের বাড়ির মিলিকে যতবারই ছাদে চুল শুঁকোতে দেখেছি ততবারই বুকের ধুকপুকানিটা তীব্রতর হয়েছে কিন্তু মন ও শরীরের বাঁধন ডিঙিয়ে তা কোনদিনই মিলিদের কংক্রিটের ছাদে ঢাক্কা মারতে পারেনি।
কলেজে দু চারজনের সঙ্গে বেশ ভালোই ভাব হল, বিকাশ, প্রবাল, সুমন, অলোকেশ। কিন্তু কয়েক মাসের মধ্যেই ওরা এক একজন তন্বী জুটিয়ে টপাটপ টপাটপ প্রেম করতে শুরু করল। আমাকেও বহুবার ঠেলে দেওয়ার চেষ্টা করেছে প্রমিলা বাহিনীর দিকে কিন্তু মেয়েদের সঙ্গে কথা বলতে গেলেই আমার হৃৎস্পন্দন বেড়ে যেত তিনগুন। মুখ দিয়ে গোঙানির শব্দ বেরোত। বন্ধুরা শেষে হাল ছেড়ে দিয়ে বলেছিল “তোর দ্বারা আর যাই হোক প্রেম টেম জীবনে হবেনা।” আক্ষরিক অর্থেই কলেজ জীবনে কোন রক্ত মাংসের মানবির সঙ্গে প্রকাশ্য প্রেম আমার কোনো দিনই হয়নি তবে কল্পনার মানবিদের সঙ্গে আমার নিষিদ্ধ পল্লীর অভিসার ঘটত সময়ে, অসময়ে, চার দেওয়ালের মধ্যে, খোলা আকাশের নিচে, ব্যস্ত চৌরাস্তায় বা কখনো ফাঁকা কলেজ করিডোর বা ভরা ক্লাসঘরে এবং এই বিষয়টি বন্ধুদের কেউই ঘুনাক্ষরেও টের পায়নি কোনদিন। ওরা যখন মন দিয়ে ক্লাসে স্যারের লেকচার শুনত তখন আমার কামাতুর দৃষ্টিতে ঝলসে যেত ক্লাসের পিয়ালী, বনানী বা ঋতাভরীদের উপচে পড়া যৌবন। আমার শরীরের রন্ধ্রে রন্ধ্রে মিশিয়ে নিতাম ওদের দুলতে থাকা বুকের ধুকপুকানি আরাম। গোপন ডায়েরির পাতায় ওদের নগ্ন শরীরগুলোকে কলঙ্কিত করতাম আমার সিক্ত ঠোঁটের স্পর্শে, প্রায় প্রতি রাতেই।
বড়দের রোমান্টিক গল্প
দেখতে দেখতে কলেজ জীবন শেষ হয়ে গেল একদিন। উচ্চ শিক্ষার সুযোগ পাওয়ার মত নম্বর নিয়ে ঘরে ঢুকিনি তাই বড়দের পরামর্শে পরদিন থেকেই বাবার ব্যবসায় সাহায্য করতে শুরু করলাম। কলেজের প্রমিলারা চোখের আড়াল হলেও ইন্দ্রজিতের গোপন ইন্দ্রজালে ধরা দিত রাতের আধারে, অতি সন্তর্পনে। হটাৎই একদিন বাবা চৈতালির ছবি দেখিয়ে জিজ্ঞেস করল.. “দ্যাখোত মেয়েটি কেমন? যদি ঠিক লাগে তবে কাল গিয়ে একবার দেখে এসো। আমাদের দেশের বাড়ির দিককার মেয়ে। স্বজাত, বিএ পাশ, সুন্দরী,গৃহকর্ম নিপূণা। আর কি চাই।”
খুব ঘটা করে আমাদের বিয়ে হল। বন্ধুরা কব্জি ডুবিয়ে খেয়ে যে যার আস্তানায় ফিরে গেল। মনে মনে আগেই ঠিক করে রেখেছিলাম ফুলশয্যার রাতেই দুয়ার ভাঙবো। সেই মত বৌভাতের সবকিছু মিটে যাওয়ার পর প্রায় মধ্য রাতে দরজার খিল তুলেই হিংস্র বাঘের মত ঝাপিয়ে পরলাম চৈতালির শরীরের উপর। প্রথম রাতেই চৈতালি এতটা প্রস্তুত না থাকলেও, স্বামীর অধিকার মনে করে হোক কি ওর নিজের কামনার জন্যই হোক বাঁধা দেয়নি একটুও। বরং তালে তাল মিলিয়ে সঙ্গ দিয়েছে হিংস্র বাঘিনির মতই।
“‘সুখ সঙ্গমে পূর্ণ স্নান করে শুরু হল আমার নতুন সুখের জীবন”…. এই বলে গল্পটা এখানেই শেষ করতে পারতাম কিন্তু নিয়তির খাতায় আমার গল্পটা একটু অন্য রকমই লেখা ছিল। চরম ধাক্কাটা খেতে খুব বেশি সময় লাগেনি। চরম মুহূর্তেটা যে আমার জীবনে আর আসবে না এই কঠিন সত্যিটা মেনে নিতে আমার নিজেরই অনেকটা সময় লেগেছিল। এরপর অসহ্য মানসিক যন্ত্রণায় দগ্ধ হতে হতে কাটতে লাগল আমার এক একটা রাত। বুঝেছিলাম প্রকৃতি খুব যত্ন করে আমার স্বপ্ন আর বাস্তবের মধ্যে শত যোজন দূরত্ব বেঁধে রেখেছে । এরপরও প্রতি রাতে বিকৃত অভিসারে মত্ত হয়ে আমার চুপসে যাওয়া পুরুষত্যের ফানুসটাকে রক্তাক্ত করেছি কিন্তু অনেক অনেক চেষ্টা করেও দলা পাঁকানো এঁটেল মাটির খন্ডটা কিছুতেই আর কঠিন পাললিক শিলায় পরিনত করতে পারিনি। চৈতালির টুকরো কিছু অভিযোগ ছিল ঠিকই কিন্তু ও মেনে নিয়েছিল ধীরে ধীরে সবটাই । আমি হেরে গেছিলাম। চুরান্ত হার স্বীকার করে লজ্জায়, অপমানে নিজের শরীরটা মাটিতে মিশে যেতে চাইত প্রত্যেক দিন। কলেজের সহপাঠিনীরা, এমনকি পাশের বাড়ির মিলিও এরপর থেকে সুযোগ পেলেই ব্যঙ্গভরা চিত্র এঁকে দিত আমার সেই সখের ডায়েরির সাদা পাতায়। আমি অগুন্তি গোল খেয়ে হেরে বসে আছি।
প্রতিশোধের শারীরিক সম্পর্ক রোমান্টিক গল্প
দেখতে দেখতে বিয়ের পাঁচ বছর পূর্ণ করলাম আমরা। স্বাভাবিক নিয়মেই কোলে বাচ্চা না আসায় ঘরে বাইরে সকলেই প্রথমে আঙ্গুল তুলেছে চৈতালির দিকেই। ইতিমধ্যে হোমিওপ্যাথি, আলোপ্যাথি আয়ূর্বেদ, ইউনানী কিছুই বাদ রাখিনি কিন্তু সব জায়গা থেকেই খালি হাতে ফিরতে হয়েছে। ধীরে ধীরে চৈতালির সহন শক্তিও কমতে থাকে। মানসিক ভাবে একটু একটু করে দূরে সরে যেতে থাকে আমার থেকে। প্রতি রাতে অভ্যাস মত চড়ূইভাতি খেলাতে চৈতালির মন ও শরীর কোনটাই সায় দেয়না। কিন্তু ততদিনে সর্বদিক থেকে চৈতালির উপর আমি নির্ভর হয়ে পরেছি পুরোপুরি। ভালোবাসায়, আবেগে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে নিয়েছি আমার রক্ত মাংসের মানবিকে। চৈতালি ছাড়া জীবনের একটা দিনও নিজেকে আর কল্পনার আয়নায় দেখতে পাইনা। কিন্তু আমার অক্ষমতা আর চৈতালির অতৃপ্ত কাম যাতনা আমাকে দিন রাত দুমড়ে মুচড়ে শেষ করে দিচ্ছে।
কলেজের বন্ধু বিকাশের সঙ্গে একদিন হটাৎই আমার দোকানে দেখা। বোনের বিয়ের বেনারসী কিনতে এসেছে। বন্ধুদের মধ্যে একমাত্র ওরই বিয়ে বাকি ছিল। বলছিল বোনকে বিয়ে দিয়েই নিজের জন্য পাত্রী দেখা শুরু করবে। ও একটা কোচিং সেন্টার খুলেছে। মাস গেলে রোজগার মন্দ হয়না। নিজে থেকে আগ বাড়িয়ে জানতে চাইলাম কোচিং এ আর কোন শিক্ষকের প্রয়োজন আছে কিনা। জানালাম আমার বৌ বি.এ পাশ।
অতিরিক্ত রোমান্টিক গল্প
চৈতালিকে জোর করেই বিকাশের কোচিং এ পড়াবার জন্য উৎসাহিত করলাম। ভাবলাম এতে হয়তো ও আরো একটু নিজেকে ব্যস্ত রাখার সুযোগ পাবে। তাতে যদি ওর দহন কিছুটা কমে। মাস দুয়েক যেতে না যেতেই চৈতালির মধ্যে আশ্চর্য পরিবর্তন লক্ষ্য করলাম। ও এখন আর মনমরা হয়ে থাকে না। মায়ের সঙ্গেও কথায় কথায় ঝগড়া ঝাঁটি করেনা। গুরুজনদের যত্ন আত্তির পরিমাণ বেড়ে গেছে। সব সময় বেশ হাসি খুশিতে থাকছে। বড্ড পরিতৃপ্ত দেখায় আজকাল ওকে। রাতের বিছানায়ও আজকাল চড়ূইভাতিতে অনাগ্রহ প্রকাশ করেনা। কিসের পূর্বাভাস বাড়ির বড়রা টের না পেলেও সবটা বুঝতে আমার বেশি সময় লাগেনি। জানি আপনারাও বুঝতে পারছেন। তবে কি ভাবছেন আপনারা? আমি চৈতালিকে দুশ্চরিত্রা বলবো? ওর অবৈধ ক্রিয়াকলাপের জন্য ওকে পরিত্যাগ করবো? কিন্তু না মশাই আমি না তো ওকে দুশ্চরিত্রা বদনাম দেবো আর নাতো ওর এই অবৈধ ক্রিয়াকলাপের জন্য ওকে দোষারোপ করবো। বরং বহুদিন পর আজ আমার নিজেকে বড় চাপমুক্ত লাগছে। একটা জগদ্দল পাথর আস্তে আস্তে বুক থেকে নেমে যাচ্ছে যেন। পাঁচ বছর ধরে সমাজের সামনে চৈতালি আমাকে ওর স্বামী হওয়ার পূর্ণ মর্যাদা দিয়েছে, ভালোবেসেছে কিনা জানিনা তবে করুণা করেছে নিশ্চয়ই। সহপাঠী বন্ধু আজ চৈতালিকে পরিপূর্ণ করেছে। আমার অক্ষমতার জন্য সারা জীবন চৈতালি ওর মানব শরীরকে কষ্ট দিয়ে বাঁচুক তা আমি চাইনি। চাইওনা। তাই একদিক দিয়ে আজ আমিও পরিতৃপ্ত। যদিও এরপর আমার অন্তর্দহন বৃদ্ধি পাবে বহু মাত্রায় তা নিশ্চিত কিন্তু তাতে কি? এই অধম ইন্দ্রজিৎ দত্ত নিপুণ দক্ষতায় তাকে ঠিক আড়াল করে রাখবে সকলের থেকে।
এরপর থেকে প্রতিদিনই বিকেলে কোচিং শুরু হওয়ার এক ঘন্টা আগে আমি নিজে বাইক ছুটিয়ে চৈতালিকে দিয়ে আসি বিকাশ কোচিং সেন্টারে আবার নির্দিষ্ট সময়ের ঘন্টা খানেক পর ওকে নিয়েও আসি। পূর্ণ স্নানে কোন দিনও এই শরীরকে পবিত্র করতে পারবো না জেনেই এখন শুধু প্রতিক্ষায় আছি ওই দিনটির জন্য যে দিন চৈতালি বিকাশের হাতে হাত রেখে আমায় বলবে “মুক্তি দাও”। ততদিন এই মানবি আমার।
আজ রাতেও চৈতালির শরীরের বিস্তৃত টিলায় আমার ভাঙা কুঠারের আঘাত হানলাম। ওর নরম কোমল অববাহিকায় আমার তৃষ্ণার্ত ঠোঁটের ছলনায় মৃদু কম্পন আনলাম। ওর উন্মুক্ত ঊরুর মাঝে নিজের অক্ষমতাকে সঁপে দিলাম।।
সমাপ্ত –
ভালো লাগলে শেয়ার করতে ভুলবেন না ….Happy Reading….