Romantic Golpo In Bangla (রোমান্টিক গল্প বাংলা) – রোমান্টিক লাভ স্টোরি গল্প

Bongconnection Original Published
9 Min Read

Romantic Golpo In Bangla (রোমান্টিক গল্প বাংলা) – রোমান্টিক লাভ স্টোরি
গল্প
 

Romantic Golpo In Bangla (রোমান্টিক গল্প বাংলা) - রোমান্টিক লাভ স্টোরি গল্প
Loading...

Romantic Golpo In Bangla

সম্পর্কের রসায়ন 

মাস্টার না ছাই! মাস্টার হলে এম এ পরীক্ষার সাতদিন আগে কখনোই মেয়ে দেখতে
আসতো না। আসুক না তারপর দেখো কি করি।


রাগে গজগজ করতে করতে এই কথাগুলো নিজের মনে আওড়াচ্ছে পলি। মাস্টার্স করে পি.
এইচ. ডি. করার ইচ্ছে ওর। এখন বিয়ে করার একেবারেই ইচ্ছে নেই । বাবাও ওর দলেই
ছিল কিন্তু মা আর পরিবারের বাকিদের জোরাজুরিতে বাধ্য‌‌ হয়েই দলবদল করে
একপ্রকার নিমরাজি হয়েছে।
বকবক করতে ভালোবাসা পলি পাত্রপক্ষ দেখতে এলে ননস্টপ বকবক করেই গেলো। বৌদি তো
বলেই বসলোঃ
—এতো ভালো সম্বন্ধ টা নিজে নিজে কেঁচিয়ে দিলি তুই!
জন্ম মৃত্যু বিয়ে তিন বিধাতা নিয়ে।  কেঁচিয়ে দেবো বললেই কি আর দেওয়া
যায় গো ! এক্ষেত্রেও পলির ইচ্ছে পূরণ হলো‌ না। পাকাকথা বলার জন্য ছেলের
বাড়ি থেকে ডেকে পাঠালো। পলির হাজার আপত্তি সত্ত্বেও বৈশাখের এক গোধূলি লগ্নে
চার হাত এক হয়ে গেলো।

রোমান্টিক লাভ স্টোরি গল্প

Loading...
এক মানে ওই লোকদেখানো এক। পলি কিন্তু মন থেকে কিছুতেই বিয়েটা মেনে নিতে
পারলো না। সম্পূর্ণ বিপরীত মেরুর একটা মানুষ। পলি ভীষণ কল্পনাপ্রবন।
আবেগপ্রবনও বটে। ওর  স্বপ্নের নায়ক হবে গল্প উপন্যাসের নায়কদের মতো।
শাহরুখের মতো রোমান্টিক। কিন্তু ওর বর রোমান্টিক তো নয়ই বরং ভীষণ
আনরোমান্টিক। 

পলিও মনে মনে ভাবে যা হয়েছে হোক। ও নিজের মতো থাকবে। কর্মক্ষেত্র থেকে
সপ্তাহান্তে একদিন তো আসে। সেই একদিন সারা সপ্তাহ পলি কি পড়াশোনা করেছে তার
খবরাখবর নিতেই ব্যস্ত। বর তো নয় , বাবা  যেন ওর জন্য একজন কড়াধাতের
স্যার খুঁজে দিয়েছেন।এমন মানুষকে আর যাই হোক পলি ভালোবাসতে পারবেনা কোনোদিন।
 মাস ছয়েক বিয়ে হলেও হানিমুনে আর যাওয়া হয়নি । বর তার স্কুল আর পলি
তার  পড়াশোনা নিয়ে ব্যস্ত। পড়াশোনার ফাঁকে কোনো গল্প-উপন্যাস পড়লেই
তার মন উদাস হয়ে যায় বরের কথা ভেবে। ধুর! ধুর! তার আরাধ্য  শিবঠাকুর
কিনা এমন একটা লোকের সাথে  তার জীবনটা জুড়ে দিলো যার চরিত্রে রোমান্সের
ছিটেফোঁটাও নেই। ভীষণ গম্ভীর আর খুব কম কথা বলে সংকেত। পলি একবার করে ভাবে
মানুষ এতো কম কথা বলে কি করে থাকতে পারে? পেট গুড়গুড় করেনা! ভাত হজম হয়
!  পলি তো দম বন্ধ হয়ে পেট ফেটে কবেই মরে যেতো। 

রোমান্টিক লাভ স্টোরি বাংলা

— ভাই, তুমি তো বলো মাস্টাররা অসুস্থ হলে তবেই নাকি বিয়ে করে। তাই মেডিক্যাল
নিয়ে বিয়েটা সারলে। এবার পুজোর ছুটিতে হানিমুনটা সেরে ফেলো। পলিকে নিয়ে ঘুরে
এসো ওর পছন্দের পাহাড় কিম্বা সমুদ্র থেকে। কোথায় যেতে চায় ও তুমি এতদিনে
নিশ্চয়ই জেনে গেছো? 
একদিন খাবার টেবিলে সংকেতের বৌদি কথাটা তুললো। 
কথাটা শুনে পলি মনে মনে ভাবলো পলির পছন্দ ছাই জানে ওই গোমড়ামুখো
লোকটা।  নিজে থেকে জানাতে পলির ভারি বয়েই গেছে। যেখানে নিয়ে যেতে চায়
নিয়ে চলুক। তারপর এসেই কথাটা সবাইকে জানিয়ে দেবে। এমন আনরোমান্টিক পাবলিকের
সাথে পলি কিছুতেই ঘর করবেনা। 
—পলির সমুদ্র পছন্দ। পুরী যাবো ঠিক করেছি। 
আরো পড়ুন,

লক্ষ্মীপুজোর দুদিন পর ওরা পুরীর উদ্দেশ্যে রওনা হলো। সন্ধ্যার সময় পৌঁছালো।
আগে থেকে বুক করে রাখা সমুদ্র তীরবর্তী একটা হোটেলে উঠলো। ফ্রেশ হতে গিয়ে
ব্যাগ চিরুনী তল্লাশি করেও পলি খুঁজে পেলো না ফেশওয়াশের টিউবটা । 
—এটা খুঁজছিলে বোধহয় ।
বাথরুমে ঢুকতে গিয়ে ফিরে দেখে ওর ফেশওয়াশটা এগিয়ে দিচ্ছে সংকেত।
ফ্রেশ হয়ে দু’জনে‌ একবার ঘুরে এলো সমুদ্র থেকে। দুদিন আগে কোজাগরী পূর্ণিমা
ছিল তাই জ্যোৎস্না মাখা চাঁদের স্নিগ্ধ আলোয় সমুদ্রের ঢেউগুলোতে  অপরূপ
এক সৌন্দর্য্য বিরাজমান। একটার পর একটা উদ্দাম ঢেউ এসে ছুঁয়ে যাচ্ছে
তীরবর্তী বালুরাশি। মন্ত্রমুগ্ধের মতোই দেখছিল পলি। 
পরের দিন সকালে জলখাবার খেয়েই সমুদ্রস্নানে গেলো । সমুদ্র  পলির ভীষণ
পছন্দের। সমুদ্রের কাছে গেলে নিজের সবকিছু ভুলে থাকা যায় যেন! রাশি রাশি
ফেনিল জলরাশির দিকে তাকিয়ে মুগ্ধ হয়না এমন মানুষ বড় কম। দুজনে কোমর অবধি
জলে নেমে সারা শরীর ভিজিয়ে নিতে থাকলো লবণাক্ত জলের ঢেউয়ে। ওখানে থাকা
ফটোগ্রাফারদের কাছে পোজ দিয়ে বেশ কয়েকটা ছবিও তুললো। একটা খুব বড়ো ঢেউ এসে
পলিকে ধাক্কা দিলো। টাল সামলাতে না পেরে পলি উল্টে পড়লো। 
—লাগেনি তো? 
—না। 
—চলো আজ রুমে যাই। অনেকক্ষণ তো হলো। 
—হুম। 
বলে পলিও উঠে পড়ে। 
 পলির কোমরে বেশ ব্যথা শুরু হয়। সংকেতকে কিচ্ছু জানতে দেয়না।
খাওয়াদাওয়া করে দুজনেই ঘুমিয়ে পড়ে। হঠাৎ একটা গোঙানির শব্দে সংকেতের ঘুম
ভেঙে যায়। দেখে পলি গোঙাচ্ছে। 
—পলি! এই পলি! 

Valobashar Romantic Golpo Bangla

বলে গায়ে হাত দিয়ে ওঠাতে গিয়ে দেখে জ্বরে গা পুড়ে যাচ্ছে। সাড়া দেওয়া তো
দূর চোখ মেলে তাকাতে পর্যন্ত পারছে না। অচেনা-অজানা জায়গায় কি করবে ভাবতে
থাকে। হোটেলের রিসেপশনে  জানায় সমস্যার কথা। হোটেল কর্তৃপক্ষ একজন
ডাক্তারের সাথে  যোগাযোগ করিয়ে দেন। 

ডাক্তার কিছু ওষুধপত্র দেন।  মাথায় জলপট্টি দিতে বলেন। সময়মতো ওষুধ আর
একটু যত্ন পেলেই ঠিক হয়ে যাবে খুব তাড়াতাড়ি। 
ঘুমন্ত পলির মুখের দিকে তাকিয়ে খুব কষ্ট হয়। ভীষণ চাপা আর লাজুক স্বভাবের
সংকেত নিজেকে ঠিকঠাক প্রকাশ করতে পারেনা। কিন্তু তাই বলে পলিও কি বুঝতে পারে
না ও কতটা ভালোবাসে!

Romantic Story Marriage Bangla

— প্লিজ পলি তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে ওঠো। তোমার মতো  ছটফটে মেয়েকে এভাবে
দেখতে একটুও ভালো লাগছে না। 
দিনরাত এক করে  সেবা করার ফল পায় পরের দিন বিকেলে। পলি অনেকটাই সুস্থ ।
চোখ খুলে সংকেতের অবস্থা দেখার পর পলি তো বিস্মিত। জ্বরে বিছানায় পড়ে
থাকলেও সে বুঝতে পেরেছে সংকেত তার জন্য ঠিক কি কি করেছে। 
আরো পড়ুন,


— আমার জন্য এতসব করার কি দরকার ছিল জানতে পারি? 
—আমি ছাড়া এখানে কেউ ছিলোনা তো তাই…
—শুধুই সেইজন্য? 
চড়াইয়ের মতো গোলগোল চোখ করে জিজ্ঞেস করে। 

—জানি পড়াশোনা কমপ্লিট না করে বিয়েতে তোমার মত ছিলনা। বাড়ির চাপে বিয়েটা
করেছো। তোমার মনে খুব কষ্ট আমি তোমাকে আই লাভ ইউ  বলিনি বলে। তোমার উপর
কখনো কোনো জোর করিনি। তোমার মতো সুন্দরী স্ত্রী থাকা সত্ত্বেও আমি এতটা
নির্লিপ্ত কি করে থাকতে পারি! তাই তুমি ভাবো আমি হয়তো কারো সাথে সম্পর্কে
লিপ্ত আছি। জ্বরের ঘোরে তুমি বলছিলে এসব কথা। আমি তোমাকে কোনো  জোর
করিনা কেন জানো? আমি বিশ্বাস করি জোর করে আর যাইহোক কারো মন জয় করা যায়না।
আর ভালোবাসা তো একেবারেই পাওয়া যায় না জোর‌ করে । ভালোবাসা তো অনুভবের
বিষয়। তুমি নিজে অনুভব করলে তবেই আমার ভালোবাসা সার্থক। সবসময় যা করেছি
তোমার অনুমতি নিয়েই করেছি। অনুমতি নিয়ে তোমার ইচ্ছেকে  সম্মান
জানিয়েছি। আমি নির্লিপ্ত থেকেছি কারণ আবেগী তুমি যেন ভেসে গিয়ে নিজের
পড়াশোনার ক্ষতি না করো। সময় তো আর চলে যাচ্ছেনা। একদিন তুমিও বুঝবে। আর
যেদিন বুঝবে সেদিন… 

নতুন রোমান্টিক লাভ স্টোরি

— সেদিন?? 
—সেদিন তুমি আমার কাছে আত্মসমর্পণ করে আমার ভালোবাসার কাছে বশ্যতা স্বীকার
করবে। 
বলেই ওর নাকটা টিপে দিয়ে ব্যালকনিতে চলে গেল। 
সংকেতের বলা প্রতিটা কথা আর এই দু’দিন দুজনে একেবারেই একা থাকার সুবাদে
সারাক্ষণ খুব কাছ থেকে দেখা সংকেতের কাছে সত্যিই আজ আত্মসমর্পণ করতে ইচ্ছে
করছে। 
পলিও ধীর পায়ে উঠে গিয়ে দাঁড়ায়।
—এখানেও বশ্যতা, আত্মসমর্পণ! ওহ মাই গড! ইতিহাস ছাড়া কি আর কিচ্ছু ঢোকেনা
তোমার মাথায়?
—তুমি আবার উঠে এলে কেন? 
— ডেকে হেঁকে ঝগড়া করবো বুঝি! 
—সে তোমার যা করতে মন চায় তুমি করো কিন্তু প্লিজ আগে সুস্থ হয়ে ওঠো।
—উঁহু! আমার তো এখন হেব্বি… 
—এখন নয় ।  একটা ওষুধ আছে খেয়ে নাও।
— যদি না খাই তাহলে ?
—তাহলে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ হতেই পারে। কিন্তু তার আগে প্রতিপক্ষকে তো সুস্থ
করে তুলতে হবে।
—সত্যিই ভীষণ..
—আনরোমান্টিক পাবলিক তাইতো?? জানি আমি। 
—সরি 
বলতেই পলির ঠোঁটে আঙুল দিয়ে দু’দিকে ঘাড় নাড়িয়ে পলিকে থামিয়ে দিয়ে বলো
উঠলো
—ভালোবাসায় নো সরি, নো থ্যাঙ্কু, অনলি লা.. ভ। 
বলে কপালে চকাস! 
—কিছু হচ্ছে? 
—হুঁ, কুছ কুছ হোতা হ্যায় হিস্ট্রি টিচার তুম নহি সমঝোগে।
সংকেতের বাহুডোরে আরো দৃঢ় হয়ে ধরা দিলো!
আরো পড়ুন,

Share This Article