Bengali ভূতের গল্প Stories – শ্রেষ্ঠ ভূতের গল্প – Bangla Bhuter Golpo

Bongconnection Original Published
7 Min Read

 Bengali ভূতের গল্প Stories – শ্রেষ্ঠ ভূতের গল্প – Bangla Bhuter
Golpo

Bengali ভূতের গল্প Stories - শ্রেষ্ঠ ভূতের গল্প - Bangla Bhuter Golpo
Loading...

Bengali ভূতের গল্প Stories

।স্বপ্ন চারিণী।


বছর সাতেক আগের কথা। দূর্গা সপ্তমীর ভোরে অরুণা তার মেয়ে নোলক আর স্বামী কুন্তল
কে নিয়ে গাড়িতে রওনা হয়েছিল এয়ারপোর্ট এর পথে। গন্তব্য আন্দামান। 5-40 এর
ফ্লাইট। তাই ভোর তিনটেয় রওনা দিয়েছিলো ওরা। দিনের কলকাতা দেখেছে অরুণা। কিন্তু
উৎসবের রাতে এমন আলো ঝলমলে শহর কে প্রত্যক্ষ করলো এই প্রথম।তখনো রাস্তায়
মানুষের ঢল।
দু ঘন্টা পরে যখন আন্দামান এয়ার পোর্টে প্লেন ল্যান্ড করলো ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি শুরু
হোল। যেন পাহাড় জঙ্গল সমুদ্র সক্কলে অভ্যার্থনা জানালো তাদের।পাহাড় জঙ্গল আর
সমুদ্রে ঘেরা প্রকৃতি। এতো রকমের নীল অরুণা আগে কোনোদিন দেখেনি। মুগ্ধ হয়ে
তাকিয়ে রইল সে। নোলক ও মহা খুশি।
আগে থেকে হোটেল বুক করা। তাই হোটেল পোর্ট সেরাটন থেকে ড্রাইভার নিতে এসেছে
ওদের। সরাসরি হোটেল না গিয়ে ড্রাইভার ওদের নিয়ে গেল সাইট সিয়িং এ।
নেচারাল  ব্রিজ আরও কিছু জায়গা দেখে ওরা এলো হোটেলে।
সেদিন অষ্টমী। হোটেলের ছেলেরা নিয়ে এলো লুচি আলুর দম, মিষ্টি। কিন্তু পেট ভরা
ওরা একটা প্লেট রেখে সব ফেরত দিল।নোলক বলল -এতো কে খাবে মা। ফ্লাইটে তো অনেক
কিছু খেয়েছি।
দুদিন পোর্ট প্লেয়ারের বেশ কিছু জায়গা ঘুরল ওরা। দেখলো সেলুলার জেল লাইট এন্ড
সাউন্ড।
পরদিন যাওয়ার কথা রস আইল্যান্ড। কিন্তু জাহাজের টিকিট পাওয়া গেল না। তাই
ক্যানসেল করতে হোল।
হোটেলে আলাপ হোল দত্ত দার সঙ্গে। কলকাতা থেকে ওনারাও গেছেন। একদল। ওদের পরদিন
নীল দ্বীপ যাওয়ার কথা। অরুনাদের হ্যাভলক।

বিশ্বের সেরা ভূতের গল্প

Loading...
কিন্তু হোটেলে র ম্যানেজার বলল হ্যাভলকে নয় আগে নীল দ্বীপে যাওয়ার টিকিট পাওয়া
গেছে।

পরদিন ম্যাক ক্রুজে নীল রওনা হোল ওরা।
ছোট্ট দ্বীপ নীল। একরাত দুদিন ভালোই ঘুরলো।
দশমীর দিন সকালে বেরিয়ে হ্যাভলোক পৌঁছালো  ওরা। জেঠি থেকে হাঁটা দূরত্বে
ওদের হোটেল। সমুদ্রের পাড় ধরে ডান দিকে এগিয়ে গেলে ই একদম সমুদ্রের পাড়ে হোটেল
টা। খুব ভালো লেগে গেল ওদের। কি সুন্দর দোলনা টাঙানো, সমুদ্রের জল এসে আছড়ে
পড়ছে রাস্তার গায়ে। আবার জল নেমে গেলেই সেখানে হেঁটে চলে যাওয়া যায় অনেক দূর।
দূরে  ছোট  ছোট ডিঙি বাঁধা। মাছ ধরা নৌকা। কোনটা লাল, কোনটা গোলাপী
কোনো টা কমলা।
হোটেলের রুম গুলো কটেজের মতো। চারিদিকে নারকেল বাগান। সামনে ফুলের বাগান।
রান্না খাওয়ার জায়গা টাও বাগানের মধ্যে। ঘর থেকে বেরিয়ে এসে খেতে যেতে হয়। নোলক
এর খুব মজা। সেতো পারলে দোলনা তেই কাটিয়ে দেয় সারাদিন রাত। অরুণা কুন্তল ও বসে
থাকে সকাল সন্ধে। চা পকোড়া ওখানেই দিয়ে যায় রান্না ঘরের ছেলেটি।

Bhayankar Bangla Bhuter Golpo

সবাই হ্যাভলকে এক রাত থাকে। কিন্তু অরুণা রা ঠিক করেছে দু রাত থাকবে।
প্রথম দিন হোটেল একদম প্যাকড আপ। দুপুরে খাওয়ার পর রাধা নগর বিচ এ ঘুরলো ওরা।
অনেক ছবি ও তুলল নোলক। সূর্যাস্ত দেখে হোটেলে ফিরল সন্ধ্যায়। আবার সেই দোলনায়।
রাতে খাওয়া দাওয়ার পর শুয়ে পড়লো তাড়াতাড়ি পর দিন সকালে আবার বেরোনো আছে। নারকেল
বাগানের রান্না ঘর কাম ডাইনিং টা বেশ সুন্দর। সব রকমের আধুনিক ব্যবস্থা ই
সেখানে আছে। তবে চারদিকে বাগান আর জঙ্গল রাত্রে বেলা কেমন একটা গা ছমছমে
ব্যাপার।
প্রথম রাত টা শুতে না শুতেই ঘুমিয়ে পড়লো অরুণা। এমনিতে বাইরে কোথাও ঘুম আসতে
দেরী হয় তার। কিন্তু আজ ঘুমিয়ে পড়লো ক্লান্তিতে।
আরো পড়ুন,

সকালে তৈরী হয়ে বেরিয়ে পড়লো। কিং কোকোনাট খেয়ে স্পিড বোটে ঘুরে এলো এলিফ্যান্ট
দ্বীপ। নোলক স্কুবা করল রাধা নগর বিচে। গ্লাস বোট এ কোরাল দেখা ও হোল।
দুপুরে খেয়ে দেয়ে ঘুরে এলো কালা পাত্থর বিচ।
সন্ধ্যায় ফিরে এসে দেখলো হোটেল শুনশান। সব পর্যটক চলে গেছে। শুধু ওরা তিনজন
আর 
দক্ষিণ ভারতীয় হোটেল ম্যানেজার।
রান্নার দিদি আর তার সহকারী ছেলেটা আছে। চা দিতে এসে বলে গেল আজ কোনো রুমে কেউ
নেই। তাড়াতাড়ি খেয়ে নেবেন। আপনারা খেয়ে নিলে আমরা বাড়ী চলে যাব।অরুণা দের কাল
সকালে যাওয়া। আগে থেকে বুক করা তাই পেমেন্ট ও হয়ে আছে। সকালে বেরিয়ে গেলেই হবে।

তাড়াতাড়ি খেয়ে শুয়ে পড়লো। আজ যেন কেমন মায়াবী লাগছে হোটেল টা। চারিদিক
নিস্তব্ধ। গাছের সনসন  শব্দ আর সমুদ্রের গর্জন। শুয়ে পড়েও ঘুম নেই অরুণা র
চোখে দুপাশে মেয়ে আর তার বাবা ঘুমে অচেতন।উশপাশ করছিলো অরুণা। হঠাৎ দরজায় চোখ
পড়তেই দেখলো একজন দীর্ঘাঙ্গী  বিদেশিনী মহিলা দরজায় দাঁড়িয়ে। পরনে গোলাপী
রঙের ড্রেস। হাতছানি দিয়ে ডাকছে অরুণা কে। অরুণা স্বপ্নাবিষ্ঠে র মতো নেমে পড়লো
মেঝেতে। যেন নিশিতে পেয়েছে। হাঁটতে হাঁটতে এগোতে লাগলো মহিলাকে অনুসরণ করে। সেই
মহিলা এগিয়ে যাচ্ছে সমুদ্রে বাঁধা নৌকার দিকে। অরুণা ও গিয়ে বসলো নৌকায়। এবার
সেই মহিলা নৌকার দড়ি খুলে দিল। নৌকা ভেসে চলল মাঝ দরিয়ায়।একটা ঠান্ডা হওয়ার
ঝাপটা এসে লাগলো অরুনার চোখে মুখে। কে যেন কপাল স্পর্শ করল তার। ধড়মড় করে উঠে
বসল অরুণা। কুন্তল আর মেয়ে সামনে দাঁড়িয়ে। আর অরুণা দোলনাতে  শুয়ে। ওদের
চোখে জিজ্ঞাসা কখন এসেছো এখানে? অরুনার চোখে শূন্য দৃষ্টি। দু চোখ খুঁজে
বেড়াচ্ছে কাকে যেন।ভোরের আলো তখন ফুটিফুটি।

ঘরে গিয়ে ঘোর কাটার পর সব বলেছিলো অরুণা। পরদিন সকালে চলে এসেছিলো পোর্ট
ব্লেয়ার। আগের হোটেলেই।হ্যাভালক এর হোটেলের রান্নীদিদি বা ছেলেটার সঙ্গে দেখা
হয় নি সকালে। ম্যানেজার বাবুকে ও জিজ্ঞাসা করেনি কিছু।

শ্রেষ্ঠ ভূতের গল্প

পরদিন সকালে রস আইল্যান্ড যাবার সময় আবার দত্ত দার সঙ্গে দেখা।ওনারা একদিন
ছিলেন হ্যাভলকে।
বললেন -কোন হোটেলে ছিলেন হ্যাভলকে?নাম শুনেই বললেন -রাতে ঘুম হয়েছিল?
জানেন ওই হোটেলে ভুত আছে।
ওনারা যে রাতে ছিলেন, সেই রাতে অন্য একটা পরিবারের দুটো রুম নেওয়া ছিল। ওনাদের
ছেলেমেয়ে রা সে রাতে ঘুমাতে পারেনি। শেষে বাবা মায়ের ঘরে এসে একসাথে ঘুমিয়েছিল।
না অরুণা কিছু বলেনি দত্ত দাকে। শুধু ওরা তিনজন মুখ চাওয়া চাওয়ি করেছিল।
না তারপর যেকদিন ছিল ওরা। আর কোথাও এমন অভিজ্ঞতা হয়নি।
শুধু অরুনার মনে এখনও খচ খচ  করে ও ঘুমের মধ্যে দোলনাতে গেল কি করে!আর সেই
মহিলা কি শুধুই স্বপনোচারিণী? তার কোন উত্তর অরুনার কাছে নেই।
আরো পড়ুন,

Share This Article