সেরা প্রেমের গল্প | Premtem | Bengali Love Story

Bongconnection Original Published
8 Min Read

 সেরা প্রেমের গল্প | Premtem | Bengali Love Story

সেরা প্রেমের গল্প | Premtem | Bengali Love Story
Loading...

সেরা প্রেমের গল্প

Loading...
প্রেমটেম
                   
 – অন্তরা সমাজপতি 
সে রাস্তার মাঝে বৃষ্টিতে একাই দাঁড়িয়ে ছিল। রাতুল গাড়ি টা তার সামনে দাঁড়
করিয়ে জানলার কাচটা নামিয়ে বলে ওঠে,  “আরে সায়নী” । সায়নী, রাতুলকে দেখে
অবাক হয়ে যায়, কিছু বলার আগেই রাতুল বলে ওঠে “জানি তুই ছোটবেলা থেকেই বৃষ্টিতে
ভিজতে ভালোবাসিস, কিন্তু আর না ভিজে, গাড়িতে ওঠ্”।  সায়নী ইতস্তত করলে,
রাতুল গাড়ির দরজাটা খুলে সায়নীকে একপ্রকার জোর করেই গাড়িতে বসিয়ে গাড়ি start
দেয়।


সায়নী রাতুলকে জিজ্ঞাসা করে “তুই এই রাস্তায়? এই রাস্তাটা তো তোর অফিসের রাস্তা
নয়, তাহলে?”
রাতুল বলে আসলে সে আজ ছুটি নিয়েছে। সুলগ্নার জন্মদিন। ওদের বাড়িতেই ছিল। 
“কিন্তু সায়নী, তুই এখানে?” 
“আসলে সামনের মাসে আমার বিয়ে, কাকাই এর সাথে দেখা করতে যাচ্ছি” 
আরো কিছুক্ষণ কথা বলার পর, তাদের গন্ত্যব্যস্থল এসে যায়। সায়নী, রাতুলকে বলে,
সে দুদিন এখানে আছে, রাতুল চাইলে আসতেই পারে।
রাতুল একটু হেসে, গাড়ি নিয়ে নিজের বাড়ির দিকে এগোতে থাকে। 
বাড়ি ফিরে একটু fresh হয়ে পুরোনো album টা নিয়ে বসে। এই album টায় রয়েছে সে আর
তার best friend এর ছবি। সায়নী । হ্যাঁ, সায়নী তার kindergarten এর বন্ধু, শুধু
বন্ধুই নয়, best friend যাকে বলে।
সেই Kindergarten থেকে দুজনের বন্ধুত্ব। তারপর একসাথে স্কুল, কলেজ। সায়নী
বরাবরই খুব extrovert আর রাতুল একদম বিপরীত। দুজনের প্রেম টাও ছিল খুব অদ্ভুত।
আসলে রাতুল ছিল একেবারেই মুখচোরা। চাপা আর লাজুক স্বভাবের রাতুলকে সায়নী ছাড়া
আর কেউ বুঝতে পারত না। আর তাই হয়তো সায়নী ছাড়া তার কোনো বন্ধু ও সেরকম ভাবে কেউ
ছিল না।
রাতুল এর একটা personality ছিল যেটা অনেক মেয়েকেই attract করত। কিন্তু রাতুল,
সায়নী ছাড়া কারোর সাথেই সেভাবে মিশতো না, ফলে কেউই সেভাবে পাত্তা পেত না।


ওদিকে ছটফটে স্বভাবের সায়নী যেমন ছিল লেখাপড়ায়, তেমনি ছিল গানের গলা। স্কুল,
কলেজ এর function এ সায়নীর performance ছিল সবচেয়ে সেরা। প্রচুর পুরস্কার পায়
সে।
সায়নী আর রাতুল এর প্রেমের শুরুটা ও খুব সুন্দর। সায়নী রাতুলকে propose করে।
আসলে সায়নী জানত, রাতুল কখনোই সায়নীকে তার মনের কথা বলতে পারবেনা। আর রাতুল ও
চাইতো যে সায়নী যেন তার মনের কথাগুলো বুঝতে পারে।
দুজনের বাড়ি একই পাড়ায়। দুজনের বাড়ি থেকে ও এই সম্পর্ক টা হাসিমুখে মেনে
নেয়। 
স্কুল পেড়িয়ে কলেজ আর তারপর চাকরি। এই এতগুলো বছরে তাদের সম্পর্কটা আরো সুন্দর
হয়ে ওঠে। সায়নীর রাতুলকে বুঝে চলা আর রাতুলের সায়নীর প্রতি care তাদের
সম্পর্কটাকে একটা আলাদা রূপ দেয়। 
রাতুল আর সায়নীর বাবা মায়েরা তাদের বিয়ের ঠিক করেন। আসলে রাতুলের বাড়িতেই এই
আলোচনা হয়।
সায়নী আর রাতুল এই সময় রাতুলের ঘরে যায়। দুজনেই দুজনকে জড়িয়ে ধরে। সায়নী কিছুটা
আবেগপ্রবণ হয়ে রাতুলের ঠোঁট টাকে স্পর্শ করতে গেলে, রাতুল একটু ইতস্তত করে।
সায়নী বুঝতে পারে, রাতুল তাকে বলে আসলে এই special moment গুলো নিয়ে সে ভিষন
excited, আর তাই সে বিয়ের পরে সময়গুলো এইভাবে সুন্দর করে কাটাতে চায়। 
সায়নী বুঝতে পারে রাতুলের feelings। রাতুল সায়নীর কপালে একটা হালকা করে kiss
করে। 
সায়নীরা নিজেদের বাড়ি ফিরে আসে।
সায়নী খুব excited তাদের বিয়ে নিয়ে। bench partner থেকে life partner, এটা
ভাবতেই তার মুখ লজ্জায় লাল হয়ে যায়।

একটি রোমান্টিক প্রেমের গল্প

ইতিমধ্যে রাতুলের অফিস থেকে তাকে ছয় মাসের জন্য onsite এ পাঠানোর কথা হয়,
Germany তে।
দুই বাড়ি থেকে ঠিক হয়, রাতুল দেশে ফিরলেই বিয়ের দিন ঠিক করা হবে।
সায়নী কিছুটা মনমরা হলে ও সেকথা কাউকে বুঝতে দেয় না।
রাতুল ওখানে পৌছে সায়নীকে video call করে।
কিছুদিন পর রাতুল, সায়নীকে তার নতুন বন্ধুদের কথা বলে। সুলগ্না, রাতুলের সাথে
একই অফিসে কাজ করে। 
সুলগ্নার বন্ধু কৌশিক, নীলাঞ্জনা আর অমিত। বিদেশে একটা বাঙালি গোষ্ঠী, আর সেটা
নিয়ে সে খুব খুশি সেটা সায়নীকে সে জানায়। রাতুল, কৌশিক আর অমিত একটা ফ্ল্যাটে
rent এ থাকে। বাড়িভাড়া তিনজনে share করায় কিছুটা কম হয়।
এই ছয় মাসে সায়নী, রাতুলের মধ্যে কিছু পরিবর্তন লক্ষ্য করে। রাতুল আগের থেকে
অনেক বেশি কথা বলে। বেশ ছটফটে হয়ে উঠেছে ধীরে ধীরে।
আগের থেকে অনেক কম সময় দেয় সায়নীকে। প্রথম প্রথম জিনিসগুলো নিয়ে অতটা না
ভাবলেও, কিছু জিনিস তাকে বিষয়টি নিয়ে ভাবতে বাধ্য করে।
আসলে সেদিন social media তে রাতুল আর তার বন্ধুদের ছবিগুলো দেখে সায়নী একটু
অবাক হয়।
রাতুলকে সেকথা জিজ্ঞাসা করায়, রাতুল ব্যাপারটা এড়িয়ে যায়। রাতুলকে যে সায়নী
অবিশ্বাস করে তা নয়, রাতুল এর আগে সব ব্যাপারগুলো সায়নীকে বলত, কিছু লুকোতো না,
কিন্তু হঠাৎ এরকম কেন করল সে বুঝতে পারেনা। সায়নী, ঠিক করে রাতুল ফিরলে তার
সাথে সরাসরি বিষয়টি নিয়ে কথা বলবে।
ছয় মাস পর রাতুল ফিরে এসে জানায় যে, সে কোনমতেই সায়নীকে বিয়ে করতে পারবে না।
এরপর সায়নীকে, রাতুল একটি coffee shop এ meet করতে বলে।
সায়নী সেখানে পৌছে দেখে, রাতুল আগেই পৌছে গেছে। এরপর রাতুল, সায়নীকে যা বলে
তাতে সায়নী বাকরুদ্ধ হয়ে যায়।
রাতুল জানায় যে, সে সায়নীকে বিয়ে করতে পারবে না। কারণ সে সায়নীকে ভালোবাসে না।
তার জীবনে অন্য কেউ আছে, আর সে হল কৌশিক।
একথা শুনে সায়নী হতভম্বের মত রাতুলের দিকে তাকিয়ে থাকে।

Bengali Love Story Golpo

রাতুল বলে, সে নিজে ও ব্যাপারটা কোনোদিন বুঝতে পারত না যদি না কৌশিক তার জীবনে
আসত।  
Germany তে নীলাঞ্জনা আর অমিত একসাথে থাকত। আর রাতুল কৌশিক দুটো আলাদা ঘরে।
রাতুল, সায়নীকে বিয়ে করতে পারে, কিন্তু তাদের সম্পর্কটা একজন স্বামী স্ত্রীর
সম্পর্ক হবে না। কারন যে intimate moment টা সায়নী তার কাছে চায়, সেটা সে
কৌশিকের সাথে feel করে।
আর সেইজন্যই হয়তো ছোটবেলা থেকে একজন মেয়ের সাথে সে স্বচ্ছন্দ বোধ করে। আর তাই
হয়তো সায়নী তার একমাত্র বন্ধু। 
সায়নীকে সে বলে, যে আমাদের সমাজ এটা মেনে নেবে না। একমাত্র সায়নী তাকে সাহায্য
করতে পারে।
সায়নী এরপর নিজের বাড়ি ফিরে এসে খুব কান্নাকাটি  করে। সায়নীকে অনেকেই
পছন্দ করত কিন্তু সে ছোটবেলা থেকে রাতুলকে ছাড়া আর কাউকে ভাবেনি। এই অবস্থায়
যখন সে জানতে পারে যে তার ভালোবাসার মানুষটির ভালোবাসা সে নয়, অন্য কেউ, তখন
স্বাভাবিকভাবেই সে খুব ভেঙে পড়ে।
পরদিন সে নিজের বাবা মাকে নিয়ে রাতুলের 
বাড়ি গিয়ে তার মা বাবাকে বোঝানোর চেষ্টা করে।
আসলে ভালোবাসা স্থান কাল পাত্র দেখে হয়না, ব্যাস্  হয়ে যায়। আসলে আমাদের
মন ঠিক করে আমরা কাকে ভালোবাসব। রাতুল অস্বাভাবিক নয়। তার ভালোবাসা ও ততটাই
পবিত্র। জরুরী নয় যে প্রেম শুধু একটা ছেলে আর মেয়ের মধ্যেই হবে।

লাভ স্টোরি গল্প

রাতুলের মা বাবা অনেকটা অনিচ্ছাকৃতভাবে
এই সম্পর্কটা মেনে নেয়। 
কৌশিক আর রাতুল, সায়নীর কাছে চিরকৃতজ্ঞ হয়ে থাকে। কৌশিক জানায় যে, সায়নীর জন্যই
তার ভালোবাসার মানুষ তার কাছে আছে। আসলে কৌশিকের বাবা মা নেই, আর তাই হয়তো
রাতুল ই তার সব।
সায়নী অন্য জায়গায় ফ্ল্যাট কিনে সেখানে চলে যায়। আসলে রাতুলের থেকে দূরে থাকার
অভ্যাস করার জন্যে হয়তো।।
রাতুল album টা বন্ধ করে। আজ বছরখানেক পর সায়নীর সাথে দেখা। চঞ্চল সায়নী আজ কত
শান্ত, আর সেদিনের মুখচোরা রাতুল কত চঞ্চল।
হঠাৎ, রাতুলের ফোনে একটা sms.. i miss you love…
রাতুল সঙ্গে সঙ্গে কৌশিককে ফোন করে ।।।।

Share This Article