সুন্দর প্রেমের গল্প – তোমাকে ছুঁয়ে দিলাম – Sundar Premer Golpo

Bongconnection Original Published
9 Min Read

 সুন্দর প্রেমের গল্প – তোমাকে ছুঁয়ে দিলাম – Sundar Premer Golpo

সুন্দর প্রেমের গল্প - তোমাকে ছুঁয়ে দিলাম - Sundar Premer Golpo
Loading...

সুন্দর প্রেমের গল্প 

 তোমাকে ছুঁয়ে দিলাম


— এই বাঁদর ছেলে, ঠিক করে শাড়ির কুচিটা ধর না, আমি তো পায়ে বেঁধে পড়ে যাব নাকি
— তোকে কে বলে এসব বারো মিটারের কাপড় পড়ে ম্যারাথন দৌড়ে সামিল হতে ? 
— ওটা বারো মিটার নয়, বারো হাত বলে রে ছাগল ! আর রোজ থোরিই না আমি শাড়ি পরে
অফিস আওয়ারে এখানে আসি ! 
— আমি জানি ওটা বারো হাতই বলে কিন্তু তোর মতো চার ফুটের একটা পুচকের কাছে ওটা
বারো মিটারেরই সমান। হে হে হে !
— এই তবে রে ! তুই আবার আমাকে বেঁটে বলে, বডি সেমিং করছিস ! আমার হাইট মোটেও
চার ফুট না !
— আমি কোথায় বডি সেমিং করলাম, তুই তো নিজেই নিজেকে বেঁটে বলে আমার কথার সমর্থনে
প্রুফ দিলি !….বলেই মুচকি হাসে আদিত্য।

Also read, 

দুষ্টু মিষ্টি প্রেমের গল্প

— ইসসস ! নিজে কি তুই? ছয় ফুটের তাল গাছ একটা ! বাড়ির সিলিং ফ্যান পরিষ্কার
ছাড়া কোন কম্মে লাগিস তুই??
— এই, এই! হাইট নিয়ে কোনো কথা হবে না ! এমন টল, ডার্ক, হ্যান্ডসাম ছেলে সারা
কলকাতা খুঁজলেও না, আর একটাও পাবি না ! 
— হা হা হা হা !!!! আর কত হাসবো আমি?

প্রথম প্রেমের গল্প

— ওই তোর এতো হাসির কি হল, আমি এমন কি হাসির কথা বললাম? 
— নিজের মুখটা একবারও আয়নায় দেখেছিস কখনও, যা একবার ভালো করে দেখে আয় ????
— হ্যাঁ অনেক বার ! নিজেই নিজের ওপর ক্রাশ খেয়ে যাই আর তোর থেকে তো অনেকই ভালো
রে, মধু পেত্নি!!!!
— এভাবে অপমান ! দেখিস না, তোর কপালে কেমন একটা শ্যাওড়া গাছের পেত্নি জোটে,
যাকে দেখবি আর শিউরে শিউরে উঠবি ! এই মধুমিতাকে শেষে কি না পেত্নি বলা !
— সে তো জুটেই গেছে, তবে ছোটোখাটো একটা মিষ্টি পেত্নি !….বিড়বিড় করে বলে।
— এই কি বললি ? 
— কই কিছু না ! ও, হ্যাঁ ! তা সকাল সকাল এমন জরুরী তলব কেন এই নরাধমকে ? 
— লাইক সিরিয়াসলি! তোর সত্যিই মনে নেই, আজ কি ???
— তুই যখন বারো মিটার শাড়ি পরে, সকাল সকাল চোখের পাতায় আইশ্যাডো মেখে, অফিস
টাইমে ম্যারাথন দৌড়ে সামিল হয়ে, বারাসাত থেকে প্রিন্সেপ ঘাট অবধি ছুটে এসেছিস,
তখন কিছু তো একটা গুরুত্বপূর্ণ নিশ্চয়ই আছে!…..কথাটা বলে গালে হাত দিয়ে গভীর
ভাবনায় নিমজ্জিত হয় আদিত্য। মধুমিতাকে রাগানোর একটা সুযোগও আদিত্য ছাড়ে না।
ওদের এই বন্ধুত্বের সম্পর্কটাই এমন টম এন্ড জেরির মতো। 
আদিত্যর কথায় রেগে গিয়ে দুমদাম করে পা ফেলে এগিয়ে গিয়ে, বেঞ্চে রাখা ব্যাগ থেকে
একটা মিলটনের টিফিন ক্যারিয়ার ও প্যাকেট বের করে আদিত্যের হাতে দিয়ে গম্ভীর
কন্ঠে বলে…..
— এটাতে পায়েস আছে, সকালে উঠে বানিয়েছি আর এই প্যাকেটে আমার হাতে তৈরি
পাঞ্জাবি। শুভ জন্মদিন! এবার তাহলে আসার কারণটা আশা করি বুঝে গেছিস? আর ওটাকে
আইশ্যাডো নয় মাস্কারা বলে ! যেটা জানিস না, সেটা নিয়ে একদম ভুলভাল বকবি না,
বুঝেছিস ! বাই, এই আমি চললাম !….জোর পায়ে হাঁটতে শুরু করে মধুমিতা।
– ইয়ার্কিটা আজ মনে হয় একটু বেশিই হয়ে গেল, আমার জন্যই তবে আজ এই মোহমোয়ী রুপে
আসা হয়েছে !….ঠোঁটে এক চিলতে হাসির ঝিলিক খেলে যায় আদিত্যের।
ততক্ষণে মধুমিতা মনে মনে রাগে গজগজ করে , একা একা বকতে বকতে অনেকটা এগিয়ে
গেছে…
— কি মনে করে কি , ও নিজেকে ??? গর্ধব একটা ! কিচ্ছু বোঝে না। আমি যে আজ শুধু
ওর জন্যই সেজেগুজে এসেছি , এটুকু বোঝার ক্ষমতা নেই ! একটা ভালো কম্পলিমেন্ট তো
দূর , শেষে আমাকে পেত্নি বলল, আজকের দিনেও ! ওর থেকে কিছু আশা করাই আমার ভুল
হয়েছে। আমি তো ভেবেছিলাম আজ অন্তত ও নিজের মনের কথা স্বীকার করবে ! নাকি এটা
আমারই মনের ভুল ! ও হয়তো আমাকে শুধু ওর সব থেকে কাছের বন্ধুই ভাবে ! কিন্তু চোখ
যে মিথ্যে বলে না ! তবে কি আমার বোঝার ভুল???? ধুর ভালো লাগে না !….মনে মনে
কথা ভাবতে ভাবতে দুমদাম পা ফেলে এগোতে থাকে। 
— আরে মধু দাঁড়া, এই মধু ! কখন থেকে ডাকছি শুনতে পারছিস না ! …..এসেই পেছন
থেকে ওর হাতটা টেনে ধরে আদিত্য। 
— কি হয়েছে টা, কি ? দেখ আমি একদম ইয়ার্কির মুডে নেই । আমি বাড়ি যাবো, আমার
একদম ভালো লাগছে না। 
— হ্যাঁ সে তো যাবিই কিন্তু যার জন্য কনকনে ঠান্ডার মধ্যে সাত সকালে উঠে পায়েস
রান্না করে সকাল সকাল নিয়ে এলি, তাকে একবার নিজের হাতে খাইয়ে দিবি না
??…..কথাটা বলেই স্মিত হেসে আদিত্য এগিয়ে দেয় পায়েসের টিফিন ক্যারিয়ারটা
মধুমিতার দিকে। এই অনুরোধ উপেক্ষা করার ক্ষমতা ওর নেই। কোনো এক ঘোরের ভেতর চলে
যায় মধুমিতা। এক চামচ পায়েস মুখের সামনে তুলে ধরতেই, সেটা নিমিষে মুখে পুড়ে
দিয়ে আদিত্য বলে….

প্রথম প্রেমের রোমান্টিক গল্প

– ইটস সো ইয়ামি ! থ্যাংক ইউ মধু ! তুই যে এত সুন্দর রান্না করতে পারিস আমি তো
জানতামই না। আচ্ছা, আমার জন্য যখন এত কিছু করলি আমার আর একটা কথা রাখবি প্লিজ
– কি???
মধুমিতার হাতটা ধরে নিয়ে গঙ্গার ধারে দাঁড় করায় আদিত্য। হাঁটু মুড়ে মধুমিতার
সামনে বসতেই, মধুমিতা বিস্ময়ের চরম সীমায় পৌছায়।
– আরে আরে কি করছিস ! 
– সসসসস ! 
মধুমিতা বুঝে উঠতে পারে না আদিত্য ঠিক কি করতে চাইছে। ও অবাক নয়নে, অপল
দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে আদিত্যের দিকে। আদিত্য, হাঁটু মুড়ে বসে মধুমিতার বা হাতটা,
দুহাতের মুঠোয় বন্দী করে বলে…….
— ” আমার জীবনের ঘন কুয়াশা ঢাকা সকালে এক চিলতে সুখের রোদ্দুর হবি ? জৈষ্ঠের
রৌদ্র তপ্ত দিনে, আমার শরীর জুড়ে শীতল সিক্ততা হবি ? আমার সকল ক্লান্ত দুপুরে
তুই পরম আশ্রয়ের কাঁধ হবি ? গোধূলি রাঙা প্রতিটি বিকেলে, আমার এই সাদা কালো
ম্যাড় ম্যাড়ে জীবনের রামধনুর সাত রঙ হবি, মধু ??? আমি জানি না কিভাবে ভালোবাসি
বলতে হয়, আমি বরাবরই বড্ড অগোছালো। অভ্যেস বানিয়ে তো সবাই ছেড়ে যায়, তুই আমায়
গুছিয়ে নিতে শিরায় শিরায় স্বভাব হবি ??????” 
ভালোলাগার এক প্রবল স্রোতে ভেসে যেতে থাকে মধুমিতা। ভাষা হারায় ও। আদিত্য এখনো
উত্তরের অপেক্ষায়, জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে মধুমিতার চোখের দিকে তাকিয়ে। ও বিনা বাক্য
ব্যয়ে আদিত্যের প্রশস্ত বুকে ঝাঁপিয়ে পড়ে। অবশেষে মধুমিতার গত তিনবছরের
অপেক্ষার অবসান ঘটল। ওদের বন্ধুত্বের বন্ধন নতুন একটা নাম পেল। মধুমিতা
আদিত্যকে জড়িয়ে ধরে গুনে নিতে থাকে ওর হৃদয়ের প্রতিটি স্পন্দন যার প্রতিটি
কম্পন প্রতিফলিত হচ্ছে মধুমিতার হৃদয়ে। আদিত্যও তার আশানুরূপ উত্তর পেয়ে, ঠোঁটে
এক চিলতে হাসির স্পর্শ এঁকে, দুহাতের বন্ধনীতে আবদ্ধ করে তার প্রেয়সীকে, তারপর
দুষ্টুমি করে বলে…..

আমার প্রেমের গল্প

— তুই না ঠিক বেঁটে নোস, তোর হাইট টাই আসলে ভীষণ কিউট, আমার হৃদ কম্পন মাপার
জন্য, বুঝলি মধু পেত্নি!!!!
মধুমিতা আদিত্যের বুকে একটা আলতো ঘুষি মেরে আদুরে কন্ঠে, ছদ্মরাগ দেখিয়ে
বলে….
— শয়তান ছেলে, তুই আবার আমাকে পেত্নি বললি!! দাঁড়া দেখাচ্ছি মজা !….বলেই ওকে
মারতে উদ্যত হলে আদিত্য চিৎকার করতে করতে দৌড় লাগায়, আর বলে…
— এই না না , মধু খিমচোবি না কিন্তু। তোর ওই রাক্ষসীর মতো নখে না ভীষণ লাগে ভাই
!!!
— কি বললি তুই আমায়, আমি রাক্ষসী??? আজ তুই শেষ আদি…..!!!
— এই নানানানানানানা !!!!!!
ওদের এই চলতে থাকা খুনসুটি ভরা ভালোবাসার সাক্ষী থেকে যায় শহরের বুকে মাথা উঁচু
করে দাঁড়িয়ে থাকা সুউচ্চ হাওড়া ব্রিজ ও এই চঞ্চলা গঙ্গা নদী ; যারা যুগ যুগ ধরে
এমন কতই না ভালবাসার সাক্ষী।
আরো পড়ুন,
Share This Article
Leave a comment

Adblock Detected!

Our website is made possible by displaying online advertisements to our visitors. Please consider supporting us by whitelisting our website.