হিন্দু পুরান মতে, সংকোটমোচন হনুমানকে পূজো করার দিন,এই দেবতাকে মন থেকে ডাকলে জীবন থেকে সমস্ত বিপদ অপদ দূর হয়ে যায় । তাই প্রত্যেক শনিবার ও মঙ্গলবার পবিত্র মনে বজরংবলীর পুজো করা উচিত । আর এই বজরংবলীর পুজোয় অবশ্যই পাঠ করতে হবে হনুমান চালিশা । হনুমান চলিশা পাঠ করার মধ্যে দিয়ে আপনার জীবনে আসবে শান্তি। সমস্ত বিপদ আপদ থেকে পাবেন মুক্তি। এছাড়াও সংসারে আসবে শান্তি ও সমৃদ্ধি। তো, চলুন দেখে নেওয়া যাক, Hanuman Chalisha Lyrics In Bengali
Hanuman Chalisa In Bengali
হিন্দু পুরান মতে, সংকোটমোচন হনুমানকে পূজো করার দিন,এই দেবতাকে মন থেকে ডাকলে জীবন থেকে সমস্ত বিপদ অপদ দূর হয়ে যায় । তাই প্রত্যেক শনিবার ও মঙ্গলবার পবিত্র মনে বজরংবলীর পুজো করা উচিত । আর এই বজরংবলীর পুজোয় অবশ্যই পাঠ করতে হবে হনুমান চালিশা । তো, চলুন দেখে নেওয়া যাক, Hanuman Chalisha Lyrics In Bengali
ভূমিকা – Introduction to Hanuman Chalisa in Bengali
হনুমান চালিশা হলো, হিন্দুদেবতা হনুমানের উদ্দেশ্যে রচিত একটি ভক্তিমূলক স্তব। জনপ্রিয় মতানুযায়ী মহান কবি তুলসীদাস ষোড়শ শতকে অবধী ভাষায়ে এই প্রার্থণাস্তব রচনা করেন। ‘চালিশা’ শব্দের অর্থ হলো চল্লিশ, হনুমানচালিশা স্তবে চল্লিশটি চৌপাঈ থাকার কারণে এইরূপ নামকরণ হয়েছে।
শুরু ও শেষের দোহা-কে ছাড়া, হনুমান চালিশাতে মোট চল্লিশটি শ্লোক আছে। হনুমান চালিশা স্তবে হনুমানের মতো সাহস, বুদ্ধি, শক্তি, ভক্তি এবং তার অজস্র গুণাবলীর কথা বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করা হয়েছে।
হনুমান চালিশা বাংলা অনুবাদ
জন সাধারণের বিশ্বাস অনুযায়ী, কেউ যদি নিয়মিত হনুমান চালিশার শেষ শ্লোকটি নিষ্ঠার সাথে জপ করেন, তাহলে তিনি সর্বদাই ভগবান হনুমানজীর আশির্বাদধন্য থাকবেন। বিশ্বজুড়ে হিন্দুধর্মাবলম্বীরা বিশ্বাস করেন, নিয়মিত হনুমান চালিশা পাঠ যেকোনো গুরুতর সমস্যা এমন কী দুষ্ট আত্মার হাত থেকেও রক্ষা করে।
হনুমান চালিশা রচনার কিংবদন্তী ইতিহাস –
জনমত অনুযায়ী, রামচরিতমানস রচয়িতা মহান কবি তুলসীদাস একবার তৎকালীন ভারতসম্রাট ঔরঙ্গজেবের সাথে দেখা করতে গেছিলেন। সম্রাট কবিকে উপহাস করেন এবং ভগবান রামচন্দ্রকে দর্শন করানোর চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেন। মহান কবি তাকে জবাবে বলেন, মনের ভিতরের পরম নিষ্ঠা ছাড়া ভগবানদর্শন অসম্ভব। এই কথার শাস্তিস্বরূপ ঔরঙ্গজেব তাকে কারারুদ্ধ করার নির্দেশ দেন। প্রচলিত বিশ্বাস যে তুলসীদাস কারাবন্দি অবস্থাতেই এই দুর্দান্ত হনুমান চালিশা স্তব রচনা করেন। কথিত আছে, রচনাটি শেষ হওয়ার পরেই তুলসীদাস প্রথমবারের জন্য হনুমান চালিশা স্তবটি একদল বানরের সামনে পাঠ করেন।
Jai Hanuman Gyan Gun Sagar Lyrics In Bengali
হনুমান চালিশা স্তবের পদ –
দোহা:
শ্রীগুরু চরণ সরোজ রজ নিজ মন মুকুরু সুধারি।
বরনউ রঘুবর বিমল জসু জো দায়কু ফল চারি॥
বুদ্ধিহীন তনু জানিকে সুমিরোঁ পবনকুমার।
বল বুধি বিদ্যা দেহু মোহিঁ হরহু কলেস বিকার॥
চৌপাঈ:
জয় হনুমান জ্ঞান গুন সাগর।
জয় কপীস তিহুঁ লোক উজাগর॥
রাম দূত অতুলিত বল ধামা।
অঞ্জনি পুত্র পবনসুত নামা॥
মহাবীর বিক্রম বজরঙ্গী।
কুমতি নিবার সুমতি কে সঙ্গী॥
কাঞ্চন বরণ বিরাজ সুবেসা।
কানন কুণ্ডল কুঞ্চিত কেশা॥
হাথ বজ্র ঔ ধ্বজা বিরাজৈ।
কাঁধে মূঁজ জনেউ সাজৈ॥
শঙ্কর সুবন কেশরী নন্দন।
তেজ প্রতাপ মহা জগ বন্দন॥
বিদ্যাবান গুণী অতি চতুর।
রাম কাজ করিবে কো আতুর॥
প্রভু চরিত্র শুনিবে কো রসিয়া।
রাম লখন সীতা মন বসিয়া॥
সূক্ষ্ম রূপ ধরী সিয়হিঁ দিখাবা।
বিকট রূপ ধরি লঙ্কা জরাবা॥
ভীম রূপ ধরি অসুর সঁহারে।
রামচন্দ্র কে কাজ সঁবারে॥
লায় সঞ্জীবনি লখন জিয়ায়ে।
শ্রীরঘুবীর হরষি উর লায়ে॥
রঘুপতি কিন্হী বহুত বড়াঈ।
তুম মম প্রিয় ভরতহি সম ভাই॥
সহস বদন তুমহরো জস গাবৈঁ।
অস কহি শ্রীপতি কন্ঠ লগাবৈঁ॥
সনকাদিক ব্রহ্মাদি মুনীশা |
নারদ শারদ সহিত অহীশা ||
Hanuman Chalisa Bengali Meaning
যম কুবের দিগপাল জহাং তে |
কবি কোবিদ কহি সকে কহাং তে ||
তুম উপকার সুগ্রীবহি কীন্হা |
রাম মিলায় রাজপদ দীন্হা ||
তুম্হরো মন্ত্র বিভীষণ মানা |
লংকেশ্বর ভয়ে সব জগ জানা ||
য়ুগ সহস্র যোজন পর ভানু |
লীল্য়ো তাহি মধুর ফল জানু ||
প্রভু মুদ্রিকা মেলি মুখ মাহী |
জলধি লাংঘি গয়ে অচরজ নাহী ||
দুর্গম কাজ জগত কে জেতে |
সুগম অনুগ্রহ তুম্হরে তেতে ||
রাম দুয়ারে তুম রখবারে |
হোত ন আজ্ঞা বিনু পৈসারে ||
সব সুখ লহৈ তুম্হারী শরণা |
তুম রক্ষক কাঁহু কো ডর না ||
আপন তেজ তুম্হারো আপৈ |
তীনোং লোক হাংক তে কাংপৈ ||
ভূত পিশাচ নিকট নহি আবে |
মহবীর জব নাম সুনাবে ||
নাসৈ রোগ হরৈ সব পীরা |
জপত নিরংতর হনুমত বীরা ||
সংকট সে হনুমান ছুড়াবৈ |
মন ক্রম বচন ধ্য়ান জো লাবৈ ||
সব পর রাম তপস্বী রাজা |
তিনকে কাজ সকল তুম সাজা ||
ঔর মনোরধ জো কোয়ি লাবৈ |
তাসু অমিত জীবন ফল পাবৈ ||
চারো যুগ পরিতাপ তুম্হারা |
হৈ পরসিদ্ধ জগত উজিয়ারা ||
সাধু সন্ত কে তুম রখবারে |
অসুর নিকন্দন রাম দুলারে ||
অষ্ঠসিদ্ধি নব নিধি কে দাতা |
অস বর দীন্হ জানকী মাতা ||
রাম রসায়ন তুম্হারে পাসা |
সাদ রহো রঘুপতি কে দাসা ||
তুম্হরে ভজন রামকো পাবৈ |
জন্ম জন্ম কে দুখ বিসরাবৈ ||
অংত কাল রঘুবর পুরজায়ী |
জহাং জন্ম হরিভক্ত কহায়ী ||
ঔর দেবতা চিত্ত ন ধরয়ী |
হনুমত সেয়ি সর্ব সুখ করয়ী ||
সংকট কটৈ মিটৈ সব পীরা |
জো সুমিরৈ হনুমত বল বীরা ||
জয় জয় জয় হনুমান গোঁসাই|
কৃপা করো গুরুদেব কী নায়ী ||
যো শত বার পাঠ কর কোয়ী |
ছূটহি বন্দি মহা সুখ হোয়ী ||
যো ইয়েহ পড়ে হনুমান চালীশা |
হোয় সিদ্ধি সাখী গৌরীশা ||
তুলসীদাস সদা হরি চেরা |
কীজৈ নাথ হৃদয় মহ ডেরা ||
দোহা:
পবন তনয় সঙ্কট হরণ – মঙ্গল মূরতি রূপ |
রাম লখন সীতা সহিত – হৃদয় বসহু সুরভূপ ||
সিয়াবর রামচন্দ্রকী জয় | পবনসুত হনুমানকী জয় | বোলো ভাই সব সঁন্তোকী জয় |
হনুমান চালিশা পাঠের অলৌকিক উপকারিতা – Benefits of Hanuman Chalisa
আপনার দেহ, মন, আত্মা এবং সমগ্র সুস্থতা বজায় রাখার জন্য এক আদর্শ মন্ত্র হলো হনুমান চালিশা স্তব। মনের ভক্তি সমেত নিয়মিত হনুমান চালিশা পাঠ করলে, কয়েকদিনের মধ্যে এই স্তব আত্মস্থ হয়ে যায়। হনুমান চালিশা স্তব পাঠের কিছু আশ্চর্য গুণাবলী আছে।
হনুমান চালিশা বাংলা ভাষায়
১. নিয়মিত হনুমান চালিশা পাঠ শনির প্রকোপ কমায়
লোকমুখে প্রচারিত কিংবদন্তী অনুসারে, শনিগ্রহের অধিকর্তা শনিদেব, ভগবান হনুমানকে ভয় পান। তাই নিয়মিত হনুমান চালিশা পাঠ শনির কুপ্রভাবের হাত থেকে আমাদের মুক্ত করে। তাই যেসব জাতক-জাতিকার কুষ্ঠিতে শনিগ্রহের অবস্থান, তারা শান্তি ও সমৃদ্ধি লাভের আশায়ে প্রতি শনিবারে হনুমান চালিশা জপ করলে ফল লাভ করবেন।
২. হনুমান চালিশা পাঠ বিদেহী আত্মার হাত থেকে রক্ষা করে
হনুমান চালিশা স্তবের শ্লোকগুলি আমাদের মন্দ আত্মার হাত থেকে রক্ষা করে। ভগবান হনুমান এমন একজন দেবতা যিনি আমাদের বিপদজনক ও মন্দ আত্মার কবল থেকে মুক্ত করেন। বলা হয়, যদি কেউ রাতে নিয়মিত দুঃস্বপ্ন দেখে, তাহলে কাগজে হনুমান চালিশা স্তব লিখে, সেই কাগজকে বালিশের তলায়ে রাখলে হনুমানজি এই সব দুঃস্বপ্নের হাত থেকে রক্ষা করেন। হনুমান চালিশা স্তব যে কোনো ক্ষতিকারক চিন্তাভাবনার কবল থেকে মুক্তি দেয়।
৩. হনুমান চালিশা স্তব ক্ষমা করতে শেখায়
মানুষ মাত্রেই জীবনের কোনো না কোনো পর্যায় পাপ করে। হিন্দুধর্মানুসারে, আমরা আমাদের কৃতকর্মের জন্য এই জন্ম-মৃত্যুর পাকচক্রে বন্দি আছি। হনুমান চালিশার প্রথমদিকের শ্লোকগুলির নিয়মিত পাঠ আপনাকে অতীত ও বর্তমানের সব পাপস্খলনে সাহায্য করে।
হনুমান চালিশা বাংলা লিরিক্স
৪. হনুমান চালিশা স্তব পাঠ শক্তি ও বুদ্ধি অর্জনে সহায়তা করে
জোরে জোরে হনুমান চালিশা পাঠ, আপনার চারদিকে ইতিবাচক শক্তির এক জাল তৈরি করে ও নেতিবাচক শক্তিকে দূরে সরিয়ে দেয়। হনুমান চালিশা স্তব আপনাকে মানসিক শক্তি ও স্থিতি দেয়। এটি মাথাব্যথা, নিদ্রাহীনতা, উদ্বেগ, হতাশা ইত্যাদির মতো আপাতনিরীহ রোগগুলিকেও নিরাময় করে।
৫. হনুমান চালিশা পাঠ সব ইচ্ছাপূরণ করে
বিশ্বাস করা হয়, নিষ্ঠার সাথে একাগ্রচিত্তে হনুমান চালিশার চল্লিশটি শ্লোক পাঠ করলে মানুষের সমস্ত ইচ্ছাপূরণ সম্ভব। ভগবান হনুমান আপনাকে শক্তি ও অনুগ্রহ দান করেন।
৬. নিরাপদ ভ্রমণের জন্য হনুমান চালিশা
যাত্রাকালীন সময় কখনো হঠাৎ কোনো বিপদ এলে, একাগ্রচিত্তে হনুমান চালিশা পাঠ যে কোনো বিপদের হাত থেকে আমাদের রক্ষা করে। আপনি নিশ্চয়ই খেয়াল করেছেন বহু গাড়িতেই ভগবান হনুমানের একটি ছোট মুর্তি ড্যাশবোর্ডের উপরে বসানো থাকে? বহ্যমানুষের আন্তরিক বিশ্বাস, ভগবান হনুমান যে কোনো রকমের দুর্ঘটনার হাত থেকে আমাদের রক্ষা করেন।
হনুমান চালিশা পাঠ করার সময়
হনুমান চালিশা পড়ার সঠিক সময় – Right Time to Read Hanuman Chalisa in Bengali
সাধারণত হিন্দুধর্মাবলম্বীরা নিয়মিত হনুমান চালিশা পড়েই থাকেন। সকাল বেলা স্নান সেরে, পরিশুদ্ধ বস্ত্রে হনুমান চালিশা পাঠ করা উচিৎ। যদি কখনো সূর্যাস্তের পরে হনুমান চালিশা স্তব জপ করতে হয়, তাহলে ভালো করে হাত মুখ পা ধুঁয়ে পরিষ্কার বস্ত্রে জপ শুরু করতে হয়।
আলাদা করে হনুমান চালিশা স্তব পাঠের কোনো নির্দিষ্ট দিন নেই। তবে সাধারণত প্রতি মঙ্গল-শনিবারে নিয়মিত হনুমান চালিশা স্তব জপ সমগ্র জীবনে লাভদায়ক প্রভাব ফেলে।
হনুমান চালিশা পাঠের উপকারিতা
উপসংহার – Conclusion
হনুমান চালিশা একটি অত্যন্ত শক্তিশালী ভক্তিস্তব। ভগবান হনুমানের অপর নাম সঙ্কটমোচন। যে কোনো বয়সের মানুষই এই চল্লিশটি স্তব পাঠ করতে পারেন।
নিয়মিত হনুমান চালিশা জপ, যে কোনো ভয় ও বিপদের হাত থেকে রক্ষা করে। মন থেকে সব নেতিবাচক চিন্তা ও পারিপার্শ্বিক কুপ্রভাব দূর করে ও এই পৃথিবীতে বেঁচে থাকার শক্তি প্রদান করে।
ভালো লাগলে শেয়ার করুন।..
Thank You, Visit Again…