মজার হাসির ছোট গল্প – Mojar Hasir Choto Golpo – Bengali Funny
Story
মজার হাসির ছোট গল্প
বড়ো পিসেমশাইকে বোধহয় আর বাঁচানো গেলো না ! যেভাবে ক্ষেপে উঠেছেন তিনি –
তাঁকে সামলাতে বাড়ির লোকের প্রাণ ওষ্ঠাগত ! আরে না না – এ মোটেই নতুন কথা না !
শুভলগ্নে যখন পিসিমার সাথে তাঁর শুভদৃষ্টি হয়েছিলো – তখন থেকেই তিনি স্বামীর
সাথে উপদ্রব হিসেবে স্বামীর স্বভাবটিও ফাউ পেয়েছিলেন। তা তিনি স্ত্রী – অল্প
বয়সে পতি পরম গুরু ( গরুর মত শিং উঁচিয়ে তেড়ে এলেও ) বলে মেনে নিলেও এখন
মাঝে মাঝেই দাঁত – মুখ খিঁচিয়ে তেড়ে যান। হুঁ হুঁ বাবা – বলে না , আপনি
বাঁচলে বাপের নাম !
টের পেয়ে গিয়েছিলো। বিয়ের পরে বর – কনেকে যখন একসাথে খেতে দেওয়া হয়েছিলো –
তিনি নাকি তখন বার পাঁচেক জিজ্ঞাসা করেছিলেন , বাসনগুলো ঠিকঠাক ধোয়া হয়েছে
কিনা ! তার পরের ঝক্কি তো এতদিন ধরে পিসিমা সামলে এসেছেন। এখন পিসেমশাই
পঁচাত্তর আর পিসিমা আটষট্টি ! আর কি ধৈর্য্য থাকে!
Bangla Hasir Golpo
ছোটবেলায় তাঁর দুধের দাঁত পড়ে দাঁত উঠতে নাকি বেশ কিছুদিন সময় লেগেছিলো। সেই
থেকে রোজ সকালে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে দাঁত খিঁচিয়ে প্রতিটি দাঁত পর্যবেক্ষণ
করা তাঁর নিত্যনৈমিত্তিক অভ্যাসে দাঁড়িয়ে গেছে। পিসিমা নাকি ফুলশয্যার পরের
দিন সকালে তাঁকে অমন অঙ্গভঙ্গি করতে দেখে পাগল ভেবে ভিরমি খেয়েছিলেন ! সে
দাঁতের যত্ন কত ! নিমদাঁতন কেটে কেটে বাড়ির সামনের নিমগাছটায় একগাছা চুলও (
থুড়ি, একটাও ডালপালা ) আর অবশিষ্ট নেই ! রামু চাকর রোজ সকালে নিমদাঁতন কেটে
আনে – নুন তেল সহযোগে সেই দাঁতন নিয়ে সকাল ছটা থেকে ত্রিশ মিনিট তিনি দাঁতের
এক্সারসাইজ করেন ! পৃথিবী রসাতলে গেলেও ওই সময়টুকু তিনি মৌনব্রতে থাকেন। এরপরে
লাগে একগ্লাস হালকা গরম জল – হাজার কাজ থাকলেও পিসিমাকে জলের গ্লাস হাতে
নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। সেই জলে পিসেমশাই গুনে গুনে বত্রিশ বার কুলকুচি
করেন , পিসিমা তখন জোরে জোরে এক থেকে বত্রিশ গোনেন। এরপরে তিনি সারাদিন যতবার
খাবার খান , ততবারই কুলকুচি করার গরম জল লাগে ! এমনকি অফিসেও ওই উদ্দেশ্যে তিনি
একটা মস্তবড় থার্মোফ্লাস্ক কাঁধে করে বয়ে নিয়ে যেতেন।
প্রচন্ড হাসির গল্প
বাদ সাধলো হতভাগা ব্যাকটিরিয়াগুলো ! তাঁর যে দাঁত পাঁঠার হাড়গুলোকেও নিষ্কৃতি
দিতো না – তারা হঠাৎ যন্ত্রণার কান্না কেঁদে উঠলো। তাদের আর কি দোষ বলুন –
নাতির পাল্লায় পড়ে পিসেমশাই ইদানিং বড্ডো আইসক্রিম আর ক্যাডবেরি ভক্ত হয়ে
উঠেছিলেন যে ! নিমদাঁতন চালু রাখলেও ওই লোভ কি সামলানো যায় ! শেষটায় এমন
হয়েছিলো – সকালে হাঁটতে বেরিয়ে লুকিয়ে লুকিয়ে তিনি ক্যাডবেরি কিনে আনা
ধরেছিলেন । ধারে – কাছে কেউ না থাকলেই টুক করে এক টুকরো মুখে ফেলে দাও , আর চোখ
বন্ধ করে মৌতাত করো !
দমফাটা হাসির গল্প
বয়সে তাঁর সুগার ধরা পড়েছে। কিন্তু, যে রোজই ক্যাডবেরি খায় , উচ্ছেসেদ্ধ তার
কি করতে পারে! সকলের বকাবকির জবাবে তিনি দাঁত মুখ খিঁচিয়ে তাদের তেড়ে গেলেন।
বড়োপিসিমা মুখ বেঁকিয়ে বললেন – ” বুড়োর মেজাজ দ্যাখো না ! চোরের মায়ের বড়ো
গলা ! এতগুলো বছর ধরে বাতিকের ঠেলায় আমার হাড় – মাস চিবিয়ে খেয়ে এখন বুড়ো
বয়সে ঢং হচ্ছে ! এখনই হুকুম হবে , দাঁতের সেবায় গরম জল হাজির করো !”
Bangla Funny Story Short
আচমকা কোমরে এক ধাক্কা – পিসি পপাত ধরণীতলে! কোনরকমে কুব্জা বুড়ি হয়ে ওঠার
চেষ্টা করছিলেন – হঠাৎ পিসেমশাইয়ের দিকে নজর পড়লো তাঁর ! তিনি চাটুতে রুটি
সেঁকার মত বিছানায় এপাশ – ওপাশ করছেন , আর মাঝে মাঝেই গোদা হনুমানের মত
দাঁতমুখ খিঁচিয়ে উঠছেন। হার্ট এ্যাটাক হলো নাকি ! পরিত্রাহি চিৎকারে ছেলেদের
নাম ধরে ডাকতে লাগলেন পিসি। পড়িমরি ছুটে এলো তারা – রাতের ঘুম জাহান্নামে
গেলো।
কমেডি হাসির গল্প
হলো গো ! এর আগে তুমি আমায় অনেক বকাবকি করেছো, লাথি তো কখনো মারো নি ! ও
বড়োখোকা , ডাক্তারকে কল দে না একবার !”
কি করতে মরতে যে শোয়ার আগে দুটো ক্যাডবেরি খেয়ে ফেললাম ! ও বড়োখোকা , টর্চটা
একবার নিয়ে আয় না , নির্ঘাত গর্ত হয়েছে ! হতভাগা রামুটা দিনকতক ধরে শুকনো
নিমদাঁতন আনছে ! ব্যাটা সামনে এলে জুতোপেটা করবো ! উঃ বাবাগো ! ক্যান্সার হলো
নাকি ! মা পইপই করে বলেছিলেন – খোকা , এ তোমার অনেক কষ্টের দাঁত , যত্নে রেখো !
ওই তোদের মায়ের চোখে চোখেই দাঁতগুলো এবার যাবে বোধহয় !” পিসিমা কটমট করে তাঁর
দিকে তাকালেন !
নতুন হাসির গল্প
হলো না ! পাকড়াশি ডাক্তার তাঁর চেম্বারে একটা পিঠ – হেলানো চেয়ারে পিসেমশাইকে
শুইয়ে মুখ হাঁ করাতেই সজোরে তাঁকে একটা থাপ্পড় মারলেন পিসেমশাই ! ডাক্তার
তাঁর জীবনে এমন রুগী বোধহয় এই প্রথম পেলেন ! ঘাবড়ে গিয়ে গালে হাত বোলাতে
বোলাতে তিনি বড়দাকে জিজ্ঞাসা করলেন -” কি হলো হঠাৎ ?” পিসেমশাই আবার মৃগীরুগীর
মত দাঁতমুখ খিঁচিয়ে বললেন – ” এই, তুই ডাক্তার না জল্লাদ ? দেখছিস দাঁতে
যন্ত্রণা হচ্ছে , তুই হাতের কারসাজি দেখাচ্ছিস!” ডাক্তার ভয়ে ভয়ে বললেন -”
না, না – আমি শুধু যন্ত্রণাটা কেন হচ্ছে , দেখছিলাম ! আপনি একটু চুপ করে বসুন
না !” তাঁর মুখ দেখেই বোঝা যাচ্ছিলো – তিনি বেশ ভয় পেয়েছেন । বড়দা আর
ছোড়দাকে ডেকে ফিসফিস করে কিছু বললেন তিনি । তারা এসে পিসেমশাইয়ের হাত – পা
চেপে ধরলো। ডাক্তার মাথায় একটা আলো পরে যন্ত্র দিয়ে পিসেমশাইয়ের পোকাধরা
দাঁতটা একটু ঠুকতেই মস্তবড় হাঁ করে তিনি ডাক্তারের হাতে মারলেন মোক্ষম এক
কামড় ! অসহ্য যন্ত্রণায় সবকিছু ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে ডাক্তার মাটিতে বসে পড়লেন
! দাদারা বোধহয় এই আকস্মিক ঘটনায় হতভম্ব হয়ে গিয়েছিল , তাদের হাতের বাঁধন
কিঞ্চিৎ আলগা হয়ে থাকবে – সেই অবসরে এক ঝটকায় বাঁধন ছাড়িয়ে ছেলেদের
মাথাদুটো সজোরে ঠুকে পিসেমশাই মারলেন সজোরে দৌড় ! একেবারে বামুনপুকুরে তাঁর
বোনের বাড়ি গিয়ে থামলেন । এক সপ্তাহ ধরে তিনি বাড়িতে ফেরেননি ! ওখানে
পেয়ারাপাতা সেদ্ধ জলে কুলকুচি আর টোটকা চিকিৎসা চালাচ্ছেন !
তাঁর চেম্বারের দেওয়ালে লাগানো হয়েছে !