Bengali Horror Story (সেরা ভৌতিক গল্প) – Bhuter Golpo In Bengali

Bongconnection Original Published
9 Min Read

 Bengali Horror Story (সেরা ভৌতিক গল্প) – Bhuter Golpo In Bengali

Bengali Horror Story (সেরা ভৌতিক গল্প) - Bhuter Golpo In Bengali
Loading...

Bengali Horror Story 

অশরীরী আত্মার গল্প 
হৈমন্তী আর প্রবাল হানিমুনে যাবে বলে তৈরি হচ্ছে। ওরা দুজনেই চাকরি করে। বিয়ে
হয়েছে সবে দশদিন হলো। বিয়ে বৌভাত অষ্টমঙ্গলা সব মিটতে মিটতে দশদিন হয়ে গেল।
হাতে আর সাতদিন আছে। মোট কুড়ি দিন ছুটি নিয়েছিল। বিয়ের তিনদিন আগে থেকেই ছুটি
নিয়েছিল। বিভিন্ন কাজের জন্য।


হাতে সাতদিন আছে তাই কাছেপিঠে কোথাও যাবে বলেই ঠিক করেছিল কিন্তু প্রবালের
জামাই বাবু অসীমদা ওদের জন্য দার্জিলিঙে যাওয়ার ব্যবস্থা করে দেন। এমনকি হোটেলও
বুকড করে দেন।
হৈমন্তী খুব খুশি কারণ এই প্রথম ও দার্জিলিং যাচ্ছে।
অষ্টমঙ্গলা কাটিয়ে তাড়াতাড়ি শ্বশুরবাড়ি ফিরেই নিজেদের জিনিস পত্র গুছিয়ে
নেয় হৈমন্তী। লাগেজ খুব একটা বেশি করেনি। একটা ট্রলিতেই সব ধরে গেছে। অবশ্যই
ঠান্ডার জামা নিতে হয়েছে।

Bengali Horror Story Online Reading

Loading...
যথা সময়ে ওরা নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে পৌঁছে যায় এবং ওখান থেকেই গাড়ি নিয়ে
সোজা ঘুম হয়ে দার্জিলিং।
হৈমন্তীর অনেক দিনের স্বপ্ন ছিল দার্জিলিং আসার। এখানে পৌঁছে ওর আনন্দ আর ধরে
না। দার্জিলিং যাওয়ার পথে ওদের গাড়ি বাতাসিয়া লুপে এক ঘন্টার জন্য দাঁড়ায়।
ওখানে ওরা চিকেন মোমো আর গরমাগরম কফি খেয়ে বাতাসিয়া লুপটা ঘুরে দেখে। ওখান
দিয়ে যখন ট্রয় ট্রেনটা যায় তখন হৈমন্তী অবাক হয়ে দেখে আর বায়না ধরে ট্রেনে
উঠবে। প্রবাল আশ্বাস দেয়, হোটেলে পৌঁছে পরে অবশ্যই ট্রেনে চড়াবে।


আরো পড়ুন,

বহু চড়াই উতরাই পেরিয়ে ওরা ওদের হোটেলে এসে পৌঁছয়।
আগে থেকেই হোটেল বুকড করা ছিল তাই অফিসিয়াল কাজকর্ম তাড়াতাড়ি হয়ে যায় আর
ওরা ওদের রুমে চলে আসে। রুমটা খুব সুন্দর ।পরিপাটি করে সাজানো গোছানো। হোটেলে
কাঁচের জানালা দিয়ে পাহাড়ের অপরূপ শোভা দেখা যাচ্ছে। হৈমন্তী আপ্লুত। কিন্তু
রুমে ঢোকার পর থেকে কেমন যেন একটা অস্বস্তি হচ্ছে হৈমন্তীর। কিছুতেই হৈমন্তী
বুঝতে পারছে না, কেন এমন হচ্ছে!
প্রবাল দিব্যি আছে ।ওখানেই চা কফির সরঞ্জাম আছে। প্রবাল হাত মুখ গরম জলে ধুয়ে
নিয়ে গরম গরম কফি বানিয়ে নিজে নেয় আর হৈমন্তীকেও দেয়। হৈমন্তীও হাত মুখ ধুয়ে
বিছানায় বসে কফি আর বিস্কুট খায়।
যেহেতু এন জি পি থেকে দার্জিলিং পৌঁছতে বেলা হয়ে গেছে তাই  কফি খেয়েই
ওরা একটু বিশ্রাম নেয় এবং হোটেল থেকেই দুপুরের খাবার খেয়ে নিয়েই বেরিয়ে পড়ে
ম্যালের উদ্দেশ্যে।

Horror Story Bangla

হোটেলের ম্যানেজার মিস্টার গুরুং যেন কেমন ধরনের। কেবল হৈমন্তীর দিকে তাকিয়ে
আছে। তাকানোটা যেন কেমন কুৎসিত। হৈমন্তীর খুব খারাপ লাগছে কিন্তু প্রবালকে কিছু
বলতেও পারছে না।
উনি যেচে যেচে হৈমন্তীর সাথে কথা বলছেন। অদ্ভুত লাগছে হৈমন্তীর।
সন্ধ্যার সময় দুজনেই হোটেলে ফিরে আসে। রুমের চাবি ম্যানেজারের কাছে দেওয়া ছিল
সেটা নিয়েই উপরে আসার সময় ম্যানেজার গুরুং ভাঙা ভাঙা বাংলায় বলেন…,

 আপনারা কি রাতের খাবার এখানে খাবেন? যদি খান তো আমাদের কিচেনের নাম্বারে
ফোন করে জানিয়ে দেবেন।
প্রবাল আচ্ছা বলে। ওরা দুজনেই উপরে উঠে এসে রুমের দরজা লাগিয়ে দেয়।
হৈমন্তীর আবার সেই দম বন্ধ করা অস্বস্তিটা আরম্ভ হয়ে গেছে ।প্রবাল কিন্তু ঠিকই
আছে। কেন যে এমন হচ্ছে হৈমন্তী বুঝতেই পারছে না।

Short Bengali Horror Story

রাতে ওরা আবার নীচে নেমে এই হোটেল থেকেই খাবার খায় ওদের কমন ডাইনিং রুমে বসেই।
রুমে এসে আলো নিভিয়ে দুজনেই শুয়ে পড়ে। সারাদিনের ক্লান্তিতে অল্পক্ষণের
মধ্যেই দুজনে ঘুমিয়ে পড়ে।
হঠাৎ কি একটা শব্দে হৈমন্তীর ঘুম ভেঙে যায়। শরীরের অস্বস্তিটা আরও বেড়ে যায়।
এত শীত যে আগে কম্বল গায়ে দিয়েও শীত করছিল কিন্তু এখন যেন কেমন গরম লাগছে।
কম্বলটা গা থেকে সরিয়ে দিয়ে হঠাৎ দেওয়ালের উপর চোখ যেতেই চমকে ওঠে হৈমন্তী। ও
কে? ভয়ে গলা দিয়ে কথা বের হচ্ছে না, জল পিপাসায় গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে।
প্রবালকে যে হাত বাড়িয়ে ডাকবে সেই ক্ষমতা টুকুও নেই।
এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে দেওয়ালের দিকে। কে যেন ওর চোখটা ওখানেই আটকে রেখেছে।
কিছুতেই চোখ সরাতে পারছে না। বেশ কিছুক্ষণ এমন থাকার পর হৈমন্তী দেখে দেওয়ালের
ভিতর থেকে একজন মহিলা বেরিয়ে আসছেন ।
হৈমন্তী হাঁ করে তাকিয়ে আছে ওনার দিকে। উনি আস্তে আস্তে ওদের বিছানার সামনে এসে
সরু রিনরিনে গলায় বলেন…,
ভয় পেও না ভাই! আমাকে তুমি মুক্তি দাও। অনেকের কাছে মুক্তি চেয়েছি কিন্তু
কেউই সাহস করে নি। সবাই ভয়ে পালিয়ে যায়। আমি দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে এখানে বন্দি
হয়ে আছি। আর পাচ্ছি না। আমাকে মুক্তি দাও ভাই!
হৈমন্তীর যেন হঠাৎ করে সাহস বেড়ে যায়। নিজের থেকেই গলার স্বর ঠিক হয়ে যায়।
শরীরে যেন শক্তি ফিরে পায়। ও বলে…,
কে আপনি? কোথা থেকে এই ঘরে এলেন? আপনি কি মৃত?
সেই মহিলা বলেন…,
হ্যাঁ ভাই। আমি মৃত। কিন্তু এখনও আমার দেহ সৎকার হয় নি। এই দেওয়ালের ভিতরে
বন্দি করে রাখা হয়েছে আমাকে। আমার আত্মীয় স্বজন এখনও আমাকে খুঁজে বেরাচ্ছে
হন্যে হয়ে। আমি কারুক্ষেই বোঝাতে পারছি না। আমি এই দেওয়ালে বন্দি ।আমাকে ওখান
থেকে বের করে আমার আত্মীয় স্বজনের হাতে তুলে দাও ভাই!
হৈমন্তীর যেন ভয় কোথায় চলে গেছে। দিব্যি ওনাকে জিজ্ঞেস করে…,
কে আপনাকে এমন করে এখানে রেখেছেন? আপনার বাড়ি কোথায়?
সেই অশরীরী মহিলাটি বলেন…,
ঠিক পাঁচ বছর আগে, আজকের দিনেই আমাকে ওই শয়তান ম্যানেজার মিস্টার গুরুং, আমার
ইচ্ছার বিরুদ্ধে আমাকে ভোগ করে। আর শুধু ভোগই করে না, আমি সবাইকে বলে দেব
বলেছিলাম বলে আমাকে শ্বাসরোধ করে খুন করে এই দেওয়ালের ভিতরে রেখে সিমেন্ট করে
দেয়। এখানে আগে একটা দেওয়াল আলমারি ছিল।।
আরো পড়ুন,

আমি আমার স্বামীর সাথে হানিমুনে এসেছিলাম। আমার স্বামী খুব ভালো মানুষ। ওকে,
শয়তান গুরুং জোর করে  আকন্ঠ মদ খাইয়ে বেহুঁশ করে দিয়ে এই ঘর থেকে পাশের
ঘরে রেখে আসে। সেই সময়ে এই হোটেলের এই তলাতে কেউই ছিল না। আমি চিৎকার করেছিলাম
বলে আমার মাথায় মেরে অজ্ঞান করে দেয়।

ভয়ানক ভূতের গল্প বাংলা

পরের দিন আমার স্বামীর হুঁশ ফিরলে আমাকে অনেক খোঁজাখুঁজি করেন। ওই শয়তানটা
বলে,
আপনার বৌকে তো দেখলাম একজন ছেলের সাথে বেরিয়ে যেতে।
আমি জানি আমার স্বামী বিশ্বাস করেননি তাই এখনও হয়তো খুঁজে বেরাচ্ছেন।
তুমি আমায় মুক্তি দাও।
হৈমন্তী, ওই মহিলার থেকে ওনার বাড়ির ঠিকানা আর ওনার স্বামীর নাম জানতে চায়।
দেওয়ালের উপর লেখা ফুটে ওঠে….
কৌস্তুভ রাহা….।
পরের দিন অনেক ভোরে হৈমন্তীর ঘুম ভেঙে যায় । আগের দিনের স্বপ্নের কথা মনে পড়ে
যেতেই দেওয়ালের দিকে তাকায় হৈমন্তী। সত্যিই লেখা আছে মহিলার স্বামীর নাম আর
বাড়ির ঠিকানা।তবে এটা স্বপ্ন নয়! সঙ্গে সঙ্গে প্রবালকে ডেকে তোলে হৈমন্তী।
প্রবালকে সব কথা জানায় এবং দেখায়। হৈমন্তী বলে,
চলো প্রবাল, আমরা থানায় যাই তারপর এই দেওয়াল ভাঙলেই সব পরিষ্কার হয়ে যাবে।
ওরা যখন থানায় যাবে বলে বের হচ্ছে তখন সেই শয়তানটা হৈমন্তীর দিকে তাকিয়ে দাঁত
বের করে হেসে বলে…,
গুড মর্নিং ম্যাডাম। সক্কাল সক্কাল কোথায় চললেন? হৈমন্তীর গাটা জ্বলে ওঠে।
সাথে প্রবাল রয়েছে তাকে না জিজ্ঞেস করে ওর সাথে কথা বলল দেখে প্রবালই বলে,
সামনেই তো মামারবাড়ি। সেখানে যাচ্ছি।
 হৈমন্তী মনে মনে বলে, তোকে জবাই করার ব্যবস্থা করতে যাচ্ছি রে শয়তান।

Vuter Golpo In Bangla

সকাল আটটা নাগাদ পুরো হোটেলটা পুলিশ ঘিরে ফেলে আর সবাইকে বলে দেয়,
কেউ হোটেলের বাইরে যাবে না।
প্রবালদের ঘরের দেওয়াল ভেঙে সত্যি সত্যিই নর কঙ্কাল পাওয়া যায় এবং সেটা কোনও
মহিলারই কারণ হাতের চুড়ি আর শাঁখা পলা ও লোহা বাঁধানোও পাওয়া গিয়েছিল।আর
পাওয়া গিয়েছিল গুরুং এর মানি ব্যাগটা যাতে ছিল ওর পরিচয় পত্র। যদিও সেগুলো
আবছা হয়ে গেছে কিন্তু ফটো দেখে আন্দাজ করা যাচ্ছে এটা গুরুং এর ফটো।
এরপর পুলিশ পুলিশের কাজ করেন আর গুরুং মামারবাড়িতে মামার আদর খায় ।
সেই অশরীরী মহিলার স্বামীকে খবর দেওয়া হয়েছে। বেচারা তখনও কেঁদে কেঁদে অস্থির
হচ্ছেন।
হৈমন্তীদের বেড়ানো তেমন কিছুই হয় নি। এর জন্য ওদের মনে কোনও দুঃখ নেই। পরে
আবার আসা যাবে আর তখন না হয় ভালো করে ঘুরবে। তবে এটা ভেবে শান্তি হচ্ছে যে,
কারুক্ষে মুক্তি দিতে পেরেছে আর শয়তানকে শাস্তি।

Share This Article