Vishwakarma Puja Mantra In Bengali – বিশ্বকর্মা পূজার মন্ত্র, পূজা পদ্ধতি – Biswakarma Puja

sudiproy877
7 Min Read

Vishwakarma Puja Mantra Bengali

 
হিন্দু ধর্ম পৌরাণিক কাহিনী অনুযায়ী বিশ্বকর্মা হলেন দেবশিল্পী । বিষ্ণুপুরাণের মতে, প্রভাসের ঔরসে বৃহস্পতির ভগিনীর গর্ভে বিশ্বকর্মার জন্ম হয়। বেদে পৃথিবীর সৃষ্টিকর্তাকে বিশ্বকর্মা বলা হয়েছে। 
 
বিশ্বকর্মা মূলত সৃষ্টিশক্তির রূপক নাম। সেই অর্থে ইনি পিতা, সর্বজ্ঞ দেবতাদের নামদাতা। ইনি সর্বমেধ-যজ্ঞে নিজেকে নিজের কাছে বলি দেন। ইনি বাচস্পতি, মনোজব, বদান্য, কল্যাণকর্মা, বিধাতা। ঋগবেদের মতে- ইনি সর্বদর্শী ভগবান। এঁর চক্ষু, মুখমণ্ডল, বাহু ও পা সর্বদিকে বিদ্যমান। বাহু ও পায়ের সাহায্যে ইনি স্বর্গ ও মর্ত্য নির্মাণ করেন। ইনি শিল্পসমূহের প্রকাশক ও অলঙ্কারের স্রষ্টা, দেবতাদের বিমান-নির্মাতা।
শিল্পী ও শিল্প দুই ই যে বিশ্বকর্মার আরাধনা ব্যতীত অসম্পূর্ন থেকে যায় । হিন্দু ধর্মের সকল মানুষের কাছে ভাদ্র মাসের শেষে এই পুজো অর্থাৎ (Viswakarma Puja)  একটি বড় ধর্মীয় উৎসব হিসেবে উদযাপিত হয় । হিন্দু পূরণের বিভিন্ন অধ্যায়ে এই পূজোর ও তার আরাধনা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় উল্লেখিত আছে । 
 
Vishwakarma Puja Mantra In Bengali - বিশ্বকর্মা পূজার মন্ত্র, পূজা পদ্ধতি - Biswakarma Puja
Loading...
 

বিশ্বকর্মা পূজার নিয়ম


ভক্তদের বিশ্বাস মতে তিনি বিশ্বের তাবৎ কর্মের সম্পাদক। তিনি শিল্পসমূহের প্রকাশক, অলঙ্কার শিল্পের স্রষ্টা, দেবতাদের গমনাগমনের জন্য বিমান নির্মাতা ইত্যাদি। অর্থাৎ শিল্পবিদ্যায় তাঁর একচ্ছত্র অধিকার। তাই যাঁরা শিল্পকর্মে পারদর্শিতা লাভ করতে চান, তাঁরা বিশ্বকর্মার অনুগ্রহ কামনা করেন। রামায়ণে বর্ণিত অপূর্ব শোভা ও সম্পদবিশিষ্ট লঙ্কা নগরীর নির্মাতা বিশ্বকর্মা বলে কথিত। তিনি উপবেদ, স্থাপত্যবেদ ও চতুঃষষ্টিকলারও প্রকাশক। দেবশিল্পীরূপে তিনি দেবপুরী, দেবাস্ত্র ইত্যাদিরও নির্মাতা। 

পুরাণ ও হিন্দুশাস্ত্র মতে বিশ্বকর্মা দেবের পুজো করলে শিল্পবিদ্যায় পারদর্শী হয়ে ভক্তেরা। তিনি হলেন চতুর্ভুজ ও গজারূঢ়। তাঁর বাহন হল হস্তী। এবছরের মহালয়ার দিনেই আরাধনা করা হবে শিল্পের দেবতা বিশ্বকর্মার। জনশ্রুতি আছে যে, পুরীর প্রসিদ্ধ জগন্নাথমূর্তিও বিশ্বকর্মা নির্মাণ করেন। ভাদ্রমাসের সংক্রান্তিতে কলকারখানায় বেশ আড়ম্বরের সঙ্গে বিশ্বকর্মার পূজা অনুষ্ঠিত হয়। অন্যান্য দেব-দেবীর মতোই মূর্তি গড়ে অথবা ঘটে-পটে বিশ্বকর্মার পূজা করা হয়।


বিশ্বকর্মা পূজার মন্ত্র

সূতার-মিস্ত্রিদের মধ্যে এঁর পূজার প্রচলন সর্বাধিক। তবে বাংলায় স্বর্ণকার, কর্মকার এবং দারুশিল্প, স্থাপত্যশিল্প, মৃৎশিল্প প্রভৃতি শিল্পকর্মে নিযুক্ত ব্যক্তিগণও নিজ নিজ কর্মে দক্ষতা অর্জনের জন্য বিশ্বকর্মার পূজা করে থাকেন। এ সময় প্রত্যেকের ঘরে বিশেষ খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থা হয় এবং কোথাও কোথাও পূজার পরে ঘুড়ি ওড়ানো হয়।

 

চলুন এবারে জেনে নেওয়া যাক, বিশ্বকর্মা পূজার (Biswakarma Puja)
বিভিন্ন নিয়ম, পদ্ধতি ও মন্ত্র ।

 

বিশ্বকর্মার ধ্যান মন্ত্র 

ওঁ বিশ্বকর্মন্ মহাভাগ সুচিত্রকর্মকারক্ । বিশ্বকৃৎ বিশ্বধৃক্
ত্বঞ্চ রসনামানদণ্ডধৃক্

।। 

 

এর অর্থ- হে দংশপাল ( বর্মের দ্বারা পালনকারী ) , হে মহাবীর , হে
বিশ্বের সৃষ্টিকর্তা ও বিশ্ব বিধাতা, হে সুন্দর চিত্র রূপ কর্মকারক ,
আপনি মাল্য চন্দন ধারন করে থাকেন ।

 

 

বিশ্বকর্মার প্রনাম মন্ত্র

দেবশিল্পি মহাভাগ দেবানাং কার্য্যসাধক । বিশ্বকর্মন্নমস্তুভ্যং
সর্বাভীষ্টপ্রদয়ক

।। 

 

দেবশিল্পী , মহাভাগ ( দয়াদি অষ্ট গুন যুক্ত ) দেবতা দের কারু
কার্য্যসাধক সর্বাভীষ্ট প্রদানকারী হে বিশ্বকর্মা আপনাকে নমস্কার
। 

 

Vishwakarma Puja Mantra In Bengali - বিশ্বকর্মা পূজার মন্ত্র, পূজা পদ্ধতি - Biswakarma Puja

বিশ্বকর্মা পূজার মন্ত্র pdf download

 

ধ্যান ও প্রনাম মন্ত্রে বিশ্বকর্মার যে পরিচয় পাওয়া গেলো- সেটি হলবিশ্বকর্মা মহাবীর আবার দয়াদি অষ্ট গুন যুক্ত। তিনি সৃষ্টি কর্তা আবার সৃষ্টি বিধাতা। তিনি মহাশিল্পী আবার মহাযোদ্ধা। বিশ্বকর্মার এই চরিত্র বেদ এবং পুরানে আরোও পরিষ্কার ভাবে ফুটে উঠে ।

 

আরো পড়ুন, 

 

Biswakarma Puja Mantra In Bengali

 

হস্তী কেন বিশ্বকর্মার বাহন ?

 

বিশ্বকর্মার মূর্তি যদি আমরা দেখি, তাহলে দেখি তাঁর বাহন হস্তী । কলকাতার কর্মকার সম্প্রদায়ের বিশিষ্ট নেতা শিক্ষা ব্রতী স্বর্গত হরষিত কেশরী রায় প্রথম বিশ্বকর্মার হস্তী বাহন বিগ্রহের পূজা করেন । হাতী কেন বাহন ? পুরানের প্রনাম মন্ত্রে বিশ্বকর্মা কে মহাবীর বলে বর্ণনা করা হয়েছে । 

 

Vishwakarma Puja Mantra In Bengali - বিশ্বকর্মা পূজার মন্ত্র, পূজা পদ্ধতি - Biswakarma Puja

হাতীর কত টা শক্তি তার আন্দাজ করতে পারি। নিমিষে গাছ পালা মাথা দিয়েঠেলে ফেলে দেয় । কারোর ওপর চরণ ভার দিলে- তার মুখ দিয়ে রক্ত উঠে মৃত্যু-
আর অস্থি সকল চূর্ণ চূর্ণ হবে । এমন প্রবাদ আছে, হাতী নাকি একটু বড় পাথর শুঁড়ে তুলে ছুঁড়ে মারতে পারে । প্রাচীন কালে রাজারা যুদ্ধে হস্তী বাহিনীর প্রবল ভাবে ব্যবহার করতেন । তাই এই মহা শক্তিমান প্রানী এই দিক থেকে মহা যোদ্ধা বিশ্বকর্মার বাহন হবার যোগ্যতা রাখে । হস্তীর হাত নেই । তবে একটি কর বা শুন্ড আছে । কর আছে বলেই হাতীর এক নাম করী । কৃ ধাতু থেকেই কর শব্দটির উৎপত্তি। সে এই শুন্ডের সাহায্যেই গাছের ডাল টানে, জল খায়, স্নান করে । 

 

বিশ্বকর্মা পূজার মন্ত্র বাংলা

 

আবার দেখি শিল্পের মাধ্যমেই কর্ম সংস্থান । তাই বিশ্বকর্মা কর্মের দেবতা । এই শূন্ড দ্বারা কর্ম করা – এই দিক থেকে হস্তী একভাবে বিশ্বকর্মার বাহন হিসাবে মানানসই । হস্তীকে দিয়ে অনেক কাজ করানো হয় । বন দপ্তর হস্তীকে দিয়ে কাঠ সরানোতে কাজে লাগায় । মোটা মোটা গাছের গুঁড়ি, কান্ড মাহুতের নির্দেশে হাতী এক স্থান থেকে আর এক স্থানে নিয়ে যায়, আবার কখনো সে গাছের ডাল বয়ে নিয়ে যায় মাহুতের নির্দেশে । আবার বন্য হাতীদের তাড়াতে বন দপ্তর পোষা হাতী গুলিকে কাজে লাগায়। হাতীর জীবন টাই এই রকম কাজের। নিজের খাদ্য আরোহণ থেকে , মাল বওয়া সব সময় কাজ । 

 

আর শিল্পের সাথে কর্মের সংস্থান জল আর ঠান্ডার মতো। জলে যেমন ঠান্ডা ভাব থাকে তেমনই কর্মের মাধ্যমেই শিল্পের বিকাশ। তাই বিশ্বকর্মা হলেন কর্মেরও দেবতা । এই দিকে থেকে শ্রমিক হাতী বিশ্বকর্মার বাহন হিসাবে একেবারে মানানসই । শিল্পের বিকাশ , বেকার দের কর্ম সংস্থান , শিল্পকে কেন্দ্র করে একটি দেশের বিকাশ যথার্থ বিশ্বকর্মা পূজা । বন্ধ কারখানা , অন্ধকার ময় শ্রমিক বস্তী , বন্ধ কাজ কর্ম- সেখানে বিশ্বকর্মার পূজা অনেক টা ঘরে নাই ভাত- দুয়ারে বাজে ঢাক এমন অবস্থা। 

 

কর্ম রূপে যেনো আমরা বিশ্বকর্মার পূজা করতে পারি। শ্রম দিবস হিসাবে এই বিশ্বকর্মা পূজার দিন টা যেনো পালন করতে পারি- এই প্রার্থনাই সকলে বিশ্বকর্মার কাছে করবো।

 

 

Also read, 

 

Tags –
Bengali Mantra,
Biswakarma Puja,
Bengali Puja Mantra

Share This Article
Leave a comment

Adblock Detected!

Our website is made possible by displaying online advertisements to our visitors. Please consider supporting us by whitelisting our website.