পয়লা বৈশাখের কবিতা
পয়লা বৈশাখ
– গৌতম মণ্ডল
আলোয় ভুবন জাগলো যখন
নতুন বছর সুস্বাগতম্ ৷
নীড়ের পাখি, উঠলো ডাকি
পাখ পাখালির ডাক ৷
বছর বাদে আসলো ফিরে –
পয়লা এ বৈশাখ ৷
ফর্সা হলো পুবের আকাশ
বাতাসে আজ ফুলের সুবাস ৷
ঢেউ খেলে যায় ধানের শিষে
যেথায় নদীর বাঁক ৷
বছর বাদে আসলো ফিরে —
পয়লা এ বৈশাখ ৷
রোদ চিক্ চিক্ নদীর চড়ায়
সোনালি রোদ আলোক ছড়ায় ৷
ছোট্ট নদী কংসাবতী
যাক্ না বয়ে যাক্ ৷
বছর বাদে আসলো ফিরে —
পয়লা এ বৈশাখ ৷
পুকুর জলে হাঁসের দলে
জল ছিটিয়ে সাঁতরে চলে ৷
মায়ে ঝিয়ে চুপড়ি নিয়ে
তুলছে মাঠে শাক ৷
বছর বাদে আসলো ফিরে —
পয়লা এ বৈশাখ ৷
দুলিয়ে কোমর আসছে ভ্রমর
গুন্ গুনালো সুরের লহর ৷
চাঁপার ডালে ঝুলছে কেমন
মৌ ভরা মৌচাক ৷
বছর বাদে আসলো ফিরে —
পয়লা এ বৈশাখ ৷
নতুন বছর সুপ্রভাতে
মাখিয়ে সিঁদুর হালখাতাতে ৷
ধূপের ধোঁয়ায় দীপের আলোয়
উঠলো বেজে শাঁখ ৷
বছর বাদে আসলো ফিরে —
পয়লা এ বৈশাখ ৷
আরো পড়ুন,
নববর্ষের কবিতা শ্রীজাত
পহেলা বৈশাখ
– শ্রীজাত
রোদের মধ্যে ছাতার দোহাই। শুধরে নেওয়া ভুলটাকে।
শহর,তোমার খবর শোনাও।ফুটেছে ফুল, বৈশাখ?
ভিড় বাসে মন বাদুড়ঝোলা,একধারে চোখ গন্ধচোর
সবার কাছেই ডাক পাঠিয়ে চাইছি সাড়া একলা তোর।
থেকেছি সই কষ্টে অনেক, রেখেছি বই কোন তাকে
শহর, তোমার খবর শোনাও। ফুটেছে ফুল, বৈশাখ?
তা ধরে নিইপাটিগণিত, মাটিতে কার ছাপ খোঁজে
তোমার এত দূরত্ব সয়? একটু নিজের ভাববো যে,
পাই না উপায়। মন বলে, সায় বিলিয়ে দেবো আর কাকে?
হৃদয়,তোমার খবর শোনাও।ফুটেছে ফুল, বৈশাখ?
শুভ নববর্ষ ১৪৩১ কবিতা
পহেলা বৈশাখ কবিতা
– পার্বতী শর্মা
এলো আবার বছর ঘুরে পহেলা বৈশাখ।
নারীরা তাই সেজেঁছে নববর্ষের সাঁজ।
নতুন পোশাকে নতুন সাঁজ,
নতুন বছর শুরু আজ।
বাঙালিরা বর্ষবরণ করে নানা আয়োজনে।
জাতি ভেদ ভুলে গিয়ে করে এক মনে।
পানতা ভাত আর ইলিশ মাছ খায় সকাল সাঁঝে।
আনন্দে তারা নিত্য করে পহেলা বৈশাখে।
গ্রামে গঞ্জে শহরে শহরে মেলা বসেছে,
খুশিতে পুরো দেশ আনন্দে মেতেছে।
শিমুল পলাশ কৃষ্ণ চুড়া বৈশাখে ফুটেছে।
হাসনাহেনা গোলাপ দিয়ে নারীরা সেজেঁছে।
নতুন নতুন পোশাক পরে আনন্দতে ঘোরে।
হিন্দু-মুসলিম-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান সব বিভেদ ভুলে।
এসেছে বৈশাখ জড়িয়েছে প্রাণ,
বাঙালির মুখে আজ বৈশাখের গান।
প্রকৃতি ও আজ নতুন রুপে সেঁজেছে,
তাই তো আজ পহেলা বৈশাখ এসেছে।
বৈশাখের দিনে সব কিছু ভুলে,
কামার কুমার তাঁতি আর জেলে।
আনন্দ করে সবাই এক সাথে মিলে।
পাখির কলকাকলি সুরের ছন্দ।
কৃষ্ণচুড়ার রং বৈশাখের আনন্দ।
ঢাক ঢোল মাদলের তালে,
রং বেরংঙের ছবি আছ দেওয়ালে।
বাঙালির সংস্কৃতি উজ্জীবিত হোক প্রতিটি সালে।
নতুন বছর আসুক নিয়ে অনেক বেশি খুশি।
সেই খুশিতে হৃদয় ভরুক মাতুক বিশ্ববাসী।
পুরোনো যত হতাশা দুঃখ অবসাদ।
নতুন বছর সে গুলোকে করুক ধূলিসাৎ।
সব কিছু মুছে ফেল মন থেকে,
তাকাও নব সূর্যের দিকে।
পানতা ইলিশ আর ভর্তা ভাজি বাঙালির প্রান।
নতুন বছর সবাই গাইবো বৈশাখের গান।
মানুষের যত জরা ক্লান্তি সব ধুয়ে মুছে যাক।
বার বার ফিরে আসুক পহেলা বৈশাখ।
আরো পড়ুন,
বাংলা বর্ষবরণের কবিতা
বর্ষবরণ
– এ কে দাস মৃদুল
বৈশাখ
এলো রে
ঝড়ো হাওয়া বয়ে
বৃক্ষের ডালে নব পল্লবে,
ঘরে ঘরে আনন্দ ধারা নিয়ে;
পুরাতন ধুয়ে মুছে বৈশাখ এলো রে।
জীর্ণতা
পিছু ফেলে
যা ছিলো অনাদরে
নতুন দিনের তরুণ আলোয়,
হাটে মাঠে সার্বজনীন বরেণ্য উৎসবে;
পান্তা ইলিশের সুবাসে বৈশাখ এলো রে।
আগামীর
চলার পথে
সুনিপুণ স্বপ্ন বুকে
হাজার বছরের ঐতিহ্য লালনে,
বাঙালির ঘরে ঘরে শান্তির বারতায়;
হালখাতার নববর্ষ বরণের বৈশাখ এলো রে।
আনন্দ
মেলার মিছিলে
বাঁশরীয়ার বাঁশির সুরে
মানব মানবীর নব উল্লাসে,
ঢোল ডুগডুগির বাউল সঙ্গীতের নৃত্যে;
মনুষ্যত্বের মিলন মেলার বৈশাখ এলো রে।