শুভ বিজয়া দশমী কবিতা – Bijoya Dashami Kobita
বিজয়া দশমী নিয়ে কবিতা
ঢাকের আওয়াজ এখনও বাজে,
দুই কানে সারাক্ষন,
বিদায় বেলায় আজকে মা’গো ,
বিষাদে ভরে মন।
মণ্ডপে মণ্ডপে সিঁদুর খেলায়,
মাটি রাঙিয়ে যাবে,
আসছে বছর আবার মা’গো,
সবাই তোমার দেখা পাবে।
বিসর্জনের এই দুঃখে,
দুই নয়নে আসে অশ্রুধারা,
আনন্দের জগতে রেখেছিলে মা’গো,
হব যে সবাই মাতৃহারা।
যাবি যখন ঠিক করেছিস,
কী আর বলি বল,
সারা বছর তোর আশীর্বাদে মা’গো
থাকি যেন সুস্থ ,সবল।
Bijoya Dashami Poem
শুভ বিজয়া
আকাশের ঘোর নীল রঙে,
সাদা মেঘের বাতাবরণ,
গঙ্গার জল বয়ে চলেছে নিরন্তর…
জলের স্রোতে এখন ভাটার টান…
জলের ধারে দাঁড়িয়ে দেখছি…
বোধনের পর মায়ের বিসর্জন।
ঢাকের বোল উঠছে চারিদিকে
যেন বলছে, ‘মা আবার এসো’,
‘একটি বছর অপেক্ষা আমাদের’।
অসুরদলনীর স্পর্শে শরীরের মধ্যে যেন
বয়ে গেল তড়িৎ প্রবাহ।
মাটির মায়ের চোখে যেন জল…
বাপের বাড়ি থেকে চলে যাওয়া স্বামীর ঘরে।
আমাদের সবার চোখে জল…
ঝাপসা দৃষ্টির মধ্যে দিয়ে…
শেষবার প্রণাম জানাচ্ছি দেবীর মৃন্ময়ী মূর্তিকে।
বুকের মধ্যেটা মনে হয় শূণ্য হয়ে গেল…
এ অনুভব ভাষায় ব্যক্ত করা সম্ভব নয়।
পাশে এক বৃদ্ধ ভদ্রমহিলা…
হাত জোড় করে আকুল হয়ে বলছেন…
‘মাগো এবারই যদি শেষবার হয়,
আর যদি দেখতে না পাই তোমাকে’…
আমরা তাঁর হাত ধরে রয়েছি…
তাঁর এই আকুল কান্না…
ছুঁয়ে যাচ্ছে হৃদয়।
মা শক্তি দাও, সাহস দাও, বুদ্ধি দাও
জগৎ জননী, তোমার চলে যাওয়ার ক্ষণে
আজ হৃদয় উদ্বেলিত।
তারপর ফিরে আসা, রাশি রাশি
বিজয়ার শুভেচ্ছা…
ভারাক্রান্ত মন গ্রহণ করছে শুভেচ্ছা নিরন্তর।
তারই মধ্যে কিছু ভাললাগা…
কত আত্মীয়, বন্ধু, সুজন, ভালবাসার মানুষরা
পাঠাচ্ছে তাদের অন্তরের শুভেচ্ছা…
বন্ধুত্বের ক্ষণিক আভাস…
জেগে উঠছে স্তব্ধতা ও বিস্ময়।
আকাশের দিকে চাইলাম…
মা তোমার আশীর্বাদের হাত
যেন ভুলিয়ে দেয় দুঃখ দুর্দশা…
সব ভুল বোঝাবুঝির যেন হয় অবসান।
হোক অশুভের বিনাশ আর
শুভের হোক জয়লাভ।
বিজয়া দশমী কবিতা মধুসূদন দত্ত
– মাইকেল মধুসূদন দত্ত
যেয়োনা, রজনি, আজি লয়ে তারাদলে!
গেলে তুমি দয়াময়ি, এ পরাণ যাবে ! –
উদিলে নির্দয় রবি উদয় – অচলে
নয়নের মণি মোর নয়ন হারাবে!
বার মাস তিতি , সতি , নিত্য অশ্রুজলে,
পেয়েছি উমায় আমি! কি সান্ত্বনা-ভাবে –
তিনটি দিনেতে, কহ , লো তারা-কুন্তলে,
এ দীর্ঘ বিরহ-জ্বালা এ মন জুড়াবে?
তিন দিন স্বর্ণদীপ জ্বলিতেছে ঘরে
দূর করি অন্ধকার; শুনিতেছি বাণী –
মিষ্টতম এ সৃষ্টিতে এ কর্ণ-কুহরে!
দ্বিগুন আঁধার ঘর হবে, আমি জানি,
নিবাও এ দীপ যদি!” – কহিলা কাতরে
নবমীর নিশা-শেষে গিরীশের রাণী।
বিজয়া দশমী কবিতা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
যদি হল যাবার ক্ষণ
তবে যাও দিয়ে যাও শেষের পরশন॥
বারে বারে যেথায় আপন গানে স্বপন ভাসাই দূরের পানে
মাঝে মাঝে দেখে যেয়ো শূন্য বাতায়ন–
সে মোর শূন্য বাতায়ন॥
বনের প্রান্তে ওই মালতীলতা
করুণ গন্ধে কয় কী গোপন কথা।
শুভ বিজয়া♥♥
– মিঠুন লাল দেব
আজ বিসর্জনের সুরে,অশ্রুসিক্ত নয়নে
উমা মা চলছেন কৈলাসেতে।
পুজোর বহর গুছিয়ে
ঢাকের কাঠি বাজছে বিরহের সুরে
একটি বছরে আশার প্রত্যাশা নিয়ে
আসবে বছর হবে।
বিদায়ের কঠিন সুর ধরণীর প্রতিটি কোণে
হাসি আনন্দের আলোকিত ভুবনজুড়ে
চলেছিল সব ভুলে।
মাগো তুমি আবার এসো এই প্রত্যাশা সবার মনে।