Bangla Choto Kobita (ছোট কবিতা ) Premer SMS
Bangla Choto Kobita তো অনেকেই পছন্দ করেন । সে প্রিয়জনকে SMS করেই পাঠানোই হোক কিংবা কিংবা কাউকে উইশ করতে । সবমিলিয়ে সবসময় বড় বড় কবিতা পড়তে খুব একটা ভালো লাগেনা । কি তাই তো ? তো, চলুন আপনার জন্য আজকে নিয়ে এসেছি বাংলার সেরা সব কবিদের লেখা ছোট কবিতার এক সুন্দর কালেকশন । তো, দেরি না করে চলুন শুরু করা যাক….
Bangla Choto Kobita Sms
পৃথক পাহাড়
– হেলাল হাফিজ
আমি আর কতোটুকু পারি ?
কতোটুকু দিলে বলো মনে হবে দিয়েছি তোমায়,
আপাতত তাই নাও যতোটুকু তোমাকে মানায়।
ওইটুকু নিয়ে তুমি বড় হও,
বড় হতে হতে কিছু নত হও
নত হতে হতে হবে পৃথক পাহাড়,
মাটি ও মানুষ পাবে, পেয়ে যাবে ধ্রুপদী আকাশ।
আমি আর কতোটুকু পারি ?
এর বেশি পারেনি মা
ভালবাসার সময় তো নেই
– রুদ্র মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ
নিশাচর ভালবাসার সময় তো নেই
ব্যস্ত ভীষন কাজে,
হাত রেখো না বুকের গাড় ভাজে।
ঘামের জলে ভিজে সাবাড় করাল রৌদ্দুরে,
কাছএ পাই না, হৃদয়- রোদ দূরে।
কাজের মাঝে দিন কেটে যায়
কাজের কোলাহল
তৃষ্নাকে ছোয় ঘড়ায় তোলা জল।
নদী আমার বয় না পাশে
স্রোতের দেখা নেই,
আটকে রাখে গেরস্থালির লেই।
তোমার দিকে ফিরবো কখন
বন্দী আমার চোখ
পাহারা দেয় খল সামাজিক
মনের মিতালী
আজ বরষায় অন্যরকম আমেজে
সেজেছো তুমি, মনের মিতালী মিতু-
ঘন-কালো অন্ধকার করবীতে
হাসনাহেনার সুবাস
আমাকে করেছে ব্যাকুল-
আমি আলোতে পথ হারিয়ে ফেলি
তোমার নয়ন-পানে চাইলে।
এখনো ভাবার কিছু নেই,
প্রেমে পড়েছি তোমার কালো চুলের
সুগন্ধ জড়ানো হাসনাহেনার সাদা ধবধবে পাপড়ীর।
মনের মিতালী মিতু-
স্বপ্নের মধুর অনুক্ষণে তোমার নয়নদ্বয়
উজ্জ্বল হাসিতে ভরে ওঠে,
সেই অনুক্ষণে আমার একটুকরো
প্রীতি শুভেচ্ছা উপহার রইলো তোমার জন্য।
ভালবাসা
– পরিজিৎ মিদ্যা
ভালোবিছানার প্রতি ভাঁজে
লালসা নগ্ন সাজে
শরীরে জাগে কত ভাষা।
রাত এলে হয়রানি
দেয় যৌনতা হাতছানি
এটাই নাকি ভালবাসা।
ওর দেহটা সুতো হীন
চাহিদাটা খুব ক্ষীণ
তবুও মেটায় মেয়েটা পিপাসা।
এটাই নাকি ভালবাসা।
রক্তটা বেশ তাজা
তবু চাই তাকে সাজা
নহিলে হবেনা গাড় নেশা।
নারীত্ব ক্ষয়ে যায়
দেহ ছেঁড়া কান্নায়
দু চোখ খোঁজে ভোরের আসা।
এটাই নাকি ভালবাসা।
Bangla Premer Choto Kobita Sms
তোমার পাশে
মাকিদ হায়দার
ডাকবে শুধু আমায় তুমি
থাকবে শুধু আমার পাশে
থাকবে তুমি।
কাঁদলে শুধু কাঁদবো আমি
বিজন রাতে একলা আমি
তোমার পাশে।
জোনাক আলো জ্বালবো আমি
যেথায় তুমি একলা থাকো
আমায় ছেড়ে।
ডাকবে লোকে হঠাৎ করে
সাতসকালে সাঁঝের বেলা
তখন তুমি বাসর ছেড়ে
একপা দু’পা তিনপা করে
বেড়িয়ে এলে দেখতে পাবে।
দাঁড়িয়ে আছি তোমার পাশে।
আমি যার নূপুরের ছন্দ
– কাজী নজরুল ইসলাম
আমি যার নূপুরের ছন্দ, বেণুকার সুর
কে সেই সুন্দর, কে?
আমি যার বিলাস যমুনা, বিরহ বিধুর
কে সেই সুন্দর, কে?
যাহার গলে আমি বনমালা
আমি যার কথার কুসুমডালা
না দেখা সুদূর
কে সেই সুন্দর, কে?
যার শিখীপাখা লেখনী হয়ে
গোপনে মোরে কবিতা লেখায়
সে রহে কোথায় হায়?
আমি যার বরষার আনন্দ কেকা
নৃত্যের সঙ্গিনী দামিনীরেখা
যে মম অঙ্গের কাঁকন-কেয়ূর
কে সেই সুন্দর, কে?
গভীর রাতে জাগি
– কাজী নজরুল ইসলাম
গভীর রাতে জাগি খুঁজি তোমারে
দূর গগনে প্রিয় তিমির-পারে।
জেগে যবে দেখি বঁধু তুমি নাই কাছে
আঙিনায় ফুটে ফুল ঝরে পড়ে আছে
বাণ-বেঁধা পাখী সম আহত এ প্রাণ মম
লুটায়ে লুটায়ে কাঁদে অন্ধকারে।
মৌনা নিঝুম ধরা ঘুমায়েছে সবে
এসো প্রিয় এই বেলা বক্ষে নীরবে।
কত কথা কাঁটা হয়ে বুকে আছে বিঁধে
কত আভিমান কত জ্বালা এই হূদে
দেখে যাও এসো প্রিয় কত সাধ ঝরে গেল
কত আশা মরে গেল হাহাকারে।।
অপরাজিতা ফুটিল
– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
অপরাজিতা ফুটিল,
লতিকার
গর্ব নাহি ধরে—
যেন পেয়েছে লিপিকা
আকাশের
আপন অক্ষরে।
আকাশে যুগল তারা
– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
আকাশে যুগল তারা
চলে সাথে সাথে
অনন্তের মন্দিরেতে
আলোক মেলাতে।
♥ বিবাহিতাকে ♥
– জয় গোস্বামী
কিন্তু ব্যাপারটা হচ্ছে, তুমি আমার সামনে
দাড়ালেই আমি
তোমার ভিতরে একটা বুনো ঝোপ দেখতে পাই।
ওই ঝোপে একটা মৃতদেহ ঢাকা দেওয়া আছে।
অনেকদিন ধ’রে আছে। কিন্তু আশ্চর্য যে
এই মৃতদেহ জল, বাতাস, রৌদ্র ও সকলপ্রকার
কীট-বীজাণুকে প্রতিরোধ করতে পারে। এরপচন নেই।
বন্য প্রাণীরাও এর কাছে ঘেঁষে না।
রাতে আলো বেরোয় এর গা থেকে।
আমি জানি, মৃতদেহটা আমার।
কিন্তু ব্যাপারটা হচ্ছে,
এই জারিজুরি এবার ফাঁস হওয়া প্রয়োজন।
আর তা হবেও, যেদিন চার পায়ে গুঁড়ি মেরেগিয়ে
পা কামড়ে ধ’রে, ওটাকে, ঝোপ থেকে
টেনে বার করব আমি।
তুমি
– সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
আমার যৌবনে তুমি স্পর্ধা এনে দিলে
তোমার দু’চোখে তবু ভীরুতার হিম।
রাত্রিময় আকাশে মিলনান্ত নীলে
ছোট এই পৃথিবীকে করেছো অসীম।
বেদনা-মাধুর্যে গড়া তোমার শরীর
অনুভবে মনে হয় এখনও চিনি না
তুমিই প্রতীক বুঝি এই পৃথিবীর
আবার কখনো ভাবি অপার্থিবা কিনা।
সারারাত পৃথিবীতে সূর্যের মতন
দুপুর-দগ্ধ পায়ে করি পরিক্রমা,
তারপর সায়াহ্নের মতো বিস্মরণ-
জীবনকে, স্থির জানি, তুমি দেবে ক্ষমা
তোমার শরীরে তুমি গেঁথে রাখো গান
রাত্রিকে করেছো তাই ঝঙ্কারমুখর
তোমার ও সান্নিধ্যের অপরূপ ঘ্রাণ
অজান্তে জীবনে রাখো জয়ের সাক্ষর।
যা কিছু বলেছি আমি মধুর অস্ফুটে
অস্থির অবগাহনে তোমারি আলোকে
দিয়েছো উত্তর তার নব-পত্রপুটে
বুদ্ধের মূর্তির মতো শান্ত দুই চোখে।
কার বাঁশি বাজিল?
– কাজী নজরুল ইসলাম
কার বাঁশি বাজিল
নদীপারে আজি লো?
নীপে নীপে শিহরণ কম্পন রাজিল –
কার বাঁশি বাজিল?
বনে বনে দূরে দূরে
ছল করে সুরে সুরে
এত করে ঝুরে ঝুরে
কে আমায় যাচিল?
পুলকে এ-তনুমন ঘন ঘন নাচিল।
ক্ষণে ক্ষণে আজি লো কার বাঁশি বাজিল?
কার হেন বুক ফাটে মুখ নাহি ফোটে লো!
না-কওয়া কী কথা যেন সুরে বেজে ওঠে লো!
মম নারী-হিয়া মাঝে
কেন এত ব্যথা বাজে?
কেন ফিরে এনু লাজে
নাহি দিয়ে যা ছিল?
যাচা-প্রাণ নিয়ে আমি কেমনে সে বাঁচি
লো?
কেঁদে কেঁদে আজি লো কার বাঁশি বাজিল?
কথা আছে
– সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
বহুক্ষণ মুখোমুখি চুপচাপ,
একবার চোখ তুলে সেতু
আবার আলাদা দৃষ্টি,
টেবিলে রয়েছে শুয়ে
পুরোনো পত্রিকা
প্যান্টের নিচে চটি,
ওপাশে শাড়ির পাড়ে
দুটি পা-ই ঢাকা
এপাশে বোতাম খোলা বুক,
একদিন না-কামানো দাড়ি ওপাশে এলো খোঁপা,
ব্লাউজের নীচে কিছু
মসৃণ নগ্নতা
বাইরে পায়ের শব্দ,
দূরে কাছে কারা যায়
কারা ফিরে আসে
বাতাস আসেনি আজ,
রোদ গেছে বিদেশ ভ্রমণে।
আপাতত প্রকৃতির অনুকারী ওরা দুই মানুষ-মানুষী
দু‘খানি চেয়ারে স্তব্ধ,
একজন জ্বলে সিগারেট
অন্যজন ঠোঁটে থেকে হাসিটুকু মুছেও মোছে না
আঙুলে চিকচিকে আংটি,
চুলের কিনারে একটু ঘুম
ফের চোখ তুলে কিছু স্তব্ধতার বিনিময়,
সময় ভিখারী হয়ে ঘোরে
অথচ সময়ই জানে,
কথা আছে, ঢের কথা আছে।
কবিতাগুলি ভালো লাগলে প্রিয়জনদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না। ..
ভালো থাকুন, কবিতায় থাকুন। ..
Thank You, Visit Again ….
Tags – Bangla Kobita, Bengali Poem