Chanoko Bani Bengali ( চাণক্যের শ্রেষ্ঠ বাণী ) Chanakya Niti
চাণক্যকে কৌটিল্য বা বিষ্ণুগুপ্ত নামেও অভিহিত করা হয়। তিনি প্রাচীন ভারতের রাষ্ট্রবিজ্ঞান গ্রন্থ অর্থশাস্ত্র-এর রচয়িতা। তাঁকেই ভারতের প্রথম অর্থনীতিবিদ ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানী মনে করা হয়। প্রাচীন ভারতের ইতিহাসে তাঁর অর্থনীতি তত্ত্ব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিল। চাণক্যকে “ভারতের মেকিয়াভেলি” বলা হয়। যদিও তিনি নিকোলো মেকিয়াভেলির ১৮০০ বছর আগের মানুষ ছিলেন। গুপ্ত রাজবংশের শাসনের শেষ দিকে তাঁর বইটি হারিয়ে যায়। এটি আবার আবিষ্কৃত হয় ১৯১৫ সালে।
Loading...
Chanoko Bani Bangla
যে গাভী দুধ দেয় না,গর্ভ ধারণও করে না,
সে গাভী দিয়ে কী হবে! যে বিদ্বান ও ভক্তিমান নয়,
সে পুত্র দিয়ে কী হবে!
গুণহীন মানুষ যদি উচ্চ বংশেও জন্মায় তাতে কিছু আসে যায় না।
নীচকুলে জন্মেও যদি কেউ শাস্ত্রজ্ঞ হয়,
তবে দেবতারাও তাঁকে সম্মান করেন।
নানাভাবে শিক্ষা পেলেও দুর্জন সাধু হয় না,
নিমগাছ যেমন আমূল জলসিক্ত করে কিংবা দুধে ভিজিয়ে রাখলেও কখনও মধুর হয় না
একশত মূর্খ পুত্রের চেয়ে একটি গুণী পুত্র বরং ভাল। একটি চন্দ্রই অন্ধকার দূর করে,সকল তারা মিলেও তা পারে না।
বিদ্বান সকল গুণের আধার,অজ্ঞ সকল দোষের আকর।
তাই হাজার মূর্খের চেয়ে একজন বিদ্বান অনেক কাম্য।
হাতি থেকে একহাজার হাত দূরে,
ঘোড়া থেকে একশ হাত দূরে,
শৃঙ্গধারী প্রাণী থেকে দশহাত দূরে থাকবে।
অনুরূপ দুর্জনের কাছ থেকেও যথাসম্ভব দূরে থাকবে।
গুরু শিষ্যকে যদি একটি অক্ষরও শিক্ষা দেন,তবে পৃথিবীতে এমন কোনও জিনিস নেই,
যা দিয়ে সেই শিষ্য গুরুর ঋণ শোধ করতে পারে।
সাপ নিষ্ঠুর খলও নিষ্ঠুর,
কিন্তু সাপের চেয়ে খল বেশি নিষ্ঠুর।
সাপকে মন্ত্র বা ওষধি দিয়ে বশ করা যায়,
কিন্তু খলকে কে বশ করতে পারে?
পাঁচ বছর বয়স অবধি পুত্রদের লালন করবে,
দশ বছর অবধি তাদের চালনা করবে,
ষোল বছরে পড়লে তাদের সঙ্গে বন্ধুর মত আচরণ করবে
দুষ্টা স্ত্রী,প্রবঞ্চক বন্ধু,
দুর্মুখ ভৃত্য এবং সর্প-গৃহে বাস মৃত্যুর দ্বার,
এ-বিষয়ে সংশয় নেই
chanakya niti bani
পুত্র যদি হয় গুণবান,
পিতামাতার কাছে তা স্বর্গ সমান
তিনটি বিষয়ে সন্তোষ বিধেয়:
নিজের পত্নীতে,ভোজনে এবং ধনে।
কিন্তু অধ্যয়ন,জপ,
আর দান এই তিন বিষয়ে যেন কোনও সন্তোষ না থাকে।
দুর্জনের সংসর্গ ত্যাগ করে সজ্জনের সঙ্গ করবে।
অহোরাত্র পুণ্য করবে,
সর্বদা নশ্বরতার কথা মনে রাখবে।
বইয়ে থাকা বিদ্যা,
পরের হাতে থাকা ধন একইরকম।
প্রয়োজন কালে তা বিদ্যাই নয়,ধনই নয়।
বিষ থেকেও অমৃত আহরণ করা চলে,
মলাদি থেকেও স্বর্ণ আহরণ করা যায়,
নীচজাতি থেকেও বিদ্যা আহরণ করা যায়,
নীচকুল থেকেও স্ত্রীরত্ন গ্রহণ করা যায়।
আড়ালে কাজের বিঘ্ন ঘটায়,
কিন্তু সামনে ভাল কথা বলে,
যার উপরে মধু কিন্তু অন্তরে বিষ,
তাকে পরিত্যাগ করা উচিত
চন্দন তরুকে ছেদন করলেও সে সুগন্ধ ত্যাগ করে না,
যন্ত্রে ইক্ষু নিপিষ্ট হলেও মধুরতা ত্যাগ করে না,
যে সদ্বংশজাত অবস্থা বিপর্যয়েও সে চরিত্রগুণ ত্যাগ করে না
ঋণ,অগ্নি ও ব্যাধির শেষ রাখতে নেই,
কারণ তারা আবার বেড়ে যেতে পারে
অন্তঃসার শূন্যদের উপদেশ দিয়ে কিছু ফল হয় না,
মলয়-পর্বতের সংসর্গে বাঁশ চন্দনে পরিণত হয় না।
সুবেশভূষিত মূর্খকে দূর থেকেই দেখতে ভাল,
যতক্ষণ সে কথা না বলে ততক্ষণই তার শোভা,
কথা বললেই মূর্খতা প্রকাশ পায়
আদর দেওয়ার অনেক দোষ,শাসন করার অনেক গুণ,
তাই পুত্র ও শিষ্যকে শাসন করাই দরকার,
আদর দেওয়া নয়
বিদ্যাবত্তা ও রাজপদ এ-দুটি কখনও সমান হয় না।
রাজা কেবল নিজ দেশেই সমাদৃত,
বিদ্বান সর্বত্র সমাদৃত।
বিদ্যা ব্যতীত জীবন ব্যর্থ,
কুকুরের লেজ যেমন ব্যর্থ,
তা দিয়ে সে গুহ্য-অঙ্গও গোপন করতে পারে না,
মশাও তাড়াতে পারে না।
পুত্রকে যারা পড়ান না,সেই পিতামাতা তার শত্রু।
হাঁসদের মধ্যে বক যেমন শোভা পায় না,
সভার মধ্যে সেই মূর্খও তেমনি শোভা পায় না।
বিদ্যাভূষিত হলেও দুর্জনকে ত্যাগ করবে,মণিভূষিত হলেও সাপ কি ভয়ঙ্কর নয়?
বিদ্যার চেয়ে বন্ধু নাই,ব্যাধির চেয়ে শত্রু নাই। সন্তানের চেয়ে স্নেহপাত্র নাই,দৈবের চেয়ে শ্রেষ্ঠ বল নাই।
Chanakya Niti Bani Bangla
দারিদ্র্য,রোগ,দুঃখ,বন্ধন এবং বিপদ-সব কিছুই মানুষের নিজেরই অপরাধরূপ বৃক্ষের ফল
দুর্বলের বল রাজা,
শিশুর বল কান্না,
মূর্খের বল নীরবতা,
চোরের মিথ্যাই বল
যারা রূপযৌবনসম্পন্ন এবং উচ্চকুলজাত হয়েও বিদ্যাহীন,
তাঁরা সুবাসহীন পলাশ ফুলের মত বেমানান।
শাস্ত্র অনন্ত,বিদ্যাও প্রচুর।
সময় অল্প অথচ বিঘ্ন অনেক।
তাই যা সারভূত তারই চর্চা করা উচিত।
হাঁস যেমন জল-মিশ্রিত দুধ থেকে শুধু দুধটুকুই তুলে নেয়,তেমনি।
বিরাট পশুপালের মাঝেও শাবক তার মাকে খুঁজে পায়।
অনুরূপ যে কাজ করে অর্থ সবসময় তাকেই অনুসরণ করে।
অবহেলায় কর্মনাশ হয়,
যথেচ্ছ ভোজনে কুলনাশ হয়,
যাঞ্চায় সম্মান-নাশ হয়,
দারিদ্র্যে বুদ্ধিনাশ হয়
উৎসবে,বিপদে,দুর্ভিক্ষে,
শত্রুর সঙ্গে সংগ্রামকালে,
রাজদ্বারে এবং শ্মশানে যে সঙ্গে থাকে,
সে-ই প্রকৃত বন্ধু
রাতের ভূষণ চাঁদ,নারীর ভূষণ পতি,
পৃথিবীর ভূষণ রাজা,
কিন্তু বিদ্যা সবার ভূষণ
একটিমাত্র পুষ্পিত সুগন্ধ বৃক্ষে
যেমন সমস্ত বন সুবাসিত হয়,
তেমনি একটি সুপুত্রের দ্বারা সমস্ত কুল ধন্য হয়
অধমেরা ধন চায়,মধ্যমেরা ধন ও মান চায়।
উত্তমেরা শুধু মান চায়।
মানই মহতের ধন।
সত্যবাক্য দুর্লভ,
হিতকারী-পুত্র দুর্লভ,
সমমনস্কা-পত্নী দুর্লভ,
প্রিয়স্বজনও তেমনি দুর্লভ।
সত্যনিষ্ঠ লোকের অপ্রাপ্য কিছুই নাই
মনের বাসনাকে দূরীভূত করা উচিত নয়।
এই বাসনাগুলোকে গানের গুঞ্জনের মতো কাজে লাগানো উচিত।
যারা পরিশ্রমী,তাদের জন্যে কোনকিছুই জয় করা অসাধ্য কিছু নয়।
শিক্ষিত কোন ব্যক্তির জন্যে কোন দেশই বিদেশ নয়।
মিষ্টভাষীদের কোন শত্রু নেই।
পরস্ত্রীকে যে মায়ের মত দেখে,
অন্যের জিনিসকে যে মূল্যহীন মনে করে এবং সকল জীবকে যে নিজের মত মনে করে,
সে-ই যথার্থ জ্ঞানী।
বিনয়ই সকলের ভূষণ
ভোগবাসনায় বুদ্ধি আচ্ছন্ন হয়
মন খাঁটি হলে পবিত্র স্থানে গমন অর্থহীন
অহংকারের মত শত্রু নেই
বাল বৃদ্ধ যুবা যেই হোক না অতিথি,গুরুজ্ঞান তার-ই সেবা গৃহস্থের রীতি
একটি দোষ বহু গুণকেও গ্রাস করে
আকাশে উড়ন্ত পাখির গতিও জানা যায়,
কিন্তু প্রচ্ছন্নপ্রকৃতি-কর্মীর গতিবিধি জানা সম্ভব নয়
আপদের নিশ্চিত পথ হল ইন্দ্রিয়গুলির অসংযম,
তাদের জয় করা হল সম্পদের পথ,
যার যেটি ঈপ্সিত সে সেই পথেই যায়
ইন্দ্রিয়ের যে অধীন
তার চতুরঙ্গ সেনা থাকলেও সে বিনষ্ট হয়
চাণক্যের এই বাণী এবং নীতিগুলো ভালো লাগলে নিজের প্রিয়জন ও বন্ধুদের সাথে অবশই শেয়ার করুন। …
Thank You, Visist Again…
Tags – Bangla Bani, Chanakya Niti