সেদিনের লাল’ফিতে সাদা-মোজা নীলাঞ্জনার প্রেমিক’টা, আজ রীতিমতো সংসারী.
স্ত্রী-সন্তান আর অফিস শেষে দিনান্তে যেটুকু সময় পায়, চপমুড়ি খায়,আর সংসার খরচের হিসেব নিকেশ কষে..
মাঝে মধ্যে স্বপ্নাদেশে সে আজ’ও দেখে নীলাঞ্জনা কে,
স্কুল ব্যাগ কাঁধে, তার পাশ দিয়ে ছুটে মিলিয়ে যাচ্ছে দমকা হওয়ার মতো..
অব্যাক্ত দলা পাকানো কষ্টে সে জেগে ওঠে কাকভোরে ,,
দ্যাখে চোখ দুটো ভিজে গিয়েছে নোনা জলে..
চটপট চোখ মুছে স্বাভাবিক করে নেয় নিজেকে,পাশে শুয়ে থাকা অবুঝ মহিলা’টি জেগে উঠলে,
হাজারো মিথ্যে বানিয়ে বলতে হবে যে !
——————————————————————————
রুবি রায়ের জন্য কখনো পাগল হয়ে কবিতা রচনা করা মানুষটি, আজ একটি সরকারি দপ্তরের বড়োবাবু.
মেয়ের বাবারা, তার বাড়ির পথে আজ রীতিমতো ধর্নায়..
কিন্তু সে……
আজ’ও নিজের অফিস কেবিনে কাজের ফাকে ফেসবুকে সার্চে, ‘রুবি রায়’ টাইপ করে…
ছবিসহ ফেরৎ আসে গোটা পঞ্চাশ নাম…
কিন্তু খোঁজ মেলেনা সেই রুবির .
——————————————————————————
বহু পরিশ্রমের শেষে চাকরী পাওয়ার পরেও,বেলা বোসের প্রেমিক’কে পেতে হয়েছিল নির্মম যন্ত্রনা..
আনমনা অবস্থায় রাস্তা পেরোনোর সময়, উল্টোদিক থেকে ছুটে আসা ফোরহুইলারটি তাকে যত্ন করে বসিয়ে দিয়েছে হুইলচেয়ারে ,সারাজীবনের জন্য..
বেলা বোস তার মা’বাবার দেখা পাত্র’কে বিয়ে করে এখন পুনেতে আছে..
পাঁচ মাসের অন্তঃসত্বা সে.
——————————————————————————
রঞ্জনার লাভার-বয় আসিফ, বর্তমানে স্কুল টিচার..
সম্প্রতি নিকাহ করেছে সে অহনার সাথে.
অহনা কে দেখতে অনেকটা রঞ্জনার মতো..
প্রথম প্রেমের স্বপ্নভঙ্গ হওয়ার পর সে মনস্থির করেছিল আজীবন চীরকুমার থাকবে..
কিন্তু আব্বুর সাথে অহনাদের বাড়িতে গিয়ে নিজের মত পরিবর্তন করতে বাধ্য হয়েছিল আসিফ.
বেশ কিছু মাস হলো, কিন্তু বিড়ম্বনার মায়াজাল আজ’ও কাটাতে পারেনি সে..
অহনার মধ্যে সে আজ’ও রঞ্জনা’কে খুঁজে বেড়ায়,
কিন্তু পায় কই ? ..
—————————————————————————–
নীলাঞ্জনা, বেলা বোস, রুবি রায় বা রঞ্জনার মতো সবার পাশের মানুষটি অত পপুলার মোটেও নয়,
সে অতি সাধারণ..
হয়তো তাই, আপনার হাত দুটো আজ’ও শক্ত করে ধরে আছে সে পাগলের মতো .
সে হয়তো ঝগড়া করে আকাশছোঁয়া…আবার মাঝ রাতে,যখন পৃথিবী ঘুমায়,
তখন আদর করে আপনার মানভঞ্জন করে নির্দ্বিধায়..ওর শরীরী ভাষা অনুভব করে আপনি হয়তো বুঝতে পারেন ও অপেক্ষা করছিলো শুধু আপনারই’ই আদরের জন্য.
আপনাকে নিখুঁত আখ্যা দেওয়া সেদিনের সাধারণ মেয়েটি,আজ অর্ধাঙ্গিনী হয়ে আপনার মধ্যে খুঁটে খুঁটে হাজারো ভুলের অনুসন্ধান করতে একটুও ক্লান্ত হয়না.
তবে বলতে বাধা নেই, ঝগড়াঝাটি মান – অভিমান এইসব নিয়েই তো আমাদের এই সমান্তরাল জীবন । জীবনের কিছু কিছু মুহূর্তে হয়তো পুরনো সেই মানুষটির কথা মনে পড়বে হয়তো কিছুটা অকারনেই ,তবে পাশের মানুষটির দিকে তাকিয়ে দেখবেন , ভালোবাসা আজও বেঁচে আছে নতুন কোন মানুষের ছদ্মনামে ।
বেলা বোস, রুবি রায় বা নীলাঞ্জনা’রা আজীবন ফুটন্ত থাকবে,,কারণ তারা অধরা..
তবুও একান্ত মনের ব্যর্থ কামনা’গুলোর মধ্যে ফুলে ফেঁপে উঠবে মন কেমন করা প্রেমের জলছবি গুলো,
কিছুটা এভাবেই..
_______________________________________________
এতক্ষণ সময় নষ্ট করে পড়লেন : “প্রেমের নস্টালজিয়া “
ভালো লাগলে শেয়ার করতে ভুলবেন না …