Ashiner Sharodo Prate Lyrics (আশ্বিনের শারদ প্রাতে) Mahalaya Mahishasurmardini 2024

sudiproy877
6 Min Read

Ashiner Sharodo Prate Lyrics Mahalaya

বছর ঘুরে আবার শরতের মরশুমে চলে এসেছে মহালয়া । প্রতি বছরের মতো এবছর ও সবাই নিজের পরিবারের সঙ্গে ভোর ভোর ওঠে বীরেন্দ্র কৃষ্ণের গলায় মহালয়া শুনতে নিশ্চই উদগ্রীব হয়ে রয়েছেন । যদিও সময়ের সাথে সাথে মহালয়ার জৌলুস এখন অনেকটাই ক্ষীণ । আর এর পেছনে অনেকটাই দায়ী বিভিন্ন বেসরকারি টিভি চ্যানেলে মহালয়ার নামে নাচ গান আর প্রহসন । আজ ও অনেকের মুখেই শোনা যায়, মহালয়ার সেই সেকাল অর্থাৎ দুরদর্শনে মহালয়া দেখা ।
যাই হোক, মহালয়ার এই পূণ্য প্রভাতে আপনার জন্য রইলো আশ্বিনের শারদ প্রাতের সম্পূর্ণ রূপ ।

Ashiner Sharodo Prate Lyrics In Bengali

আশ্বিনের শারদপ্রাতে বেজে উঠেছে আলোকমঞ্জীর।
ধরণীর বহিরাকাশে অন্তর্হিত মেঘমালা।
প্রকৃতির অন্তরাকাশে জাগরিত জ্যোতির্ময়ী জগন্মাতার আগমনবার্তা।
আনন্দময়ী মহামায়ার পদধ্বনি
অসীম-ছন্দে বেজে উঠে রূপলোক ও রসলোকে আনে নবভাবমাধুরীর সঞ্জীবন।
তাই আনন্দিতা শ্যামলী মাতৃকার চিন্ময়ীকে মৃন্ময়ীতে আবাহন।
আজ চিচ্ছক্তিরূপিণী বিশ্বজননীর শারদশ্রীবিমণ্ডিতাপ্রতিমা মন্দিরে মন্দিরে
ধ্যানবোধিতা।

আশ্বিনের শারদ প্রাতে Lyrics

সিংহস্থা শশিশেখরা মরকতপ্রেক্ষা চতুর্ভির্ভুজৈঃ।
শঙ্খং চক্রধনুঃশরাংশ্চ দধতী নেত্রৈস্ত্রিভিঃ শোভিতা।।
আমুক্তাঙ্গদহার কঙ্কণরণৎ কাঞ্চীক্কণন্নূপুরা।
দুর্গা দুর্গতিহারিণী ভবতু নো রত্নোল্লসৎকুণ্ডলা।
মহামায়া সনাতনী, শক্তিরুপা, গুণময়ী
তিনি এক, তবু প্রকাশ বিভিন্ন দেবী নারায়ণী, আবার ব্রহ্মশক্তিরুপা ব্রাহ্মণী
কখনো মহেশ্বরী রুপে প্রকাশমানা, কখনো বা নির্মলা কৌমারী রুপধারিণী
কখনো মহা-বজ্র রূপিণী ঐন্দ্রি, উগ্র শিব-দুতিনি, নৃমুন্ডমালিনী চামুণ্ডা-
তিনি আবার তবময়ি নিয়তি-
এই সর্ব প্রকাশমানা মহাশক্তি পরমা প্রকৃতির আবির্ভাব হবে
সপ্তলোক তাই আনন্দমগ্ন…

আশ্বিনের শারদ প্রাতে বেজে উঠেছে আলোক মন্দির

বাজলো তোমার আলোর বেনু
মাতল যে ভুবন
আজ প্রভাতে সে সুর শুনে খুলে দিনু মন
অন্তরে যা লুকিয়ে রাজে
অরুণ বীণায় সেই সুর বাজে
এই আনন্দ যজ্ঞে সবার মধুর আমন্ত্রণ
আজ সমীরণ আলোয় পাগল, নবীন সুরের বীণায়
আজ শরতের আকাশ বীণায় গানের মালা বিলায়
তোমায় হারা জীবন মম, তোমারি আলোয় নিরুপম
ভোরের পাখি উঠে গাহি তোমারি বন্দন।
হে ভগবতী মহামায়া, তুমি ত্রিগুণাত্রীকা
তুমি রজগুনে ব্রহ্মার গৃহিণী বাগদেবি, সপ্তগুনে বিষ্ণুর পত্নী লক্ষ্মী
তব গুণে শিবের বনিতা পার্বতী,
আবার ত্রিগুণাতিত কুঁড়ি-অবস্থায় তুমি অনিরবচনিয়া;
অপার মহিমময়ী পরম ব্রহ্মময়ীশী দেবী, ঋষি কাত্যায়ন এর কন্যা কাত্যায়নী-
তিনি কন্যাকুমারী আখ্যাতা দুর্গী, তিনি আদিশক্তি আগমনত সিদ্ধ-মূর্তিধরি দুর্গা
তিনি দাখ্যায়নী সতী, দেবী দুর্গা
নিজ-দেহ সম্ভুত ত্যেজ-প্রভাবে শত্রুদহনকালে অগ্নিবর্ণা, অগ্নিলোচনা
এই ঊষা লগ্নে হে মহাদেবি তোমার উদ্বোধন-
বাণীর ভক্তির রসপূর্ণ-বরণ কমল আলোক শতদল মেলে বিকশিত হোক দিকে-দিকান্তে
হে অমৃতজ্যোতি, হে মা দুর্গা, তোমার আবির্ভাবে ধরণী হোক প্রাণময়ী
জাগো… জাগো জাগো মা…
জাগো, তুমি জাগো, জাগো দুর্গা,
জাগো দশপ্রহরণধারিণী,
অভয়াশক্তি বলপ্রদায়িনী তুমি জাগো।
প্রণমি বরদা অজরা অতুলা
বহুবলধারিণী রিপুদলবারিণী জাগো মা।
শরণময়ী চন্ডিকা শংকরী জাগো, জাগো মা,
জাগো অসুরবিনাশিনী তুমি জাগো।।

মহিষাসুরমর্দিনী মহালয়া Lyrics

১৯৩১ সালে, পরাধীন ভারতে প্রথম মহিষাসুরমর্দিনী এয়ার হয় অল ইন্ডিয়া রেডিওয়। ৯০ মিনিটের সঙ্গীতপাঠে মহারম্ভে শুরু হয় মা দুর্গার অসুরনিধনের বিবরণ। তার ঠিক ১০দিন পর পুজো। মহালয়া পাঠের জন্য প্রয়োজন ছিল একজন সূত্রধরের ও একদল অসামান্য গায়কের। বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রকে নির্বাচন করা হয় সূত্রধরের ভূমিকায়।
তিনিই চণ্ডীপাঠ করেন। আর খুঁজে পেতে নিয়ে আসা হয় অসামান্য গায়ক-গায়িকাদের। ১৯৩১ থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের সেই স্থান কেউ কেড়ে নিতে পারেনি। বলা যেতে পারে, মা দুর্গার আধারনায় তাঁকে টেক্কা দেওয়ার বা তাঁর সমকক্ষ কাউকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। অনুষ্ঠানে বৈচিত্র আনার জন্যে অল ইন্ডিয়া রেডিও কিছু পরিবর্তন আনার চেষ্টা করেছিল। ১৯৭৬ সালে মহানায়ক উত্তমকুমারকে দিয়ে সূত্রধরের পাঠও করেছিল। কিন্তু শ্রোতারা তা গ্রহণ করেনি।
মহিষাসুরমর্দিনী সম্পূর্ণ পড়ুন,
সেই থেকে অল ইন্ডিয়া রেডিও বুঝতে পারে, বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রকে ছাড়া মহালয়া অসম্পূর্ণ। যে বাঙালি মহানায়ককে প্রত্যাখ্যান করতে পারে, সে অন্য কাউকে গ্রহণ করবে না। সুতরাং, প্রতিষ্ঠিত হয় মহিষাসুরমর্দিনী পাঠে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ
অপরিহার্য। তিনিই মহালয়ার প্রতিশব্দ। শোনা যায়, বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র যখন চণ্ডীপাঠ করতেন, দেবী দুর্গার অসুরবধের দৃশ্য বর্ণনা করতেন, রেডিওর রেডিয়েশনের মধ্যে ভেসে আসত তাঁর কান্নার শব্দ। পাঠ করতে করতে দু’চোখ বেয়ে
নামত নিবেদিত অশ্রুধারা।  মহালয়ার দিনই আঁকা হয় মায়ের চোখ।
শুধু বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের কথা বললে শেষ হবে না। মহিষাসুরমর্দিনীর সুরকার ছিলেন প্রবাদপ্রতীম শিল্পী পঙ্কজ মল্লিক। চিত্রনাট্য লিখেছিলেন সেসময়কার বিখ্যাত বাণী কুমার। কাজ করেছিলেন দ্বিজেন মুখোপাধ্যায়, প্রতিমা
বন্দ্যোপাধ্যায়, শ্যামল মিত্র, সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়, মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায়, আরতী মুখোপাধ্যায়, সুপ্রীতি ঘোষ, বিমল ভূষণ, উৎপলা সেন, তরুণ বন্দ্যোপাধ্যায়, কৃষ্ণা দাশগুপ্ত, সুমিত্রা সেন, অসীমা ভট্টাচার্য, শিপ্রা বসু ও পঙ্কজ
মল্লিক। প্রথমে রেডিওতে লাইভ পাঠ হত মহিষাসুরমর্দিনীর। পরবর্তীকালে রেকর্ডিং হয়। ১৯৬৬ সালে রেকর্ডিং করা হয়।  অল ইন্ডিয়া রেডিওর পুরনো কর্মীদের মুখে শোনা যায়, লাইভ পারফরম্যান্স হত যখন
একমাস টানা রিহার্সাল করানো হত। ফলত, কোনওবারই পারফরম্যান্সের মান কমেনি। স্বমহিমায় শীর্ষ শোয়ের স্থান ধরে রাখত। মানুষের মনে গভীর দাগ কাটত, যার মহিমা আজও ক্ষুণ্ণ হয়নি একচিলতে। যে কারণে, আজও মহালয়ার দিন ভোরে বাঙালির ঘুম ভাঙে,
আজও তারা শোনে….
“জাগো দুর্গা
জাগো দশপ্রহরণধারিণী
অভয়াশক্তি বলপ্রদায়িনী তুমি জাগো।”
মহালয়ার পূণ্য লগ্নে সকলকে জানাই শারদোৎসবের প্রীতি ও শুভেচ্ছা।
মা ভগবতীর আশিষে সকলের মঙ্গল হোক।
আরো পড়ুন,
 
 
Share This Article
Leave a comment

Adblock Detected!

Our website is made possible by displaying online advertisements to our visitors. Please consider supporting us by whitelisting our website.