Loading...
Loading...
Valentine’s Day Premer Golpo
বাতাসে বহিছে প্রেম
(১)
—” শোনো চিন্তা, তোমার কাঁধের কলসিটাকে একটু বাঁদিক করে ধরো। আর চোখটা আমার দিকে রাখ। তাহলেই একদম ঠিকঠাক দেখতে লাগবে।” ক্যানভাসে তুলির টান দিতে দিতেই বলে আর্ট কলেজের তরুণ শিল্পী নবারুণ মল্লিক।
—” কী এত আমাকে আঁকিস বলতো বাবু? আর আমার এখানে কেনে আসিস বারবার? শরম নেই কেনে তোর? গ্রামের লোক কী বলবে বল তুই?এমনিতেই তো সবসময় শোনায় মু নাকি মোর সোয়ামিকে খেয়েছি। কিন্তু কী করবো বল তুই! তিনমাস ধরে জ্বরে ধুকছিল মোর মরদটা।শেষপর্যন্ত ওই সর্বনাশী জ্বরটাই ওকে নিয়ে গেল।খাটাখাটনি করতে পারলো না। শুধু দাওয়াতে শুই শুই দিন যেত ওর। জানিস বাবু ওর চোখ দুটো না কেমন হলদে হয়ে গেছিলো।স বাই বলতো ওকে ডাইনে ধরেছে, আমি জানি ওসব কিছুই নয় রোগ হয়েছিল ওর। আমি তো সমত্ত মেয়ে মানুষ। আমাকে ওর চিকিচ্চের পয়সা কোথা থেকে পাবো কে দেবেক বল? গাঁয়ের মোরোল টারে বলেছিলাম বটে কিন্তু আমারে বলেছিল টাকা নিতে চাই তো রাতের বেলা ঘরে যেতে। উনার চোখের চাউনিটা কেমন জানি ছিল। আমারবুকডা কেঁপে উঠলো
বটে। আসলে ও চেয়েছিলো মোর এই জোয়ান গতরটারে। না খেতে পেয়ে মরবো বাবু কিন্তু গতর বেচবোক লাই কখনো, আমার শিরদাঁড়া বিক্রি নেই।”; চিন্তামনি সোরেন গড়গড়িয়ে বলে চলে।
বটে। আসলে ও চেয়েছিলো মোর এই জোয়ান গতরটারে। না খেতে পেয়ে মরবো বাবু কিন্তু গতর বেচবোক লাই কখনো, আমার শিরদাঁড়া বিক্রি নেই।”; চিন্তামনি সোরেন গড়গড়িয়ে বলে চলে।
—“আহহ চিন্তা! ছবি আঁকার সময় এত কথা বলো কেন শুনি? তোমাকে আমি আগেও বলেছি অত কথা বোলো না। আঁকতে দাও না আমাকে।”, নবারুণ একটু জোর গলায় বলে ওঠে এবার।
—” কিসের এত আঁকাজোকা করিস বাবু? কী খুঁজে পাস আমার মধ্যে তুই আঁকার জন্য?জানিস বাবু মোর মরদটাও সারাদিন খাটাখাটনি করে এসে আমার দিকে চেয়ে থাকতো। তাড়াতাড়ি তোর আঁকা শেষ কর। কেউ দেখে নিলে সব্বনাশ হয়ে যাবে। তুই চলে যা কেনে।”; চিন্তা উত্তর দেয়।
—“জানতে চাও তুমি কেন আসি তোমার কাছে? শহর থেকে বারবার কেন ছুটে আসি এই লালমাটির দেশে? তবে শোনো। তোমার টানে আসি। তোমাকে আমার প্রতিটা সৃষ্টির মধ্যে তুলে ধরতে চাই।ওই অদ্ভুত সারল্যে ভরা মুখটা যে আর কোথাও পাই না চিন্তা। আমার প্রতিটা চিন্তায় তুমি মিশে আছো চিন্তা,”নবারুণ ধীর গলায় জবাব দেয়।
Bangla Love Story
একটু চুপ থেকে চিন্তা বলে,”আমাদের এই সম্পর্কটা কেউ মানবেকনা। আর গাঁয়ের মোড়লটা জানতি পারলি রক্ষা লাই রে। তোর আর আমার দুজনেরই ক্ষতি করবে।”
–“আমি তোমাকে এখান থেকে অনেক দূরে নিয়ে যাবো। তারপর সংসার পাতবো দুজনে মিলে।সারাজীবন তোমাকে আমার ছবির নায়িকা করে রাখবো চিন্তামণি।” নবারুণ চিন্তার হাতটা শক্ত করে ধরে বলে। আরো বলে,”শোনো চিন্তা, আগামীকাল দুপুরে এই কৃষ্ণচূড়া
গাছটার নীচে এসে দাঁড়াবে তুমি। আমি আসবো তোমাকে নিয়ে যেতে।” নবারুণের কথাতে চিন্তা ঘাড় হেলিয়ে সম্মতি জানায়। পরদিন দুপুরবেলা কৃষ্ণচূড়া গাছটার নিচে চলে আসে চিন্তা। নবারুণ আসেনি এখনো। সে কি আদেও আসবে? বিশ্বাসে ভর করে অপেক্ষা করতে থাকে চুপচাপ। হ্যাঁ,ঐতো আসছে। নবারুণের পায়ের আওয়াজ শুনে অনুভব করে চিন্তা।
গাছটার নীচে এসে দাঁড়াবে তুমি। আমি আসবো তোমাকে নিয়ে যেতে।” নবারুণের কথাতে চিন্তা ঘাড় হেলিয়ে সম্মতি জানায়। পরদিন দুপুরবেলা কৃষ্ণচূড়া গাছটার নিচে চলে আসে চিন্তা। নবারুণ আসেনি এখনো। সে কি আদেও আসবে? বিশ্বাসে ভর করে অপেক্ষা করতে থাকে চুপচাপ। হ্যাঁ,ঐতো আসছে। নবারুণের পায়ের আওয়াজ শুনে অনুভব করে চিন্তা।
কাছে এসে নবারুণ চিন্তাকে বলে,” একটু চোখটা বোজো তো। একটা জিনিস দেব আজ তোমায়।” চিন্তা চোখটা বন্ধ করতেই নবারুণ ওর খোঁপায় লাগিয়ে দেয় এক থোকা কৃষ্ণচূড়া। আর বলে,”আজ শুধুই ভালবাসার দিন চিন্তা। শুভ প্রেমদিবস, হ্যাপি ভ্যালেন্টাইন ডে। আজ থেকে আমি সারাজীবন তোমাকে ভালো রাখার দায়িত্ব নিলাম।”
চিন্তা খিলখিল করে হেসে উঠে বলে,”কী ভাতাইন বললি বাবু তুই? মাথার উপর দিয়ে চলে গেলো। আমি ওত বুঝিক লাই রে।”
__”হুম আমারই বোঝা উচিত ছিল যে ওভাবে বললে তুমি বুঝবে নাগো পাগলি। আমি আসলে ভ্যালেন্টাইনের বলেছি। উনি হলেন প্রেমের দেবতা, ভালোবাসতে শেখান সবাইকে। আর আমি ওনার দেখানো পথেই শুধু ভালোবেসে কাটাতে চাই তোমার সাথে। এটুকু জেনে রাখো।”নবারুণ উত্তর দেয়। দুজন মিলে টিলা পেরিয়ে এগিয়ে চললো রেল স্টেশন এর
দিকে। ছায়ারা দীর্ঘ হয়।।
দিকে। ছায়ারা দীর্ঘ হয়।।
(২)
__”হ্যালো রন্টু, শোন তোর বাবা না কেমন একটা করছে বাথরুম থেকে বেরিয়ে।আর দরদর করে ঘামছে। তুই একবার আয় না অফিস থেকে, আমার মাথাটা কাজ করছে না রে রন্টু”।উদভ্রান্তের মত বলেন রীনা দেবী, রন্টু ওরফে রৌনকের মা।
__”প্লিজ মা একটু ম্যানেজ করে নাওনা তোমাদের কমপ্লেক্সের বুড়োবুড়ি দের যে গ্রুপটা আছে ওনাদের কে ডেকে। বোঝার চেষ্টা করো এখন কি করে বেরোবো? কয়েকটা ইম্পর্টেন্ট মিটিং আছে।বেরোতে দেরী হবে অনেক। তারপর আবার রাইকে নিয়ে বেরোতে হবে ক্যান্ডেল লাইট ডিনারে। আজকে হলো ভ্যালেন্টাইন ডে। এই প্ল্যানটা অনেক দিন আগে থেকেই ঠিক হয়ে আছে, এমনকি টেবিল পর্যন্ত বুক করা হয়ে গেছে পাঁচতারা হোটেলে। তুমি তো জানো মা রাই খুব জেদী, বসের মেয়েকে বিয়ে করার অনেক হ্যাপা।রাইকে রাগালে ও ওর বাপিকে বলে দেবে।তারপর আমার জার্মানি যাবার প্ল্যানটা পুরো ঘেঁটে যাবে। তাও দেখি ট্রাই করবো যদি পারি বিকেলের দিকে একবার যাবো।”
__” ও তাহলে তুই আসতে পারবি না?”;রীনা দেবীর মুখের চোয়ালটা শক্ত হয়ে ওঠে এবার।
_”না মা জাস্ট ইম্পসেবেল।” রন্টু ফোনটা কেটে দেয়।কমপ্লেক্সের বিজনবাবু, শঙ্করদাকে ডেকে যখন রীনাদেবীর স্বামী রঞ্জনবাবুকে অ্যাম্বুলেন্সে তোলা হলো, রঞ্জনবাবু হাত দিয়ে তার বুকটা চেপে ধরে জিজ্ঞাসা করেন,”রন্টুকে ফোন
করেছিলে? ও কি আসবে না, কী বললো তোমাকে?”
করেছিলে? ও কি আসবে না, কী বললো তোমাকে?”
ভ্যালেন্টাইন্স ডে প্রেমের গল্প
বুক ফেটে গেলেও রীনাদেবী স্বামীকে প্রবোধ দেন,”না একটু ব্যস্ত আছে আমাদের রন্টু, বিকেলে আসবে। দোহাই তোমার, একটু চুপ করো এবার। আর কথা বোলো না চলো।” রঞ্জনবাবুর শরীরটা আস্তে আস্তে এলিয়ে পড়ে।
কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়েছে ওনার। একটা অপারেশন না করলেই নয়।”নার্সিংহোমেনিয়ে গেলে বলেন ডাক্তার। রীনা দেবী ডাক্তারের কথাতে সম্মতি দিতে একটুও পিছুপাহন না।অপারেশন থিয়েটারের আলোটা জ্বলে ওঠে।রাতের দিকে জ্ঞান ফেরে রঞ্জনবাবুর।কিন্তু ওনার চোখদুটো রন্টুকেই খোঁজে। জড়ানো গলায় জিজ্ঞাসা করেন,”রন্টুকোথায়? আসেনি এখনো?”
রীনা দেবী প্রত্যুত্তরে জানান,”রন্টু আসবে না।আজ ভ্যালেন্টাইনস ডে। তাই ও রাইকেনিয়ে ক্যান্ডেল লাইট ডিনারে যাবে। নইলে রাই রাগারাগি শুরু করবে, রন্টুর ওরবসের মেয়েকে বিয়ে করেছে বলে কথা। একটু এদিক ওদিক হলে কেরিয়ায়ে ক্ষতি হবে।”
রঞ্জনবাবু চোখটা বুজে ফেলেন। রাতের ডিনারে স্যুপ দিয়ে যায় রঞ্জনবাবুকে। রীনাদেবী স্যুপের বাটিটা থেকে স্বামীর মুখে চামচে করে স্যুপ তুলে দেন। গাটাবিছানাতেই এলিয়ে দিয়ে অনিচ্ছা স্বত্বেও মুখটা খোলেন রঞ্জনবাবু। খাওয়ার শেষেআঁচল দিয়ে স্বামীর মুখটা পরম যত্নে মুছে দেন রীনা দেবী। নীরবে হাসেন
প্রেমদেবতা “ভ্যালেন্টাইন”।
প্রেমদেবতা “ভ্যালেন্টাইন”।
রীনা দেবী রঞ্জনবাবুর জীবনে হয়ত ক্যান্ডেল লাইট ডিনার তারপর ফেসবুক,ইনস্টাগ্রামে হ্যাপি কাপলের ছবি পোস্ট করে ভালোবাসি বলার ধুম নেই। কিন্তুএকসাথে ভালোবেসে পরস্পর পথ চলার অঙ্গীকার আছে সারাজীবনের।।
(৩)
__”ওই প্রীতম তাড়াতাড়ি আয়। আর কতক্ষন এভাবে একা একা দাঁড়িয়ে থাকবো বল?নৌকা গুলো তো সব ছেড়ে দিয়েছে কপোত কপোতীদের নিয়ে।”একটু ঝাঁঝিয়ে উঠে বলে মৌ।”এই তো প্রায় এসে গেছি।জাস্ট দশ মিনিটের মধ্যেই ঢুকছি। আজ দাসদের বাড়ির টিউশনথেকে বেরোতে দেরী হয়ে গেল রে একটু। গিয়ে সব বলছি তোকে। এখন রাখলাম রেটাটা”।ফোনের অপর প্রান্ত থেকে প্রীতম উত্তর দেয়। মৌ বেশ রাগত স্বরে
বলে,”হুমম।রাখ।” তারপর একটা বেঞ্চে গিয়ে বসে।
বলে,”হুমম।রাখ।” তারপর একটা বেঞ্চে গিয়ে বসে।
__”উফফ, সরি রে কি করবো বল? জানিস তো দাস বাড়িতে প্রতি মাসে মাইনে নিয়ে কেমনঝোলায়। ১২/১৪ তারিখ না হলে টাকা বের করতে চায় না হাত থেকে। আজ দেরী হলেওটাকাটা নিয়ে এলাম। নৌকা চড়বো তোকে নিয়ে, নৌকাওয়ালা তো আর ফ্রীতে লিফট দেবেনা।তারপর মিত্র ক্যাফের কাটলেট খেয়ে বাড়ি ফিরবো। চল চল আর রাগ করে থাকতে হবেনা।এই দেখ কান মুলছি।”প্রীতমের এই ছেলেমানুষিতে হেসে ফেলে মৌ। মৌ আর প্রীতমের
প্রেমটা সেই কলেজে পড়ার সময় থেকে।
প্রেমটা সেই কলেজে পড়ার সময় থেকে।
__”তোকে কি মাইনে আদায় করে নিয়েই আসতে হতো আজকে? আমার কাছে কি কিচ্ছুটি নেইবল! ওইটুকু টাকা কি আমি দিতে পারিনা? আচ্ছা তোর ইন্টারভিউটার কি হলো রে?”নৌকায়প্রীতমের কোলে মাথা রেখে জিজ্ঞাসা করে মৌ।”না রে ওরা কোনো রিপ্লাই করেনি। কী জানি কি হয়?” প্রীতম অন্যমনস্কভাবে উত্তর
দেয়।
দেয়।
আরো পড়ুন,
“কিন্তু এভাবে আর কতদিন প্রীতম? বাবা বোধহয় আর….”একরাশ হতাশা ঝরে পড়ে মৌ এরগলায়। প্রীতম এই গুমোট ভাবটা কাটানোর জন্য বলে,”দাঁড়া। এই তো সবে দুদিন হলোইন্টারভিউ দিয়ে এলাম। ফোনটা আসতে দে।” তারপর গান ধরে,”আশায় আশায় বসে আছি ওরেআমার মন কখন তোমার আসবে টেলিফোন থুড়ি চাকরির খবর পাওয়া টেলিফোন?”
বেশ কয়েক বছর পর:
“শোনো মৌ, প্রিন্সপ ঘাট,নৌকাবিহার ওসব ন্যাকা ন্যাকা প্রেম আমার দ্বারা জাস্টহবেনা।প্রোজেক্টটা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব শেষ করতে হবে।” টাইয়ের নট বাঁধতেবাঁধতেই বলে অঙ্কন অর্থাৎ মৌ এর হাসব্যান্ড। বিকেলে কয়েকবার ফোন করে মৌ অঙ্কনকে যদি ও ফ্রী হয়ে থাকে তাহলে বুঝিয়ে সুঝিয়ে নিয়ে যাবে প্রিন্সপ ঘাটে।কতদিন
যাওয়া হয় না। ফোন বেজে যায়।
যাওয়া হয় না। ফোন বেজে যায়।
__”উফফ ফোনটা সুইচড অফ করো না অঙ্কন। তোমার বউটা তখন থেকে জ্বালাচ্ছে ফোন করে।ডিভোর্সের কথাটা কবে বলবে তোমার ওকে?নাকি ভয় পাচ্ছো বলতে?”; বক্ষলগ্না
হয়ে বলে তৃণা মানে কলিগ।
হয়ে বলে তৃণা মানে কলিগ।
___”এই অঙ্কন সেন কাউকে ভয় পায় না। তুমি চাইলে আজই বলে দেবো ডার্লিং।” তৃণাকেনিজের আরো কাছে টেনে নিতে নিতে বলে অঙ্কন, একটি বহুজাতিক কোম্পানির মার্কেটিংহেড। মৌ অনেকক্ষণ অপেক্ষার পর একটা ট্যাক্সি ডেকে চলে যায় প্রিন্সপ ঘাট। একটাবেঞ্চে গিয়ে বসে আগের মতো। অনেক নৌকাই ভেসে চলেছে গঙ্গাবক্ষে। চোখ বন্ধ করেমৌ। না অনেক হলো।এবার একটা আল্টিমেট ডিসিশন নিতে হবে ওকে অঙ্কনকে নিয়ে। দিনের
পর দিন এই উপেক্ষা নিয়ে বোধহয় কোনো সম্পর্ক টিকিয়ে রাখা যায় না।
পর দিন এই উপেক্ষা নিয়ে বোধহয় কোনো সম্পর্ক টিকিয়ে রাখা যায় না।
__”কিরে মৌ কেমন আছিস? বিরিয়ানি খাওয়াতে হবে বলে বিয়েতেও নেমন্তন্ন করলিনা?” বহু চেনা গলার আওয়াজে চোখ মেলে তাকায় মৌ। চাপদাড়ি আর পাঞ্জাবিতে দাঁড়িয়ে আছে প্রীতম।
“আমার কথা থাক প্রীতম। তুই বল তুই এখানে কি করছিস? বউকে নিয়ে এসেছিস বুঝি?”; মৌ জিজ্ঞাসা করে।
__”এই সন্ন্যাসীকে আর কে বিয়ে করবে বল? ওই অনেক চেষ্টার পর একটা প্রাইমারি স্কুলের টিচার এর কাজ পেলাম। বাচ্চাগুলোকে নিয়েই বেশ চলে যাচ্ছে। আর ফটোগ্রাফিটা ছাড়তে পারিনি এখনো। আজকের দিনে ভালো ছবি তোলার লোভটা সামলাতে পারলাম না। তাই চলে এলাম।এবার বল। তোর হাসব্যান্ড এর কী খবর রে? ওর পোস্টিং
কোথায় এখন?”
কোথায় এখন?”
প্রীতমের কথার উত্তরে এবার আর নিজেকে সামলাতে পারেনা মৌ। চোখের জল বাঁধ ভাঙ্গে।সম্পর্কের টানাপোড়েন, মৌ এর মানসিক অবস্থাটা বুঝতে খুব একটা দেরী হয় না প্রীতমের।মৌ এর হাতটা শক্ত করে ধরে প্রীতম বলে,”চল আর কাঁদিস না। সামনেই গঙ্গা বইছে। এরপর তোর চোখের জল গঙ্গায় গেলে বন্যায় ফুলেফেঁপে উঠবে। তার চেয়ে বরং মিত্র ক্যাফের কাটলেট খেয়ে আসি চল।” ট্যাক্সি ধরে ওরা। যেতে যেতে প্রীতমের হাতটা শক্ত করে ধরে মৌ জিজ্ঞাসা করে,”আমাদের গেছে যে দিন,একেবারেই কি গেছে? কিছুইকি নেই বাকি?”
একটু চুপ করে থেকে প্রীতম উত্তর দেয়,”রাতের সব তারাই আছে দিনের আলোর গভীরে।”শেষ বিকেলের আলোয় এক হয় দুটি হৃদয়…..