Bengali 18+ Story – বড়দের গল্প – Boroder Golpo
Boroder Golpo
সেনগুপ্ত, গতকাল রাতে মেট্রো সিনেমা হলের সামনে দিয়ে কিডন্যাপ হয়েছে।কিন্তু কে
বা কারা এই কাজের সাথে যুক্ত কিছুই বোঝা যাচ্ছে না। পুলিশের ইনভেস্টিগেশন
চলছে।মিস্টার সেনগুপ্ত পুলিশকে পূর্ণ সহযোগিতা করছেন বলে জানা গেছে। তিনি
খুবই ভেঙে পড়েছেন।….
“দূর আর ভালো লাগছে না সকাল থেকে একই খবর সবকটা নিউজ চ্যানেল কপচে যাচ্ছে।
কিন্তু কাজের কাজ তো কিছুই হচ্ছে না। সকাল থেকে আত্মীয় স্বজনের ফোনের জ্বালায়
অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছি, তারপর মিডিয়ার লোকেরাও বারবার ফোন করছে,বাধ্য হয়ে মোবাইলের
সুইচ অফ করে রেখেছি।”
থেকে তো ও বাড়িও ফেরেনি পুলিশ স্টেশনে বসে আছে কি খেলো, কি করছে ভগবান জানে। হে
রাধামাধব আমাদের সাথেই কেন এমনটা হলো!
মা, রাতে রুটি বানাবো তো? দুপুরে তো কেউ কিছু খেলেনি, এবেলা তো খাবে নাকি!”
খাবেক্ষণ। আমাদের আজ আর গলা দিয়ে কিছু নামবে না রে।”
খাইনি, রাতে বাবুর ওষুধ আছে খেতে হবে। আমি বরং চারটে রুটিও করি দুটো দুটো
খাবে।”
Bangla Hot Golpo
মালতীকে মামা মামী মানুষ করে এক মাতাল, লম্পট, দুশ্চরিত্র বুড়ো লোকের সাথে বিয়ে
দিয়ে দিয়েছিল বলা ভালো মোটা টাকার লোভে বেচে দিয়েছিল। স্বামীর অকথ্য অত্যাচার
সহ্য করেও সংসার করার আশায় পড়েছিল কিন্তু যখন বুড়োটা আকন্ঠ মদ গিলে এসে মারতে
মারতে পেটে লাথি মেয়ে পেটের বাচ্চাটাকে শেষ করে দিল। তখন আর সহ্য করতে না পেরে
মরার জন্য রেললাইনে গলা দিতে গেছিল।
রমাদেবী তাকে বাঁচান। রমাদেবী আর সুজয়বাবু সেদিন বৃন্দাবন থেকে তীর্থ করে
ফিরছিলেন। স্টেশনে গাড়ি আসবে বলে বসে অপেক্ষা করছিলেন। হঠাৎ রমাদেবী চোখ যায়
একটা মেয়ের ওপর। উনি খেয়াল করেন মেয়েটি আলুথালু বেশ বারবার রেললাইনে উঁকি মারছে
আর মুখে কি যেন বিড়বিড় করছে। প্রথমে উনি ভাবেন পাগল তারপর কেমন যেন একটা সন্দেহ
হয় এমন সময় ট্রেন ঢুকছে আর মেয়েটি ঝাঁপ দেওয়ার জন্য প্রস্তুত হচ্ছে, উনি কিছু
একটা বুঝতে পেরে তাড়াতাড়ি করে উঠে গিয়ে ওর হাতটা ধরে এক টান মেরে ফেলেন,…
“কি করছো কি?”
পোড়া জীবন আর রাখবো না।”
শুনে ওকে দেখেও খুব মায়া হয়। ওর কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই জেনে সুজয়বাবুর
সম্মতিতে ওকে সাথে করে বাড়ি নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নেন। তারপর থেকেই মালতি এই
বাড়িতেই থাকে। এনাদের পরিবারের একজন সদস্যা হয়ে গেছে।
বাবু কত্তো জাঁকজমক করে খোকাবাবুর বিয়ে দিলেন। সে বিশাল আয়োজন। বৌদিমনিকে খুব
সুন্দর দেখতে, যেমন রুপ তার তেমন গুন। খুব মিষ্টি করে কথা বলে। গায়ের রং দুধে
আলতা ঠিক যেন কোনো দেবী প্রতিমার মতোন দেখতে। বৌদিমনির বাবা বছর চারেক আগে মারা
গেছেন আর মা মেয়ের বিয়ে দিয়ে এখানকার পাততারি গুটিয়ে ছেলের সাথে আমেরিকায় চলে
গেছে। এখানে আপনজন বলতে বৌদিমনির আর কেউ নেই। সেই সোনার প্রতিমার সাথে এটা কি
হলো এই ভেবে ওর চোখদুটো ভিজে উঠলো।
রে?”
ক্ষতি করতে চাইবে?”
আমাদের তো আর শত্রুর অভাব নেই ।একটু মনে করার চেষ্টা কর।”
এই মুহুর্তে সন্দেহ হচ্ছে না। পুলিশ অফিসারও আমাকে বারবার একই প্রশ্ন
করছিল।”
কোনো না কোনো ফোন আসবেই।”
অফিসারও আমাকে সতর্ক থাকতে বলেছেন। ফোনটাও একটা ক্লু হতে পারে সেটাতে ট্যাপ
করে এনা অবধি পৌঁছানো যেতে পারে। কিন্তু এদের অভিসন্ধি কি কিছুই বোঝা যাচ্ছে
না। এনাকে ওরা কোনো ক্ষতি করেনি তো!”
বসে গেছে যেন মনে হচ্ছে কতোকাল ঘুমায়নি। নানান চিন্তা দুশ্চিন্তা ওকে গ্রাস করে
খাচ্ছে।
লাগুক কিন্তু ওকে খুঁজে বের করতেই হবে।”
ঠাকুরের ফুল ছোঁয়াতে ছোঁয়াতে বললো,
রনোজয় ফোনটা সুইচ অফ করতে পারছে না। যদি দুষ্কৃতীরা ফোন করে টাকার ডিমান্ড করে।
Bengali 18+ Story
করেই হয়েছিল তবুও ও প্রথম দেখাতেই এনাকে পছন্দ করে ফেলেছিল। ছোটো থেকেই ভীষণ
মেধাবী লাজুক প্রকৃতির ছেলে রনো ছেলেবেলায় পড়াশুনা তারপর কেরিয়ার নিয়ে এতোটাই
ব্যস্ত ছিল যে অন্য কিছু ভাবার বা করার মতোন সময় বা ইচ্ছা কোনোটাই ছিল না। সে
সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টায় ব্যবসাটাকে এই পর্যায়ে নিয়ে এসেছে। বাবা ছিলেন ফরেস্ট
অফিসারে অধিকাংশ সময় বাইরেই থাকতেন। তারপর রিটার্য়ার করে ফিরে এসে ওর ব্যবসায়
সাহায্য করে। যখন সে প্রথম এনাকে দেখেছিল ভালোবাসা নামক এক অনুভূতি ওর গোটা
মনকে আবিষ্ট করেছিল। ওর রুপ, ওর গানের গলা ওকে মুগ্ধ করেছিল। ও ভেবেছিল এই হলো
তার স্বপ্নের রাজকন্যা তাই ওকে ওর মনের সবটুকু উজার করে দিয়েছিল। এনাও ওর এই
ভালোবাসাকে বুকভরে আস্বাদন করেছিল। দুজনেই ভেসে গেছিল সুখের সাগরে। ও যখন
সবটুকু দিয়ে এনার নরম শরীরটাকে ফুলের মতোন করে আদরে আদরে ভরিয়ে দিতো এনা এক
কপোতীর মতোন আদর খেতো আর থরথর করে কেঁপে উঠতো। ওর বুকের পশমের মধ্যে মুখ গুঁজে
চোখ বন্ধ করে আদর খেতো। এনা ওকে সবটুকু দিয়ে পরিপূর্ণ করেছিল। আজ এই বন্ধ ঘরে
এই নিঃসঙ্গ বিছানায় ওর প্রেয়সীকে ওর বুক ভরে পেতে ইচ্ছা করছে, কোলবালিশটাকে
বুকের মধ্যে চেপে ধরে শুয়ে আছে। চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পরছে না জানি ওর প্রিয়তমা,
ওর প্রেয়সী এখন কোথায় আছে,ওরা ওর সাথে কি ব্যবহার করছে। ওরা ওকে অত্যাচার করছে
না তো! ওর শরীরটাকে…… এই কথাটা ভেবেই ও আঁতকে ওঠে। না না না কিছুতেই
না। এ হতে পারে না। আমি তোমার কিছু হতে দেবো না এনা ,তুমি আমার শুধু
আমার…….
দাঁড়ায়। ওর মধ্যে থেকে একজন মহিলা নামে। বিধ্বস্ত অবস্থা তার, ঠিক মতো হাটার
ক্ষমতা নেই তার কোনোরকমে কলিং বেল বাজায়।
ওরজন্যই এই বিপদ হয়েছে হায় ইশ্বর সেদিন কেন ওদের জোর করলাম এই ভেবে সে নিজেকে
দুষতে থাকে। সত্যিই কি তার কোনো দোষ ছিল!
ব্যবসার কাজ আর কাজ। তাই তো সেদিন ছেলেকে বলেছিল,
ওর ও তো একটু ইচ্ছা করে নাকি তোর সাথে বেড়াতে যাবার। যা না তোরা কোথা দিয়ে
একটু ঘুরে আয়। ওর তো বাপের বাড়িও নেই যে সেখানে গিয়ে দুটোদিন থেকে আসবে, এখন
যদি তুইও কোথাও না নিয়ে যাস তবে ওর তো মন খারাপ হতে পারে বল।”
তো ঘুরতে যেতে ইচ্ছা করে কিন্তু উপায় নেই মাদার।”
চোখদুটো উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল আর রনোর কথা শুনে দপ করে নিভে গেল। মুখে বললো,,
বলে না। রমাই বললো…
মনটা একটু ভালো লাগে।”
তোদের জন্য যেন রান্না না করে রাতে ভালো রেস্টুরেন্টে গিয়ে ডিনার করে ফিরবি।
এনা আমার বিরিয়ানী খেতে খুব ভালোবাসে।”… এই বলে হেসে ফেলে রমাদেবী।
নেই মেয়ের খুব শখ ছিল এনা সেই স্হান পূরণ করেছে। তার বিনয়ী, মিষ্টি ব্যবহার
তার মন কেড়ে নেয়। সুজয়ও ওকে খুব পছন্দ করে। গুরুদেবের এক অনুষ্ঠানে গিয়ে ওর
মা বাণীর সাথে আলাপ হয়েছিল রমার, তারপর ফোন নাম্বার আদান প্রদান করে কথা বলতে
বলতে দুজন দুজনকে সই পাতিয়েছিল। একদিন বাণী, ওর মেয়ের সাথে আলাপ করিয়ে দেয়,
এনাকে দেখেই রমাদেবীর মনে ধরে যায় উনি মনে মনে ছেলের বৌ করার সংকল্প নেয়।
তারপর আর কি দেখাশুনার পর্ব। স্বামীর পছন্দ, ছেলের পছন্দ ব্যস দুই সইয়ের সই
থেকে বেয়ান হতে বেশী দেরী লাগেনি। তারপর তো বাণী ওর ছেলের কাছে আমেরিকা
চলে যায়। সেদিন মেয়ের কি কান্না, রমাই বুকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরে
বলেছিল…
মনে রাধা গোবিন্দর কাছে মানত করে ভালো ভাবে যেন এনা ফিরে আসে। ওর সংসারের মান
সম্মান যেন অক্ষুণ্ণ থাকে। ঘরের বৌকে পাওয়া যাচ্ছে না মিডিয়া, খবরের কাগজ সব
তোলপাড় হচ্ছে পাড়া প্রতিবেশীরা সব উঁকি ঝুঁকি মারছে। রমার ছাদে যেতেও ভয় করছে
কে কি জানতে চাইবে এইভেবে। বাজারে মালতীকে পাঠাচ্ছে টুকটাক যা দরকার পড়ছে। ও
ফিরে এসে বলছে অনেক লোকজন যারা আগে কথা বলতো না তারাও আগ বাড়িয়ে আলাপ করতে
আসছে। আসলে উদ্দেশ্য হলো ওর পেট থেকে কথা বার করা। রমা ওকে স্পষ্ট বলে
দিয়েছে..
মানুষের যে কি কৌতুহল হয় তা বলার কথা নয়। আর সেই লোকের যদি সমাজে একটু
পরিচিতি থাকে তবে তো কথাই নেই।”
চিৎকারে ওর তন্দ্রা কেটে যায়। ও ধরফর করে বাইরে বেরিয়ে আসে সাথে
সুজয়ও।
এয়েচে।”
মালতী ধরে ফেলে। এনার হাঁটার শক্তি নেই মালতীই ওকে ধরে ধরে ঘরে নিয়ে যায়।
এরমধ্যে রনোও ছুটে এসেছে আর সাথে রমা আর সুজয়ও। সবাই হতভম্বের মতোন এনার
দিকে তাকিয়ে আছে। মুখে কেউ কিছু বলতে পারছে না।
গেছে দেখলেই বোঝা যাচ্ছে। শরীরটা এই তিনদিনেই শুকিয়ে ফ্যাকাসে হয়ে গেছে।
হাঁটাচলা এমনকি কথা বলার মতোন অবস্থাও নেই।
বেরিয়ে আসে কিছু বোঝা যায় না।
একটা ফোন করে আসতে বল। ওকে আগে সুস্থ করতে হবে রে পরে সব জানবি। মেয়েটাকে মনে
হচ্ছে শেষ করে দিয়েছে।”… এই বলে রমাদেবী আচল দিয়ে চোখ মোছে।
ফোনে আননোন নাম্বার থেকে একটা ফোন আসে।
ইনজেকশন দিয়েছেন। বলেছেন প্রচন্ড মেন্টালি ট্রেস থেকেই স্নায়ু দূর্বল হয়ে
গেছে আর তাই শরীর নিতে পারছে না মনে হচ্ছে প্রচন্ড ট্রমার মধ্যে দিয়ে গেছেন
আর খাওয়া দাওয়াও বিশেষ কিছু করেননি। এখন এই ঘুমের ইনজেকশন দিলেন ঘুম থেকে
উঠলে যেন গরম দুধ খাওয়ানো হয়। কদিন টাইমে টাইমে খাবার আর ওষুধ খাওয়ালেই সুস্থ
হয়ে উঠবে, বিশেষ চিন্তার কোনো কারণ নেই। আর হ্যাঁ ওনাকে যেন এই মুহুর্তে কিছু
জোর করে জিজ্ঞাসা করা না হয় দুটো দিন পর থেকে যেন করে। এই বলে ডাক্তারবাবু
চলে গেলেন।
চেয়ে আছে। ফোনটা আসার পর থেকে ওর মনের ভিতরটা বিশ্বাস অবিশ্বাসের দোলাচলে
উথাল পাতাল করছে। কি সুন্দর নিষ্পাপ মুখটা এখন একটা বিষাদের ছায়া ঢেকে আছে।
ওর এনা ওর আছে তো? একটা প্রবল অপ্রাসঙ্গিক চিন্তা ভাবনা ওকে গ্রাস করছে,
হ্যাঁ হ্যাঁ এটাকে ও এখনো অপ্রাসঙ্গিকই বলবে কারণ, কারণ ও বিশ্বাস করে না
এনা ওকে ঠকাতে পারে। না না না এটা হতে পারে না কিছুতেই পারেনা। এই মুখ এই
শরীর এই মন সবটা সবটা ওর অন্য কারোর না। এমন সময় ওর ফোনে বলা কথাটা মনে পড়লো
কে যেন হিস হিস করে ওর কানের কাছে বলছে
বুকে মুখ গুঁজে কাঁদতে লাগলো।