Bengali 18+ Story – বড়দের গল্প – Boroder Golpo

Bongconnection Original Published
18 Min Read


 Bengali 18+ Story – বড়দের গল্প – Boroder Golpo

Bengali 18+ Story - বড়দের গল্প - Boroder Golpo
Loading...

Boroder Golpo

ব্রেকিং নিউজ…… 
বিজনেস টাইকুন রনজয় সেনগুপ্তের সদ্য বিবাহিতা সুন্দরী যুবতী  স্ত্রী এনা
সেনগুপ্ত, গতকাল রাতে মেট্রো সিনেমা হলের সামনে দিয়ে কিডন্যাপ হয়েছে।কিন্তু কে
বা কারা এই কাজের সাথে যুক্ত কিছুই বোঝা যাচ্ছে না। পুলিশের ইনভেস্টিগেশন
চলছে।মিস্টার  সেনগুপ্ত পুলিশকে পূর্ণ সহযোগিতা করছেন বলে জানা গেছে। তিনি
খুবই ভেঙে পড়েছেন।…. 


সুজয়বাবু টিভি সুইচটা অফ করে দিয়ে তার স্ত্রী রমাদেবীকে উদ্দেশ্য করে বলেন,
“দূর আর ভালো লাগছে না সকাল থেকে এক‌ই খবর সবকটা নিউজ চ্যানেল কপচে যাচ্ছে।
কিন্তু কাজের কাজ তো কিছুই হচ্ছে না। সকাল থেকে আত্মীয় স্বজনের ফোনের জ্বালায়
অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছি, তারপর মিডিয়ার লোকেরাও বারবার ফোন করছে,বাধ্য হয়ে মোবাইলের
সুইচ অফ করে রেখেছি।” 
রমাদেবী…”খোকাকে একটা ফোন করো না, দেখো না কিছু খবর পাওয়া গেলো কিনা। কাল রাত
থেকে তো ও বাড়িও ফেরেনি পুলিশ স্টেশনে বসে আছে কি খেলো, কি করছে ভগবান জানে। হে
রাধামাধব আমাদের সাথেই কেন এমনটা হলো!
বেশ হাসি খুশির সংসার আমার কোন কালের কুনজরে পড়লো কে জানে!” 
এমন সময় মালতী রমাদেবীর কাছে এসে অতিশয় সংকোচের সাথে জিজ্ঞাসা করলো…, “বলছি
মা, রাতে রুটি বানাবো তো? দুপুরে তো কেউ কিছু খেলেনি, এবেলা তো খাবে নাকি!”
সুজয়বাবু বলেন…, “না রে কিছু খাওয়ার ইচ্ছা নেই।” 
রমাদেবী বলেন…”তুই এক কাজ কর দুটো গরম ভাত বসা, খোকা  যদি ফেরে
খাবেক্ষণ। আমাদের আজ আর গলা দিয়ে কিছু নামবে না  রে।” 
মালতী ইষৎ অভিমানের সুরে বলে.. ,”না খেলে চলবে নাকি! বাবু সারাদিন ঠিক মতোন
খাইনি, রাতে বাবুর ওষুধ আছে খেতে হবে। আমি বরং চারটে রুটিও করি দুটো দুটো
খাবে।” 
এই বলে মালতী ওখান দিয়ে চলে যায়। 
 

Bangla Hot Golpo

মালতী এ বাড়ীতে দশবছর হলো কাজ করছে। এ বাড়িতেই থাকে। সাতকূলে কেউ নেই অনাথ
মালতীকে মামা মামী মানুষ করে এক মাতাল, লম্পট, দুশ্চরিত্র বুড়ো লোকের সাথে বিয়ে
দিয়ে দিয়েছিল বলা ভালো মোটা টাকার লোভে বেচে দিয়েছিল। স্বামীর অকথ্য অত্যাচার
সহ্য করেও সংসার করার আশায় পড়েছিল কিন্তু যখন বুড়োটা আকন্ঠ মদ গিলে এসে মারতে
মারতে পেটে লাথি মেয়ে পেটের বাচ্চাটাকে শেষ করে দিল। তখন আর সহ্য করতে না পেরে
মরার জন্য রেললাইনে গলা দিতে গেছিল। 

রমাদেবী তাকে বাঁচান। রমাদেবী আর সুজয়বাবু সেদিন বৃন্দাবন থেকে তীর্থ করে 
ফিরছিলেন। স্টেশনে গাড়ি আসবে বলে বসে অপেক্ষা করছিলেন। হঠাৎ রমাদেবী চোখ যায়
একটা মেয়ের ওপর। উনি খেয়াল করেন মেয়েটি আলুথালু বেশ বারবার রেললাইনে উঁকি মারছে
আর মুখে কি যেন বিড়বিড় করছে। প্রথমে উনি ভাবেন পাগল তারপর কেমন যেন একটা সন্দেহ
হয় এমন সময় ট্রেন ঢুকছে আর মেয়েটি ঝাঁপ দেওয়ার জন্য প্রস্তুত হচ্ছে, উনি কিছু
একটা বুঝতে পেরে তাড়াতাড়ি করে উঠে গিয়ে ওর হাতটা ধরে এক টান মেরে ফেলেন,…
“কি করছো কি?” 

মেয়েটা চিৎকার করে কেঁদে ওঠে.., “ছেড়ে দেন আমায় মা ছেড়ে দেন। আমি মরতে চাই ,এ
পোড়া জীবন আর রাখবো না।”


 রমাদেবী ওকে জল খাইয়ে শান্ত করে মাথায় হাত বুলিয়ে দেন। তারপর ওর সব কথা
শুনে ওকে দেখেও খুব মায়া হয়। ওর কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই জেনে সুজয়বাবুর
সম্মতিতে ওকে সাথে করে বাড়ি নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নেন। তারপর থেকেই মালতি এই
বাড়িতেই থাকে। এনাদের পরিবারের একজন সদস্যা হয়ে গেছে। 
কাল রাতে খবরটা শোনার পর থেকে ওরও মন খুব খারাপ। এইতো সেদিন তাও মাস ছয়েক হলো
বাবু কত্তো জাঁকজমক করে খোকাবাবুর বিয়ে দিলেন। সে বিশাল আয়োজন। বৌদিমনিকে খুব
সুন্দর দেখতে, যেমন রুপ তার তেমন গুন। খুব মিষ্টি করে কথা বলে। গায়ের রং দুধে
আলতা ঠিক যেন কোনো দেবী প্রতিমার মতোন দেখতে। বৌদিমনির বাবা বছর চারেক আগে মারা
গেছেন আর মা মেয়ের বিয়ে দিয়ে এখানকার পাততারি গুটিয়ে ছেলের সাথে আমেরিকায় চলে
গেছে। এখানে আপনজন বলতে বৌদিমনির আর কেউ নেই। সেই সোনার প্রতিমার সাথে এটা কি
হলো এই ভেবে ওর চোখদুটো ভিজে উঠলো। 
পরেরদিন সকাল দশটা সুজয়বাবু, “মালতী রনো  কখন ফিরেছিল কালকে?”
—“তাও রাত একটা হবে বাবু। এখন ঘুমাচ্ছে।” 
—“থাক ঘুমাক, যা ধকল যাচ্ছে ছেলেটার ওপর দিয়ে। শোন না তোর মা কোথায়
রে?” 
—“মা তো ঠাকুর ঘরে পূজো দিচ্ছে বাবু।” 
—“ঠিক আছে, তুই আমাকে এককাপ চা দে তো।” 
—“দিচ্ছি বাবু।” 
এমন সময় রনো ওরফে রনজয় ড্রয়িং রুমে ঢুকলো। 
–“আমাকেও এক কাপ চা দিও মালতীদি।” 
—“হ্যাঁ দাদাবাবু দিচ্ছি।” 
এই বলে মালতী চলে গেল। 
—সুজয়বাবু, “কি রে পুলিশের ইনভেস্টিগেশন কতদূর কিছু ধরতে পারছে ওরা।” 
—“না বাবা, কোনো ক্লু‌ই তো দিতে পারছি না ওদের। আমি নিজেও ভাবছি কারা আমার
ক্ষতি করতে চাইবে?”
–“সাম্প্রতিক কালে কারোর সাথে তোর ব্যবসা সংক্রান্ত কোনো গন্ডগোল হয়নি তো?
আমাদের তো আর শত্রুর অভাব নেই ।একটু মনে করার চেষ্টা কর।” 
—“না বাবা, সেরকম তো কিছু হয়নি আর আমার শত্রু! কি জানি আমার তো সেরকম কাউকে
এই মুহুর্তে সন্দেহ হচ্ছে না। পুলিশ অফিসার‌ও আমাকে বারবার একই প্রশ্ন
করছিল।” 
—সুজয়বাবু, “শোন শুধু মাত্র যদি টাকার লোভে কিডন্যাপটা হয় তাহলে তো তোর কাছে
কোনো না কোনো ফোন আসবেই।” 
—“না বাবা আমিও তাই ভাবছি, প্রায় দুদিন হতে চললো কোনো ফোন আসেনি। ইনফ্যাক্ট
অফিসার‌ও আমাকে সতর্ক থাকতে বলেছেন। ফোনটাও একটা ক্লু হতে পারে সেটাতে ট্যাপ
করে এনা অবধি পৌঁছানো যেতে পারে। কিন্তু এদের অভিসন্ধি কি কিছুই বোঝা যাচ্ছে
না। এনাকে ওরা কোনো ক্ষতি করেনি তো!” 
সুজয়বাবু লক্ষ্য করেন ছেলে খুবই ভেঙে পড়েছে। মুখটা ফ্যাকাসে লাগছে ,চোখ দুটো
বসে গেছে যেন মনে হচ্ছে কতোকাল ঘুমায়নি। নানান চিন্তা দুশ্চিন্তা ওকে গ্রাস করে
খাচ্ছে। 
–মুখে উনি বলেন, “তুই একদম চিন্তা করিস না, এনার কিচ্ছু হয়নি, যতো টাকা লাগে
লাগুক কিন্তু ওকে খুঁজে বের করতেই হবে।” 
এমন সময় রমাদেবী কখন এসে দাঁড়িয়ে বাবা ছেলের কথোপকথন শুনছিল। উনি ছেলের মাথায়
ঠাকুরের ফুল ছোঁয়াতে ছোঁয়াতে বললো, 
—“বৌমার কোনো শত্রু নেই তো?”
সুজয়বাবু আর রনজয় দুজনেই ক্ষণিকের জন্য চুপ করে যায়। 
সারাটাদিন কোনোরকমে কেটে যায়। বিভিন্ন রকম ভাবে ফোনে হ্যারাসমেন্ট চলতেই থাকে।
রনোজয় ফোনটা সুইচ অফ করতে পারছে না। যদি দুষ্কৃতীরা ফোন করে টাকার ডিমান্ড করে।


Bengali 18+ Story

 রনোজয় সব পারে এনার জন্য, এনা যে ওর ভালবাসা।যদিও ওদের বিয়েটা সম্বন্ধ
করেই হয়েছিল তবুও ও প্রথম দেখাতেই এনাকে পছন্দ করে ফেলেছিল। ছোটো থেকেই ভীষণ
মেধাবী লাজুক প্রকৃতির ছেলে রনো ছেলেবেলায় পড়াশুনা তারপর কেরিয়ার নিয়ে এতোটাই
ব্যস্ত ছিল যে অন্য কিছু ভাবার বা করার মতোন সময় বা ইচ্ছা কোনোটাই ছিল না। সে
সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টায় ব্যবসাটাকে এই পর্যায়ে নিয়ে এসেছে। বাবা ছিলেন ফরেস্ট
অফিসারে অধিকাংশ সময় বাইরেই থাকতেন। তারপর রিটার্য়ার করে ফিরে এসে ওর ব্যবসায়
সাহায্য করে। যখন সে প্রথম এনাকে দেখেছিল ভালোবাসা নামক এক অনুভূতি ওর গোটা
মনকে আবিষ্ট করেছিল। ওর রুপ, ওর গানের গলা ওকে মুগ্ধ করেছিল। ও ভেবেছিল এই হলো
তার স্বপ্নের রাজকন্যা তাই ওকে ওর মনের সবটুকু উজার করে দিয়েছিল। এনাও ওর এই
ভালোবাসাকে বুকভরে আস্বাদন করেছিল। দুজনেই ভেসে গেছিল সুখের সাগরে। ও যখন
সবটুকু দিয়ে এনার নরম শরীরটাকে ফুলের মতোন করে আদরে আদরে ভরিয়ে দিতো এনা এক
কপোতীর মতোন আদর খেতো আর থরথর করে কেঁপে উঠতো। ওর বুকের পশমের মধ্যে মুখ গুঁজে
চোখ বন্ধ করে আদর খেতো। এনা ওকে সবটুকু দিয়ে পরিপূর্ণ করেছিল। আজ এই বন্ধ ঘরে
এই নিঃসঙ্গ বিছানায় ওর প্রেয়সীকে ওর বুক ভরে পেতে ইচ্ছা করছে, কোলবালিশটাকে
বুকের মধ্যে চেপে ধরে শুয়ে আছে। চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পরছে না জানি ওর প্রিয়তমা,
ওর প্রেয়সী এখন কোথায় আছে,ওরা ওর সাথে কি ব্যবহার করছে। ওরা ওকে অত্যাচার করছে
না তো! ওর শরীরটাকে……  এই কথাটা ভেবেই ও আঁতকে ওঠে। না না না কিছুতেই
না। এ হতে পারে না। আমি তোমার কিছু হতে দেবো না এনা ,তুমি আমার শুধু
আমার……. 

আরো পড়ুন, বেশ্যা মায়ের গল্প – Nongra Mayer Golpo

       পরেরদিন খুব ভোরে একটা গাড়ি এসে বাড়ির সামনে
দাঁড়ায়। ওর মধ্যে থেকে একজন মহিলা নামে। বিধ্বস্ত অবস্থা তার, ঠিক মতো হাটার
ক্ষমতা নেই তার কোনোরকমে কলিং বেল বাজায়।
অনেকবার ধরে বাজাচ্ছে 
—মালতী..”কে !কে এলো এতো ভোরে?” 
–“যাচ্ছি যাচ্ছি।” 
মালতী দরজাটা খুলে আর্তের মতোন চেঁচিয়ে উঠলো, মুখে অস্ফুটের মতো বললো…. 
—“বৌদিমনি………. তুমি………….”
#প্রতিশোধ-স্পৃহা     (দ্বিতীয় পর্ব) 
#প্রাপ্তবয়স্কদের-জন্য
#কলমে-রেশমী-শীল
……কাল সারারাত ঘুম হয়নি রমাদেবীর , দেখতে দেখতে ভোরের আলো ফুটেছে ।হয়তো
ওরজন্যই এই বিপদ হয়েছে হায় ইশ্বর সেদিন কেন ওদের জোর করলাম এই ভেবে সে নিজেকে
দুষতে থাকে। সত্যিই কি তার কোনো দোষ ছিল! 
মোটে ছয়মাস হলো বিয়ে হয়েছে , ছেলেটা মোটে নতুন বৌকে সময় দেয় না। সারাদিন শুধু
ব্যবসার কাজ আর কাজ। তাই তো সেদিন ছেলেকে বলেছিল,
–“সারাদিন কি এতো কাজ করিস! নতুন বৌ সারাদিন এই বুড়িটার সাথে একা একা থাকে,
ওর ও তো একটু ইচ্ছা করে নাকি তোর সাথে বেড়াতে যাবার। যা না তোরা কোথা দিয়ে
একটু ঘুরে আয়। ওর তো বাপের বাড়িও নেই যে সেখানে গিয়ে দুটোদিন থেকে আসবে, এখন
যদি তুইও কোথাও না নিয়ে যাস তবে ওর তো মন খারাপ হতে পারে বল।”
রনো অভিযোগের সুরে বলেছিল, 
—“কি যে বলো মা এখন কোথাও বেড়াতে যাওয়া যাবে না, ব্যবসার খুব চাপ। আমার‌ও
তো ঘুরতে যেতে ইচ্ছা করে কিন্তু উপায় নেই মাদার।”
এনা সামনেই ছিল মা ছেলের কথা শুনছিল রমা খেয়াল করেছিল ও যখন বলছিল এনার
চোখদুটো উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল আর রনোর কথা শুনে দপ করে নিভে গেল। মুখে বললো,,
—“না মামনি আমি কোথাও যাবো না, তোমার সাথেই তো বেশ আছি ।”
রনো হয়তো ব্যপারটা বুঝতে পেরেছে, যে এনার অভিমান হয়েছে। তাও মায়ের সামনে কিছু
বলে না। রমাই বললো…
—“ওরে নিদেন পক্ষে একটা সিনেমা তো দেখাতে নিয়ে যেতে পারিস নাকি। এতে তো ওর
মনটা একটু ভালো লাগে।”
রনো একটু ভেবে বলে…
–” ঠিক আছে আমি ম্যানেজ করছি।” 
—“না ওসব ম্যানেজ ট্যানেজ চলবে না তোরা আজ‌ই যাবি। আর শোন মালতীকে বলে দেবো
তোদের জন্য যেন রান্না না করে রাতে ভালো রেস্টুরেন্টে গিয়ে ডিনার করে ফিরবি।
এনা আমার বিরিয়ানী খেতে খুব ভালোবাসে।”… এই বলে হেসে ফেলে রমাদেবী।
–রনো, “যথা আজ্ঞা জননী। আজ দেখি নাইট শোয়ের টিকিট কাটবো।” 
রমা লক্ষ্য করলো এনার মুখে হাসি ফুটেছে। আধো গলায় একবার শুধু বললো…
–” মামনি তুমি যাবে না!”
রমা একটু কৌতুক মিশ্রিত কন্ঠে, 
–“দূর পাগলী কি যে বলিস।” 
রমাদেবী তার এই ছেলের বৌটিকে বৌমা কম নিজের মেয়ের মতোই ভালোবাসে। তার মেয়ে
নেই মেয়ের খুব শখ ছিল এনা সেই স্হান পূরণ করেছে। তার বিনয়ী, মিষ্টি ব্যবহার
তার মন কেড়ে নেয়। সুজয়‌ও ওকে খুব পছন্দ করে। গুরুদেবের এক অনুষ্ঠানে গিয়ে ওর
মা বাণীর সাথে আলাপ হয়েছিল রমার, তারপর ফোন নাম্বার আদান প্রদান করে কথা বলতে
বলতে দুজন দুজনকে স‌ই পাতিয়েছিল। একদিন বাণী, ওর মেয়ের সাথে আলাপ করিয়ে দেয়,
এনাকে দেখেই রমাদেবীর মনে ধরে যায় উনি মনে মনে ছেলের বৌ করার সংকল্প নেয়।
তারপর আর কি দেখাশুনার পর্ব। স্বামীর পছন্দ, ছেলের পছন্দ ব্যস দুই স‌ইয়ের স‌ই
থেকে বেয়ান হতে বেশী দেরী লাগেনি। তারপর তো  বাণী ওর ছেলের কাছে আমেরিকা
চলে যায়। সেদিন মেয়ের কি কান্না, রমাই বুকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরে
বলেছিল…
—“দূর পাগলী কাঁদিস কেন আমি তোর মা তো।”
ওর বুকে মাথা রেখে অনেক্ষণ কেঁদেছিল এনা।  
 
…..এইসব নানান কথা মনে পড়ছিল মেয়েটার জন্য ভীষণ চিন্তা হচ্ছে রমার। ও মনে
মনে রাধা গোবিন্দর কাছে মানত করে ভালো ভাবে যেন এনা ফিরে আসে। ওর সংসারের মান
সম্মান যেন অক্ষুণ্ণ থাকে। ঘরের বৌকে পাওয়া যাচ্ছে না মিডিয়া, খবরের কাগজ সব
তোলপাড় হচ্ছে পাড়া প্রতিবেশীরা সব উঁকি ঝুঁকি মারছে। রমার ছাদে যেতেও ভয় করছে
কে কি জানতে চাইবে এইভেবে। বাজারে মালতীকে পাঠাচ্ছে টুকটাক যা দরকার পড়ছে। ও
ফিরে এসে বলছে অনেক লোকজন যারা আগে কথা বলতো না তারাও আগ বাড়িয়ে আলাপ করতে
আসছে। আসলে উদ্দেশ্য হলো ওর পেট থেকে কথা বার করা। রমা ওকে স্পষ্ট বলে
দিয়েছে..
–” কারোর সঙ্গে কথা বলবি না সোজা বাড়ি চলে আসবি। অন্যের বাড়ি বিপদ দেখলে
মানুষের যে কি কৌতুহল হয় তা বলার কথা নয়। আর সেই লোকের যদি সমাজে একটু
পরিচিতি থাকে তবে তো কথাই নেই।”  
….এইসব নানান চিন্তা করতে করতে একটু তন্দ্রা এসেছিল রমার।হঠাৎ মালতীর
চিৎকারে ওর তন্দ্রা কেটে যায়। ও ধরফর করে বাইরে বেরিয়ে আসে সাথে
সুজয়‌ও। 
…..”ও মা…ও দাদাবাবু…. কে কোথায় আছো তাড়াতাড়ি আসো দেখো বৌদিমনি ফিরে
এয়েচে।”
মালতী দরজা খুলতেই ওর গায়ের উপরে পরে যাবার উপক্রম করে এনা, সঙ্গে সঙ্গে
মালতী ধরে ফেলে। এনার হাঁটার শক্তি নেই মালতীই ওকে ধরে ধরে ঘরে নিয়ে যায়।
এরমধ্যে রনোও ছুটে এসেছে আর সাথে রমা আর সুজয়‌ও। সবাই হতভম্বের মতোন এনার
দিকে তাকিয়ে আছে। মুখে কেউ কিছু বলতে পারছে না। 
রমাই রনোকে বললো,,
—“যা ধর, ধরে খাটে শুইয়ে দে।” 
রনো ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে 
—“হ্যাঁ হ্যাঁ যাচ্ছি।”
মালতী বলতে থাকে,
—“আহা রে অমন সোনার অঙ্গে কালিশ্য পরে গেছে গো।”
রনো লক্ষ্য করে এনার প্রায় অচৈন্য অবস্থা। শরীরের ওপর দিয়ে বিস্তর ঝড় বয়ে
গেছে দেখলেই বোঝা যাচ্ছে। শরীরটা এই তিনদিনেই শুকিয়ে ফ্যাকাসে হয়ে গেছে।
হাঁটাচলা এমনকি কথা বলার মতোন অবস্থাও নেই। 
ও খাটের পাশে গিয়ে এনার মাথায় হাত রাখে, জানতে চায়, 
–“এনা এই এনা, কি হয়েছে তোমার? কোথায় ছিলে তুমি? বলো আমাকে বলো।”
এনা অল্প চোখ খুলে তাকায়, মুখটা একটু ফাঁক  করে একটা অস্পষ্ট শব্দ
বেরিয়ে আসে কিছু বোঝা যায় না। 
এমন সময় রমাদেবী রনোকে বারণ করে বলে,
—“এখন না খোকা, এখন কিছু জিজ্ঞাসা করিস না তুই বরং আগে ডাক্তারকাকুকে 
একটা ফোন করে আসতে বল। ওকে আগে সুস্থ করতে হবে রে পরে সব জানবি। মেয়েটাকে মনে
হচ্ছে শেষ করে দিয়েছে।”… এই বলে রমাদেবী আচল দিয়ে চোখ মোছে। 
রনো মোবাইল নিয়ে ডাক্তার কাকুর নাম্বারটা ডায়াল করতে যাবে সেই মুহুর্তে ওর
ফোনে আননোন নাম্বার থেকে একটা ফোন আসে। 
ও ফোনটা ধরে হ্যালো বলে, 
……”হ্যালো মিস্টার সেনগুপ্ত?” 
……..”হ্যাঁ বলছি।” 
………”আপনার স্ত্রীকে ফিরিয়ে দিলাম।”
……….”কে বলছেন আপনি?”
………”আমি! আমি বন্ধু উউউউ” 
লোকটা একটু ফ্যাসফ্যাসে গলায় বলে,
……..”ভালো করে দেখে নিন সব ঠিক আছে তো! 
…….এনজয়, এনজয়, যাষ্ট ফান হা হা হা হা”
এই বলে লোকটা খুব জোরে অট্টহাসি হাসতে থাকে। 
রনোর মনে হয় কানের পর্দা ফেটে যাবে। 
হঠাৎ করে লোকটা ফোন কেটে দেয়। 
….”হ্যালো, হ্যালো, হ্যালো 
……কে বলছেন? হ্যালো।” 
ফোনটা কান থেকে নামিয়ে নিতেই রমাদেবী সুজয়বাবু দুজনেই একসাথে জিজ্ঞেস করে,
–” কার ফোন ছিল খোকা?” 
–“জানি না। বুঝতে পারলাম না।” 
–“টাকা পয়সার কথা কিছু বললো নাকি?” 
রনো শুধু মাথা নাড়লো। 
নয়টার  সময় ডাক্তার বাবু এসেছিলেন। এনাকে ভালো করে পরীক্ষা করে ঘুমের
ইনজেকশন দিয়েছেন। বলেছেন প্রচন্ড মেন্টালি ট্রেস থেকেই স্নায়ু দূর্বল হয়ে
গেছে আর তাই শরীর নিতে পারছে না মনে হচ্ছে প্রচন্ড ট্রমার মধ্যে দিয়ে গেছেন
আর খাওয়া দাওয়াও বিশেষ কিছু করেননি। এখন এই ঘুমের ইনজেকশন দিলেন ঘুম থেকে
উঠলে যেন গরম দুধ খাওয়ানো হয়। কদিন টাইমে টাইমে খাবার আর ওষুধ খাওয়ালেই সুস্থ
হয়ে উঠবে, বিশেষ চিন্তার কোনো কারণ নেই। আর হ্যাঁ ওনাকে যেন এই মুহুর্তে কিছু
জোর করে জিজ্ঞাসা করা না হয় দুটো দিন পর থেকে যেন করে। এই বলে ডাক্তারবাবু
চলে গেলেন। 
দুপুরের দিকে রনো ঘরে ঢুকে এনার মাথার কাছে বসলো, ওর মুখের দিকে একদৃষ্টে
চেয়ে আছে। ফোনটা আসার পর থেকে ওর মনের ভিতরটা বিশ্বাস অবিশ্বাসের দোলাচলে
উথাল পাতাল করছে। কি সুন্দর নিষ্পাপ মুখটা এখন একটা বিষাদের ছায়া ঢেকে আছে।
ওর এনা ওর আছে তো? একটা প্রবল অপ্রাসঙ্গিক চিন্তা ভাবনা ওকে গ্রাস করছে,
হ্যাঁ হ্যাঁ এটাকে ও এখনো অপ্রাসঙ্গিক‌ই বলবে কারণ, কারণ ও বিশ্বাস করে না
এনা ওকে ঠকাতে পারে। না না না এটা হতে পারে না কিছুতেই পারেনা। এই মুখ এই
শরীর এই মন সবটা সবটা ওর অন্য কারোর না। এমন সময় ওর ফোনে বলা কথাটা মনে পড়লো
কে যেন হিস হিস করে ওর কানের কাছে বলছে 
…..”ফান… ফান… এনজয়… এনজয়
…হা হা হা হা”
আবার সেই বিকট হাসি শুনতে পেল। হাত দিয়ে কানদুটো চেপে ধরে অস্থির হয়ে এনার
বুকে মুখ গুঁজে কাঁদতে লাগলো। 
এনা আসতে আসতে চোখ মেলে তাকালো খুব ক্ষীণ গলায় ডেকে উঠলো, “রনো…………”
……….চলবে

আরো পড়ুন, বড়দের গল্প – পারমিতার প্রেমকথা
Share This Article
Leave a comment

Adblock Detected!

Our website is made possible by displaying online advertisements to our visitors. Please consider supporting us by whitelisting our website.