Bangla Hasir Golpo – ইকনমি জামাই – Comedy Story
নম করে দিতে হয়েছিল। প্রথম তালিকার হাজারজন নিমন্ত্রিত থেকে দাঁড়িয়েছিল
পাঁচশ-তে। সরকারি নির্দেশে শেষের শূন্যটা বাদ গিয়ে ঠেকেছিল পঞ্চাশে। মেয়ের
যাওয়া আর পঞ্চাশের শোক সামলাতে স্ত্রী রমলা পাক্কা একমাস বিছানায় শয্যাশায়ী
ছিল। ব্যবসাদার মানুষ পলাশের অবশ্য এতে কোন অসুবিধে হয় নি।
গিন্নির ইচ্ছেতে ভেবেছিলেন জামাইষষ্ঠীতে মেয়েজামাইয়ের সঙ্গে পাড়া প্রতিবেশী আর
স্থানীয় আত্মীয় মিলে কয়েকজনকে বলবেন কিন্তু লকডাউনের চক্করে সেটাও ভেস্তে গেল।
অবশ্য ষষ্ঠী করতে মেয়ে-জামাই দিন দশেক আগেই এসে পড়েছে। বাড়িতে তুতো ভাইবোনেরা
আছে, ওরা নতুন জ্যাম্বোকে নিয়ে মেতে আছে। যদিও মেয়ে-জামাই ওয়ার্ক ফ্রম হোমের
জন্য আলাদা আলাদা ঘরে ওদের অফিস বাসর সাজিয়েছে। পাড়ার কয়েকজন কৌতুহলী মাসিমা
দেখতে এসেছেন নতুন জামাই।
Bangla Sera Hasir Golpo
মিষ্টান্নের স্বাদ নিতে নিতে একজন আর একজনকে বললেন-“আমাদের অনুমা যেমন ধবধবে
ফর্সা তেমনটি নয় জামাই।”
লেখাপড়ায় তেমন স্বভাবে, ব্যবহারে।” এমন সময় অনু ওর ঘর থেকে বেরিয়ে আসতেই
সবচেয়ে বয়স্কা যিনি চমকে উঠলেন-” করসস কী, এই সবে বিয়া হইসে আর কপালে সিন্দুর
নাই, হাতে শাঁখা নাই, পরণে এট্টুস প্যান্ট।” অনুর মুখের হাসি মিলিয়ে
যায়-“হোয়াট দ্য হেল”-বলে আবার নিজের ঘরে ঢুকে যায়। এমন সুগভীর আলোচনার মধ্যে
সুইগির ডেলিভারি বয় এসে হাজির হয়-“ম্যাডাম জিনিসটা নেবেন।”
বাড়াতেই
ওসব খায় না, ও চাইনিজ আর ইটালিয়ান খাবার পছন্দ করে।” পল এতক্ষণে বেরিয়ে এসে ওর
প্লেটটা হস্তগত করে-“হাউ নাইশ, ইয়ামি”-বলে নিজের ঘরে ঢুকে যায়। মাসিমাদের দলের
বয়স্কা-“কনক কী নাম কইল্যা তুমার জামাইয়ের নাম পল, অয়ে খ্রীষ্ট নাহি, অরে আমার
কপাল।” কনক জোরে জোরে মাথা নাড়ে-“না গো বিনুদি, জামাইয়ের নাম পুলকেশ, ডাক নাম
পল।” বিনুদি হাঁপ ছেড়ে-“ও তাই বল, আমি তো ভাবলাম আমাদের অনু একজনা খ্রীষ্টের
সঙ্গে ভাব ভালোবাসা করসে, শুইন্যা বাঁশলুম, আইজকাল কত কী যে হইতেসে কিসুর তল
পাই না।” অনু এক ফাঁকে
ঐ একটা ডিম খেয়ে সকাল থেকে থাকবি, তোর খিদে পাবে না?”
Hasir Golpo Bengali
ডায়েট এইডা কী অনু,মোদের হরলিক্সের মতো?” অনু মায়ের দিকে তাকিয়ে-“মা তুমি বিনু
মাসিকে বোঝাও, আমি ফোন কলে আছি।” অনুর মা কনক কুল রাখে না মান রাখে,
বাড়ির কর্তা পলাশবাবু বাজার থেকে। মনে খুশীর আমেজে গলায় টপ্পা গান। উপস্থিত
সবার দিকে তাকিয়ে-“তা দিদিরা জল মিষ্টি খেয়েছেন তো?”
পলাশবাবু জোরের সঙ্গে-“ভাল বলে ভাল, আলবাৎ ভাল, একেবারে ইকনমি জামাই। ইলিশ,
গলদা চিংড়ির ঝামেলা নেই, চাউ-পাস্তা দিয়েই সারাদিনটা চলে যায়, অন্য কিছু মুখেই
তোলে না।” সকলে চোখ গোল গোল করে-“এবার উঠি আমরা।” ওদের যাত্রাপথের দিকে তাকিয়ে
পলাশবাবু-“কই গিন্নি কোথায় গেলে? জ্যান্ত রুইমাছ নিয়ে এলাম, বড়ি-আলু দিয়ে
রাঁধো দেখি আমাদের মাছের ঝোল।”