বসন্ত এসে গেছে – Bangla Premer Golpo – Premer Golpo
বসন্ত এসে গেছে
“হোলি হ্যায়” – সকাল থেকে আজ চারিদিকে রঙের খেলা। প্রকৃতির রঙের সঙ্গে মানুষ ও
যেন আজ মেতেছে এই খেলায়। আকাশে বাতাসে আজ প্রেমের ছোঁয়া। আর সেই ছোঁয়া
লেগেছে আজ বহ্নির মনেও। মনটা তাই আজ সব বাধা অতিক্রম করে উড়ে যাচ্ছে
দূর-দিগন্তে। আজ কলেজ ছুটি। সব বন্ধু-বান্ধবরা গতকাল থেকেই মেতে উঠেছে আজকের
বসন্ত উৎসবের আয়োজনে।বহ্নি বন্ধুদের সঙ্গে সব কিছুতে পরম উৎসাহে অংশগ্রহণ করে
সবসময়। কিন্তু এই বসন্ত উৎসব এলেই সে খুব মনমরা হয়ে পড়ে। এ কথা কাউকে বলার
নয়।
যেন আজ মেতেছে এই খেলায়। আকাশে বাতাসে আজ প্রেমের ছোঁয়া। আর সেই ছোঁয়া
লেগেছে আজ বহ্নির মনেও। মনটা তাই আজ সব বাধা অতিক্রম করে উড়ে যাচ্ছে
দূর-দিগন্তে। আজ কলেজ ছুটি। সব বন্ধু-বান্ধবরা গতকাল থেকেই মেতে উঠেছে আজকের
বসন্ত উৎসবের আয়োজনে।বহ্নি বন্ধুদের সঙ্গে সব কিছুতে পরম উৎসাহে অংশগ্রহণ করে
সবসময়। কিন্তু এই বসন্ত উৎসব এলেই সে খুব মনমরা হয়ে পড়ে। এ কথা কাউকে বলার
নয়।
ছোটবেলা থেকেই পরিবারের সঙ্গে খুব মজা করে বসন্ত উৎসব উদযাপন করত বহ্নি। দাদু
বলতেন – “নতুন জামা পরে বসন্তকে বরণ করতে হয়। এ সাধারণ ঋতু নয়। বসন্ত
হল ঋতুরাজ। দেখিস না, সমগ্র ভুবন কেমন নতুন রঙে সাজে এই ঋতুতে।এই রঙ মানুষের
মনকেও ছুঁয়ে যায় অনন্য ভাবে।তাই তো কবি বলেছেন – “ওরে গৃহবাসী, খোল দ্বার
খোল”। মনের দ্বার খুলে সাদরে আহ্বান করতে হয় দোলোৎসবকে। এই উৎসবের
আনন্দের রঙ মনকে ও ছুঁয়ে যায় বার বার, তাকে রাঙিয়ে তোলে অনন্য
অনুভূতিতে। দিদুন, তুই একটু বড় হলে বুঝবি বসন্ত কেমন এসে তার আগমনের জানান
দেয় স্বমহিমায়।”
বলতেন – “নতুন জামা পরে বসন্তকে বরণ করতে হয়। এ সাধারণ ঋতু নয়। বসন্ত
হল ঋতুরাজ। দেখিস না, সমগ্র ভুবন কেমন নতুন রঙে সাজে এই ঋতুতে।এই রঙ মানুষের
মনকেও ছুঁয়ে যায় অনন্য ভাবে।তাই তো কবি বলেছেন – “ওরে গৃহবাসী, খোল দ্বার
খোল”। মনের দ্বার খুলে সাদরে আহ্বান করতে হয় দোলোৎসবকে। এই উৎসবের
আনন্দের রঙ মনকে ও ছুঁয়ে যায় বার বার, তাকে রাঙিয়ে তোলে অনন্য
অনুভূতিতে। দিদুন, তুই একটু বড় হলে বুঝবি বসন্ত কেমন এসে তার আগমনের জানান
দেয় স্বমহিমায়।”
Romantic Bangla Premer Golpo
তখন বহ্নির দশ বছর বয়স, দোলের দিন রঙ খেলতে খেলতেই ওর দাদু অসুস্থ হয়ে পড়েন।
সঙ্গে সঙ্গে দাদুকে নিয়ে যেতে হয় হাসপাতালে। কোন ডাক্তার পাওয়া যাচ্ছিল না
সেদিন। তাদের ছেড়ে দাদু চলে যায় ওইদিন। বোধহয় ঋতুরাজ বসন্ত দাদুকে সাদরে
স্থান দেয় তাঁর রাজত্বে। শেষ যাত্রায়ও তখন দাদুর গালে সেই লাল রঙ।
তারপর থেকে এই দিনটা আর কখনো বহ্নি উদযাপন করতে পারেনা। খুব কান্না পেত তার
প্রতিবার এই দিনে। দাদু এখনো তার হৃদয়ের অনেকটা অধিকার করে আছে।
সঙ্গে সঙ্গে দাদুকে নিয়ে যেতে হয় হাসপাতালে। কোন ডাক্তার পাওয়া যাচ্ছিল না
সেদিন। তাদের ছেড়ে দাদু চলে যায় ওইদিন। বোধহয় ঋতুরাজ বসন্ত দাদুকে সাদরে
স্থান দেয় তাঁর রাজত্বে। শেষ যাত্রায়ও তখন দাদুর গালে সেই লাল রঙ।
তারপর থেকে এই দিনটা আর কখনো বহ্নি উদযাপন করতে পারেনা। খুব কান্না পেত তার
প্রতিবার এই দিনে। দাদু এখনো তার হৃদয়ের অনেকটা অধিকার করে আছে।
আজ ও তাই হস্টেল থেকে বেড়িয়ে এসে বসে আছে নদীর ধারে। আজ সবাই রঙ খেলতে
ব্যস্ত। তার অনুপস্থিতি কেউ খেয়াল করবে না। বহ্নিও একটু সময় পাবে নিজের মনে
থাকার।
ব্যস্ত। তার অনুপস্থিতি কেউ খেয়াল করবে না। বহ্নিও একটু সময় পাবে নিজের মনে
থাকার।
“না, নীল দেখতে পায় নি ওকে, এই অনেক” – ভাবে বহ্নি। “না হলে এক্ষুনি খুব সিন
ক্রিয়েট করতো।”
ক্রিয়েট করতো।”
একা বসে শান্ত নদীর টলমল জলে গাছের ছায়া দেখে মুগ্ধ হচ্ছিল বহ্নি। হঠাৎ কে
যেন এসে পেছন থেকে চোখ চেপে ধরে বহ্নির।
যেন এসে পেছন থেকে চোখ চেপে ধরে বহ্নির।
“কে এখানে? তাড়াতাড়ি বল, না হলে আমি চিৎকার করবো কিন্তু” – বলে
চেঁচানোর ইঙ্গিত করে বহ্নি।
চেঁচানোর ইঙ্গিত করে বহ্নি।
চোখ খুলে দিলে দেখে সামনে নীল। “কী রে, তুই দোল খেলতে গেলি না?” – রেগে প্রশ্ন
করে বহ্নি।
করে বহ্নি।
“আমার মন ভাল না, তাই খেলবো না” -উত্তর দেয় নীল।
“কেন?” – প্রশ্ন করে বহ্নি।
“যদি বলি, তুই খেলছিস না বলে” -অকপটে স্বীকার করে নীল।
“বাকিরা খেলছে তো, তাদের সঙ্গে খেল গে।আমায় একটু একা থাকতে দে আজ” -বলে বহ্নি।
“খেলুক, আমি তোর সঙ্গেই খেলবো” – দুঃখ-দুঃখ মুখে বলে নীল।
“আমি দোল খেলি না, আজ এগারো বছর”
“কেন? ভয় পাস?” – বলে হা হা করে হেসেওঠে নীল।
“জানিস বহ্নি, বসন্ত হল ঋতুরাজ। তুই যদি সাদরে আমন্ত্রণ না করিস, তাহলে বসন্ত
কোনদিন ও আসবে না তোর জীবনে, তোর মনে। বুঝলি কিছু?”
কোনদিন ও আসবে না তোর জীবনে, তোর মনে। বুঝলি কিছু?”
Bangla Love Story
বহ্নি অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে থাকে নীলের দিকে – “কী বললি তুই? জানিস এই কথাগুলো
আরেকজন বলতো আমায়,অনেক বছর আগে। আজ ও তার কথা আমার কানে প্রতিধ্বনিত হয়। আমি
সব স্পষ্ট শুনতে পাই যেন” – চোখের কোণেজল মুছতে মুছতে বলে বহ্নি।
আরেকজন বলতো আমায়,অনেক বছর আগে। আজ ও তার কথা আমার কানে প্রতিধ্বনিত হয়। আমি
সব স্পষ্ট শুনতে পাই যেন” – চোখের কোণেজল মুছতে মুছতে বলে বহ্নি।
“সে কী রে? তুই ছোটবেলা থেকেই প্রেম করতিস নাকি?” – বলে দৌড়ে পালাতে যায় নীল।
বহ্নি নীলের হাতটা শক্ত করে ধরে এবার – “ঠিক ধরেছিস একদম। আমার ফাস্ট এণ্ড
ফোরমোস্ট লাভার ছিল আমারদাদু। এই পৃথিবীকে নতুন করে দেখতে শিখিয়েছে আমাকে
দাদু।” – বলে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বহ্নি।
ফোরমোস্ট লাভার ছিল আমারদাদু। এই পৃথিবীকে নতুন করে দেখতে শিখিয়েছে আমাকে
দাদু।” – বলে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বহ্নি।
“জানি, তোর কাছে দাদুর গল্প অনেক শুনেছি তো। কিন্তু তার মৃত্যুর দিনে তার দিদুন
এরকম গোমড়া মুখে বসে থাকলে কী উনি খুব খুশী হবেন?”
“জানি না। কিন্তু আমার এইদিনে কিছু ভাল লাগে না। দাদুর সঙ্গে আমার জীবনটাও যেন
মলীন হয়ে গেছে রে” -বলে নীলের কাঁধে মাথা রাখে বহ্নি।
মলীন হয়ে গেছে রে” -বলে নীলের কাঁধে মাথা রাখে বহ্নি।
“আজ চল না আমরা দুজনে একে অপরকে রঙ লাগিয়ে বসন্তকে আহ্বান জানাই নিজেদের মত
করে, যদি তোর আপত্তি না থাকে।”
করে, যদি তোর আপত্তি না থাকে।”
নীলের হাতের রঙের প্যাকেটটা এতক্ষণ চোখেই পড়েনি বহ্নির। এবার সেটা হাতে নিয়ে
নীলের গালে লাল আবীর লাগিয়ে দেয় সে। নীল ও হেসে ওর গালে লাগিয়ে দেয় লাল রঙ।
সেই লাল রঙ রাঙিয়ে তোলে শুধু দুটো হৃদয়কে নয়, তার আভাস ছড়িয়ে পড়ে
প্রকৃতিতেও। প্রকৃতিও যেন তার সন্নাসীর বেশ ত্যাগ করে মেতে ওঠে
অন্য রঙের খেলায়। দূর থেকে ভেসে আসে গান -“তোমার অশোকে কিংশুকে, অলক্ষ
রঙ লাগল আমার অকারণের সুখে”। আকাশে সাদা মেঘের ফাঁকে আবার সূর্য হেসে উঠে
বহ্নিকে মনে করিয়ে দেয় ছোটবেলার দাদুর সেই অম্লান হাসি। দাদু সত্যিই আজ খুব
খুশী হবে। বহ্নি জানে নীলকে দাদুর খুব পছন্দ হতো – শুধু দাদুর মত নীল ও প্রাণ
খুলে কথা বলতে পারে, বা হাসতে পারে বলে না, এই এগারো বছর পরে তার দিদুনের
জীবনের রঙ ও বসন্ত আবার ফিরিয়ে আনতে পেরেছে বলে। দাদুর কথামত সত্যিই
বহ্নির কানের কাছে বসন্তের বাতাস এসে চুপি চুপি বলে গেল আজ-“বসন্ত এসে গেছে”।
নীলের গালে লাল আবীর লাগিয়ে দেয় সে। নীল ও হেসে ওর গালে লাগিয়ে দেয় লাল রঙ।
সেই লাল রঙ রাঙিয়ে তোলে শুধু দুটো হৃদয়কে নয়, তার আভাস ছড়িয়ে পড়ে
প্রকৃতিতেও। প্রকৃতিও যেন তার সন্নাসীর বেশ ত্যাগ করে মেতে ওঠে
অন্য রঙের খেলায়। দূর থেকে ভেসে আসে গান -“তোমার অশোকে কিংশুকে, অলক্ষ
রঙ লাগল আমার অকারণের সুখে”। আকাশে সাদা মেঘের ফাঁকে আবার সূর্য হেসে উঠে
বহ্নিকে মনে করিয়ে দেয় ছোটবেলার দাদুর সেই অম্লান হাসি। দাদু সত্যিই আজ খুব
খুশী হবে। বহ্নি জানে নীলকে দাদুর খুব পছন্দ হতো – শুধু দাদুর মত নীল ও প্রাণ
খুলে কথা বলতে পারে, বা হাসতে পারে বলে না, এই এগারো বছর পরে তার দিদুনের
জীবনের রঙ ও বসন্ত আবার ফিরিয়ে আনতে পেরেছে বলে। দাদুর কথামত সত্যিই
বহ্নির কানের কাছে বসন্তের বাতাস এসে চুপি চুপি বলে গেল আজ-“বসন্ত এসে গেছে”।