রোমান্টিক ভালোবাসার গল্প – Romantic Valobashar Golpo

Bongconnection Original Published
4 Min Read


 রোমান্টিক ভালোবাসার গল্প – Romantic Valobashar Golpo

রোমান্টিক ভালোবাসার গল্প - Romantic Valobashar Golpo
Loading...


ফিরে পাওয়া
– সুবর্ণা মান্না
বৃষ্টিটা সবে পড়তে শুরু করেছে,দূরের রাস্তার পাশে কৃষ্ণচূড়া গাছটা এখনো ঝাপসা
হয়নি।নীলাঞ্জনা ব্যাগ হাতে বেড়িয়ে পড়লো অফিস থেকে,যেমন করে হোক তাকে
তাড়াতাড়িই  বাড়ি পৌঁছাতে হবে।তার তেরো বছরের ছেলেটা এতক্ষনে বাড়ি পৌঁছে
টিউশন পড়তে চলে গেছে.., নীলাঞ্জনা একবার আকাশের দিকে তাকালো, কালো মেঘের ভার
আকাশটা আর নিতে পারছে না… অনেকটা তার মতোই…


সঞ্জীব কেমন পাল্টে গেছে….পনেরো বছরের বিবাহিত জীবনে হটাৎ কালো মেঘের
ভার…রোমান্টিক লোকটি  আজকাল বেশ চুপচাপ হয়েগেছে। সারাদিন কাজে ডুবে…অবসর
সময়টাও সোশ্যাল মিডিয়ায় জমা পড়েছে। হাসিঠাট্টা উদাও… ।যন্ত্রের সংসারে
নীলাঞ্জনাও যন্ত্র হয়েগেছে। কলেজে প্রেমে পড়েছিল সঞ্জীবের স্বতঃস্ফূর্ত মন
দেখেই….।সারাক্ষন কিছু না কিছু মজা করতো..। প্রচন্ড বাজ পড়ার শব্দে নীলাঞ্জনা
সম্বিত ফিরে পেলো,দেখে…ফুটপাতের ধারে ময়লার স্তুপে প্রায় পা দিয়ে ফেলেছে বেশ
সামলে নিয়ে আবার ছুটছে..,আর একটু সময় বাকি বাস বেরিয়ে যেতে…

রোমান্টিক ভালোবাসার ছোট গল্প

সঞ্জীব আজ অফিস থেকে তাড়াতাড়ি বেরিয়েছে।অন্যান্য দিনে অফিস এর কাজ শেষ করে ওর
খুব দেরি হয় বাড়ী পৌঁছাতে। নীলাঞ্জনা খুব রাগারাগি করে, মুখ ভার করে থাকে,
কিন্তু তাকে বোঝায় কি করে যে,প্রমোশন হলে দায়িত্ব ও বাড়ে…।কথা না বাড়িয়ে তাই
সোশ্যাল মিডিয়ায় মুখ গুজে পড়ে থাকে,আর আড়চোখে দেখে নীলাঞ্জনার প্রতিক্রিয়া….. ।
কালো মেঘ আরো ঘনিয়ে এসেছে… বৃষ্টি হালকা পড়ছে,এই সময় সঞ্জীবের হাঁটতে খুব ভালো
লাগে….তবে প্যাচপ্যাচে কাদা খুব একটা পছন্দ নয়।,পাশদিয়ে কাঁচ তোলা গাড়ী গুলো
ছুটে চলেছে কিছুটা জমে থাকা ময়লা জল ছিটিয়ে…একটু এগিয়ে ফুটপাতের ওপর গজিয়ে ওঠা
ফুলের দোকান থেকে গ্ল‍্যাডিওলাস আর গোলাপ দিয়ে সাজানো ফুলের তোড়া নিয়ে নিল
সঞ্জীব।,মধ্যবিত্ত সংসারে বিবাহ বার্ষিকীতে এর থেকে ভালো উপহার আর হয় না,আর
তাছাড়া নীলাঞ্জনার ফুল পছন্দ…আগে কয়েক বছর সঞ্জীব এইসব দিনে সোশ্যাল মিডিয়ায়
বেশ পোস্ট দিত, নীলাঞ্জনাকে খুশি করার আশায়, কিন্তু ভাগ্যে জুটত
উল্টোটাই..।বৃষ্টিটা বাড়ছে সঙ্গে হাওয়া… আর একটু এগিয়েই বাস পাবে..

একটুর জন্য বাসটা মিস করলো নীলাঞ্জনা। বৃষ্টি না হলে এটা ঠিক পেয়ে যেতো।হওয়ার
সাথে জলের ঝাপটা ছাতা সামলাতে পারছে না।আজ বাড়ি গিয়ে ভালোমন্দ রান্না করবে
ভেবেছিল,বিবাহবার্ষিকীতে প্রতিবছর সে এমনটাই করে,সঞ্জীব খুব খেতে ভালোবাসে
কিনা…।তবে এইসব বিশেষ দিন নিয়ে সঞ্জীবের মাথা ব্যাথা নেই,রোজকার মতোই মুঠোফোনে
নিজেকে সোপে দেয়।নীলাঞ্জনার সোশ্যাল মিডিয়ায় একেবারেই অনীহা।

সেরা ভালোবাসার গল্প

ব্যর্থ চেষ্টায়  ছাতাটা মাথার ওপর আরেকবার টেনে নিল, হয়তো ওর আর সঞ্জীবের
সম্পর্কের মতোই…। ফুটপাথে ময়লা জলের স্রোত নীলাঞ্জনার পা ছুঁয়ে বেরিয়ে যাচ্ছে
,আর পাশ দিয়ে ‘নো রিফিউজাল’ ট্যাক্সি গুলো রিফিউজ করতে করতে….।

সঞ্জীব প্রায় বাসস্ট্যান্ড এর কাছাকাছি ,এইপথ দিয়েই নীলাঞ্জনা যায়, এতক্ষনে
হয়তো বাড়ি পৌঁছে গেছে, এই ভেবে সঞ্জীব একটু এগিয়ে গেলো..মাঝে মাঝে বাজ পড়ছে বেশ
জোরে জোরে, সঞ্জীবের মনে পড়লো নীলাঞ্জনা বেশ ভয় পায় বজ্রপাতে। ছাতা সঞ্জীব
নেয়না .. তাই সামলানোর কোনো ঝামেলা নেই, একটু এগিয়ে যেতেই সঞ্জীব দেখলো সেই
চেনা শাড়ি ঝলক, বজ্রপাতের ভয়ে গাছ এড়িয়ে ফুটপাত থেকে নেমে রাস্তার ধার ঘেঁষে
ছাতা সামলে কোনোরকমে এগিয়ে যাচ্ছে….বিদ্যুৎ এর ঝলকের মতো এক চিলতে হাসি খেলে
গেল সঞ্জীবের মুখে….দৌড়ে এগিয়ে গেলো চমকে দেবে বলে,

নীলাঞ্জনার দাঁড়াবার সময় নেই,রাস্তার ধার ঘেঁষে প্রায় ছুটেই চলেছে, তীব্র জলের
স্রোত, তার পা ছুঁয়ে,। সামনে টা বড় ঝাপসা,ছাতার আড়ালে বাকি কিছু টের পাওয়া
যাচ্ছে না। হটাৎ পেছন থেকে সজোরে কেউ টানলো তাকে… বুঝে ওঠার আগেই ছাতা হাত ছেড়ে
মাঝরাস্তায়…আর জুতো জোড়া জলের তোড়ে সামনের খোলা ম্যানহোল এ…।

 নীলাঞ্জনা এখনো সঞ্জীবকে জড়িয়ে আছে ভয়ে, ঠিক সময়ে সঞ্জীব না ধরলে
নীলাঞ্জনা খোলা ম্যানহোল এ পড়ত ..মুহূর্তে সব শেষ হয়ে যেত মান ,অভিমান
,ভালোবাসা…।সঞ্জীবের বাহু বন্ধনে বৃষ্টির ঝাপটা ,হওয়ার দাপট,বজ্রপাত আজ সব ভালো
লাগছে নীলাঞ্জনার ……।

প্রিয় গল্প পড়তে নিয়মিত ভিজিট করুন আমাদের ওয়েবসাইটে। 
ভালো থাকুন, ভালোবাসায় থাকুন। ..
Thank You, Visit Again…

Share This Article
Leave a comment

Adblock Detected!

Our website is made possible by displaying online advertisements to our visitors. Please consider supporting us by whitelisting our website.