ঝড়ের আগে আকাশটা যেমন থমথমে হয়ে থাকে,মুখে সেই ভাবটা নিয়ে কলিং বেল বাজালো নীলাঞ্জন। রিচা এসে দরজা খুলে একগাল হেসে বলল,”তুমি এসে গেছো!”,তারপর ওর হাত থেকে ব্যাগটা নিয়ে ঘরের দিকে পা বাড়ালো।নীলাঞ্জনের কপালের কাছে একটা শিরা দপদপ করছিল।সে ফেটে পড়লনা,শান্ত গলায় জিজ্ঞেস করল,”তোমার অসুবিধে হয়ে গেল নাতো আমার আগে এসে পড়াতে!” রিচা পিছন ফিরে আশ্চর্য ভাব নিয়ে ঠোঁট ফুলিয়ে বলল,”হ্যাঁ তো। তোমার কালকে আসার কথা।আজ চলে এলে।রান্না তো কিছুই করা নেই।আবার রাঁধতে হবে।”
‘বোকা সাজবে।বাহ।অভিনয় করবে নীলাঞ্জন চ্যাটার্জীর সাথে! বেশ করো।কিন্তু নীলাঞ্জন চ্যাটার্জী অভিনয়ে তোমার বাবা।তোমাকেও বুঝতে দেবেনা কিছু’, মনে মনে কথা গুলো বলে হেসে নিল নীলাঞ্জন। পৈশাচিক হাসি। যেন ফাঁসির হুকুম হয়ে গেছে।আসামী মঞ্চে।আর তোমার হাতের টানে তার জীবন – মরণের বিচার হবে। শেলির ঘর থেকে বেরোনোর সময় নীলাঞ্জন ঘায়েল বাঘের মতো ছিল,সেইমুহূর্তে রিচা যদি তার সামনে এসে পড়তো।তৎক্ষণাৎ প্রাণদণ্ড ধার্য হতো।কিন্তু ট্যাক্সিতে আসার সময় নীলাঞ্জন নিজেকে শান্ত করেছে।বোকার মতো কোনো কাজ করা তাকে মানায় না। রিচাকে সে কলের ইঁদুরের মতো ফাঁসাবে টোপ ফেলে।তারপর তড়পাতে দেখবে। ওই তড়পানো দেখে আগে কিছু মুহূর্তের সুখ নিতে চায় সে।তারপর রিচাকে যেখানে পাঠানোর সেখানেই পাঠানো হবে।অন্তিম যাত্রায়।উত্তেজনায় শিউরে উঠল নীলাঞ্জন, তারপর পরিচিত হাসিমুখে রিচাকে বলল,”এরকম বললে তো। আমি চলে যাচ্ছি তাহলে।” রিচা মুখ বেঁকিয়ে উত্তর দিল,”ঢং “
ঘরে ঢুকে জামাকাপড় পাল্টে ফ্রেস হয়ে নিল নীলাঞ্জন। বাথরুম থেকে হাত পা ধুয়ে এসে বিছানার উপর গা গড়িয়ে দিল।রিচা চা নিয়ে এলো। চায়ের কাপ টা একহাতে নিয়ে বিছানার পাশের টেবিলে উপর রেখে রিচাকে টেনে নিল। রিচা ওর বুকের উপর টাল সামলাতে না পেরে পড়ে গেল।মুখে প্রশস্ত হাসি এনে জিজ্ঞেস করল,”করছোটা কি!”। নীলাঞ্জন এক মুহূর্ত চুপ থেকে রিচার চোখ পড়তে লাগল।রিচার নরম হাতের স্পর্শে তখন ওর বুক মাখামাখি। একবারের জন্য চোখ বন্ধ করে নীলাঞ্জন ভেবে নিতে চাইল,”সব ভুল।সব মিথ্যে। এই পৃথিবীতে তার স্ত্রী ই সবথেকে সুন্দরী। প্রয়োজন নেই কোনো শেলি বা সুজানের।আলতো করে রিচার কোমর জড়িয়ে ওর ঘাড়ের কাছে মুখ নিয়ে গেল সে। তারপর একহাতে চুলে হাত বুলিয়ে কানে কানে বলল,”কিচ্ছুনা।এই বউকে একটু আদর করছি।”
“বাব্বা হঠাৎ বউ এর প্রতি এত ভালোবাসা! থাক কোনো দরকার নেই।”,রিচা টিপ্পনী কাটল।নীলাঞ্জন বাঁধন আলগা করলে রিচা সরে দাঁড়ালো।অন্যসময় হলে নীলাঞ্জন এই কথাটাই মজা পেত। ঘুরিয়ে অন্যকিছু বলতো।কিন্তু এখন এটাই শূলের মতো বিঁধল। এক মুহূর্তে মনটা আবার কুচ্ছিত হয়ে গেল। ‘ও এখন আমার ছোঁওয়াও ভালো লাগছেনা’,নিজেই নিজেকে বলল নীলাঞ্জন।উঁহু রূপের মায়ায় জড়িয়ে ক্ষমা করে দেওয়ার মতো বোকামী সে করবে না।স্বাভাবিক হওয়ার চেষ্টা করল।চায়ের কাপটা টেনে নিয়ে বলল,”হ্যাঁ এখন তো তাই বলবে। যাও রেঁধেবেড়ে ভালোমন্দ কিছু খাওয়াও তো আমাকে।খুব খিদে পেয়েছে।” রিচা গাল ফুলিয়ে বাচ্চাদের মতো মুখ করে চলে যেতে যেতে বলল,”বয়েই গেছে আমার তোমার আদর খেতে।”
কাপের চা শেষ করে নীলাঞ্জন বিছানায় এলিয়ে দিল নিজেকে।মাথা ঠান্ডা রাখতে হবে তাকে। রিচাকে সে যদি হাতেনাতে ধরতে চায়,তাহলে হঠকারিতায় কিছু করা ঠিক হবেনা।যে মেয়ে এতদিন ধরে তার সাথে অভিনয় করল আর তার মতো ছেলেও ধরতে পারলোনা,সে মেয়ে ভয়ংকর রকমের ধূর্ত। তাকে সহজ ভাবে ফাঁসানো যাবেনা।নীলাঞ্জন ছবি গুলো নিয়ে রিচাকে ক্রস করতেই পারে।সেক্ষেত্রে একটা প্রব্লেম হচ্ছে রিচা হয়ত অস্বীকার করবে। ছবিগুলো এডিট করা বলবে। আর নীলাঞ্জন জোর দিয়ে কিছু বলতেও পারবেনা।বরং রিচা কান্নাকাটি করে একটা সিন ক্রিয়েট করতে পারে।তখন নীলাঞ্জনের মেনে নেওয়া ছাড়া আর কোনো রাস্তা থাকবেনা।বরং সেই সুযোগে রিচা সজাগ ও হয়ে যাবে। সেটা সে চায় না। হরিণীকে শিকার করার সময় বাঘ কখনওই কয়েকশ গজ আগে থেকে জানান দেয় না। একদম ঘাড়ের কাছে আসার পরে ঝাঁপিয়ে পড়ে।
(২)
রাতে বিছানায় শুয়ে ছটফট করতে লাগলো নীলাঞ্জন। একই বিছানায় শুয়ে থাকা ওপাশের মানুষ টাকে এখন রীতিমত ভয় করছে ওর। নিজের স্ত্রী। হ্যাঁ নিজেরই! কিন্তু নীলাঞ্জন কে সবথেকে বেশি ভাবাচ্ছে ওই আননোন নাম্বার টা। কে মানুষ টা। কেনই বা এসব করছে! এসব খবরই বা কোত্থেকে পাচ্ছে।লাস্ট যে মেসেজ টা এলো একঘণ্টা আগে।সেটা অনেক বড়ো একটা জট ছাড়িয়ে দিয়েছে ওর।ওর অর্ধেক খাটনি কমিয়ে দিয়েছে।কিন্তু কেন মেসেজ টা পাঠালো এখনও বুঝতে পারছেনা নীলাঞ্জন। সেই ছবি গুলো পাঠানোর পর আর একটা মেসেজও আসেনি প্রথমে। কিন্তু ঘন্টাখানেক আগে যে মেসেজ টা এলো, সেটা দেখে প্রথমে মাথামুণ্ডু কিছুই বুঝতে পারেনি নীলাঞ্জন। মেসেজটা ছোট্ট ছিল।আর তাতে লেখা ছিল “অরূপ”। এটা থেকে কিছু বোঝার উপায় নেই।বেশ কিছুক্ষণ এটাওটা চিন্তা করতে করতে বিদ্যুৎ খেলে গেলো নীলাঞ্জনের মাথায়। রিচার কাছে গিয়ে অফিস ট্যুরের গল্প করতে গিয়ে নানান কথার মাঝে নীলাঞ্জন টোপ টা ফেলে দিলো,” আর বলোনা অরূপের সাথে দেখা হল।তোমাকে নিয়ে অনেক কথা বলছিল।”
রিচার চোখের শাণিত ধার নীলাঞ্জনের চোখ এড়ালো না।কয়েকমুহূর্তের। কিন্তু নীলাঞ্জনের শিরদাঁড়া দিয়ে হিমশীতল একটা স্রোত বয়ে গেল। রিচা অবশ্য পরমুহূর্তেই নিজেকে সামলে প্রশ্ন করল,”কে অরূপ!”
“অরূপ কে চেনোনা।ও তো বলল তোমার বন্ধু।আমার সাথে সেই বলেই পরিচয় করলো।”,নীলাঞ্জন সহধর্মিণীর চোখের উপর চোখ রাখল।
“আমি চিনি! মনে পড়ছেনাতো।”
“কিন্তু ও যে বলল ও তোমার বন্ধু হয়।”
“দাঁড়াও দাঁড়াও।স্কুলে পড়তে অরূপ বলে আমার এক বন্ধু ছিল। কিন্তু তার সাথে তো দীর্ঘদিন যোগাযোগ নেই।হঠাৎ আমার গল্প।”
“সে ই হবে হয়ত। এমনি ই গল্প করছিল।তেমন কিছু না।”
“ও”,রিচা এড়িয়ে যেতে চাইল।একগ্লাস গরম দুধ এনে নীলাঞ্জন কে দিল।তারপর কথা ঘুরিয়ে বলল,”এই বেডকভার টা পুরোনো হয়ে গেছে। এবার একটা নতুন কিনে আনতে হবে।”
“হ্যাঁ যাও না।কালকেই।”,নীলাঞ্জন ও কথা ঘোরাতে চাইল।
“তুমি যাবে! “,রিচা আড়চোখে প্রশ্ন করল।
“নাগো,আমার হবেনা।কিছু অফিশিয়াল কাজ পড়ে আছে।কালকেই করতে হবে।”
রিচার একটা ফোন আসতেই ও উঠে বারান্দাই চলে গেলো।অন্যসময় হলে নীলাঞ্জন অত কেয়ার করত না। একবার ওর সহকর্মী ওকে তার ব্যক্তিগত সমস্যার কথা বলতে গিয়ে বলেছিল,”জানিস আমার বউকে মাঝেমাঝেই কে একটা ফোন করে।বউ ফোন পেলেই উঠে চলে যায়।”
নীলাঞ্জন হেসে উত্তর দিয়েছিল,”ছেলে হয়ে মেয়েদের মতো সন্দেহ বাতিক হয়ে উঠলে চলবে! চিল ম্যান। স্বামী স্ত্রীর মধ্যেও একটা প্রাইভেট স্পেস থাকা উচিৎ। স্পেস না থাকলে কোনো সম্পর্কই টেকানো সম্ভব নয়।” আজ নীলাঞ্জন হাসতে পারলো না। হঠাৎ করেই ওর হাসি উড়ে গেল। জীবনে যে কাজ করার কথা সে ভাবেনি,সেটাই করলো। কান পেতে বউ এর কথোপকথন শোনার চেষ্টা করল।প্রথম দিকের কথা খুব একটা শুনতে পেলোনা।কিন্তু একটা কথা কানে আসতেই ওর বুক শুকিয়ে গেল।ওর সহধর্মিণী ফোনের ওপাশে থাকা অজ্ঞাত পরিচয় মানুষ টিকে বলছিল,”আর বেশি দেরী করা ঠিক হবেনা।”
হাজারও চিন্তা মাথায় ঘুরলে কারোর ই ঘুম আসেনা। একদিনেই নীলাঞ্জনের সব ওলটপালট হয়ে গেছে। ওর বিশ্বাস।ওর কনফিডেন্স। জীবনের গতিবিধি। জীবনকে দেখার দৃষ্টিভঙ্গি। সব।পাশে শুয়ে থাকা অবলা মাথামোটা যে স্ত্রীর উপর তার এতক্ষণ ভয়ংকর রাগ হচ্ছিল এখন সেটাই ভয়ে পরিণত হয়ে গেছে । কিসের ভয়! নীলাঞ্জন জানেনা।কিন্তু একটা ভয় হচ্ছে ওর।আসন্ন কোনো বিপদের অশনিসংকেত কি! হতেই পারে।তবে একটা জিনিস সে বুঝতে পেরেছে তার স্ত্রী রিচা অভিনয়ে তার থেকে অনেকটাই এগিয়ে। অরূপের সাথে ওর কতদিনের সম্পর্ক আছে জানা নেই,তবে তার হাওয়াটুকুও ঘুণাক্ষরে টের পায়নি সে।এত দিন।কি ভয়ংকর! ‘আর বেশিদিন দেরী নয়’ এই কথাটা বলার কারন কি? রিচা কি পালিয়ে যাওয়ার মতলব এঁটেছে। কথাটা ভাবতেই বুকের মধ্যে দপ করে একটা আগুন জ্বলে উঠল।কি ভেবেছো রিচা! নীলাঞ্জন চ্যাটার্জীর পিঠে ছুরি মেরে পালিয়ে যাবে।অত সহজ নয়।আমার জিনিস টাকে অন্যকেউ নিয়ে পালাতে পারবেনা। ভুল মানুষের সাথে গদ্দারী করে ফেলেছো।তোমাকে সরে যেতে হবে রিচা।আর ওই অরূপ কেও। তোমরা নীলাঞ্জন চ্যাটার্জীর ইগোকে হার্ট করেছো।তোমাদের ছেড়ে দেওয়া তো যায়না।
নীলাঞ্জন পাশ ফিরে শুল।রিচার চুলে হাত বোলাতে লাগল।রিচা ঘুমায় নি।চোখ বন্ধ করে ছিল।চোখ খুলে নীলাঞ্জনের দিকে তাকালো। হাসলো।নীলাঞ্জন রিচার মাথায় হাত বোলাতে বোলাতে একদৃষ্টে তাকিয়ে ছিল।অজান্তেই চোখটা ভিজে উঠল।কেন! সে জানেনা।হয়ত এইভাবে শেষ শুয়ে থাকা।তার প্রিয়তমা স্ত্রীর সাথে শেষবারের মতো এক বিছানায়। অনেক সুন্দর মুহূর্ত কাটিয়েছি তোমার সাথে রিচা। নীলাঞ্জন দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলল,”অনেকদিন বাবার কাছে যাওনি।এই সংসারের হাল টানতে এতই ব্যস্ত হয়ে পড়েছো,নিজের জন্য সময় ই পাওনা।কদিনের জন্য ঘুরে এসোনা।”
রিচার চোখে বিদ্যুৎ খেলে গেল।কিন্তু নিজের চোখে স্নিগ্ধতা ফিরিয়ে এনে নীলাঞ্জনের হাতের উপর হাত রাখল,”আমিও ভাবছিলাম তোমাকে বলবো।তুমিই বলে দিলে।তুমি সত্যিই খুব ভালো।কিন্তু তোমার অসুবিধা হবেনাতো!”
“আরে না না।চিন্তা করোনা।আমি একা মানুষ ঠিক খাওয়াদাওয়া সামলে নেবো। তুমি ঘুরে এসো।”,নীলাঞ্জন উত্তর দিল।
“বেশ।তাহলে পরশু যাচ্ছি।বাবাকে কাল ই ফোন করে দেবো।”,রিচা উঠে নীলাঞ্জনের গালে একটা চুমু খেলো।নীলাঞ্জন ছাড়তে পারলোনা। রিচাকে টেনে ওর ঠোঁটে ঠোঁট রাখল।একবার শেষবারের মতো এই স্বাদ টা নিতে চায় সে।প্রাণভরে। নীলাঞ্জন মনে মনে ভাবল,নারী চরিত্র সত্যিই অনেক জটিল।
বোঝার সাধ্যি নেই। এই যে এই মুহূর্তে এত কাছে আছে,বোঝার উপায় আছে এতবড়ো বিশ্বাসঘাতক ও হতে পারে এরা। রিচার ফিরে আসার আগেই একটা প্ল্যান করে ওকে সরিয়ে ফেলতে হবে। তারপর অরূপ। আর এই যে আননোন নাম্বার। এই মানুষটা কে! একেও খুঁজে বার করতে হবে। নীলাঞ্জন অনেক মেসেজ করেছে।একটা রিপ্লাই ও পায়নি।কেমন যেন রহস্যময়। কিন্তু সে যাইহোক। ওর জন্যই আজ নীলাঞ্জন এত ভয়ংকর একজন বিশ্বাসঘাতক কে ধরতে পারলো।চিন্তাগুলো জট পাকিয়ে যাচ্ছিল।নীলাঞ্জন সেগুলোকে ছুঁড়ে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করল।একমনে রিচাকে নিজের করে নিতে চাইল শেষবারের মতো।
(৩)
পাঁচদিন পর..
রিচা মেঝের উপর হাত পা ছড়িয়ে বসে আছে।রক্তে ভেসে যাচ্ছে চারদিক। পুলিশ এসে পড়েছে এর মধ্যে। অনেক উৎসুক লোক জমা হয়েছে।সবাই ভয়ে ভয়ে দেখছে। এগিয়ে যাওয়ার সাহস কেউ পাচ্ছেনা কিন্তু দেখার ইচ্ছেটাও ছাড়তে পারছেনা কেউ। খুন তো রোজ রোজ দেখা যায়না। কিছু কনস্টেবল তাদের ঠেকিয়ে রেখেছে। ঘর তছনছ হয়ে গেছে।এদিকওদিক সবকিছু ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। ম্যাসাকার পুরো। একপাশে বিছানার উপর রিচার ব্যাগ। বাপের বাড়ি থেকে ফেরার পর যেমন অবস্থায় ছিল তেমন অবস্থাতেই রয়েছে।সবার দৃষ্টি চুরি করে রক্তের সমুদ্রের মাঝে শুয়ে আছে নীলাঞ্জন।তার রক্তশূন্য মুখ দেখে যেকেউ বলে দিতে পারে,ও দেহে প্রাণ নেই।