কলমে – শঙ্খ চক্রবর্তী
সুধীর বাবুর স্ত্রী আর এক ছেলে নিয়ে সংসার ।
বয়স আনুমানিক পঞ্চাশের মতো। সুধীর বাবুর পুরোনো পরিবার। এখন আর উমশুম করা নরম গরম আনন্দটা বিবাহিত জীবনে খুঁজে পাননা সুধীর বাবু। সেটা অবশ্য ঘুচে গেছে অনেকদিন আগেই। তার কারন অনেক। স্ত্রী সম্বন্ধে সুধীর বাবুর অভিযোগ ও অনেক । এবং সেই অভিযোগ গুলো হয়েও গেছে অনেক পুরোনো আর কাল প্রবাহে সেগুলো তাদের ধারও হারিয়েছে অনেক বছর। তবে এক কথায় বলা যায় সুধীর বাবু সুখী নন।
সেদিন সকালে সুধীর বাবু নাইট ডিউটি করে বাড়ি ফিরেছেন। এককাপ চা খেয়ে সবে ভাবছেন একটু ঘুমিয়ে নেবেন,এমন সময় একটা বাজারের ব্যাগ ছপ করে তাঁর সামনে এসে পড়লো।
” কি ব্যাপার ?”
সুধীর বাবু একটু চমকে উঠলেন। জবাব এলো,
” বাজারে কে যাবে কে শুনি। তুমি না তোমার শ্বশুর ?”
একগাদা ফর্দ নিয়ে ব্যাজার মুখে সুধীর বাবু কে বেরিয়ে পড়তে হোল।
কিন্তু দুপুর বেলা সুধীর বাবুর জন্য চমক অপেক্ষা করছিল। স্নান করে খেতে বসে সুধীর বাবু চমকে গেলেন। থালায় ঝরঝরে সাদা ভাত , মাছের মাথা দিয়ে মুগের ডাল, বেগুন ভাজা, ফুলকপির মুড়িঘন্ট , কাতলা মাছের মাথা সহযোগে মাছের ঝোল শেষ পাতে রসগোল্লা ও দধি সাজিয়ে সুধীর বাবুর স্ত্রী ললিতা হাসিমুখে
তাঁর অপেক্ষায় বসে। অবাক হয়ে সুধীর বাবু জিজ্ঞেস করলেন ,
” আজকে তো আমাদের কারো জন্মদিন নেই। আমাদের বিবাহ বার্ষিকী ও তো আজ নয়। তাহলে আজ এতো আয়োজন ?”
” এমনি করলাম গো। তুমি কতো পরিশ্রম করো, খাটো, তোমার কোন যত্ন তো করতে পারিনা। তাই।”
এ কথা শুনে সুধীর বাবুর তো আত্মারাম খাঁচা ছাড়া হয়ে যাওয়ার যোগাড়। যার মুখে শুধুই উচ্ছে আর মেজাজে লঙ্কা , তার জীভে এই মধু ?
কিন্তু সুধীর বাবু একটা কথা জানতেন না। আসলে ললিতা একটা ক্ষেত্র প্রস্তুত করছিলেন।
চতুর্দিকে এখন ” জল বাঁচাও, জল বাঁচাও।” রব আর জল নিয়ে হাহাকার। তা ললিতার মনেও দুশ্চিন্তার ঝড় তুলেছে। এরমধ্যে আবার মিউনিসিপ্যালিটি ঘোষণা করেছে তারা আগামী পনেরো দিন অর্ধেক সময় জল দেবে। তাই জল বাঁচানোর জন্য আগামী দিন পনেরো সুধীর বাবুর সঙ্গেই একসঙ্গে চানটা সেরে নেবেন এটাই ঠিক করেছিলেন ললিতা। কারন আগামী দশদিন নাইট ডিউটি থাকার জন্য সুধীর বাবু দুপুর বেলা বাড়ি থাকবেন। আর উনিশ বছরের ছেলে কুনাল ঐ সময় টা কলেজে যায়। বাড়ি পুরো ফাঁকা কেউ দেখার নেই। কিন্তু স্বামী স্ত্রী একসঙ্গে চান করতে ঢুকলে তো আর শুধু গায়ে জল ঢেলে বেরিয়ে আসা হয়না। আর একটা দুষ্টু দুষ্টু ব্যাপারও তো তার সাথে ঘটে। কিন্তু এদিকে দীর্ঘকালের অনভ্যেস। তাই একটু রোমান্টিক হওয়া এই আর কি।
ওদিকে সুধীর বাবু খেতে বসে খাবারের স্বাদে মোহিত হয়ে গেলেন। বারবার ললিতার গুনগান করতে করতে বলে ফেললেন,
” ললিতা তোমার সম্বন্ধে আমার আগে অন্যরকম ধারণা ছিল আজ তা পাল্টে গেল।”
” আগে আমার সম্বন্ধে কি ধারণা ছিল ?”
” আগে তো ভাবতাম দজ্জাল, ঝগড়াটে কুচুটে ——-।”
” কিইইইই ?” একটা তীক্ষ্ণ চিৎকারে সুধীর বাবুর কানের পর্দা ফেটে যাওয়ার উপক্রম হোল। টনটনাটনঢন করে মাছের ঝোলের বাটিটা ঘরের একদিকে ছিটকে পড়লো। আর মাছের মুড়োটা সাঁ করে উপরে উঠে থ্যাপ করে সুধীর বাবুর মাথায় এসে বসে গেল । একটা রসগোল্লা পাঁই করে এসে সুধীর বাবুর মুখে ঢুকে গেল। তারপর রান্নাঘর থেকে প্রথমে চাকি বেলন আর তারপর অন্যান্য বাসনপত্র সুধীর বাবুর উদ্দেশ্যে নিক্ষিপ্ত হতে লাগলো। সুধীর বাবু কোনরকমে পিঠ বাঁচিয়ে বাড়ি থেকে পালালেন।
********************************************
অতীশ খুব ভালো ছেলে। এমবিএ পাশ করে সদ্য চাকরি তে ঢুকেছে। মাস তিনেক হোল বিয়েও করেছে নিজের ছোটবেলার প্রেমিকা পায়েল কে। সুধীর বাবুর জীবনে যেদিন সাংঘাতিক ঐ ঘটনাটা ঘটলো সেদিন অতীশ ছুটি নিয়েছিল। তার কারন পায়েলের বায়না। পায়েল সেদিন বায়না ধরেছিল তাকে বেড়াতে নিয়ে যেতে হবে। তাই অতীশের ছুটি নেওয়া ।
কারন পায়েল সুন্দরী এমনি ভালো কিন্তু রাগলে
হুঁ হুঁ বাবা।
সিনেমার টিকিট কেটে অতীশ দেখল শোয়ের এখনও প্রায় দেড় ঘণ্টা দেরি। অতএব পায়েল কে নিয়ে অতীশ চলে এল সিনেমা হলের কাছাকাছি একটা পার্কে। এখন বিকেল সাড়ে চারটে বাজে। পার্কে বেশ লোকজন রয়েছে। বেশিরভাগই অবশ্য কলেজ কাটা ছেলে মেয়ে আর পাড়ার মেয়ে বউ দের দল। একটা দিকে একটা বেঞ্চ ফাঁকা পাওয়া গেল। পায়েল কে নিয়ে ঐ দিকেই এগিয়ে গেল অতীশ।
বেঞ্চটার ঠিক পাশের বেঞ্চে এক বছর পঞ্চাশের ভদ্রলোক একটা বছর বাইশের ছেলের সঙ্গে বসে কথা বলছিলেন। অতীশরা বেঞ্চে গিয়ে বসতে কিছু কথা কানে আসতে লাগলো।
ঐ লোকটা আর কেউ নয়, সুধীর বাবু। বাড়ি থেকে মারধোর খেয়ে এসে , পার্কে এই ছেলেটা মানে ঋতম কে জ্বালাময়ী ভাষণ শোনাচ্ছিলেন।
আসলে ঋতম প্রেমে পড়েছে । কিন্তু সেই মেয়েটি কিছুতেই পটছেনা। তাই সুধীর বাবু কিছু উপদেশ দিচ্ছিলেন ঋতম কে । আর অতীশ আগ্রহ ভরে কান খাঁড়া করে তাই শুনছিল। সুধীর বাবু তখন বলে চলেছেন,
” মেয়েদের সম্বন্ধে বাজে কথা বলা আমি পছন্দ করি না। কিন্তু মাঝে মাঝে অপ্রিয় সত্য কথা মুখে এসে যায়। তারা শুধু পয়সা খরচ করে আজেবাজে জিনিস মুখে মাখে। ভীষণ তাদের মুখ । একেবারে মিছরির ছুরি। বিয়ে করলে আর
দেখতে হবেনা। কথা নেই বার্তা নেই ঝগড়া বাধাবে ,শান্তি নষ্ট করবে সে এক বিচ্ছিরি ব্যাপার যাকে বলে। “
ঋতম প্রায় কোঁকিয়ে উঠলো,
” কিন্তু আমি তাকে বড় ভালোবাসি ! কিন্তু —-।”
” কিন্তু ?”
” সে কোন কথাই শুনতে রাজি না।”
” যদি কথা না শোনে তবে দরকারে কানে হাত দিয়ে কথা শোনাতে হবে। কিছু না বলে বলে এরা
মাথায় চড়ে বসছে। যতসব ময়দা সুন্দরীর দল। মাস গেলে হাতে মোটা টাকা ধরিয়ে দাও, তোমার দরকার শেষ।”
ওদিকে অতীশ হঠাৎ খেয়াল করলো তার সঙ্গে সঙ্গে পায়েলও ঐ লোকটির কথা শুনছে। সুধীর বাবু তখন একের পর এক বিস্ফোরণ ঘটিয়েই চলেছেন। তার বিষোদ্গার থামার কোন লক্ষণ নেই। ওদিকে পায়েলের গাল ফুলছে । আশেপাশে মেয়েদের একটা ছোটখাটো ভিড় জমে গেছে , তাদের কারো ভ্রু কুঞ্চিত কেউ বা আস্তিন গোটাচ্ছে । পায়েল কে পায়ের হিল তোলা জুতো আলগা করতে দেখে অতীশ প্রমাদ গুনে একটা ক্ষীণ চেষ্টা করলো সুধীর বাবু কে থামানোর,
” ও মশাই শুনছেন ?”
আর কে শোনে কার কথা। সুধীর বাবু তখন মেয়েদের বিরুদ্ধে তার জ্বালাময়ী ভাষণ দিয়েই চলেছেন। হঠাৎ পায়েল “অ্যাই।” করে একটা চিৎকার করে উঠলো। আর অতীশের মনে হোল একটা ঝড় যেন ওর চারপাশ দিয়ে গিয়ে সুধীর বাবু আর ঋতমের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়লো। সেই সঙ্গে চড়াচড় ধমাধম ধাঁই ধপাধপ বিভিন্ন রকম শব্দ, ” আঁই বাপ মলাম। ” , ” ওমা আমি বাড়ি যাবো।” জাতীয় আর্ত চিৎকার আর কোরাসের ঢঙে বিভিন্ন স্কেলে বিভিন্ন স্বরে সমবেত নারী কন্ঠ থেকে বেরিয়ে আসা অশ্রাব্য গালিগালাজ।
উত্তেজনায় অতীশ চোখ বুজে ফেলেছিল।
কিন্তু তার হঠাৎ কি মোতিচ্ছন্নে ধরলো কে জানে, সে লাফ দিয়ে গিয়ে ভীড়ের মধ্যে পড়লো
সুধীর বাবু আর ঋতম কে বাঁচানোর জন্য।
” আরে আপনারা কি করছেন ? নিরীহ দুটো মানুষ কে এইরকম চামারের মতো মারছেন।”
ব্যাস আর যাবে কোথায় ।
” আমাদের চামার বলেছে রে এ এ এ এ।”
অতীশের ওপর ও তৎক্ষণাৎ কিল চড় বৃষ্টি শুরু হয়ে গেল। বাঁচতে গিয়ে অতীশ কে হাত চালাতে হোল। আর তারই একটা ধাক্কা দূর্ভাগ্যক্রমে গিয়ে লাগলো পায়েলের গায়ে। ধাক্কাটা তে জোর ছিল। পায়েল ছিটকে গিয়ে পড়লো ভিড়ের বাইরে। ঘটনার আকস্মিকতায় মেয়েরা একটু থমকে গেল। নিজের ভুল বুঝতে পেরে অতীশ দৌড়ে গেল পায়েল কে তুলতে , কিন্তু পায়েল ততক্ষণে উঠে বসেছে। ঠোঁট কাঁপছে কান্নায়।
” একটা বাইরের লোকের জন্য তুমি সবার সামনে আমার গায়ে হাত তুললে ?”
ভীড়ের মধ্যে থেকে একটা উস্কানি মুলক মন্তব্য ভেসে এলো।
” দেখ দেখ স্ত্রীর গায়ে হাত তুলছে । তাও সবার সামনে। ডোমেস্টিক ভায়োলেন্স।”
অতীশ যত বলতে যায় সে ইচ্ছে করে করেনি, কিন্তু কে শোনে কার কথা। বিভিন্ন উস্কানিমূলক মন্তব্য শুনে পায়েলের তখন মাথায় আগুন জ্বলছে।
” ইউউউউ বদমাইশ কুকুর। “
” পায়েল সবাই শুনছে। চুপ করো। ওটা হঠাৎ হয়ে গেছে।”
” তোমার মতো জানোয়ারের সঙ্গে আর একটা ও কথা নয়।”
পায়েলের হাতে জুতো টা তখনও ছিল সেটা দিয়ে রাগের চোটে অতীশের গায়ে ফটাস ফটাস করে দু ঘা মেরে ,
” নাউ বি রেডি ফর ব্রেক আপ। উইদিন ফিউ ডেজ ইউ উইল বি এ ডিভোর্সি। “
বলে পায়েল বাপের বাড়ির দিকে রওনা দিচ্ছিল। রাগে দিকভ্রান্ত অতীশ খপ করে পায়েলের ঘাড়টা চেপে ধরলো,
” ছশো টাকা দিয়ে সিনেমার টিকিট কাটিয়েছিস। আমার টাকা ফেরত দিয়ে তবে যাবি। “
পায়েল এবার কেঁদেই ফেললো।
” এতদুর ? তোর মুখ কোনদিন দেখবোনা। শয়তান কোথাকার। আমার থেকে সিনেমার টিকিট বেশি হোল ? কোনদিন আসবিনা আমার সামনে।”
পায়েল চলে গেল। ভীড় ও ততক্ষণে পাতলা হয়ে এসেছে। অতীশ হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছিল। তার সম্বিৎ ফিরল একটা গোঁ গোঁ আওয়াজ শুনে। তাকিয়ে দেখে সুধীর বাবু মাটিতে উপুড় হয়ে পড়ে আছেন আর তার ওপরে পড়ে আছে ঋতম । কিন্তু এবার আর ওদিকে ঘেরোলোনা অতীশ হাঁটা দিল হনহন করে যে দিকে দুচোখ যায়।
*******************************************
জট তো পাকালো কিন্তু খুলবে কি করে ? দেখা যাক পরিশিষ্ট কি বলে।
পায়েল কে হঠাৎ ঢুকতে দেখে পায়েলের মা রোহিনী দেবী ছুটে এলেন। কিন্তু ওর সামনে এসে কেমন মুখ গোমড়া করে থমকে দাঁড়িয়ে গেলেন।
” কিরে তুই হঠাৎ ?”
অতীশের সঙ্গে ঝগড়ার কথা টা পায়েল ভাঙলো না। ভেঙে কি হবে ? অতীশের বাড়ি তো পাশের রাস্তায়। কালকের মধ্যেই মা সব জেনে যাবে। তাই মুখে বললো,
” আমি এখন কয়েক দিন থাকবো।”
এটা শুনে রোহিনী দেবীর মুখ আরও ব্যাজার হয়ে গেল।
” তুই আবার এখন আসতে গেলি কেন ?”
বলেই গটমট করে রোহিনী দেবী ভেতরে চলে গেলেন।
মায়ের এহেন আচরণের জন্য তৈরী ছিল না পায়েল। সে একটু থতমত খেয়ে চুপ করে রইলো।
মিনিট পনেরো নিজের পুরনো ঘরে নিজের বইপত্র নিয়ে নাড়াচাড়া করার পর বাবার সঙ্গে দেখা করার জন্য বাবার ঘরে ঢুকতে গিয়ে মা বাবার কথাবার্তা শুনে মাটিতে পা আটকে গেল পায়েলের।
সে পরিষ্কার শুনতে পেল মা নিচু গলায় বাবাকে বলছে,
” এমনিতেই সামনে জলের আকাল আসছে। সব জায়গায় জল বাঁচাতে বলছে । তার ওপর কাল থেকে পনেরো দিন মিউনিসিপ্যালিটি অর্ধেক সময় জল দেবে। ভাবলাম কাল থেকে তোমার সঙ্গে একসঙ্গে চানটা সেরে নেবো।
জলটাও বাঁচবে । তোমার মেয়ে তার মধ্যে এসে হাজির হোল। ওর সামনে কি করি এখন ?”
বাবার গলা পেল পায়েল,
” শুধু কি জল বাঁচল না বলে এত রাগ ? নাকি ——–।”
” ধ্যাৎ।”
ওদের কথাবার্তা শুনে কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে গেল পায়েল। সত্যি তো এটা তো সে ভেবে দেখেনি। এই কদিন জলের যা আকাল যাবে, তাতে তার ও তো উচিত জল বাঁচানোর জন্য কিছু করা। আর সে দুমদাম এসে পড়লে যে মা বাবার গোপন সাধ আহ্লাদ ব্যাহত হতে পারে সেটাও সে ভেবে দেখেনি।
সেদিন অনেক জায়গায় উদভ্রান্তের মতো ঘুরে বেশ রাত করে বাড়ি ফিরল অতীশ। রাতে কিছু খাবেনা মাকে জানিয়ে দিয়ে এগিয়ে গেল শোবার ঘরের দিকে। অতীশের মানসিক অবস্থা এত খারাপ ছিল যে মায়ের নির্বিকার ভাব তার চোখে ধরা দিলনা।
শোবার ঘরের দরজা ভেজানো ছিল। ঘরে ঢুকতেই ঘুটঘুটে অন্ধকার। সবে আলো জ্বালাতে যাবে কে যেন ঝাঁপিয়ে পড়ে ওর কলার ধরে টানলো। সাথে সাথেই ঠোঁটের ওপর চকাম করে একটা পরিচিত চুমু।
অতীশ চমকে গেল,
” অ্যাই কে ?”
” আমি ছাড়া আর কে হবে রে বদমাইশ ?”
” ব্রেক আপ করে দিয়ে তো চলে গিয়েছিলি। ফিরে এলি যে বড়ো ?”
” জল বাঁচাতে হবে না ? কাল আমাদের ঘরের অ্যাটাচড বাথরুমে আমরা একসঙ্গে চানটা সেরে নেবো। জল বাঁচবে, প্রেম ও হবে।”
” তাহলে জল জব্দ না করলে আসতিস না বল !”
” আসতাম । তুই তো আমার চোখের জল আর চানের জল দুটো একসাথে। না এসে থাকতে পারতাম ?”
যাকগে এদিকে মধুরেণ সমাপয়েত। কিন্তু সুধীর বাবুর কি হোল ?
সুধীর বাবু বেদনা দায়ক ঐ সময় টা কাটিয়ে গোম মেরে পার্কের বেঞ্চে বসে ছিলেন। ললিতা খুঁজতে খুঁজতে এসে জীবনে প্রথম বার সুধীর বাবুর মান ভাঙিয়ে তাঁকে বাড়ি নিয়ে গিয়েছিলেন। তাদের নতুন করে জেগে ওঠা প্রেমের জন্য সুধীর বাবু এক সপ্তাহ অফিস ছুটি নিয়েছিলেন। তারপর থেকে তাঁরা সুযোগ পেলেই দুজনে একসাথে চান করছেন আর জল বাঁচিয়ে
দিচ্ছেন।