শ্রেষ্ঠ প্রেমের গল্প – Sera Premer Golpo – Best Bengali Love Story
সেরা প্রেমের গল্প
প্রেম চিরন্তন
– সমাপ্তি
১
“হাই।তুমিই সমুদ্র চক্রবর্তী ;ক্লাস টুয়েল্ভ,আর্ট্স?আমি রায়া দাশগুপ্ত; ক্লাস
ইলেভেন, সায়েন্স।”
ইলেভেন, সায়েন্স।”
স্কুলের কালচারাল প্রোগ্রামের রিহার্সালে ব্যস্ত সমুদ্র কাজের থেকে মুখ তুলে
তাকিয়ে দেখে সামনে বেশ পুতুল পুতুল দেখতে মিষ্টি একটা মেয়ে।তবে মেয়েটার মুখে
একটা ইনোসেন্স আছে।ললিতার রোলের জন্য একদম পারফেক্ট লুক।মিতালি ম্যাম্ ঠিক
খুঁজে বের করেছেন।নিজের মনেই ভাবতে থাকে সমুদ্র।
তাকিয়ে দেখে সামনে বেশ পুতুল পুতুল দেখতে মিষ্টি একটা মেয়ে।তবে মেয়েটার মুখে
একটা ইনোসেন্স আছে।ললিতার রোলের জন্য একদম পারফেক্ট লুক।মিতালি ম্যাম্ ঠিক
খুঁজে বের করেছেন।নিজের মনেই ভাবতে থাকে সমুদ্র।
“হ্যাঁ,আমিই সমুদ্র।তুমিই তাহলে আমাদের নাটকের ললিতা।তাইতো?”
“হ্যাঁ মানে মিতালি ম্যাম্ আমাকে সিলেক্ট করেছেন।এই স্কুলে আমি নতুন।অভিনয়
আগের স্কুলে একটু আধটু করেছি।কিন্তু জানিনা ললিতার চরিত্রে আমি কতটা পারবো।”
আগের স্কুলে একটু আধটু করেছি।কিন্তু জানিনা ললিতার চরিত্রে আমি কতটা পারবো।”
“আমরা সবাই আছি তো।হয়ে যাবে।চিন্তা কোরো না।”
২
স্কুল থেকে ফিরে গরম গরম লুচি আর আলুর তরকারী খেতে খেতে ঠাম্মির সাথে গল্প
করছিল সমুদ্র।এটা তার রোজ বিকেলের অভ্যেস।সমুদ্র আগের থেকে এখন আরও বেশী সময়
দেওয়ার চেষ্টা করে ঠাম্মিকে।বাথরুমে পড়ে গিয়ে আশালতা দেবী মানে সমুদ্রের ঠাম্মি
সেই যে হুইলচেয়ারে বসেছেন, প্রায় মাস সাতেক হয়ে গেল।
করছিল সমুদ্র।এটা তার রোজ বিকেলের অভ্যেস।সমুদ্র আগের থেকে এখন আরও বেশী সময়
দেওয়ার চেষ্টা করে ঠাম্মিকে।বাথরুমে পড়ে গিয়ে আশালতা দেবী মানে সমুদ্রের ঠাম্মি
সেই যে হুইলচেয়ারে বসেছেন, প্রায় মাস সাতেক হয়ে গেল।
“জানো ঠাম্মি স্কুলে কালচারাল প্রোগ্রামে আমরা শরৎচন্দ্রের ‘পরিণীতা’ করছি।আর
আমি শেখরের চরিত্রে।ঠিকঠাক পারবো তো আমি?”
আমি শেখরের চরিত্রে।ঠিকঠাক পারবো তো আমি?”
সমুদ্র দেখলো ‘পরিণীতা’ নাম শুনে ঠাম্মির চোখদুটো জ্বলজ্বল করে উঠলো।
“আমার কেউ নেই বলেই ত তুমি এমন করে আমাকে অপমান করচ।”
বিড়বিড় করে উঠলেন আশালতাদেবী।
“কি বলছো ঠাম্মি?”
“পরিণীতার ডায়লগ।হঠাৎ মনে পড়লো।যখন ক্লাস নাইনে পড়তাম আমরাও করেছিলাম পাড়ার
দুর্গাপুজোর অনুষ্ঠানে।আমি ললিতার চরিত্রে আর বিকাশদা শেখরের চরিত্রে।”
দুর্গাপুজোর অনুষ্ঠানে।আমি ললিতার চরিত্রে আর বিকাশদা শেখরের চরিত্রে।”
“তোমার আজও ডায়লগ মনে আছে?তাহলে তো আমি তোমার সঙ্গে রিহার্সাল করতে পারবো।”
মিষ্টি মেয়ের প্রেমের গল্প
৩
এরপর রোজ বিকেলে ঠাম্মির সঙ্গে এই নিয়ে সময় কাটতে লাগলো সমুদ্রের।আর স্কুলে খুব
ভালো হতে লাগলো তার অভিনয়।অগত্যা রায়া এক্সট্রা রিহার্সালের জন্য সমুদ্রের
শরণাপন্ন হলো।ইতিমধ্যে রায়া আর সমুদ্রের বেশ বন্ধুত্ব হয়ে গেছে।এরপর
আশালতাদেবীর সঙ্গে আলোচনা করে সমুদ্র রায়াকে তার কাছে নিয়ে এলো।আশালতাদেবী তার
এক্সপ্রেশন দিয়ে ললিতাকে জীবন্ত আর বোধগম্য করে তুললেন রায়ার কাছে।
ভালো হতে লাগলো তার অভিনয়।অগত্যা রায়া এক্সট্রা রিহার্সালের জন্য সমুদ্রের
শরণাপন্ন হলো।ইতিমধ্যে রায়া আর সমুদ্রের বেশ বন্ধুত্ব হয়ে গেছে।এরপর
আশালতাদেবীর সঙ্গে আলোচনা করে সমুদ্র রায়াকে তার কাছে নিয়ে এলো।আশালতাদেবী তার
এক্সপ্রেশন দিয়ে ললিতাকে জীবন্ত আর বোধগম্য করে তুললেন রায়ার কাছে।
আরো পড়ুন,
“হঠাৎ করে পড়ে গিয়ে এমন অবস্থা বুঝলে মেয়ে।নাহলে তোমাকে আরও ভালোভাবে তৈরি করে
দিতাম।সমুদ্রের বাবা অ্যাক্সিডেন্টে মারা যাবার পর ওর মা বোধহয় ঠিকমতো কাঁদতেও
পারেনি।সমুদ্রের তখন বছর সাতেক বয়স।ওকে,আমাকে আর আমাদের নার্সিংহোমটাকে বাঁচাতে
জীবনযুদ্ধে নেমে গেল মেয়েটা।ডাক্তার হিসেবে ওর বাবা এবং মা দুজনেরই খুব নাম
ছিল।ওর মা এতোবড় কষ্টটাকে বুকে যেন একটা বড় পাথর দিয়ে চাপা দিয়ে দিলো।ওর
বাবামায়ের কাজের ব্যস্ততার জন্য ছোটবেলা থেকেই সমুদ্র মূলত আমার কাছেই
মানুষ।শীলা তখন সবকিছুতেই হাতে হাতে সাহায্য করতো।এখন তো রান্নাবান্না থেকে
শুরু করে বাড়ির সবকিছু শীলাই সামলায়।”
দিতাম।সমুদ্রের বাবা অ্যাক্সিডেন্টে মারা যাবার পর ওর মা বোধহয় ঠিকমতো কাঁদতেও
পারেনি।সমুদ্রের তখন বছর সাতেক বয়স।ওকে,আমাকে আর আমাদের নার্সিংহোমটাকে বাঁচাতে
জীবনযুদ্ধে নেমে গেল মেয়েটা।ডাক্তার হিসেবে ওর বাবা এবং মা দুজনেরই খুব নাম
ছিল।ওর মা এতোবড় কষ্টটাকে বুকে যেন একটা বড় পাথর দিয়ে চাপা দিয়ে দিলো।ওর
বাবামায়ের কাজের ব্যস্ততার জন্য ছোটবেলা থেকেই সমুদ্র মূলত আমার কাছেই
মানুষ।শীলা তখন সবকিছুতেই হাতে হাতে সাহায্য করতো।এখন তো রান্নাবান্না থেকে
শুরু করে বাড়ির সবকিছু শীলাই সামলায়।”
৪
এরপর রায়া মাঝেমধ্যেই সমুদ্রের বাড়িতে স্কুল থেকে চলে আসতো আশালতাদেবীর কাছে
রিহার্সালের জন্য।আশালতাদেবীও রায়ার মধ্যে নিজের মেয়েবেলাটা খুঁজে পেতে
লাগলেন।এক ভালোলাগার অনুভূতি খেলা করতে লাগলো তার মনে।সাথে এটাও বুঝতে পারলেন
যে রায়া আর সমুদ্রের মধ্যে এক অদৃশ্য ভালোলাগার ঢেউ আছড়ে পড়েছে যেটা ওদের
দুজনের কেউই বুঝতে পারছে না।
রিহার্সালের জন্য।আশালতাদেবীও রায়ার মধ্যে নিজের মেয়েবেলাটা খুঁজে পেতে
লাগলেন।এক ভালোলাগার অনুভূতি খেলা করতে লাগলো তার মনে।সাথে এটাও বুঝতে পারলেন
যে রায়া আর সমুদ্রের মধ্যে এক অদৃশ্য ভালোলাগার ঢেউ আছড়ে পড়েছে যেটা ওদের
দুজনের কেউই বুঝতে পারছে না।
Bengali Love Story Golpo
একদিন স্কুল থেকে ফিরে সমুদ্র দেখে ডাইনিং
এ হুইলচেয়ার খালি।
এ হুইলচেয়ার খালি।
“শীলাদি ঠাম্মি কোথায়?”
শীলাদি তখন রান্নাঘরে।
হঠাৎ ঠাম্মির গলার আওয়াজ,
“আরে আমি এখানে পরিণীতার একটা জায়গা একটু খুঁটিয়ে পড়ে দেখতে হবে।তাই বুকসেল্ফ
থেকে শরৎরচনাবলী আনতে গেছিলাম।”
থেকে শরৎরচনাবলী আনতে গেছিলাম।”
“ঠাম্মি তুমি হাঁটছো!”
“হ্যাঁ রে সত্যি তো আমি হাঁটছি!”
সমুদ্র দৌঁড়ে মাকে ফোন করতে গেল।
৫
আজ সমুদ্রের স্কুলের অনুষ্ঠান।আশালতাদেবী আর শীলাদি গেছে অনুষ্ঠান দেখতে।আর
একটু বাদেই অনুষ্ঠান শুরু হবে।আশালতাদেবী দেখা করতে গেলেন রায়ার সাথে।আজ রায়ার
জন্মদিন।রায়া আশালতাদেবীকে প্রণাম করে আশীর্বাদ নিল।রায়া পুরো তৈরি হয়ে
গেছে।আশালতাদেবী লক্ষ্য করলেন রায়ার পাদুটো খালি।নুপুর থাকলে ভালো লাগতো।তিনি
ঠিকই অনুমান করেছিলেন।তিনি রায়াকে নিয়ে সমুদ্রের কাছে গেলেন।নিজের হাতব্যাগ
থেকে তার নিজের পছন্দের নুপুরজোড়া বের করে সমুদ্রকে দিয়ে বললেন,
একটু বাদেই অনুষ্ঠান শুরু হবে।আশালতাদেবী দেখা করতে গেলেন রায়ার সাথে।আজ রায়ার
জন্মদিন।রায়া আশালতাদেবীকে প্রণাম করে আশীর্বাদ নিল।রায়া পুরো তৈরি হয়ে
গেছে।আশালতাদেবী লক্ষ্য করলেন রায়ার পাদুটো খালি।নুপুর থাকলে ভালো লাগতো।তিনি
ঠিকই অনুমান করেছিলেন।তিনি রায়াকে নিয়ে সমুদ্রের কাছে গেলেন।নিজের হাতব্যাগ
থেকে তার নিজের পছন্দের নুপুরজোড়া বের করে সমুদ্রকে দিয়ে বললেন,
নতুন প্রেমের গল্প
“নুপুরজোড়া পরিয়ে দে দেখি আমার রাঈসুন্দরীকে।ও রেডি হয়ে গেছে।এখন নীচু হয়ে
নুপুর পরতে গেলে শাড়ি পরাটা নষ্ট হয়ে যাবে।”
নুপুর পরতে গেলে শাড়ি পরাটা নষ্ট হয়ে যাবে।”
সমুদ্র বাধ্য ছেলের মতো বসে রায়ার পায়ে নুপুরজোড়া পরাতে লাগলো।
আশালতাদেবী ওদের মধ্যে দিয়ে ভেসে গেলেন তার কিশোরীবেলায়।তার প্রথম ভালোলাগা,
তার জীবনের শেখর -বিকাশদাকে তো আজও ভোলেননি তিনি।সম্পর্কের হাল্কা আভাস পাওয়া
মাত্র বাবা তাকে পাত্রস্থ করে দিলেন সত্ত্বর।স্বামী তাকে ভালোবাসায় ভরিয়ে
রাখলেও কোথাও বোধহয় রয়ে গেছিল বিকাশদা।আজ এতো বছর বাদে যেন তাদের দুজনকেই খুঁজে
পেলেন রায়া আর সমুদ্রের মধ্যে।
তার জীবনের শেখর -বিকাশদাকে তো আজও ভোলেননি তিনি।সম্পর্কের হাল্কা আভাস পাওয়া
মাত্র বাবা তাকে পাত্রস্থ করে দিলেন সত্ত্বর।স্বামী তাকে ভালোবাসায় ভরিয়ে
রাখলেও কোথাও বোধহয় রয়ে গেছিল বিকাশদা।আজ এতো বছর বাদে যেন তাদের দুজনকেই খুঁজে
পেলেন রায়া আর সমুদ্রের মধ্যে।
সমুদ্র নুপুরজোড়া পরাতে পরাতে রায়াকে বলে ওঠে,
“মালা নেই।নুপুরজোড়া পরিয়ে নিজের করে নিলাম।বাকিটা নাটকের সময়ের জন্য তোলা
থাক।”
থাক।”
লজ্জায় লাল হয়ে উঠেছে রায়া।
“তুমি আমার থেকে বড় না।পায়ে হাত দিলে যে।”
কথাগুলো বলেই সমুদ্রকে প্রণাম করে দৌঁড়ে আশালতাদেবীকে জড়িয়ে ধরলো রায়া।
হতবাক সমুদ্র বলে ওঠে,
“এ কী গো রাঈসুন্দরী।”
আশালতাদেবী মুচকি হাসতে হাসতে মনে মনে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করলেন,
“এভাবেই সারাটা জীবন ওরা দুজন বাঁধা থাক ভালোবাসার বাঁধনে।”