Pujor Premer Golpo – পূজো প্রেমের গল্প – Durga Puja Love Story

Bongconnection Original Published
4 Min Read


Pujor Premer Golpo – পূজো প্রেমের গল্প – Durga Puja Love Story

 
Pujor Premer Golpo - পূজো প্রেমের গল্প - Durga Puja Love Story
Loading...

Pujor Premer Golpo

Loading...
…..একমনে বাঁ গালের একটা ব্রণকে বসে বসে খুঁটছে বুবলা, আর হাঁ করে দেখছে
দিভাইকে। সামনে পুজো তাই দিভাই নানারকম ফেসপ্যাক আর হেয়ারপ্যাক নিয়ে বসেছে।
এমনিতে দিভাই বেশ সুন্দরী। মানে ওই পেঁচার মত নাক আর ভোঁদড়ের মত মুখটা বাদ দিলে
সুন্দরী লাগে। কিন্তু বললে তো আবার ঘ্যাম বেড়ে যাবে তাই সে কিছু বলেনা। কিন্তু
পুজো এলেই রান্নাঘর নিয়ে বসে যায় পুরো। আর ফরমাশ খেটে মরে বুবলা। 
_”এই বুবলা দেখতো প্যাকটা শুকিয়েছে নাকি।” মহারাণী আওয়াজ দিলেন।
_”না কপালের দিকটা বাকি।”
_”যা একটা টাওয়াল নিয়ে আয়।”
_”যাচ্ছি। একেবারে নিয়ে বসতে পারিস না, উফ।”
_”ঠিক আছে যাস না। পরে আসবি আমার কাছে” হুমকি দিলেন মহারাণী। 
_”তাই কি বললাম। বলছি আমাকেও লাগিয়ে দিবি তো।”
_”উফ বেশি কথা বলাস না। প্যাক মেখেছি।” মিচকে হাসি মোটেও চোখ এড়ায়না বুবলার।
এতক্ষণ ফরমাশ খাটানোর সময় মনে পড়লো না, আচ্ছা হারবজ্জাত দিভাইটা।
_”এই বুবলা তোর ওই গার্লফ্রেন্ডটা এখনো আছে? সেই যে কানি না কি নাম।”
_”কানি কেন হবে। ওর নাম মধুমিতা, তাই হানি বলে ডাকি। না নেই। কেটে গেছে।”
_”ছি ছি। কিচ্ছু হবেনা রে তোর। এবারো কি আমার আর অর্জুনের সাথে হাত ধরে ধরে
ঘুরবি। আয় দেখি মাথায় একটু হেয়ারপ্যাক লাগিয়ে দিই। আর মুখের কি ছিরি। হনুমান
একটা। সারাদিন রোদে পুড়ে কি করেছিস দেখ।”


ওদের এই পর্ব রোজ চলে। দুই ভাইবোনের এই খুনসুটিতে মাখামাখি করে আছে আবেগ আর
ভালোবাসা।
_”এই হনুমান শাড়ির কুঁচিটা ঠিক করে ধর। সোজা হচ্ছে না তো।”
_”দেখ তো এই কানের দুলটা ম্যাচ করছে কিনা?” অষ্টমীর অঞ্জলি দিতে যাওয়ার আগে
আবার শুরু হয় এককালীন যুদ্ধ।

পূজো প্রেমের গল্প

_”এটা কি পরেছিস রে? এদিকে আয়। এতদিনেও ধুতি পরতে শিখলিনা। কেউ পাত্তা দেবেনা।
মন দিয়ে অঞ্জলিটা দিবি। রুমা কাকিমার বোনের মেয়ে এসেছে মুম্বাই থেকে। খুব তো
কাল ফুচকা খাওয়ালি। এই চান্সটা ফসকালে এবারো পুজো আমার হাত ধরেই ঘুরতে হবে।”
মুচকি হেসে দিভাই যত্ন করে ধুতি পরিয়ে দেয়। নিজের পকেটমানি বাঁচিয়ে একটা দামি
বিদেশী পারফিউম ছড়িয়ে দেয়। এ যেন এক চিরন্তন ভালোবাসার গন্ধ যা লেগে থাকে
অন্তরের অন্তরালে। 


**********
সপ্তমীতে ফুচকা খেতে গিয়ে ঝাল লাগলে রুমাল এগিয়ে দেওয়া……
অষ্টমীর অঞ্জলির ফাঁকে দুটি চোখ এক হয়। হৃদয়ে হাজারটা প্রজাপতি…….
নবমীতে অন্তাক্ষরীর গানে বলতে চাওয়া “হাম দিল দে চুকে সানম।”……..
দশমীতে ভাসানের গাড়িতে একচিলতে জায়গাতেও ওর পাশেই দাঁড়ানো……


দূর্গাপূজার প্রেম 

সপ্তমীতে একটু দেখা…
অষ্টমীতে হাসি।
নবমীতে বলতে চাওয়া….
তোমায় ভালোবাসি।
গানের সুর ভেসে আসে প্যান্ডেলে।
না, বলা হয়ে ওঠা হয়না তবু। বুবলার ফার্স্টইয়ার আর মেয়েটা সবে মাধ্যমিক দিয়েছে।
ফোন নম্বর চাইতেও লজ্জা পায় বুবলা।

**************
সে ফিরে যায় মুম্বাই। কান্নাগুলো আবার মুছিয়ে দেয় দিভাই। অর্জুনদার দেওয়া 
চকলেট অনায়াসে দিয়ে দেয় মন জোড়া লাগাতে। আবার অপেক্ষায় মন আকাশপ্রদীপ জ্বালায়।
দুর্গাপুজো মানে একরাশ আলো। নতুন প্রেমের আবেশ। মন ভাঙা গড়ার খেলা।মনের মাঝে
গোপন ঢেউ। মন ভেঙেও যায় যদি, পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি ভাঙেনা কখনো।
পুজোতেই মন ভাঙে। আবার হৃদয় জোড়া লাগে। ভালোবাসার পুজো কিম্বা পুজোর ভালোবাসা
সমার্থক হয়ে ওঠে এই দুর্গাপুজোতে সবার জীবনে। ঢাকের তালে হৃদয়ে দোলা লাগে সেই
চশমা আঁটা, বিনুনি বাঁধা, ক্লাসে ফার্স্ট হওয়া গম্ভীর মেয়েটারও। একবার হলেও
প্রেম আসে, একবার হলেও পাড়ার দামাল ছেলেটাকে পাঞ্জাবীতে দেখে মনে দোলা লাগে। যে
মেয়েটা ঝুঁটি নেড়ে ঝগড়া করতো পিট্টু খেলতে নেমে, তাকে অষ্টমীর শাড়িতে দেখে মনের
প্রজাপতি গুলো উড়ে যায় আকাশপ্রদীপ হয়ে। চিরনতুন চিরন্তন প্রেমের পুজো,
দুর্গাপুজো।

Share This Article