Bangla Premer Golpo – প্রেমের গল্প – Bengali Love Story
Bangla Premer Golpo Love Story
থাকলে,কিম্বা একদিন একটা কফিহাউসে বসে কিছুক্ষন সময় কাটালে কী আর বোঝা যায় ওদের
কতটা কী মেলে!তাই চাইলো বিবাহের আগে একটা
হয়ে উঠবে।আর তাই দুজনে মিলে লংড্রাইভে যাওয়ার হঠাৎ প্ল্যানটা করলো।
করলো।গন্তব্য অজানা।যতদূর দুচোখ চায়।সুজুকি ডিজায়ারটা এই মাস খানেক হলো
নির্মাল্য নিয়েছে।প্রথমবার লংড্রাইভে যাচ্ছে সেটাকে নিয়ে।শীতের সকাল।বাইরে
হাল্কা কুয়াশা তখনও আছে।গাড়ির কাঁচটা ওপর অবধি টেনে দিয়ে যাত্রা শুরু হলো।তখন
পেলো বড় রাস্তার পাশে দু একজন মাটির ভাঁড়ে চা খাচ্ছে।ও নির্মাল্যকে বলল-‘মাটির
ভাঁড়ে কখনো চা খাইনি।খাবে তুমি?’নির্মাল্য বলল-‘কেনো নয়।চলো তাহলে নামা
যাক।’কথাটা বলে রাস্তার এক পাশে গাড়ি পার্ক করে দুজনে একজন চা ওলার কাছ থেকে
প্রথম চুমুকটা চা এ দিয়ে -‘ওয়াও’ বলে উঠলো।নির্মাল্য জিজ্ঞেস করলো-‘এই
প্রথমবার?’বিদিশা হাসি মুখে বলল- ‘হ্যাঁ.. বিয়ের পর আমায় কিন্তু মাটির ভাঁড়ে
চা
যাবে। ‘বিদিশা বলল-‘প্রতিদিন কিন্তু।’নির্মাল্য বলল- ‘একদম।প্রতিদিন।’
Romantic Love Story In Bengali
পড়লো।গাড়ির উইন্ডক্রিনের সামনে চোখে পড়লো,দুটো বাচ্ছা,গায়েতে ময়লা
জামাকাপড়,হাতে কয়েকটা রাস্তায় পড়ে থাকা রঙবেরঙের ছেঁড়া কাগজ,ছোটো ছোটো বাক্স
ইত্যাদি নিয়ে রাস্তা পেরোচ্ছে নির্মাল্য, বিদিশাকে বলল-‘দেখেছো,ওই সব
বাচ্ছাগুলোর জীবন।’বিদিশা বলল-‘সত্যি।ওদের অবস্থা দেখলে কেমন একটা লাগে। গিল্টি
ফিল হয় এটা ভেবে যে,আমরা কত সুখে আছি তাও..।’ নির্মাল্য বলল- ‘চলো, গাড়িটা
কোথাও সাইড করে ওদের কিছু
রোমান্টিক প্রেমের গল্প
নিলো।গাড়িটা একটা ফাঁকা জায়গা দেখে সাইড করে রেখে গেলো।কিছুটা হাঁটবার পর
ছেলেগুলোর দেখা পেলো।ওরা তখন মোট চারজন।একটা বন্ধ বাড়ির দরজায় বসে কে কী নিয়ে
এসেছে সেই সবেরই
একজনের হাতে নতুন একটা জামা ছিলো,আর একজনের হাতে ক’টা মোমবাতি।ওরা দুজন কাঁদন
মাদন হয়ে বলে উঠলো-‘আমরা চুরি করিনি দিদি..’
বলল-‘ এই জামাটা আমরা সব বাচ্ছারা মিলে পয়সা জমিয়ে জমিয়ে কিনেছি।’ এবার
নির্মাল্য বলল- ‘কার জন্য নিয়েছো এটা?’ওদের একজন বলল- ‘আজ আমাদের বোন মুনির
জন্মদিন।ওর জন্যে
চোখ বড় বড় করে বলল-‘তোমরা যাবে?খুব আনন্দ হবে তাহলে।’নির্মাল্য আর বিদিশা মিলে
ঠিক করলো মুনির জন্ম দিনটা ওরাও ওই বাচ্ছাগুলোর করে পালন করবে। কেক নিলো,নতুন
জামা, জুতো, আরও কত কী খেলনা নিয়ে ওই বাচ্ছাগুলোর সঙ্গে
যাওয়ার মত কথা।ওই মানুষগুলোর এক জীবন আর..ভাবাই যায় না।মুনিকে নিজের হাতে
বিদিশা নতুন জামা পড়ালো।সবাই মিলে কেক কাটলো, খাওয়া দাওয়া করলো,আনন্দ
করলো,নাচলো,কত কত ছবি তুললো।ফেরার সময় ওই নির্ভেজাল মনের মানুষগুলো বিদিশা আর
নির্মাল্যকে প্রান ভরে আশীর্বাদ করলো-‘তোমরা দুজনে অনেক সুখী হবে।গরীবের এই
এইটুকু আশীর্বাদ রইলো।’
তখন যেন বিরাট একটা প্রশান্তির হাওয়া।জীবনটা দারুন সুন্দর মনে হচ্ছে।বিদিশা
বলল-‘আমরা যখনই সুযোগ পাবো,এই সব মানুষগুলোর কাছে আসবো হ্যাঁ?’ নির্মাল্য
বলল-‘তোমার মনটা সত্যি সুন্দর।’ ‘বিদিশা বলল-‘তোমারও..।’ বিকেল হবো হবো।তখন ওরা
কতুলপুরে। বিদিশা দেখতে রাস্তার মোড়ে একজন গ্যাস বেলুন বিক্রি করছে।বিদিশা,
নির্মাল্যর কাছে বাচ্ছা মেয়ের মত আবদার করলো
তো।দেখছোনা, এখনো ভালো করে চুল জড়াতে পারিনা।হাতে নেলপলিশ লাগাতে
পারিনা।’নির্মাল্য হা হা করে হেসে বলল-‘হায়রে!এমন বাচ্ছা মেয়েটাকে নিয়ে আমায়
সংসার করতে হবে।’বিদিশা বলল-‘আমি এমনই থাকতে চাই সারাজীবন।’ নির্মাল্য বলল-
‘থাকবে।কে বারণ করবে।।’
সুন্দর প্রেমের গল্প
বলল-‘এই মানুষটার সাথে থাকা যাবেতো?’বিদিশা বলল-‘আমি রান্না পারিনা।সকালা ঘুম
থেকে উঠতে পারিনা।গুছিয়ে কখনো কথা বলতে পারিনা।আর মাঝে মধ্যে রাতে
বলল- ‘ঘুমের ঘোরে লাথি মারার অভ্যেস নেই তো?’বিদিশা বলল-‘বিয়ের খাটটা একটু বড়
সাইজের কিনবে।তাহলে এক আধবার যদি পাও চলে যায় তো নীচে
যুদ্ধ করতে নামছি।’
True Love Story In Bengali Language
ঘনীভূত হলো।নির্মাল্য বলল -‘এখানে একটু নামি চলোনা।’বিদিশা বলল-‘আমি তোমাকে
এটাই বলব ভাবছিলাম।’বিদিশা গাড়ি থেকে নেমে পাখিদের মিষ্টি আওয়াজের তালে তালে
শিসের ধ্বনি দিতে লাগলো।হাত প্রসারিত করে ওর ইচ্ছে হলো পুরো জঙ্গলের
গাছপালাগুলোকে ও ওর বুকেতে নিয়ে ফিরতে।নির্মাল্য,গাড়ির সামনে থেকে গ্যাসবেলুন
গুলো নিয়ে এসে বলল-‘এই নাও,এগুলো উড়িয়ে দাও এখানে।’বিদিশা নির্মাল্যর হাতটা
মুঠোয় ধরে বলল-‘একা কেনো।এসো,একসাথে ওড়াই।’বেলুন
উঠলো- ‘আজকের দিনটা স্পেশাল।’নির্মাল্যর দুটো খোলা হাত তখন বিদিশাকে বাঁধনে
জড়ালো।নির্মাল্য বলল-‘তুমিও খুব স্পেশাল আমার জন্য।’
বিকেল সরে গোধূলি নেমে এলো।আর সমুখে নয়।যা মেলানোর ছিলো প্রায় সবই দুজনের মিলে
গেছে।এবারে তাই ঘরেতে ফেরবার পালা।গাড়িতে বসে নির্মাল্য বলল -‘সোয়টারটা চাপিয়ে
নাও।’ বিদিশা গায়ে সোয়টার পড়ে নিয়ে বলল-‘বিয়ের আগে আর একদিন বেরোনো যায়?’
নির্মাল্য বলল- ‘কোথায় যেতে চাও।’ বিদিশা বলল-‘যেখানে খুশি।’ নির্মাল্য
বলল-‘তবু বলো কোথায় যেতে চাও।’ বিদিশা বলল-‘যেতে চাওয়াটা আমার লক্ষ্য নয়।তুমি
ছেলেটার সাথে আরও টাইম স্পেন্ড করতে ইচ্ছে হচ্ছে।’ নির্মাল্য কথাটা শুনে বেশ
আবেগে ভাসলো।বলল-‘বাকিটা জীবন তো আমার সঙ্গেই। অনেক সময় পাবে কাটানোর।’ বিদিশা
তখন নির্মাল্যর সীটের দিকে ঘেঁষে এসে ওর কাঁধের কাছে মুখটা বাড়িয়ে বলল-‘এমনই
থাকবে তো?বিয়ের পর বদলে যাবে নাতো?’ নির্মাল্য বলল-‘