পরকীয়া প্রেমের গল্প – Porokiya Prem – Bengali Story
পরকীয়া গল্প
ওগো সুন্দরী –খালি গলায়, সুরে – বেসুরে গাইতে গাইতে, পুরীর হোটেলে স্বামী
স্ত্রী পরিচয়ে আসা তমাল, মেধার চিবুকটি তুলে ধরে তার ঠোঁটের সঙ্গে সঙ্গে নিজের
ঠোঁট মেলাতে যাবে,মেধা বলে উঠলো এত তাড়া কিসের মশাই, এখনো সাত সাতটা দিন আছে,
হাতে।
ফেসবুকে আলাপ,ম্যাসেঞ্জারে কথাবার্তা, মাস তিনেক সময় লেগেছে হোয়াটস অ্যাপের
নম্বর বদলাবদলি করতে।
অভ্যাস।কেবল দায়সারা দাম্পত্য, শরীরমিলন্। নিজের শরীর – আর নিজের মন,নিজের
চাহিদাগুলো – যখন পানসে- থেকে অতি পানসে আর জোলো জীবন, তা থেকে
বেরিয়ে,একটা অন্য রকম কিছু করবে বলে ভাবছিলো, তখন দুজন দুজনকে খুঁজে বের
করে ফেসবুকে।
সাতদিন বাইরে থাকতে হবে বলে বেরিয়ে এসেছে।
আসবে, শরীর?
করে, সব সবই তমালের নখদর্পনে। মেধা অবাক হয়েছিলো, সুবোধ, মেধার স্বামী পনেরো
বছর একসাথে থেকে -এক বিছানায় শুয়ে যা জানতে পারে নি, তমাল ঠিক জানে।
বেড়াতে হয়,আজীবন । মানুষের ভাগ্যে যা জোটেনা বললেও চলে।
প্রস্তুত করেছে, একটা সিস্টেম ভাঙা কম কথা নয়,একটা সংস্কার ভাঙা
ভীষণ কঠিন, আর তা যদি হাজার বছর ধরে মনের মধ্যে বাসা বেঁধে থাকে।
পিছিয়েছে, আগিয়েছে।
হাতে হাত দিয়ে নিজের জীবনের কতশত কথা ভাগ করতে করতে, তমালের জীবনের কথা শুনতে
শুনতে মেধা নিজের অবশিষ্ট দুর্বলতাটুকু অতিক্রম করলো।
শরীরে এখনও এত ক্ষুধা ছিলো,এত সুধা ছিলো-এত শিহরণ লুকিয়ে ছিলো।
জোয়ারে – করাতের মতো চিরে চিরে তমাল যখন ছিনিমিনি
খেলছিলো,মেধা বিস্ময়াবিষ্ট হচ্ছিলো শরীরের অনৈসর্গিক সুখে এত পূর্ণতায়।শরীরি
সঙ্গমে মনে হচ্ছিলো ও যেন একটা হারমোনিয়াম, আর ওর অঙ্গ গুলি যেন এক-একটা
রীড,সেই রীডগুলির এদিক ওদিকে চাপে ওর শরীরে শরীরে যেন সঙ্গীতের মূর্ছনা।
ভাঙাচোরা সুর ও তার শরীর থেকে বের করতে পারে নি।
তারপর একটা একটা করে রাত কেটেছে, আর মেধা, নিজেকে নতুন করে
আবিস্কার করেছে।
পরকীয়া প্রেমের গল্প PDF
তার জীবনে, তমাল হিসেবী তার সংসার যাপনে এবং তার সংসারের দায়িত্ব পালনে কোনো
খাদ নেই।
করতে হয় পরিবেশনায়, সে সব ভুলে দিনের পর দিন নিজে মেশিন হয়ে গিয়ে
তমাল কেও একটা লৌহনির্মিত যন্ত্রে পরিণত করেছিলো।
লুকিয়ে, কেন এলোনা প্রথম জীবনে।এত মিল?
মতে,জীবনদর্শনে,কথাবার্তায়,পছন্দে।
এরপর একে একে ঘুরে আসা,কোনোদিন চিল্কা ,কোনোদিন কোনার্ক,দুদিন আবার পুরী
মন্দিরে পূজোও দিলো।কোণার্কে মিথুনমূর্তি দেখতে দেখতে মেধা ভাবছিলো,তখন যা
সমাজে প্রচলিত ছিলো,আজ কেন যে সমাজের অনুশাসনের নামে গর্হিত।
ভেসে গিয়েছিল, আর আজ? দু জনেই ফিরছে,তমালের হাত থেকে ফোন নিয়ে
মেধা নিজের নাম্বার ডিলিট করে, ফেসবুকে নিজেকে ব্লক করে, নিজের ফোন থেকে
তমালের নম্বর ডিলিট করে, তমালকে ফেসবুকে ব্লক করতেই, তমালের জিজ্ঞাসু মুখের
দিকে তাকিয়ে বললো,তমাল শোনো , কথা দাও, তুমি আর কোনোদিন কখনো আমার সঙ্গে
যোগাযোগের চেষ্টা কোরো না।
বীজটুকু নিজের হাতে ধ্বংস করে দিলাম।
আছে,স্মৃতি আছে, সযত্নে মনের মণিকোঠায় -আমার অবসরের অবলম্বন করে তুলে
রাখলাম।
মেধার ঠোঁট।