রাত জেগে প্রেম করার আলাদাই আনন্দ। একেবারে রোমাঞ্চকর এক থ্রিলার সিনেমার মতো ব্যাপার সেটা! মায়ের এ’পাশ ফিরে শোওয়ায় ফোনের আলো বন্ধ করে দেওয়া, বাবার নাক ডাকার আওয়াজ হালকা হয়ে আসায় সজাগ হয়ে যাওয়া, বা হঠাৎ ফোনে কিছু আওয়াজ হলে হৃৎপিন্ডের ছলাৎ করে ওঠায় ছিল আলাদা এক মাধুর্য!
ডোকোমো, ইউনিনর, এয়ারসেলের মেসেজপ্যাক বাঙালি প্রেমজীবনের অন্যতম ভীত! সেই মেসেজের হিসেব, ১৬০ ক্যারেকটারের মধ্যে জোর করে অনুভূতি চেপেচুপে ঢুকিয়ে দেওয়ার মরিয়া চেষ্টা, আর শেষ পাঁচটা মেসেজের মধ্যে এটা জানানো যে, মেসেজপ্যাক শেষ হলেও প্রেমপ্যাক ফুরোয়নি – এ’ সবের নস্টালজিয়া আলাদাই!
প্রতিদিন মেসেজের লিমিট শেষ হওয়ার পরে রাত ১২টার অপেক্ষাটা বোধহয় পৃথিবীর মধুরতম অপেক্ষা; যেন দার্জিলিং মেলের অপেক্ষা কোনও ছুটির সপ্তাহের প্রথম দিনে!
তিনবার 7 চেপে R লেখার তাগিদ এবং আঙুলের ঘষা লেগে ক্ষয়ে যাওয়া কীপ্যাডের রোম্যান্টিসিজম নিয়ে পুরনো মোবাইল মেখে নেয় শীতরোদ… ভিজিএ ক্যামেরায় আবছায়া ছবি বয়ান দেয় আমাদের ফেলে আসা সুখের স্মৃতির…
সমস্ত কথা বলে নেওয়া যেত ওইটুকু ফোন এবং মেসেজপ্যাকে… Goodnight কে gn8 হোক, বা ‘কী করছিস’ কে ki kr6s, অতি সন্তর্পণে, তুমুল চেষ্টায়, খুব সহজে, অদম্য ইচ্ছায় বড় কথা বলা যেত শব্দ ছোট করে… অল্প শব্দে অনেক কথা বলার সাবলীলতা ছিল আমাদের…
এখন হোয়াটসাপ, ফেসবুকে শব্দের লাগামছাড়া আতিশয্যে আমরা অনেক শব্দ লিখতে পারি… কিন্তু কথাগুলো কম হয়ে আসে, ছোট হয়ে আসে। আসলে আমরা বড় হয়ে উঠেছি… শব্দ বাড়াতে, আর অনুভূতি লোকাতে শিখেছি…
এর সাক্ষী হল ওই শীতরোদ মাখতে থাকা বৃদ্ধ কীপ্যাডওয়ালা মুঠোফোনগুলো…