Loading...
|
কঠোরভাবে প্রাপ্ত মনস্কদের জন্য |
মাঝ রাত….
দুজনার অনলাইন কথোপকথন…
অনলাইন ছিলো অমৃতা এবং দীপেশ.
শুরু করেছিল মেয়েটি …..
তারপর যথারীতি প্রশ্ন’বাণের পাল্টা উত্তরের’শেল ছুড়েছিল ছেলেটিও.
*******************************************************************
—-“কিগো এতো রাত অব্দি জেগে অনলাইনে ….কি ব্যাপার ?”
–“আমার ইচ্ছে.. তাই ! “
–“তোমার ইচ্ছে’গুলো ঠিক কি, তা আমি বুঝি ..আমি ঘাসে মুখ লাগিয়ে চলি না !”
—“সব’ই যখন জানো বোঝো ,তাহলে জিজ্ঞেস করছো কেনো?”
(ম্যাসেজ সীন..তা সত্ত্বেও কোনো উত্তর নেই..কিঞ্চিৎ বিচলিত হয়ে আবার প্রশ্ন করলো ছেলেটি )
—“বাব্বা ! এতো রাগ ?”
(উত্তর এলো..)
—“রাগ দেখিয়ে আর কি করবো ? যেটা করছো সেটা’ই করো “.
—“কি করছি ?”
–“একদম সাধু সাজবেনা..যাদের সঙ্গে এইমুহূর্তে ইনবক্স করছো তাদেরকে নিয়েই থাকো..আমার সাথে কথা বোলোনা….দীপ্তি ,নন্দিতা ..সবাই হয়তো একটিভ এখন.”
—” তুমিও তো চ্যাট করছো. আই’এম শিওর..প্রভাত,অনিকেত,সবাই অনলাইনে ….
—-“একদম বাজে অপবাদ দেবেনা….সবাই আমাকে ‘অমৃতা’দি’ বলে ডাকে”.. “ভীষণ ভালো বন্ধু ওরা আমার,আমার থেকে বয়েসেও ছোট…ওদের ওয়াইফ’রাও আমার ফ্রেন্ড লিস্টে আছে.. তোমাকে ওদের ব্যাপারে সবকিছুই’তো বলি .”
—“এক্সকিউজ মি ম্যাডাম ! যাদের কথা একটু আগে বললে,ওরাও আমাকে ‘দীপেশ’দা’ বলে কথা বলে.
—“তাতে কি? এসব ক্ষেত্রে ছেলেদের ‘দিদি’ বলা আর মেয়েদের ‘দা’ বলার অনেকটাই পার্থক্য থাকে.”… “তাছাড়া তোমার সো’কল্ড ফ্রেন্ড সেদিন কি অরুচিকর একটা সেলফি পোস্ট করেছে: স্লিভলেস ব্লাউস,, বুকের উপর যেন আঁচল রাখার ইচ্ছেই নেই!,
আবার কতটা কোমর দেখা যাচ্ছে ! ছিহঃ ! তাতে আবার তুমি লাইক দিয়েছো.. কোথায় নেমেছে রুচিবোধ তোমার! “
—“লাইক’টা হয়তো ভূল বশত পড়ে গিয়েছে..ভুলে যেওনা, কলেজে অনেক মেয়েই ছিলো আমাকে পছন্দ করতো ..তা সত্ত্বেও আমি তোমাকে প্রস্তাব দিয়েছিলাম,শুধু মাত্র তোমার মার্জিত ব্যবহার ও সাজপোশাকের জন্য.”
–“ঠিক বলছো তো ?”
—“ওহ গড ! সেই জন্য সন্ধ্যে থেকে অতো রাগ দেখানো হচ্ছে ? তাই বলে এতো বড় কথা বললে ! -‘যেন আমি তোমাকে স্পর্শ না করি ..'””
–“তুমিতো জানো আমার থাইরয়েড প্রব্লেম,একটুতেই টেম্পটেড হয়ে পড়ি.”
—“ওকে..”
—“‘ওকে’ আবার কি ! “
এবার প্লিস অফ হও লক্ষীটি ! রাত হয়েছে অনেক..তোমার সুগার’টা এখন লেভেলে আছে..প্লিস ওটাকে অযথা বাড়তে দিওনা.”
—“এতো ভালোবাসো আমাকে ?”
—“ভালোবাসি বলেই তো এতো কষ্ট পাই..”
—“একটা কথা বলবো ?”
—“কি ?”
–“বুঝে নাও…এতো ভালোবাসো যখন আমাকে..”
—(মুচকি হেসে টাইপ করলো মেয়েটি) “বুঝেছি..”
–“কি ?”
–“মোহর ঘুমিয়ে কাদা…চলে এসো বিছানায় .”.
*******************************************************************
একরাশ প্রাণশক্তি আর উদ্যম নিয়ে মেঝে’তে উঠে বসলো দীপেশ.
তারপর ঘাড় ঘুরিয়ে চোখ রাখলো বিছানার দিকে..
ডিম্ লাইটের আলোয় অমৃতা’কে দেখলো দীপেশ..মিটি মিটি হাসছে সে মুখ টিপে.. দীপেশের ঠোঁটে একটা অব্যাক্ত হারিয়ে পাওয়ার আঙ্গিক ধরা দিলো.
যেন নূতন করে শুভদৃষ্টি হচ্ছিলো দুজনার.
ছয় ছয়টি বছর অতিক্রান্ত করলো দুজনে একছাদের তলায় .
অমৃতা একটু খিটখিটে হয়েছে ,তার মাথার ঘন কেশের বাহারে পড়েছে ভাটা. কোমরে মেদ জমেছে অবাঞ্ছিত. তা সত্ত্বেও এই নুতন রূপটা আজ’ও দীপেশের কাছে সমান আকর্ষণীয়. …
বিছানার এককোনে ছোট্ট মোহর তখন ঘুমের দেশের মিষ্টি স্বপ্নে বিভোর.
পা টিপে’টিপে বিছানায় উঠে, বালিশে মাথা রেখে পাশ ফিরে, উষ্ণ আলিঙ্গন করলো সে অমৃতা কে ..
অমৃতা সায় দিলো ..
দীপেশ ঠোঁট রাখলো তার স্ত্রীর গালে..
অমৃতা নির্লিপ্ত হয়ে আঁকড়ে ধরলো দীপেশের পিঠ..দুপ্রান্তের উষ্ণ নিঃশ্বাসের যুগলবন্দী মাতিয়ে রেখেছিলো পরিবেশ’টিকে.
খাটের স্বল্পবিস্তর, ঢিমেতালে ক্যাচ-ক্যাচে শব্দের সাথে তাল মিলিয়েছিল নূপুরের মিষ্টি রিনিঝিনি শব্দ ..
তারপর শুধু একবার দীপেশের কানের লতিতে দাঁত বসিয়ে,অমৃতা ফিসফিসিয়ে আদুরে গলায় বলেছিলো :
–“এই আস্তে ! বাবু কিন্তু উঠে পড়বে !”
*******************************************************************
(‘অমৃতা রায়বিশ্বাস’ ও দীপেশ বিশ্বাস : দুজনেই এখন অফলাইন )
*******************************************************************
এতক্ষণ পড়লেন বাংলা প্রেমের গল্প – তোমাতে আমাতে