‘ক’ মেয়েটা একটু অন্যরকম। সহজ সরল। যাকে যে কথা বলার নয় তাকে সেই কথা বলে দেয়। তারপর আবার আফসোস করে। বেচারীর আশা একজন ভাল বর পাবে। সম্ভবত যে তাকে পড়াশুনা এবং চাকুরী করতে বাঁধা দেবেনা তেমন বর তার চাই। প্রয়োজন হলে শ্বশুর বাড়ির সব খরচ সেই দেবে কিন্তু তারপরও তার এই দুটি কাজে বাধা দেওয়া যাবেনা।
যে কেউ ‘খ’ এর হাসিতে মুগ্ধ হবে। মেয়েটা অনার্স কমপ্লিট করেই চাকুরীতে যোগ দিয়েছে। তার এই চাকুরীতে যোগদানের পিছনে রয়েছে অন্যরকম আরেকটা কাহিনী। যেকোন মূল্যেই সে তার মা-বাবাকে ছাড়তে নারাজ। বলছিলাম বিয়ের কথা। বিয়ে নামক সামাজিক বন্ধনকে অসম্বব ভয় পায় ‘খ’। ওর কাছে বিয়ে মানেই মা-বাবা থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া বেদনাদায়ক একটা নতুন জগৎ। আর তাই সবকিছুকে উপেক্ষা করে চাকুরী নিযে বাকী জীবন কাটাতে সে দৃঢ প্রতিঞ্জাবদ্ধ।
‘গ’ সম্পূন্য ব্যতিক্রমি একজন মানুষ্। অফিসের কেউ তার মোবাইল নাম্বার কিংবা পারসোনাল কোন তথ্য জানে বলে আমার অজানা। কোন কিছু নিয়ে গবেষনা৷ করতে সে ভালবাসে। আবার তার মাঝে বেশ কিছু সমস্যা আছে। কোন সমস্যায় পড়লে সে ওই সমস্যা নিয়েই নিরবে থেকে যায়। খুব কম কথা বলা এই মানুষটা অফিসের কারো দেওয়া কোন কিছুই সে খাবেনা।
কোন কিছু নিয়ে একটু উত্তেজিত হলেই ঘেমে একাকার হয়ে যান ‘ঘ’। সহজ জিনিসগুলো তার মাথায় সহজে ধরেনা। পরিবারের সর্বকনিষ্ট মেম্বারদের একজন হওয়ায় বিয়েটা তার কাছে একটা স্বপ্নের জিনিস। আর এই স্বপ্নের ঘোরে কাটে সারাক্ষন। এখনো বাকী অনেক। মাথার চুলে পাক ধরে। ডিম খাওয়াটা বেচারার অদ্ভুদ একটা শখ।প্রতিদিন ৪/৫টা ডিম ভক্ষন সেটাতো মামুলি ব্যাপার।
‘ঙ’ কে বলা হয় জাপানি যদিও সে জাপান থেকে আসেনি। মিডল ইষ্ট এর কোন এক দেশে তার জন্ম এবং বেড়ে উঠা। বাংলা ভাষা বুঝতে পারে কিন্তু বলাটা তার জন্য মুশকিল হয়ে দাড়ায়। প্রতিদিন অফিস শেষে তাই অটো বা ট্যাক্সি ড্রাইভারের সাথে কথার যুদ্ধ করতে করতে আধা মাইল পথ পাড়ি দিয়ে যায়। ভাষাটা যে একটা গুরুত্বপূর্ন ফ্যাক্টর তা তাকে দেখলেই উপলব্ধি করা যায়।
‘চ’ মেয়েটা একটু চঞ্চল। প্রজাপতির মতো উড়োউড়ি করাটা স্বভাব। বয়স কম তাই একটু বুদ্ধির অভাব। হঠাৎ দেখি তার মনের গহিনে একটা কাল দাগ। বিচরন করছে সেখানে বিড়ালরুপি আস্ত একটা বাঘ। কবিতার ছন্দ মিলায়; মিলিয়ে যাক।
‘ছ’ নামের ছেলেটি একটু অন্য ঘরনার। কাঁধে ব্যাকপ্যাক মাথায় ইয়া লম্বা লম্বা চুল। প্রথম দর্শনে মনে হয়েছিল ছেলে তো নয় যেন কাজী নজরুল। আর হ্যাঁ এটাই ছিল আমার একমাত্র ভুল। হঠাৎ একদিন তার বাবা এসে হাজির। ব্যাপার কি? ছেলেকে নাকি ডাক্তার দেখাবেন। যেন তেন নয় মানসিক ডাক্তার। খুব কম কথা বলা এই ছেলেটা তেমন একটা কারো কল রিসিভ করেনা। সন্দেহ আছে ও কি পোষাক পরে সেটা নিজেই জানে কিনা । তার উপর আবার যে মোবাইলটা ইউজ করে নাকি জোর করে আরেকজনের দেওয়া। পিতার চিন্তিত মুখ দেখে আমার সলুশনটা ছিল ডাক্তার নয় ঘরে একজন ডাক্তারনী পার্মানেন্টলি তুলে নেওয়া।
’ম’ এর মেয়ে বন্ধু বেশি। ছেলে বন্ধু নেই বললে চলে। ম কে তাই অনেকে তুলা রাশির জাতক বলে। ম য়ের আবার মোবাইলে আসক্তি। সামনে বিয়ে। মা-বাবার পচন্দ করা লাল পাসপোর্টে পাত্রী। ম য়ের মনে দ্রুত ঘুরছে দিবারাত্রী।
প্রতিটা মানুষই অন্যরকম একেকটা গল্পের ভান্ডার। ব্যাতিক্রম আমিও নই। যতই দেখি ততই অবাক হই। মনের হার্ডডিস্কে গল্পের ফোল্ডারটা ভারী হচ্ছে। চলতে থাকুক মন্দ কি!
…………..