লিখেছেন – অন্তরা রাহা
‘কি রে বাবু! এই মাসে বাড়ি আসছিস তো? দু’মাস বাড়ি আসিস না.. এইবার তো আয়।”- ফোনে ছেলেকে কথাগুলো বললেন অপর্ণা দেবী ।
“না মা.. এই মাসেও হবে না। কাজের চাপ আছে.. পরের মাসে চেষ্টা করব।” -বলে ফোনটা কেটে দিলো জিৎ।
অপর্ণা দেবীর মেয়ে রিয়া বলল-” দাদা কি মা? ছয় মাস হয়নি বিয়ে হয়েছে, এই ছয় মাসে দাদা কটা দিন বৌদির সাথে থেকেছে বলোতো ?ফুলশয্যার পরের দিনই চলে গেছিল.. তারপর একবার কি দুইবার এসেছে। তাও বৌদির সাথে এতটুকু সময় কাটায় নি।
সারাদিনে না কোন ফোন ..না কোন মেসেজ.. মাঝেমধ্যে ফোন করলেও শুধু তোমাকে। বৌদি সময় টা কাটায় কি করে বলোতো?”
“সত্যিই রে ..এখন মনে হচ্ছে ভুলটা আমি করেছিলাম, তোর দাদার সাথে বৃন্দার বিয়ে দেওয়াটা আমার ঠিক হয়নি। তোর দাদাকে শোধরাতে গিয়ে ওই মেয়েটার জীবনটা নষ্ট করে দিলাম। একবারও তোর দাদা বৃন্দার কথাটা ভাবল না ।কতই বা বয়স ওর.. বছর কুড়ির একটা মেয়ে সারাটা দিন বাড়িতে সময় কাটায় কি করে.. কত করে বলেছিলাম বৃন্দাকে সাথে করে নিয়ে যা। তোর সাথে থাকবে.. ঘুরে বেড়াবে.. ভালো থাকবে।
কিন্তু সে কথা শুনলে তো?”
শাশুড়ি মায়ের কথা শুনতে পেয়ে এবার বৃন্দা বলল-” উফ্ মা.. ছাড়ো না। আমি তোমাদের সাথে আছি.. ভালোই তো আছি ।
রিয়ার সাথে বেশ গল্প করে মজা করে সময় কেটে যায়।”
” কোথায় বৌদি ? সকালে তো সারা দিন কলেজে থাকি। বিকেলে বন্ধু-বান্ধব .. সময় কাটানো বলতে ঐ সন্ধ্যাটুকু।”
ছয় মাস আগে রীতিমতো অপর্ণা দেবীর চাপে পড়ে বৃন্দাকে বিয়ে করেছিল জিৎ। জিতের চাকরির জায়গায় ও ভালোবেসেছিল রাইমাকে। রাইমার চালচলন কথাবার্তার ধরন কিছুই পছন্দ হয়নি অপর্ণা দেবীর।তবু ছেলের মুখে চেয়ে মেনে নিয়েছিলেন.. কিন্তু ওদের ডিসিশান শুনে রীতিমতো মাথা ঘুরে গিয়েছিল অপর্ণা দেবীর। ওরা ঠিক করেছিল ওরা বিয়ে করবে না.. অথচ একসাথে থাকবে । তারপর যদি মনে হয় তাহলে বিয়ে করবে।
কিন্তু বিয়ের আগে একসাথে থাকা মেনে নিতে পারেনি অপর্ণা দেবী । তাই প্রায় জোর করেই বিয়ে দেন বৃন্দার সাথে।
ভেবেছিলেন বিয়ের পর স্ত্রীর সাথে একসাথে থাকতে থাকতে ভালোবাসার সম্পর্ক ঠিক গড়ে উঠবে । কিন্তু ভালোবাসার প্রশ্ন তো তখনই আসতো যদি তারা একসাথে থাকতো। জিৎ, বৃন্দা কে বাড়িতে রেখেই ফিরে গিয়েছিলো।
রিয়া বলল-” আচ্ছা মা আমি তো সেকেন্ড ইয়ারের ফর্ম ফিলাপ করছি ..বৌদির তো ফার্স্ট ইয়ার কমপ্লিট হয়ে গেছে। আমাদের কলেজেই না হয় বৌদি গ্রাজুয়েশন টা কমপ্লিট করুক। পড়াশোনা আর বন্ধুবান্ধবের মধ্যে থাকলে ওর মনটা একটু ভালো থাকবে।”
অপর্ণা দেবী রাজি হয়ে গেলেন । সেকেন্ড ইয়ারে ভর্তি হল বৃন্দা। কলেজের প্রথম দিন বৃন্দাকে সব বন্ধুদের সাথে আলাপ করিয়ে দিল রিয়া।
বন্ধুদের মধ্যেই একজন বলল -” ইস্! তোমার বিয়ে হয়ে গেছে? তোমার মতোই একটা মেয়েকে খুঁজছিলাম আমি.. আসলে আমি একটু লম্বা তো , সেই জন্যই ঐ সব বেঁটে খাটো মেয়েদের আমার সাথে ঠিক মানায় না।
তুমি সুন্দরী, লম্বা, কি দারুন ফিগার.. একদম পারফেক্ট ম্যাচ আমার জন্য।” এক নিশ্বাসে কথাগুলো বলে থামল অভি ।
রিয়া বলল – “অনেক হয়েছে.. মেয়ে দেখলেই ঝাড়ি মারাটা এবার থামা। একে চিনে রাখো বৌদি.. কোন দিনে এর ফাঁদে পা দেবে না। সারা কলেজের মেয়েকে ওর পছন্দ ।”
“মোটেইনা…. ঐ তৃষ্ণা আর রুপাকে আমার একদমই পছন্দ নয় । ওদের বাদ দিয়ে বাকি সবাইকে পছন্দ।”
” হ্যাঁ সে জানি… তবে এটা আমার বৌদি। ঝাড়ি মারার আগে সেটা মনে রাখিস ।”
“হ্যাঁ তো ? তোর বৌদি আমার তো নয় । আর তাছাড়া ওটা বিয়ে নাকি? না আছে প্রেম.. না আছে কোন রকম কেয়ার .. ওটা বিয়ে নয়, প্রহসন । “
কথাগুলো বলেই একহাত জিভ বার করে দিল অভি। বুঝতে পেরেছে সবার সামনে এইভাবে কথাগুলো বলা ওর উচিৎ হয়নি।
কথাগুলো শুনে একটু চুপ থেকে বৃন্দা বলল -“তোমাদের তো জিওগ্রাফি? আমার বাংলা .. ক্লাসের সময় হয়ে গেছে । আমি আসি কেমন ..পরে আবার কথা হবে । “
বৃন্দা চলে যাবার পর তেলেবেগুনে জ্বলে রিয়া বলল-” সত্যি অভি ধন্য তোর বুদ্ধি.. এইভাবে কথাগুলো কেউ বলে? মানুষের খারাপ লাগা ভালো লাগাটা তো দেখবি। তোকে বিশ্বাস করে সব কথা বলাটাই আমার ভুল হয়েছে।”
” আরে রেগে যাচ্ছিস কেনো… জানিসই তো আমার পেট পাতলা।”
” সে আর বলতে .. তোর সবকটা রিলেশান তো এইজন্যই কাটল। অবশ্য তেরো নম্বর প্রেমটা সাত দিন টিকে ছিল ।আচ্ছা কি বলেছিলি বলতো মেয়েটাকে.. যে একেবারে ছক্কা মেরে আউট করে দিল তোকে?”
” আরে তেমন কিছু না.. ওর ঠোঁট গুলো ছিল কেমন যেন বাইরের দিকে বার করা.. কিস করতে গেলে মনে হতো ছাগলের সাথে কিস করছি । সেটাই বলছিলাম ..কিন্তু সত্যি কথা সহ্য হলো না । ব্যাস.. ব্রেকআপ।”
” হায় ভগবান ! তুই মেয়েটাকে বলে দিলি যে ওর ঠোঁট গুলো ছাগলের মত? তুই কি রে? কারো কপাল বড় .. কারোর নাক ছোট.. কারোর ঠোঁট বার করা ..তোর ঠিক কি চাই বল তো?”
” আচ্ছা ব্রেক আপ কি আমি করেছি ?প্রত্যেকবার তো ওরাই ব্রেকআপ করে ।”
“তা করবে না? তুই ওদের অপমান করবি.. ওরা তোকে ছেড়ে দেবে?”
” ছেড়েই তো দিল। কিন্তু তোর বৌদি দারুন ।
এই বৌদি বলতে মনে পড়ল.. সরি বলতে হবে তোর বৌদিকে । কী জানি কী ভাবল।”
” বাবা… তুই আবার কারোর ভাবনার ধার ধারিস? এত কিছু ভাবলে ঐ মেয়েগুলোকে অমন করে বলতে পারতিস?”
” আরে ধুর …ওদের কাছে তো বয়ফ্রেন্ড মানেই এ.টি.এম । একবার একজনকে বলেছিলাম নতুন ড্রেস কিনে দেবো ..সেই শুনে রিলেশনের প্রথম দিনই আমায় কিস করতে রাজি হয়ে গেল। যে সব মেয়েদের কাছে ভালবাসার কোন দাম নেই.. টাকাটাই সব.. সেইসব মেয়েদের জন্য আমার কোন দরদ নেই বুঝলি?”
” বুঝলাম… বুঝলাম “
ক্লাস শেষ হলো। বৃন্দা ঘর থেকে বেরিয়ে সিঁড়ি দিয়ে নিচে নামছে দেখেই পিছন থেকে ছুটতে ছুটতে নামতে গিয়ে সিঁড়ি থেকে উল্টে পড়লো অভি । বেশি সিঁড়ি বাকি ছিল না তাই খুব একটা লাগেনি।
” ও মাগো ” আওয়াজ শুনে পেছনে তাকিয়ে বৃন্দা দেখে পড়ে গেছে অভি।
” আরে তুমি পড়ে গেলে কি করে?”
” তোমায় ধরতে গিয়ে। ওরে বাবারে.. কি জোড় লাগলো.. নিশ্চয় মনে মনে আমাকে গালাগালি দিচ্ছিলে।”
” আচ্ছা ..আচ্ছা.. আগে আস্তে আস্তে উঠে এস দেখি”- বলে হাত ধরে তুলল অভিকে। পাশের ক্লাস রুম ফাঁকা আছে দেখে দুজনে মিলে বসলো।
” এবার বলোতো আমার পেছনে অমন করে ছুটছিলে কেন?”
“তখন তোমায় ওইভাবে বললাম.. তোমার খারাপ লেগেছিল। ভাবলাম যদি কিছু মনে করো। সেই জন্যই তো সরি বলতে আসছিলাম।”
” খারাপ লেগেছিল ঠিকই.. কিন্তু কিছু মনে করিনি। সত্যি কথা শোনার অভ্যাস আমার আছে ।”
“দেখেছ.. আবার প্রমাণিত হলো তুমি আমার জন্য পারফেক্ট। আমি সত্যি কথা বলতে ভালোবাসি অথচ কেউ তা পছন্দ করে না। তুমি একদম আলাদা।
সিনেমায় সবসময় হিরোরা হিরোইনদের নিয়ে উল্টায় । আর আমি যাওবা উল্টালাম ..একা …।”
হাসতে হাসতে বৃন্দা বলল-” বেটার লাক নেক্স্ট টাইম।”
কাটতে লাগল দিন। হাসি মজায় বেশ চলছিল বৃন্দার জীবন। অভির উপস্থিতি সম্পূর্ণ অন্য দিকে নিয়ে যাচ্ছিল ওকে। মানুষ যা পায় না তার দিকেই বারবার করে ছুটে যায়, সেই জন্যেই হয়ত বৃন্দার মন আকৃষ্ট হয়ে পড়েছিল অভির উপর।
অভির মুখে নিজের প্রশংসা শুনতে ভালোই লাগতো ওর। কিন্তু নিজের আবেগকে অনেক কষ্টে চেপে রেখেছিল। কারণ যে শাশুড়ি ওকে নিজের মেয়ের মত ভালোবাসে যদি সে জানতে পারে তার ছেলের মত তার বৌমাও অন্য কারোর মোহে জড়িয়ে পড়েছে কষ্ট পাবে।
প্রতিদিনের কলেজ ,কলেজের পর আড্ডা.. রাতে বৃন্দার ফোনে আসা অভির গুড নাইট মেসেজ.. বদলে দিচ্ছিল ওর গতানুগতিক জীবন ।
হঠাৎ একদিন কলেজ শেষের পর অভি বৃন্দা কে দেখে বলল -” বৃন্দা আই লাভ ইউ।”
“আবার তোমার পাগলামি শুরু হল ..সব সময় খালি ইয়ার্কি”
“না.. আমি সত্যি বলছি, আমি সত্যি তোমাকে ভালবাসি বৃন্দা। বিয়ে করতে চাই তোমায়। বিশ্বাস কর ..আমি সিরিয়াস ।”
নিজের সব আবেগকে চেপে রেখে বৃন্দা বলল-” আমার পক্ষে সেটা সম্ভব নয় ..আমি বিবাহিত।”
তারপর দুদিন কলেজ আসেনি বৃন্দা। একা ঘরে বসে বসে কেঁদেছে। কিচ্ছু ভালো লাগছেনা ওর ।
অপর্ণা দেবী জিজ্ঞেস করলেন -“কি রে মা.. কি হয়েছে? কলেজে যাচ্ছিস না কেন?”
” আমি আর যাব না মা। আমার ভালো লাগেনা।”
আর কোন কথা হয়নি সেদিন । তিন দিন পর বৃন্দার জন্মদিন। রিয়া কলেজের বন্ধুদের নেমন্তন্ন করল ।হলুদ রঙের একটা শাড়িতে সেদিন সন্ধ্যায় অপূর্ব দেখতে লাগছিল বৃন্দা কে। অপর্ণা দেবী সেদিন নিজের হাতে খাবার বানিয়েছেন সবার জন্য।
সবাই যখন একজায়গায়.. হঠাৎ করে অভি বলল -“জিৎ আজকের দিনেও এলো না ..শুধু শুধু একটা মেনিমুখো ছেলের জন্য আমাকে বিয়ের প্রস্তাবে না বলে দিলে। নিজেও কষ্ট পেলে আর আমাকেও…”
” প্লিজ স্টপ। আর ছোট করোনা আমায় অভি.. সবার সামনে কথাগুলো কি না বললেই চলছিল না?”- বৃন্দা কথাগুলো বলেই ঘর থেকে বেরিয়ে যেতে চাইছিল কিন্তু রিয়া ওর হাত চেপে ধরে বলল-” কিসের লজ্জা তোমার বৌদি ?তুমি কেন ছোট হবে ?ভালোবাসা তো অপরাধ নয়..”
” আমি বিবাহিত রিয়া। আমি তোমার দাদার বউ ।”
“কিসের বউ? ও যদি এই বিয়ে অস্বীকার করে নিজের মত জীবন কাটাতে পারে তুমি কেন পারবেনা? আর সত্যি করে বলোতো তুমি অভিকে ভালোবাসো না ?যদি নাই বাসো লুকিয়ে লুকিয়ে কাঁদতে কেন ?”
এবার অপর্ণা দেবী বললেন-” এসব আমি কি শুনছি বৃন্দা? আমার দিকে তাকিয়ে সত্যি কথা বল.. চুপ করে থাকবি না । উত্তর দে.. তুই এই ছেলেটাকে ভালোবাসিস? হ্যাঁ কি না?”
বৃন্দা আস্তে করে বলল -“হ্যাঁ ..বাসি।কিন্তু.. “
ওকে শেষ করতে না দিয়েই অপর্ণা দেবী চিৎকার করে উঠলেন-” ওরে কে আছিস মিষ্টির হাঁড়ি টা নিয়ে আয় শিগগির । প্ল্যান সাক্সেসফুল।
অবাক হয়ে বৃন্দা বলল-” মানে? কিসের প্ল্যান?”
” কিসের আবার.. তোমাকে নিয়ে উল্টানোর প্ল্যান। তবে এবার সিঁড়িতে নয় সোজা ছাদনা তলায়।”- -বলল অভি।
রিয়া বলল-” হতে পারে তুমি আমার বৌদি তবে বন্ধুর থেকে কোন অংশে কম নয়। দিনরাত আমার চোখের সামনেই রয়েছ আর তোমার মনের কথা জানব না? তুমি অভিকে পছন্দ করো আমি জানতাম.. আর অভি যে তোমায় ভালোবাসে সে কথা তোমাকে বলার আগেও আমাকে বলেছিল। প্রথমে বিশ্বাস করিনি.. ভেবেছিলাম এতো ওর রোজকার নাটক। তবে পরে বুঝতে পারি ও সিরিয়াস ।
তাছাড়া তোমাকে একটা কথা বলা হয়নি বৌদি। এক সপ্তাহ আগে দাদা ফোন করেছিল মাকে, এক বছর একসাথে থাকার পর দাদা আর রাইমা ঠিক করেছে ওরা বিয়ে করবে। তাই তোমায় ডিভোর্স পেপার পাঠিয়েছে। এই সিদ্ধান্তটা যদি আগে নিত তাহলে হয়ত তোমার জীবনের এতোগুলো দিন নষ্ট হতো না ।”
“কিন্তু কই? মা তো সে কথা বলেনি?”
” কি করে বলতাম বল? তোর কষ্ট আমি আর দেখতে পারতাম না ।সেদিন রিয়ার মুখ থেকে শুনি অভির কথা ,তখনই আমি অভি আর পরিবারের সাথে কথা বলি। ওদের কোন আপত্তি নেই। তবে তুই কি চাস না জেনে মানতে পারছিলাম না। তাই তোর মুখ থেকে শুনতে চেয়েছিলাম।
তোরা গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট কর.. তারপর অভি চাকরি পাক। আমি নিজেই এ বাড়ি থেকে তোর বিয়ে দেব ।যতই হোক তোদের ডিভোর্স তবু তুই আমার মেয়ে। আমার ছেলে কোনদিন এবাড়ির মান সম্মানের কথা ভাবেনি.. তুই ভেবেছিস।
ভুল আমি করেছি তার সংশোধন আমাকে করতেই হবে।”
” তবে সত্যি বলছি.. রিয়া যদি না থাকতো আমি সাহস করে অপর্ণা আন্টির কাছে আসতে পারতাম না। দায়িত্ব নিয়ে সবটা সামলেছে রিয়া “- -বলল অভি।
বৃন্দাকে জড়িয়ে ধরে রিয়া বলল -“ডিভোর্স পেপার টায় সই করে দে বৃন্দা। আজ থেকে আর বৌদি নয় শুধু বৃন্দা বলবো। তোর জন্মদিনে এটাই হোক তোর জীবনের সব থেকে বড় উপহার।”